উত্তর : কোন ব্যক্তি মাদক বা নেশা দ্রব্য সেবন করে মাতাল বা নেশাগ্রস্ত হলে আল্লাহ তা‘আলা তার চল্লিশ দিনের ছালাত কবুল করবেন না-এ কথা ছহীহ হাদীছ দ্বারা সাব্যস্ত। আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন,
مَنْ شَرِبَ الْـخَمْرَ وَسَكِرَ لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلَاةٌ أَرْبَعِيْنَ صَبَاحًا وَإِنْ مَاتَ دَخَلَ النَّارَ فَإِنْ تَابَ تَابَ اللهُ عَلَيْهِ وَإِنْ عَادَ فَشَرِبَ فَسَكِرَ لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلَاةٌ أَرْبَعِيْنَ صَبَاحًا فَإِنْ مَاتَ دَخَـلَ النَّارَ فَإِنْ تَابَ تَابَ اللهُ عَلَيْهِ وَإِنْ عَادَ فَشَرِبَ فَسَكِرَ لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلَاةٌ أَرْبَعِيْنَ صَبَاحًا فَإِنْ مَاتَ دَخَلَ النَّارَ فَإِنْ تَابَ تَابَ اللهُ عَلَيْهِ وَإِنْ عَادَ كَانَ حَقًّا عَلَى اللهِ أَنْ يَّسْقِيَهُ مِنْ رَدْغَةِ الْخَبَالِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ! وَمَا رَدْغَةُ الْـخَبَالِ؟ قَالَ عُصَارَةُ أَهْلِ النَّارِ
‘কেউ মদ পান করে নেশাগ্রস্ত হলে তার চল্লিশ দিনের ছালাত কবুল করা হবে না এবং এমতাবস্থায় তার মৃত্যু হলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। তবে যদি সে তওবা করে নেয় তা হলে আল্লাহ তা‘আলা তার তওবা কবুল করবেন। এরপর আবারও যদি সে মদ পান করে নেশাগ্রস্ত হয় তাহলে আবারও তার চল্লিশ দিনের ছালাত কবুল করা হবে না এবং এমতাবস্থায় তার মৃত্যু হলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। অবশ্য যদি সে তওবা করে তাহলে আল্লাহ তা‘আলা তার তওবা কবুল করবেন। এরপর আবারও যদি সে মদ পান করে নেশাগ্রস্ত হয় তাহলে আবারও তার চল্লিশ দিনের ছালাত কবুল করা হবে না এবং এমতাবস্থায় তার মৃত্যু হলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। কিন্তু যদি সে তওবা করে নেয় তাহলে আল্লাহ তার তওবা কবুল করবেন। এরপর আবারও যদি সে মদ পান করে নেশাগ্রস্ত হয় তখন আল্লাহর হক হয়ে যায়, ক্বিয়ামতের দিন তাকে ‘রাদগাতুল খাবাল’ পান করানো। ছাহাবীগণ বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! ‘রাদগাতুল খাবাল’ কী? তিনি বললেন, জাহান্নামীদের পুঁজ’ (ইবনু মাজাহ, হা/২৭৩৮; ছহীহুল জামে‘, হা/৬৩১৩)। আবূ আব্দিল্লাহ ইবনু মানদাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
لا يثاب على صلاته أربعين يوماً عقوبة لشربه الخمر كما قالوا في المتكلم يوم الجمعة والإمام يخطب إنه يصلي الجمعة ولا جمعة له يعنون أنه لا يعطى ثواب الجمعة عقوبة لذنبه
‘চল্লিশ দিন ছালাত কবুল হবে না’-এর অর্থ হল, মদপানের শাস্তি হিসাবে চল্লিশ দিনের ছালাতের ছাওয়াব পাবে না। যেমন ফক্বীহগণ বলেছেন, জুমু‘আর দিন খুত্ববাহ চলাকালীন যদি কেউ কথা বলে সে জুমু‘আহ পড়বে কিন্তু তার জুমু‘আহ হবে না। অর্থাৎ তার এই অপরাধের কারণে তাকে জুমু‘আর ছালাতের ছওয়াব প্রদান করা হবে না’ (তা‘যীম কাদরিছ ছালাত, ২/৫৮৭ ও ৫৮৮)। ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
وَأَمَّا عَدَم قَبُول صَلاته فَمَعْنَاهُ أَنَّهُ لا ثَوَاب لَهُ فِيهَا وَإِنْ كَانَتْ مُجْزِئَة فِي سُقُوط الْفَرْض عَنْهُ وَلا يَحْتَاج مَعَهَا إِلَى إِعَادَة
‘আর ছালাত কবুল না হওয়ার অর্থ হল, এতে তার ছাওয়াব হবে না। যদিও ফরয আদায়ের জন্য তা যথেষ্ট হবে এবং তা পুনরায় আদায় করার প্রয়োজন নেই’ (শরহুন ছহীহ মুসলিম, ১৪/২২৭ পৃ.)।
তবে এ কারণে চল্লিশ দিন শরীর অপবিত্র থাকে এমন কথা হাদীছ দ্বারা সাব্যস্ত নয়। এছাড়া পুরোটা সময় শরীর নাপাক থাকলে এ অবস্থায় তার জন্য ছালাত আদায়, কুরআন তিলাওয়াত, কুরআন স্পর্শ, কা‘বা ঘরের ত্বাওয়াফ ইত্যাদি জায়েয হত না। অথচ শরী‘আতের দৃষ্টিতে এ সকল ইবাদত করতে তার কোন বাধা নেই।
প্রশ্নকারী : আব্দুর রহীম, উত্তরা, ঢাকা।