উত্তর : ‘হিদায়াত’ শব্দটি ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়। যেমন, (১) শুধু পথ প্রদর্শন করা। মানুষকে সঠিক পথের সন্ধান বলে দেয়া। এর জন্য যরূরী নয় যে, যাকে পথ দেখানো হয় সে গন্তব্যস্থলে পৌঁছতেই হবে। (২) পথ দেখিয়ে গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দেয়া। প্রথম অর্থের দিক থেকে রাসূল (ﷺ) সহ সমস্ত নবী যে হাদী বা পথপ্রদর্শক ছিলেন এবং বাহ্যিক হিদায়াত যে তাদের ক্ষমতাধীন ছিল, তা বলাই বাহুল্য। কেননা, এই হিদায়াতই ছিল তাদের পরম দায়িত্ব ও কর্তব্য। তাঁরা মানুষকে হিদায়াতের পথ অর্থাৎ তাওহীদ, রিসালাত, ইবাদত এবং ইসলামের পথ দেখিয়েছেন। এটা তাদের ক্ষমতাধীন না হলে তারা নবুওয়াত ও রিসালাতের কর্তব্য পালন করবেন কীরূপে?
প্রথম আয়াতে বলা হয়েছে যে, রাসূল (ﷺ) হিদায়াতের উপর ক্ষমতাশীল নন। এর দ্বারা দ্বিতীয় অর্থের হিদায়াত বোঝানো হয়েছে অর্থাৎ অন্তরে ঈমান প্রবেশ করিয়ে দেয়া, গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দেয়া। উদ্দেশ্য এই যে, প্রচার ও শিক্ষার মাধ্যমে আপনি কারও অন্তরে ঈমান সৃষ্টি করে দিবেন এবং মুমিন বানিয়ে দিবেন, এটা আপনার কাজ নয়। এটা সরাসরি আল্লাহ তা‘আলার ক্ষমতাধীন। হাদীছে এসেছে, এই আয়াত রাসূল (ﷺ)-এর চাচা আবূ তালিব সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। রাসূল (ﷺ)-এর আন্তরিক বাসনা ছিল যে, সে যে কোনরূপেই ইসলাম গ্রহণ করুক। এর প্রেক্ষাপটে রাসূল (ﷺ)-কে বলা হয়েছে যে, কাউকে মুমিন-মুসলিম করে দেয়া আপনার ক্ষমতাধীন নয় (ছহীহ বুখারী, হা/৩৬৭১; ছহীহ মুসলিম, হা/২৪)।
প্রশ্নকারী : আফফানুল হুদা, খুলনা।