সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ০২:৩৭ অপরাহ্ন
উত্তর : কুরআনে অবিশ্বাসীদের জন্য জাহান্নামের শাস্তি সম্পর্কে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে যে, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আর যারা অবিশ্বাস করেছে এবং আমাদের নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা মনে করেছে, তারাই জাহান্নামবাসী; তারা সেখানে চিরকাল থাকবে’ (সূরা আল-বাক্বারাহ: ৩৯)। ‘নিশ্চয় যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অবিশ্বাস করে এবং তাঁদের অবাধ্য হয়, আল্লাহ তাদের জন্য জাহান্নামের শাস্তি নির্ধারণ করেছেন, যাতে তারা চিরকাল থাকবে’ (সূরা আন-নিসা: ১৬৮-১৬৯)। ‘আর যারা অবিশ্বাস করেছে এবং আল্লাহর নিদর্শনকে অস্বীকার করেছে, তাদের জন্য দুনিয়ার জীবনেও শাস্তি আছে এবং পরকালেও’ (সূরা আল-মায়েদাহ: ৩৬)। ‘নিশ্চয় আল্লাহ অবিশ্বাসীদের প্রতি অভিশাপ দিয়েছেন এবং তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন জ্বলন্ত আগুন। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে’ (সূরা আল-আহযাব: ৬৪-৬৫)।

হাদীছসমূহেও জাহান্নামের শাস্তির চিরস্থায়ীত্ব এবং সেখানে শাস্তি ভোগের বিস্তারিত বর্ণনা আছে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘অবিশ্বাসীদের জন্য জাহান্নামে প্রবেশের পর তাদের চামড়া পুড়িয়ে দেয়া হবে এবং আল্লাহ তাদের চামড়া নতুন করে দিবেন যাতে তারা শাস্তি ভোগ করতে থাকে’ (ছহীহ বুখারী, হা/৬৫৫৯)।

জান্নাত ও জাহান্নাম সৃষ্ট। স্থায়ীভাবে রাখার জন্য আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। অনুরূপ আরশ সৃষ্ট। আল্লাহ আরশকে বিশাল করে সৃষ্টি করেছেন এবং স্থায়ীত্ব দান করেছেন। এগুলো ধ্বংস হবে না। এটা আল্লাহর এখতিয়ার (ফাতাওয়া ইবনে তায়মিয়াহ ২/৪২৮ পৃ.)। তাই বলে আল্লাহ তা‘আলার স্থায়ীত্বের সাথে তুলনা করা যাবে না। কারণ আল্লাহ সৃষ্ট নন।

জাহান্নামের শাস্তি হবে চিরস্থায়ী, যার শেষ নেই। আল্লাহ তাদেরকে চিরকাল শাস্তি ভোগ করার জন্য তৈরি করবেন। আল্লাহ তা‘আলা মানবজাতিকে তাঁর প্রতি ঈমান আনার, সৎকর্ম করার এবং অনুশোচনার পথ দিয়েছেন। যারা এই পথ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে অবিশ্বাসী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে, তাদের জন্য অনন্ত শাস্তির বিধানই নির্ধারিত। জান্নাত, জাহান্নাম এবং আল্লাহ তা‘আলার স্থায়ীত্বের মধ্যে পার্থক্য বোঝা ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলোর মধ্যে একটি হল: ১. আল্লাহ তা‘আলার স্থায়ীত্ব: আল্লাহ তা‘আলা হচ্ছেন একমাত্র সৃষ্টির স্রষ্টা এবং তাঁর অস্তিত্ব চিরস্থায়ী। আল্লাহ তা‘আলার কিছু বৈশিষ্ট্য হলো: অমরত্ব: আল্লাহ কখনও মারা যান না এবং তাঁর অস্তিত্ব চিরকাল থাকবে। পরিবর্তনহীনতা: আল্লাহ তা‘আলা কখনও পরিবর্তিত হন না। তাঁর ক্ষমতা, জ্ঞান এবং গুণাবলী চিরকাল এক। নির্ভরতা: আল্লাহ তা‘আলার ওপর সমস্ত সৃষ্টির নির্ভরতা থাকে। আমরা যেমন নির্ভর করি, আল্লাহ তা‘আলার কোন নির্ভরতা নেই; কারণ তিনি স্বয়ম্ভূ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘তিনি প্রথম এবং শেষ, প্রাথমিক এবং অন্তিম, প্রকাশ্য এবং গোপন এবং তিনি সবকিছুর জন্য সবকিছুকে জানেন’ (সূরা আল-হাদীদ: ৩)।

জান্নাতের স্থায়ীত্ব: জান্নাত হচ্ছে আল্লাহর সন্তুষ্ট মুমিনদের জন্য প্রস্তুতকৃত এক শান্তির স্থান। এখানে যা কিছু রয়েছে তা চিরকাল স্থায়ী এবং এর মধ্যে থাকবে। জান্নাতে প্রবেশকারী মুমিনরা শান্তি, আনন্দ ও অনুগ্রহ ভোগ করবেন। জান্নাতে প্রবেশকারীদেরকে আল্লাহ চিরকাল সেখানে রাখবেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আর তাদের জন্য সেখানে থাকবে শান্তি ও নিরাপত্তা’ (সূরা আদ-দাহর: ১১)। ‘নিশ্চয় যারা আল্লাহর সাথে মিলিত হবে, তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং সেখানে চিরকাল থাকবে’ (সূরা আল-বাক্বারাহ: ১১)।

