প্রতারণা করা ও ধোঁকা দেয়া হারাম
খত্বীব : শায়খ ড. হুসাইন আলে শায়খ
অনুবাদ : শায়খ হারুনুর রশীদ ত্রিশালী আল-মাদানী*
[গত ০২ জুমাদিউল আখেরাহ ১৪৪২ হি. মোতাবেক ১৫ জানুয়ারী, ২০২১ তারিখের ‘মসজিদে নববী, মদীনাতুল মুনাওয়ারা’-এর জুমু‘আর খুত্ববার বঙ্গানুবাদ]
আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর উপর ছালাত ও সালামের পরে সম্মানিত খত্বীব বলেছেন, হে আল্লাহর বান্দাগণ! সামাজিক অবক্ষয় রোধ ও বিপজ্জনক পরিস্থিতি মোকাবেলায় ইসলাম বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি দিয়েছে। এ মূলনীতিগুলোর অন্যতম হচ্ছে, ‘জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে ও ক্ষেত্রে সব ধরনের প্রতারণা ও দুর্নীতি নিষিদ্ধ’।
যে কোন কাজে দুর্নীতি ও প্রতারণা করা নিন্দনীয় ও গর্হিত অপরাধ এবং তা অন্যতম কাবীরা গুনাহ! এতে প্রকৃত সত্যের লঙ্ঘন ও বিকৃতি সাধন হয়, জাতির সাথে খেয়ানত করা হয় এবং আমানত বিনষ্ট ও প্রকৃত অবস্থার বিকৃতি ঘটে! এটা বিপজ্জনক ব্যাধি এবং যেখানে তা দেখা যায় সেখানেই তার কুফল দ্রুত বিস্তার লাভ করে!
যে জাতির মাঝে দুর্নীতি ও ধোঁকা বিস্তার লাভ করে, তা সেই জাতির অগ্রগতিকে দাবিয়ে রাখে, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্থ করে! ধ্বংস, ক্ষতি ও ব্যর্থতা ডেকে আনে! মহান আল্লাহ বলেন, وَ لَا تَبۡخَسُوا النَّاسَ اَشۡیَآءَہُمۡ وَ لَا تَعۡثَوۡا فِی الۡاَرۡضِ مُفۡسِدِیۡنَ ‘লোকদেরকে তাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিও না এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়িও না’ (সূরা আশ-শু‘আরা : ১৮৩)। অনত্র মহান আল্লাহ বলেন, اَوۡفُوا الۡکَیۡلَ وَ لَا تَکُوۡنُوۡا مِنَ الۡمُخۡسِرِیۡنَ ‘তোমরা মাপে পূর্ণ মাত্রায় দিবে; যারা মাপে কম দেয় তোমরা তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না’ (সূরা আশ-শু‘আরা : ১৮১)। মহান আল্লাহ বলেন, وَیۡلٌ لِّلۡمُطَفِّفِیۡنَ ‘মন্দ পরিণাম তাদের জন্য যারা মাপে কম দেয়’ (সূরা আল মুতাফ্ফিফীন : ১)।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا ‘যে ব্যক্তি আমাদেরকে ধোকা দেয়, সে আমাদের দলভুক্ত নয়’।[১]
হে আল্লাহর বান্দাগণ! উল্লেখিত মূলনীতিটি যে সকল ক্ষেত্রে প্রযোজ্য তার অন্যতম হচ্ছে, ব্যবসায়িক কার্যক্রম ও অর্থনৈতিক লেনদেন; যা বস্তুনিষ্ঠ বৈধ নীতিমালার উপর প্রতিষ্ঠিত হওয়া আবশ্যক যেমন : সততা, আমানতদারিতা, স্বচ্ছতা ও সুস্পষ্টতা। মহান আল্লাহ বলেন, اِنَّ اللّٰہَ یَاۡمُرُکُمۡ اَنۡ تُؤَدُّوا الۡاَمٰنٰتِ اِلٰۤی اَہۡلِہَا ‘নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন আমানত তার হক্বদারকে ফিরিয়ে দিতে’ (সূরা আন-নিসা : ৫৮)। মহান আল্লাহ বলেন, یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰہَ وَ کُوۡنُوۡا مَعَ الصّٰدِقِیۡنَ ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর তাক্বওয়া অবলম্বন কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক’ (সূরা আত-তাওবাহ : ১১৯)। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,
