উত্তর : ছোট দল, নির্দিষ্ট গ্রুপ, মাজলিস বা আসরকে হালাক্বা বলে। পারিভাষিক অর্থে হালাক্বাহ বলতে বুঝায়, ‘যিকিরের উদ্দেশ্যে একই স্বরে সম্মিলিতভাবে কিছু উচ্চারণ করা, যার মধ্যে তারা একে অপরের সঙ্গে সুর মিলিয়ে থাকে’ (আল-মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিয়্যাহ আল-কুয়েতিয়্যাহ, ২১/২৫২, ২২০ পৃ.; আল-ফুতূহাতুর রাব্বানিয়্যাহ, ১/১৮ পৃ.)। ইমাম ইবনু কাছীর (রাহিমাহুল্লাহ) ও ইমাম ত্বাবারী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, এই বিদ‘আত সর্বপ্রথম ছাহাবীদের যুগে দেখা দিয়েছিল। কিন্তু সেই সময় কুরআন ও ছহীহ হাদীছের একনিষ্ঠ আনুগত্যকারী ছাহাবীগণ এই বিদ‘আতকে কঠোরভাবে দমন করেছিলেন (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ, ৮/৫৫৮ পৃ.; আল-বিদ‘আহ ওয়ান নূহা আনহা, পৃ. ১১)। পরবর্তীতে মু‘তাযিলাহ আক্বীদায় বিশ্বাসী আব্বাসী যুগের শাসক আল-মামুন (১৭০-২১৮ হি.) ২১৬ হিজরীতে বাগদাদের প্রতিনিধি আবূ ইসহাক ইবনু ইবরাহীমকে সম্মিলিত যিকির চালু করার আদেশ করেছিলেন (আল-বিদায়াহ ওয়ান-নিহায়াহ, ১০/২৮২ পৃ.; তারীখুল উমাম ওয়াল মুলুক, ১০/২৮১ পৃ.)। অতঃপর রাফেযী-শী‘আ ও ছূফীবাদে বিশ্বাসী আলিমগণ এই নব্য আবিষ্কৃত পদ্ধতিকে মুসলিম সমাজের মধ্যে প্রচার ও প্রসার করতে সহায়তা করেন। তুর্কী ও ইরানী প্রভাবের ফলে আজ তা আমাদের সংস্কৃতিতেও ইবাদত হয়ে ঢুকে পড়েছে (দিরাসাতুন ফিল আহ্ওয়াহ, পৃ. ২৮২)।
ইমাম মালিক, শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ, ইমাম শাত্বিবী, আবূ নাঈম আল-আসফাহানী, হাফিয ইবনু হাজার আসক্বালানী, ‘নবী (ﷺ), ছাহাবীগণ ও তাবিঈগণ থেকে এই প্রকৃতির সম্মিলিত যিকিরের কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। সালাফে ছালিহীন এই প্রকারের সম্মিলিত স্বরে যিকির করাকে বিদ‘আত বলেছেন (আল-হাওয়াদিছ ওয়াল বিদ‘আ, পৃ. ৬২-৬৩, ৬৮, ১৬৬; আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, ৩/৩০১ পৃ.; ফাতাওয়া শাত্বিবী, পৃ. ২০৬-২০৮; আল-ই‘তিছাম, ১/৪৬১ পৃ.; হিলয়াতুল আওলিয়া, ৩/৩১৩ পৃ.; ফাৎহুল বারী, ১১/২৫০ পৃ.; তুহফাতুল আহওয়াযী, ৯/৩১৪ পৃ.; ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ২৪/২৬৮ পৃ.)।
প্রশ্নকারী : রাসেল বিন ইসমাঈল, জামালপুর।