উত্তর : কুরআনুল কারীমকে আরবী ভাষায় অবতীর্ণ করা হয়েছে। তাই আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় তিলাওয়াত করা যাবে না। আর তা সম্ভবও নয়। কেননা এই ভাষার মধ্যে এমন এক অলৌকিক সৌন্দর্য আছে, যা অন্য কোন ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয় এবং এর অক্ষরের মধ্যে এমন একটি স্বতন্ত্রবোধ ও অনন্যতা আছে, যা অন্য কোন ভাষার অক্ষর দ্বারা যথার্থ উচ্চারণ করা একেবারেই অসম্ভব। তবে প্রয়োজনে অন্য ভাষায় অনুবাদ করা দোষণীয় নয় (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ৩/১২০-১২১ পৃ.)। ইমাম যারকাশী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, ‘আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষায় কুরআনুল কারীমকে তিলাওয়াত করা হারাম’ (আল-ইতক্বান, ২/১৭১ পৃ.)।
ইমাম ইবনু হাজার আল-হাইছামী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, কুরআনুল কারীমকে আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষার অক্ষরে লেখা হারাম’ (ইসলাম ওয়েব, ফৎওয়া নং-৩২৩০০)। শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা তাঁর পবিত্র কুরআনকে আরবী ভাষাতেই অবতীর্ণ করেছেন। এটি আরবী কুরআন। সুতরাং এটিকে আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় পাঠ করা জায়েয নয়। ছালাতের মধ্যে এবং বাইরে উভয় অবস্থাতেই কুরআনুল কারীম আরবীতেই তিলাওয়াত করতে হবে। তবে হ্যাঁ, প্রয়োজনে অনারবদের জন্য তাঁর অর্থকে অন্য ভাষায় অনুবাদ করা দরকার। যাতে তারাও কুরআনের মূলভাব ও বিধি-বিধান সম্পর্কে অবগত হতে পারে (ফাতাওয়া নূরুন ‘আলাদ দারব ইবনু বায, তাঁর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, https://binbay.org.sa/fatwas/29156)।
শায়খ মুহাম্মাদ ছালিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, ‘আরবী ভাষা ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় কুরআনকে প্রকাশ করা অবৈধ (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১৯১৪৯৭)।
শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ), শাযখ আব্দুর রাযযাক আফিফী (রাহিমাহুল্লাহ) এবং আরো অনেক বড় বড় আলিমের উপস্থিতিতে এ সম্পর্কে একটি আন্তর্জাতিক ইসলামী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। উক্ত সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোকে পরবর্তীতে একটি স্বতন্ত্র গ্রন্থরূপে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। যার নামকরণ করা হয়েছে, تحريم كتابة القرآن الكريم بحروف غير عربية ‘কুরআনুল কারীমকে আরবী ভাষার অক্ষর ব্যতীত অন্য ভাষায় লিপিবদ্ধ করা হারাম’ নামে। সেখানে বলা হয়েছে, উক্ত বিষয়ে অধ্যয়ন, আলোচনা ও মতবিনিময়ের পর ঊলামা পরিষদের ঐকমত্যানুসারে এই সিদ্ধান্ত সংগৃহীত হল যে, ‘ল্যাটিন অক্ষরে বা অন্য কোন ভাষার অক্ষরে কুরআনুল কারীমকে লিপিবদ্ধ করা হারাম’ (তাহরীমু কিতাবাতিল কুরআনিল কারীম বি হুরূফি গাইরি আরাবিয়্যাহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩৬)।
প্রশ্নকারী : আনোয়ার বিন সাদিক, গোদাগাড়ী, রাজশাহী।