اَلْبَيِّعَانِ بِالْخِيَارِ مَا لَمْ يَتَفَرَّقَا فَإِنْ صَدَقَا وَبَيَّنَا بُوْرِكَ لَهُمَا فِيْ بَيْعِهِمَا وَإِنْ كَتَمَا وَكَذَبَا مُحِقَتْ بَرَكَةُ بَيْعِهِمَا
‘ক্রেতা ও বিক্রেতার জন্য উভয়ের পৃথক না হওয়া পর্যন্ত অবকাশ থাকবে, তারা উভয় যদি সততা অবলম্বন করে এবং উভয়ে নিজ নিজ বস্তুর দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করে দেয়, তাহলে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত দান করা হবে। আর যদি তারা উভয় দোষ-ত্রুটি গোপন রাখে এবং মিথ্যার আশ্রয় নেয়, তাহলে উক্ত ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত মুছে দেয়া হবে’।[২]
আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও প্রতারণা করা বড় ধরনের অপরাধ। বিভিন্ন কৌশল ও ডান-বাম যেকোন উপায়েই হোক না কেন, তা অন্যায় ও অবৈধভাবে সম্পদ ভোগ করার শামিল এবং জনগণের সম্পদ আত্মসাৎ করার নামান্তর! মহান আল্লাহ বলেন, وَ لَا تَاۡکُلُوۡۤا اَمۡوَالَکُمۡ بَیۡنَکُمۡ بِالۡبَاطِلِ ‘আর তোমরা নিজেদের মধ্যে পরস্পরের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৮৮)। মহান আল্লাহ বলেন, یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَاۡکُلُوۡۤا اَمۡوَالَکُمۡ بَیۡنَکُمۡ بِالۡبَاطِلِ ‘হে মুমিনগণ! তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের ধন-সম্পত্তি গ্রাস করো না; কেবল পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা কর তা বৈধ’ (সূরা আন-নিসা : ২৯)।
হাদীছে এসেছে, আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একদা খাদ্যবস্তুর একটি স্তূপের নিকট দিয়ে যাওয়ার সময় তার ভিতরে হাত ঢুকিয়ে দিলেন। তিনি স্তূপের ভিতরে তাঁর হাতে ভিজা অনুভব করলেন। অতঃপর তিনি বললেন, হে খাদ্যের মালিক! এটা কী? সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! বৃষ্টির পানিতে এগুলো ভিজে গিয়েছিল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, ভিজাগুলোকে স্তূপের উপরে কেন রাখলে না, যাতে লোকেরা তা দেখতে পায়? যে ব্যক্তি প্রতারণা করবে, আমার সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই।[৩]