জাহান্নামের স্থায়ীত্ব: জাহান্নাম হচ্ছে অবিশ্বাসীদের জন্য আল্লাহর শাস্তি। এখানে যারা প্রবেশ করবে তারা চিরকালীন শাস্তি ভোগ করবে। এতে অবিশ্বাসীরা চরম কষ্ট এবং যন্ত্রণা ভোগ করবে। জাহান্নামের শাস্তি চিরকালীন, তারা সেখানে থেকে মুক্তি পাবেন না। ‘আর যারা অবিশ্বাস করেছে, তাদের জন্য জাহান্নামের আগুন। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে’ (সূরা আল-বাক্বারাহ: ৩৯)। সুতরাং আল্লাহ তা‘আলা স্বয়ং চিরস্থায়ী ও অবিরাম। আর জান্নাত মুমিনদের জন্য চিরস্থায়ী সুখের স্থান এবং জাহান্নাম অবিশ্বাসীদের জন্য চিরকালীন শাস্তির স্থান। অতএব আহলসুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের আক্বীদা হল- আল্লাহ তা‘আলার অস্তিত্বের কোন পরিণতি নেই। তিনি সৃষ্টির ওপর কর্তৃত্ব করেন। যাদের উপর আল্লাহ সন্তুষ্ট, তারা জান্নাতে চিরকাল থাকবে এবং সুখ ভোগ করবে। পক্ষান্তরে যারা আল্লাহর প্রতি অবিশ্বাসী, তারা জাহান্নামে চিরকাল শাস্তি ভোগ করবে। সুতরাং জান্নাতীরা নৈস্বর্গিক আনন্দ, শান্তি এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভে ধন্য হবে। আর জাহান্নামীরা দুঃখ, কষ্ট, পুড়িয়ে অবিরাম যন্ত্রণা ভোগ করবে।


প্রশ্নকারী : তাওহীদুল ইসলাম, ঢাকা।





প্রশ্ন (১৫): আমি একজন প্রবাসী। প্রবাসেই  রামাযানের ছিয়াম রাখি। প্রশ্ন হল- আমাকে কি আমার ফিতরা প্রবাসেই আদায় করতে হবে, না-কি দেশে আমার পরিবারকে আমার ফিতরা আদায় করার দায়িত্ব দিতে পারব? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৭) : কুরআন তিলাওয়াতে ভুল হলে নেকী পাওয়া যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১২) : চোখের যিনা করলে ক্বিয়ামতের দিন চোখে গরম শিশা ঢালা হবে এই রকম কোন হাদীছ আছে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৬) : সকাল-সন্ধ্যার দু‘আর সময়কাল কখন ফজর ও মাগরিবের পর, না-কি ফজর ও আছর ছালাতের পর? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২১) : ইসলামী শরী‘আতে বিবাহের পদ্ধতি কেমন? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৩): আযান ও ইকামতের মাঝে দু‘আ কবুল হয়। এক্ষণে আযান ও ইকামতের মাঝে দু‘আ করার সময় হামদ ও দরুদ পাঠ করতে হবে কি, আর দুই হাত তুলে দু‘আ করতে হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২২) : প্রতিবেশীরা বিভিন্ন হারাম কাজের সঙ্গে জড়িত। তাদের কিছু হালাল উপার্জন থাকলেও তা হারাম মিশ্রিত। তারা অনেক সময় খাবার হাদিয়া পাঠায়। কিন্তু সেটা হালাল না হারাম থেকে দিয়েছে তা বুঝা যায় না। তাদের দেয়া উক্ত খাবার খাওয়া যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২০) : কবরের কাছে গিয়ে কোন্ দু‘আ পড়তে হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১২) : কুরআন পুরাতন হওয়ায় অনেক পৃষ্ঠা ছিঁড়ে গেছে। এখন করণীয় কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৩): ছাদাক্বাহ করার ফযীলত বর্ণনায় বলা হয় যে, দান সম্পদকে হ্রাস করে না। আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমার মাধ্যমে বান্দার সম্মান বৃদ্ধি করেন এবং যে আল্লাহর জন্য বিনয় প্রকাশ করে আল্লাহ তাকে উন্নত করেন। এ বর্ণনাটি সঠিক! - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৫) : জনৈক ইমাম বলেন, ১০ যিলহজ্জের পরের দিনও অর্থাৎ ১১ যিলহজ্জও আল্লাহর কাছে অনেক মর্যাদাপূর্ণ। উক্ত দাবী কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৩) : কেউ তাওবা করে দ্বীনের পথে ফিরে এসেছে। সে যদি অতীতে কাউকে পাপ কাজে সহযোগিতা করে, তাহলে এখনো কি সেই পাপের সমান ভাগীদার হবে? যাকে পাপ কাজে সহযোগিতা করেছে, সে তাকেও ফিরে আসতে বলেছে। কিন্তু সে ফিরে আসতে চাচ্ছে না। এক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির করণীয় কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