উত্তর : অবশ্যই পাওয়া যাবে। রাসূল (ﷺ) বলেন,
صَلَاةٌ فِيْ مَسْجِدِيْ أَفْضَلُ مِنْ أَلْفِ صَلَاةٍ فِيْمَا سِوَاهُ إِلَّا الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ وَصَلَاةٌ فِي الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ أَفْضَلُ مِنْ مِائَةِ أَلْفِ صَلَاةٍ فِيْمَا سِوَاهُ.
‘মসজিদুল হারাম ব্যতীত অন্যান্য মসজিদের ছালাত অপেক্ষা আমার মসজিদের ছালাত হাযার গুণ শ্রেষ্ঠ (ফযীলতপূর্ণ)। অন্যান্য মসজিদের ছালাতের তুলনায় মসজিদুল হারামের ছালাত এক লক্ষ গুণ উত্তম (ফযীলতপূর্ণ)’ (ছহীহ বুখারী, হা/১১৯০; ছহীহ মুসলিম, হা/১৩৯৪-১৩৯৫)। উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ), শায়খ মুহাম্মাদ ইবনু ছালিহ আল-উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) ও শায়খ ছালিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, ‘মসজিদুল হারাম এবং মসজিদে নববীর পরবর্তী সংযোজনগুলো বা আজও যে অংশগুলো ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি করা হচ্ছে, সেগুলো একই নিয়মের আওতাধীন। আল্লাহর অশেষ অনুগ্রহে মূল মসজিদে যেমন ছাওয়াব বহুগুণ বৃদ্ধি করা হয়, ঠিক তেমনি এখানে ছালাত আদায় করলেও বহুগুণ বেশি নেকী অর্জিত হয়। যদিও এই বিষয়ে মতানৈক্য রয়েছে, তবে অধিকাংশ আলেমের মতানুযায়ী ‘নেকীর দিক থেকে মূল এবং সম্প্রসারিত স্থানের বিধান একই। মূল মসজিদে ছালাত আদায় করা হোক কিংবা পরবর্তীতে সম্প্রসারিত স্থানে, নেকীর পরিমাণ একই। অর্থাৎ মসজিদে নববী বা মসজিদে হারামের যে অংশেই ছালাত আদায় করা হোক না কেন, ১ হাজার গুণ বা ১ লাখ গুণ বেশি নেকী পাওয়া যাবে’ (মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া মাক্বালাত ইবনে বায, ১২/২৩১; মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল ইবনে উছাইমীন, ২৩/৪২২; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১৩৬৫৭৮, ৪৫৭৮১৮)।
ইবনু রজব হাম্বালী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘মসজিদে নববী বা মসজিদে হারামের যে অংশসমূহ বৃদ্ধি করা হয়েছে, সেগুলোর গুরুত্ব-মাহাত্ম্য ও ছাওয়াবের পরিমাণ মূল মসজিদের সমতুল্য-ই। এই ব্যাপারে সালাফে ছালিহীনের কেউ কোন মতপার্থক্য করেননি। কেবল পরবর্তীতে কিছু আলেম মতপার্থক্য করেছেন। ‘কিতাবু আখবারিল মাদীনা’ গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে যে, যদি মসজিদে নববী বৃদ্ধি হতে হতে ‘জাবানাহ’ কিংবা ‘যুল হুলাইফাহ’ পর্যন্তও বিস্তীর্ণ হয়ে যায়, তবুও সেটি মসজিদের মূল অংশ হিসাবেই পরিগণিত হবে’ (ফাৎহুল বারী ইবনে রজব, ২/৪৭৯ পৃ.)। আর রাসূল (ﷺ)-এর যুগে মসজিদে হারাম বা মসজিদে নববীর যে আয়তন ছিল, চাহিদা অনুযায়ী যুগে যুগে তার বৃদ্ধিকরণ করা হয়েছে। ইবনে আবিদীন ও শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুমুল্লাহ) বলেছেন, ‘মূল ও প্রসারিত অংশের ছাওয়াবের পরিমাণ একই। প্রকাশ থাকে যে, মসজিদে নববী বিভিন্ন সময়ে প্রসারিত করা হয়েছে। উমার ফারুক্ব (রাযিয়াল্লাহু আনহু), উছমান ইবনু আফফান (রাযিয়াল্লাহু আনহু), ওয়ালীদ অতঃপর মাহদীর যুগে সম্প্রসারিত করা হয়েছে। অতিরিক্ত অংশটি যদি মূল মসজিদের সমতুল্য না হত তাহলে নিশ্চয় খলীফাগণ বৃদ্ধি করতেন না। এতে কোন সন্দেহ নেই যে, বর্তমানে বিস্তৃত অংশ সহ সমস্ত অংশটাকেই মসজিদে নববী বলা হয়। সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মতানুযায়ী, উদ্বৃত্ত অংশে ছালাত আদায় করলেও হাদীছে বর্ণিত অতিরিক্ত নেকী পাওয়া যাবে’ (আল-মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিয়্যাহ, ৩৭/২৫১ পৃ.)।
প্রশ্নকারী : মুহাম্মাদ আতিক, বগুড়া।