উত্তর : এ ধরনের কার্যাদি শরী‘আতসম্মত নয়। মসজিদে কারুকার্য করা নিষিদ্ধ। কেননা এতে ছালাতের মধ্যে মুছল্লীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ফলে সে অমনোযোগী হয়ে যায় (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমা, ৫ম খণ্ড, পৃ. ১৯১; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১২৭৯৮৭)। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, لَا تَقُوْمُ السَّاعَةُ حَتَّى يَتَبَاهَى النَّاسُ فِي الْمَسَاجِدِ ‘লোকেরা মসজিদ নিয়ে পরস্পর গৌরব ও অহঙ্কারে মেতে না উঠা পর্যন্ত ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে না’ (আবূ দাঊদ, হা/৪৪৯)। আবূ দারদা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন,
إِذَا زُخْرَفْتُمْ مَسَاجِدَكُمْ وَحَلَّيْتُمْ مَصَاحِفَكُمْ فَالدَّمَارُ عَلَيْكُمْ
‘যখন তোমরা তোমাদের মসজিদসমূহকে চাকচিক্য ও রংচঙ করবে এবং তোমরা তোমাদের পবিত্র গ্রন্থগুলোকে (অর্থাৎ কুরআনকে) অলংকৃত করবে, তখন তোমাদের ধ্বংস অবশ্যম্ভাবী’ (সিলসিলা ছহীহাহ, হা/১৩৫১; ছহীহুল জামে‘, হা/৫৮৫; কিতাবুয যুহুদ, আছার নং-৭৯৭)। আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা একটি কারুকার্য খচিত চাদর পরিধান করে ছালাত আদায় করছিলেন। ছালাতের মধ্যেই চাদরের কারুকার্যের প্রতি তাঁর দৃষ্টি পড়ল। ছালাত শেষে তিনি বললেন,
إذْهَبُوْا بِخَمِيْصَتِيْ هَذِهِ إِلَى أَبِيْ جَهْمٍ وَأْتُوْنِيْ بِأَنْبِجَانِيَّةِ أَبِيْ جَهْمٍ فَإِنَّهَا أَلْهَتْنِيْ آنِفًا عَنْ صَلَاتِيْ
‘আমার এই চাদরটা আবূ জাহমের নিকট নিয়ে যাও এবং তার কাছ থেকে আমবিজানিয়্যাহ (কারুকার্য ছাড়া মোটা চাদর) নিয়ে এসো। এটা তো আমাকে ছালাত হতে অমনোযোগী করে দিচ্ছিল’ (ছহীহ বুখারী, হা/৩৭৩; ৭৫২, ৫৮১৭)।
ফক্বীহদের বক্তব্য অনুযায়ী ওয়াক্বফের অর্থ দ্বারা মসজিদকে কারুকার্য ও চাকচিক্য করা হারাম’ (মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিয়্যাহ আল-কুয়েতিয়্যাহ, ১১তম খণ্ড, পৃ. ২৭৫ ও ২৩তম খণ্ড, পৃ. ২১৭-২১৮)। ইমাম মুনাবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘মসজিদ কারুকার্য ও চাকচিক্য করা নিষিদ্ধ। কেননা এগুলো একাগ্রতা ও একনিষ্ঠতা বিনষ্ট করে, অন্তরকে ব্যতিব্যস্ত করে এবং আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে’ (ফায়যুল ক্বাদীর, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩৬৭)।
প্রশ্নকারী : শহীদুল ইসলাম, ধামরাই, ঢাকা।