উত্তর : প্রথমতঃ যদি বাবা সম্পূর্ণ হারাম উপায়ে (যেমন সূদ, ঘুষ, জুয়া, চুরি, প্রতারণা ইত্যাদি) উপার্জন করেন, তবে সেই টাকা তাঁর সন্তানের জন্যও হারাম হবে। দ্বিতীয়তঃ যদি বাবার উপার্জনে হালাল ও হারাম উভয় মিশ্রিত থাকে, তাহলে সন্তানের জন্য সেই টাকা গ্রহণ করা কিছুটা শিথিল হবে, তবে যতটুকু সম্ভব তা এড়িয়ে চলা উত্তম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘নিশ্চয় হারাম দ্বারা লালিত দেহ জান্নাতে প্রবেশ করবে না’ (তিরমিযী, হা/৬১৪)। কিন্তু যদি আপনি সম্পূর্ণরূপে নিরুপায় হন অর্থাৎ আপনার কাছে কোন বিকল্প নেই এবং আপনার মৌলিক চাহিদা (খাবার, বাসস্থান ইত্যাদি) বাবার টাকা ছাড়া পূরণ করা সম্ভব নয়, তাহলে শুধু প্রয়োজনীয় পরিমাণ টাকা ব্যবহার করা যাবে। ইমাম ইবনু তাইমিয়াহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সম্পূর্ণ অসহায় এবং কোন হালাল উপার্জনের ব্যবস্থা করতে পারছে না, সে প্রয়োজনীয় পরিমাণ হারাম খাবার গ্রহণ করতে পারবে, তবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত গ্রহণ করা যাবে না।
অর্থাৎ সম্পূর্ণ নিরুপায় হলে মৌলিক প্রয়োজনের জন্য হারাম টাকা ব্যবহার করা অনুমোদিত, তবে বিলাসিতার জন্য নয়। পরে সেই টাকা ফেরত দিলে বা গরীবদের দান করলে কি তা হালাল হবে? যদি আপনার বাবার টাকা সম্পূর্ণ হারাম উপার্জনের হয়, তবে তা ব্যবহারের কারণে আপনি গুনাহগার হতে পারেন, তবে পরে ফেরত দেয়া বা দান করা আপনার দায়িত্ব নয়, বরং এটি বাবার দায়িত্ব। কিন্তু যদি আপনি ইতোমধ্যে সেই টাকা ব্যবহার করে ফেলেন এবং পরে এর ক্ষতিপূরণ করতে চান, তাহলে গরীবদের দান করাই উত্তম। ইবনু কুদামা (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যদি কেউ হারাম সম্পদ থেকে মুক্তি পেতে চায়, তাহলে তা দান করা উত্তম, তবে তা নিজের জন্য হালাল হয়ে যাবে না’ (আল-মুগনী, ৪/৩১৩ পৃ.)।
প্রশ্নকারী: রোহান, যশোর।