পণ্যের যেকোন দোষ-ত্রুটি গোপণ রাখা প্রতারণার অন্তর্ভুক্ত। তেমনিভাবে মূল বস্তু বা পণ্যের উপাদানের নি¤œমান, পরিমাণ বা ওজনে কম দেয়া অথবা কোয়ালিটি বা বৈশিষ্ট্যে হেরফের করা ইত্যাদি সবই ধোঁকার পর্যায়ভুক্ত। এ ধরনের ধোঁকা, যা নিষিদ্ধ; তা বুঝার সূত্র হল- ‘পণ্যের মালিকের এটা জানা থাকা যে, পণ্যে যেসব দোষ বা ত্রুটি আছে তা যদি ক্রেতা জানে, তবে সে পূর্ব নির্ধারিত মূল্যে ক্রয় করবে না’। ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘সাধারণত কেনা-বেচায় প্রতারণা হয়ে থাকে দোষ-ত্রুটি গোপণ করা ও পণ্যের গুণগত মান অস্পষ্ট রাখার মাধ্যমে, যেমন : পণ্যের উপরের অংশ ভিতরের অংশের চেয়ে ত্রুটিমুক্ত রাখা!’ অতএব একজন মুসলিমের উচিত আল্লাহকে ভয় করা, মুসলিম ভাইদের কল্যাণ কামনা করা ও তাদেরকে ধোঁকা দেয়া হতে বিরত থাকা এবং তাদের ধন-সম্পত্তি অপকৌশলে গ্রাস না করা।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, اَلْمُسْلِمُ أَخُو الْمُسْلِمِ وَلَا يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ بَاعَ مِنْ أَخِيْهِ بَيْعًا فِيْهِ عَيْبٌ إِلَّا بَيَّنَهُ لَهُ ‘একজন মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই; অতএব কোন মুসলিমের জন্য তার ভাইয়ের কাছে পণ্যের ত্রুটি বর্ণনা না করে তা বিক্রয় করা বৈধ নয়’।[৪] উক্ববা ইবনু আমের (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন,لَا يَحِلُّ لِاِمْرِئٍ يَبِيْعُ سِلْعَةً يَعْلَمُ أَنَّ بِهَا دَاءً إِلَّا أَخْبَرَهُ ‘স্বীয় পণ্যে ত্রুটি রয়েছে তা জানার পরও ক্রেতাকে না জানিয়ে বিক্রি করা কারো জন্যই বৈধ নয়’।[৫]
হে মুসলিম ভাইসকল! মুসলিম-অমুসলিম, ছোট-বড় সব ধরনের মানুষের সাথে প্রতারণা করা হারাম। সততা ও আমানতদারিতার প্রতি ইসলামের সাধারণ আদেশ এবং ধোঁকা ও চক্রান্ত নিষেধ মর্মে সাধারণ দলীল থেকে তার প্রমাণ পাওয়া যায়। মহান আল্লাহ বলেন, یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَخُوۡنُوا اللّٰہَ وَ الرَّسُوۡلَ وَ تَخُوۡنُوۡۤا اَمٰنٰتِکُمۡ وَ اَنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা জেনে-বুঝে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের খেয়ানত করো না এবং তোমাদের পরস্পরের আমানতেরও খেয়ানত করো না’ (সূরা আল-আনফাল : ২৭)। আর সাধারণভাবে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا ‘যে ব্যক্তি আমাদেরকে ধোঁকা দেয়, সে আমাদের দলভুক্ত নয়’।[৬] তাছাড়া ধোঁকার পরিণাম ভয়াবহ। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا وَالْمَكْرُ وَالْخِدَاعُ فِي النَّارِ ‘যে ব্যক্তি আমাদেরকে ধোঁকা দেয়, সে আমাদের দলভুক্ত নয়। আর ধোঁকা ও প্রতারণার পরিণতি জাহান্নাম![৭]
অতএব হে মুসলিমগণ! আপনারা আল্লাহকে ভয় করে চলুন এবং ইসলামের সৌন্দর্যকে আঁকড়ে ধরুন। ইসলামের উত্তম আদর্শ ও মহৎ গুণ লালন করে সে অনুযায়ী আচরণ করুন এবং প্রকাশ্য ও গোপনে রবকে সমীহ করে চলুন। আর আল্লাহর এই বাণীকে স্মরণ রাখুন। মহান আল্লাহ বলেন,
وَیۡلٌ لِّلۡمُطَفِّفِیۡنَ - الَّذِیۡنَ اِذَا اکۡتَالُوۡا عَلَی النَّاسِ یَسۡتَوۡفُوۡنَ - وَ اِذَا کَالُوۡہُمۡ اَوۡ وَّزَنُوۡہُمۡ یُخۡسِرُوۡنَ - اَلَا یَظُنُّ اُولٰٓئِکَ اَنَّہُمۡ مَّبۡعُوۡثُوۡنَ - لِیَوۡمٍ عَظِیۡمٍ - یَّوۡمَ یَقُوۡمُ النَّاسُ لِرَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ
