উত্তর : যাদু, জ্যোতিষশাস্ত্র, গণক, মিথ্যা সম্বলিত, বিদ‘আতীমূলক, কুফরীমূলক ও বিভ্রান্তিকর গ্রন্থসমূহ বিনষ্ট করা বা আগুনে পুড়িয়ে ফেলা অপরিহার্য। মুসলিমদের উচিত এ সম্পর্কে ভয় করা এবং কুফরীমূলক গ্রন্থসমূহ ক্রয়-বিক্রয় না করা। কারণ এর মধ্যে কোন কল্যাণ নেই। তাই একে ধ্বংস করা অপরিহার্য (আল-মাজমূঊ লিন নববী, ৯/২৫৩; ফাতাওয়া নূরুন আলাদ র্দাব, ১/১৯৪ পৃ.; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১৫২১৯২)। ইমাম ইবনুল ক্বাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, لا ضمان في تحريق الكتب المضلة وإتلافها ‘বিভ্রান্তিকর গ্রন্থসমূহ পুড়িয়ে ফেললে বা বিনষ্ট করলে কোন কৈফিয়ত তলব করা হবে না’ (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১৫২১৯২)।
আবূ বকর আল-মাররুযিয়্যু (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘আমি ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল (রাহিমাহুল্লাহ)-কে বললাম, আমি একটি বই ধার স্বরূপ নিয়েছি, যার মধ্যে কিছু নিকৃষ্ট, খারাপ, বাজে জিনিস আছে। এ সম্পর্কে আপনার মতামত কী? আমি সেটাকে ছিঁড়ে বিনষ্ট করব, না-কি আগুনে পুড়িয়ে ফেলব? উত্তরে তিনি বললেন, হ্যাঁ, তুমি সেটাকে আগুনে পুড়িয়ে ফেলো’ (আস-সুন্নাহ, ৩/৫১০; আল-আদাবুশ শারঈয়্যাহ, ১/২২৯)। ‘নবী (ﷺ) উমার ফারুক্ব (ﷺ)-এর হাতে একটি গ্রন্থ দেখতে পেলেন, যা তিনি তাওরাত থেকে লিখেছিলেন এবং সেটি কুরআনের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় তিনি খুব খুশি হয়েছিলেন। এটি দেখে রাসূল (ﷺ)-এর চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেল। সঙ্গে সঙ্গে উমার ফারুক্ব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) একটি চুলার কাছে গিয়ে সেটিকে নিক্ষেপ করলেন’ (ইরওয়াউল গালীল, হা/১৫৮৯; মুসনাদে আহমাদ, ৩/৩৮৭; আস-সুন্নাহ, ১/২৭; শারহুস সুন্নাহ, ১/২৭০; ইবনু আবী শাইবাহ, ৫/৩১৩; শু‘আবুন লিল বাইহাক্বী, ১/৭৭ পৃ.)। তাহলে একবার ভেবে দেখুন তো! তাঁর মৃত্যুর পর কুরআন ও ছহীহ হাদীছের সঙ্গে সাংঘর্ষিক যে সমস্ত গ্রন্থ লেখা হয়েছে, সেগুলো তিনি দেখতে পেলে কী করতেন? (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১৫২১৯২)। মদের পাত্র, গান-বাজনার সামগ্রী যেমন ভেঙে ফেলা দোষনীয় নয়, ঠিক তেমনি এই সমস্ত গ্রন্থ পুড়িয়ে ফেলা বা বিনষ্ট করাও দোষনীয় নয়। বরং এটি অধিক উত্তম। কারণ এর ক্ষতি ঐ সমস্ত সামগ্রীর ক্ষতির তুলনায় অধিক ভয়াবহ! (আত-তুরুকুল হুকমিয়্যাহ ফিস সিয়াসাতিশ শারঈয়্যাহ, পৃ. ৩২২)।
প্রশ্নকারী : মুহাম্মাদ নাঈম ইসলাম, বরিশাল।