শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২৩ পূর্বাহ্ন
উত্তর : কোন মুসলিম কুফুরী করলে তাকে কাফির সাব্যস্ত করার জন্য তাড়াহুড়া করা যাবে না। কারণ রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘কেউ তার ভাইকে কাফির বললে, তাদের দু’জনের একজনের উপর তা বর্তাবে’ (ছহীহ বুখারী, হা/৬১০৩, ৬১০৪)। অন্যত্র তিনি বলেন, ‘কেউ তার ভাইকে ‘কাফির’ বলে সম্বোধন করলে উভয়ের একজনের উপর তা ফিরে আসবে। যাকে কাফির বলা হয়েছে সে কাফির হলে ঠিক আছে, নতুবা কথাটি বক্তার উপরই ফিরে আসবে (ছহীহ বুখারী, হা/৬০৪৫; ছহীহ মুসলিম, হা/৬০; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফাৎওয়া নং-৮৫১০২)।

এক্ষেত্রে নিম্মোক্ত বিষয়গুলো লক্ষণীয়। শায়খ আল-উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘তাকফীর বা কাউকে কাফির সাব্যস্ত করার জন্য চারটি শর্ত থাকা অতীব যরূরী। প্রথম শর্ত: ‘তার দ্বারা সংঘটিত উক্ত কথা, কর্ম বা আদেশ অমান্য করা যে কুফুরী’ তা কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহর আলোকে স্পষ্ট প্রমাণিত হতে হবে’ (সূরা আল-আ‘রাফ : ৩৩; সূরা বানী ইসরাঈল : ৩৬)। দ্বিতীয় শর্ত: কাজটি যে মুকাল্লাফ তথা ভারার্পিত ব্যক্তি দ্বারা সংঘটিত হয়েছে তা প্রমাণিত হওয়া (সূরা বানী ইসরাঈল: ৩৬; ছহীহ বুখারী, হা/৬০৪৫; ছহীহ মুসলিম, হা/৬০, ৬১, ১১৯)। তৃতীয় শর্ত: তার উপর হুজ্জাত তথা দলীল বা প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। অর্থাৎ তাকে কুফর সম্পর্কে অবগত করা হয়েছে এমন হতে হবে (সূরা আন-নিসা: ১৬৫; সূরা আল-আন‘আম: ১৯; সূরা বানী ইসরাঈল: ১৫; সূরা আল-ক্বাছাছ: ৫৯; ছহীহ মুসলিম, হা/১৫৩)। চতুর্থ শর্ত: মানিঊত তাকফীর তথা কাফির সাব্যস্তকরণে বাঁধা সৃষ্টিকারী কারণ উপস্থিত না থাকা (মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে উছাইমীন, ৩/৫২-৫৫ পৃ.)।

কাফির সাব্যস্তকরণে বাঁধা সৃষ্টিকারী কারণসমূহ হল: (১) বাধ্য করা হলে। যদি তাকে জোরপূর্বক কুফুরী করতে বাধ্য করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে তার উপর কুফুরীর বিধান প্রযোজ্য হবে না (সূরা আন-নাহল: ১০৬)। (২) অজ্ঞতাপ্রসূত: শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) ও ইমাম ইবনুল ক্বাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে কাফির সাব্যস্ত করার জন্য, তার কাছে এ সম্পর্কে ইসলামের বাণী পৌঁছে থাকতে হবে। সে যদি তাকফীর বা কুফরের বিধান সম্পর্কে অবগত না হয়, সেক্ষেত্রে তার উপর কুফুরীর বিধান প্রযোজ্য হবে না (আল-ইসতিগাছাহ, ১/৩৮১; মাজমূঊল ফাতাওয়া ইবনু তাইমিয়্যাহ, ৩/২৩০ ও ৩৫/১৬৪-১৬৫ পৃ.; মাদারিজুস সালিকীন, ১/৩৬৭; আল-মুগনী, ৩/২৪৯; ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ২/৯৬-১০০; ফাতাওয়া ইবনে বায, ২/৫২৮-৫২৯ পৃ.)। (৩) তা’বীল বা ভুল ব্যাখ্যার কারণে। ইমাম শাফিঈ, শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ, হাফিয ইবনু হাজার আসক্বালানী ও শায়খ উছাইমীন (রাহিমাহুমুল্লাহ) বলেন, ‘ভুল বুঝার কারণে বা ভুল ব্যাখ্যার কারণে যদি কোন ব্যক্তি ভুলবশত কুফরের মধ্যে পড়ে যায়, সেক্ষেত্রে তার উপর কুফুরীর বিধান সাব্যস্ত করা যায় না (আল-উম্ম, ৬/২০৫; মিনহাজুস সুন্নাহ, ৫/২৩৯; আল-ইসতিগাছাহ, ১/২৮২-২৮৩; ফাৎহুল বারী, ১২/৩০৪; মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনু উছাইমীন, ২/১৩৬ পৃ.)।

