উত্তর : মসজিদের দেওয়ালে কুরআনের আয়াত লেখা জায়েয নয়। কারণ এগুলো নিষিদ্ধ কাজের অন্তর্ভুক্ত। এতে ছালাতের মধ্যে মুছল্লীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে, ফলস্বরূপ সে অমনোযোগী হয়ে কারুকার্য ও চাকচিক্য নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে শুরু করে’ (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমা, ৫/১৯০ পৃ.)। মানুষের ধ্যান ভঙ্গ হতে পারে এমন কোনও জিনিস মসজিদের ক্বিবলার দিকে টাঙিয়ে রাখা দোষনীয়। যেমন ছালাতের সময়সূচি, ক্যালেন্ডার, ঘড়ি ইত্যাদি। বারাকাহ লাভের আশায় মসজিদের দেওয়ালে কুরআনুল কারীমের আয়াতের অংশ অথবা হাদীছের অংশ লিপিবদ্ধ করা বা ঝুলিয়ে রাখা অপসন্দনীয় ও বিদ‘আত’ (লিক্বাউল বাব আল-মাফতূহ, লিক্বা নং-১৯৭, প্রশ্ন নং-৮; আল-মাদখাল, ২/২১৫ পৃ.; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১২৭৯৮৭)। শায়খ ছালিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, ‘ছালাতের মধ্যে মুছল্লীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে এমন কোন কিছুই মসজিদের ক্বিবলার দিকে রাখা অপসন্দনীয়। আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তাঁর নিকট একটি বিচিত্র রঙের ফিনফিনে পর্দার কাপড় ছিল। তিনি তা ঘরের এক দিকে পর্দা হিসাবে ব্যবহার করছিলেন। নবী (ﷺ) বললেন, أَمِيْطِيْ عَنَّا قِرَامَكِ هَذَا فَإِنَّهُ لَا تَزَالُ تَصَاوِيْرُهُ تَعْرِضُ فِيْ صَلَاتِيْ ‘আমার সামনে থেকে তোমার এই পর্দা সরাও। কারণ ছালাত আদায়ের সময় এর নকশাগুলো বা ছবিগুলো অনবরত আমার সামনে ভেসে ওঠে’ (ছহীহ বুখারী, হা/৩৭৪, ৫৯৫৯)। অন্যত্র উছমান ইবনু তালহা আল-হাজাবী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূল (ﷺ) আমাকে ডেকে বলেছিলেন,
إِنِّيْ نَسِيْتُ أَنْ آمُرَكَ أَنْ تُخَمِّرَ الْقَرْنَيْنِ فَإِنَّهُ لَيْسَ يَنْبَغِيْ أَنْ يَكُوْنَ فِي الْبَيْتِ شَيْءٌ يَشْغَلُ الْمُصَلِّيَ
‘আমি আপনাকে আদেশ করতে ভুলে গেছি যে, (ইসমাঈলের যবাইকৃত দুম্বার) শিং দু’টি ঢেকে রাখুন (যা কা‘বার দেয়ালে টাঙ্গানো ছিলো) কারণ বাইতুল্লায় এমন কোন জিনিস থাকা সমীচীন নয়, যা মুছল্লীদের অন্যমনস্ক করে দেয়’ (আবূ দাঊদ, হা/২০৩০, সনদ ছহীহ; ইসলাম সাওয়াল ওয়ার জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১৬২৮২৭)। ইমাম শাওকানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘হাদীছ দু’টি দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, মুছল্লীর সামনের দিকটা নকশা, চিত্র বা অন্য কিছু দ্বারা চাকচিক্য করা অপসন্দনীয়। কারণ এতে মুছল্লীর মনোযোগ বিনষ্ট হয়’ (নায়লুল আওত্বার, ২/১৭৩ পৃ.)।
প্রশ্নকারী : আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ, রংপুর।