‘মন্দ পরিণাম তাদের জন্য যারা মাপে কম দেয়, যারা লোকের নিকট হতে নেয়ার সময় পূর্ণ মাত্রায় গ্রহণ করে এবং যখন তাদের জন্য মেপে অথবা ওজন করে দেয়, তখন কম দেয়। তারা কি চিন্তা করে না যে, তাদেরকে পুনরুত্থিত করা হবে। সে মহান দিবসে; যেদিন সমস্ত মানুষ জগৎসমূহের প্রতিপালকের সামনে দাঁড়াবে’ (সূরা আল মুতাফ্ফিফীন : ১-৬)।
দ্বিতীয় খুত্ববাহ
আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর উপর ছালাত ও সালামের পরে সম্মানিত খত্বীব বলেছেন, প্রিয় মুসলিম ভাই! আপনি আপনার অপর মুসলিম ভাইদের প্রতি কল্যাণকামী, সুহৃদ, সদয়াচারনকারী ও দয়ালু হোন। মহান আল্লাহ বলেন, اِنَّمَا الۡمُؤۡمِنُوۡنَ اِخۡوَۃٌ ‘মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই’ (সূরা আল-হুজুরাত : ১০)। আপনি তাদের জন্য ভাল ও মঙ্গল কামনা করুন এবং তাদেরকে ধোঁকা দেয়া থেকে দূরে থাকুন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, لَا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى يُحِبَّ لِأَخِيْهِ مَا يُحِبُّ لِنَفْسِهِ ‘তোমাদের মধ্যে কেউ প্রকৃত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে তার ভাইয়ের জন্য সেটাই পসন্দ করবে যা তার নিজের জন্য সে পসন্দ করে’।[৮]
পরিশেষে খত্বীব মহোদয় আল্লাহর প্রশংসা এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর উপর দরূদ পাঠ করেন। মুসলিম উম্মাহ ও ইসলামের জন্য দু‘আ চাওয়ার মাধ্যমে খুত্ববাহ সমাপ্ত করেন।
* পি-এইচ.ডি গবেষক, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সঊদী আরব এবং বাংলা আলোচক ও জুমু‘আর খুৎবার লাইভ অনুবাদক, মসজিদে নববী।
তথ্যসূত্র :
[১]. ছহীহ মুসলিম, হা/১০২; আবূ দাঊদ, হা/৩৪৫২; ইবনু মাজাহ, হা/২২২৪; তিরমিযী, হা/১৩১৫; মিশকাত, হা/২৮৬০।
[২]. ছহীহ বুখারী, হা/২০৭৯, ২০৮২; ছহীহ মুসলিম, হা/১৫৩২; মিশকাত, হা/২৮০২।
[৩]. ছহীহ মুসলিম, হা/১০২; মিশকাত, হা/২৮৬০।
[৪]. ইবনু মাজাহ, হা/২২৪৬; মুসতাদরাক হাকিম, হা/২১৫২, সনদ ছহীহ।
[৫]. ছহীহ বুখারী, ‘ক্রয়-বিক্রয়’ অধ্যায়, ‘ত্রেুতা-বিক্রেতা কর্তৃক বিক্রিত বস্তুর কোন কিছু লুকিয়ে না রেখে পণ্যের পূর্ণ অবস্থা বলে দেয়া এবং একে অন্যের কল্যাণ চাওয়া’ অনুচ্ছেদ।
[৬]. ছহীহ মুসলিম, হা/১০২; আবূ দাঊদ, হা/৩৪৫২; ইবনু মাজাহ, হা/২২২৪; তিরমিযী, হা/১৩১৫; মিশকাত, হা/২৮৬০।
[৭]. ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৫৬৭; ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল কাবীর, হা/১০০৮৬; সনদ ছহীহ, সিলসিলা ছহীহাহ, হা/১০৫৮।
[৮]. ছহীহ বুখারী, হা/১৩; তিরমিযী, হা/২৫১৫।
প্রসঙ্গসমূহ »:
খুত্ববাতুল হারামাইন