তাছাড়া আক্বীদাগত কোন বিষয় প্রকাশ্যে অস্বীকার করলে সে কাফির হয়ে যাবে এবং তাওবাহ না করা পর্যন্ত তাকে কাফির বলা যাবে। যেমন আল্লাহর সাথে প্রকাশ্যে শিরক করা, প্রকাশ্যে কোন ফরয বিধানকে অস্বীকার করা, হারামকে হালাল মনে করা ইত্যাদি। অনুরূপভাবে আল্লাহ, রাসূল বা দ্বীনকে গালি দেয়া। যেমন শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) ঐ সমস্ত ব্যক্তিদের কাফির বলেছেন, ‘যারা বলে যে, কুরআন পরিবর্তিত হয়েছে, অথবা যারা বলে কুরআনের কিছু অংশ বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে (আস-সারিমূল মাসলুল, ১/৫৯০ পৃ.)। অনুরূপভাবে ইমাম মালিক (রাহিমাহুল্লাহ) ও ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) শী‘আ-রাফিযীদের সম্পর্কে বলেন, যারা আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর নির্দোষিতা ও পবিত্রতা সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করে অথবা তাঁকে গালিগালাজ করে আলেমদের ঐকমত্যানুযায়ী তারা কাফির (তাফসীরুল কুরতুবী, ১২/২০৫; শারহুল মুসলিম, ১৭/১১৭ পৃ.; শায়খ উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) রচিত ‘আল-ক্বাওলুল মুফীদ ‘আলা কিতাবিত তাওহীদ’ দ্র.)।


প্রশ্নকারী : রাসেল মাহমুদ, হাজীগঞ্জ।





প্রশ্ন (১৮) : দোকান বা বাড়ি ভাড়া দেয়ার সময় ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে এককালীন মোটা অংকের সিকিউরিটি নেয়ার প্রচলন আছে। এটা কি শরী‘আত সম্মত? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৭) : শুক্রবারে ‘আরাফার দিন হলে সেই হজ্জ ৭ হজ্জের সমান- এ কথা কি ঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২০) : মারফূ‘ আছার কাকে বলে? এই সকল হাদীছের উপর আমল করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৩) : জনৈক শিক্ষক জিপিএফ-এর সূদ বন্ধ করে দিয়েছেন। কারণ এখন সূদমুক্ত অফশন চালু করা হয়েছে। কিন্তু তার পিতা-মাতা এই বিষয় নিয়ে মনক্ষুন্ন হয়েছেন। তারা সেই সূদের টাকা চাচ্ছিলেন। কিন্তু শিক্ষকের ভয় হল, তিনি যদি আগেই মারা যান, আর সন্তানরা যদি সূদের টাকা আলাদা না করে তবে তিনি পাপী হবেন। তিনি কি অপরাধ করেছেন? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৭) : বাংলাদেশে ওশর প্রযাজ্য নয়। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২০) : ছালাতের মাঝে ভুলে এক পাশে সালাম দিলে, পরে মনে আসলে কী করণীয়? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৪) : ইসলামে দাড়ি রাখার প্রয়োজনীয়তা কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৬) :  জনৈক ব্যক্তি ইলিয়াসী তাবলীগ জামা‘আতের সাথে ১ চিল্লা সময় দিয়েছে। তারপর সালাফী আক্বীদার অনুসারী হয়েছে। কিন্তু তারা এখনো তাকে নিয়ে যেতে চায়। এক্ষেত্রে করণীয় কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৫) : ‘জুমু‘আহ মুবারক’- বলা কি জায়েয? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১১) : আমরা বন্ধুরা মিলে এক হোটেলে খাওয়ার পর কম বিল দিতাম আর হোটেল বয়কে ঘুষ দিতাম। বিষয়টি ভুল হয়েছে বুঝার পরে হোটেল মালিকের সাথে কথা বলায় ওনি আমাদের মাফ করে দিয়েছেন। এক্ষণে ঐ পরিমাণ টাকা কি পরিশোধ করতে হবে? না মাফ নেয়াই যথেষ্ট হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৯) : আমার স্বামী আমাকে পর্দা করতে বাধা দেয়, এমতাবস্থায় আমার করণীয় কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৮) : জুমু‘আর পূর্বে কত রাক‘আত এবং পরে কত রাক‘আত ছালাত পড়তে হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