রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর পারিবারিক জীবন
-আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ*
(১৪তম কিস্তি)
নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কন্যাদেরকে জবাবদিহিতার দিকে আহ্বান করতেন
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বীয় কন্যা ফাতেমাকে উদ্দেশ্য করে বলেন,يَا فَاطِمَةُ أَنْقِذِيْ نَفْسَكِ مِنَ النَّارِ فَإِنِّيْ لَا أَمْلِكُ لَكُمْ مِنَ اللهِ شَيْئًا ‘হে ফাতিমা! জাহান্নাম থেকে তুমি নিজেকে বাঁচাও। কারণ আল্লাহর (আযাব) থেকে রক্ষা করার ব্যাপারে আমার কোন ক্ষমতা নেই’।[১] ছহীহ বুখারীর শব্দে এসেছে,
يَا فَاطِمَةُ بِنْتَ مُحَمَّدٍ سَلِيْنِيْ مَا شِئْتِ مِنْ مَالِيْ لَا أُغْنِيْ عَنْكِ مِنَ اللهِ شَيْئًا
‘হে ফাতিমাহ বিনতে মুহাম্মাদ! আমার ধন-সম্পদ থেকে যা ইচ্ছা চেয়ে নাও। আল্লাহর আযাব থেকে রক্ষা করতে আমি তোমার কোন উপকার করতে পারব না।[২] অর্থাৎ (হে ফাতেমা!) তুমি আমার নৈকট্যের উপর নির্ভর করে থেকো না; কেননা আল্লাহ যদি তোমার প্রতি অপসন্দীয় কিছুর ইচ্ছা করেন, তাহলে আমি তা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখি না।[৩]
নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কন্যাদেরকে ক্বিয়ামুল লায়ল আদায়ের জন্য উদ্বুদ্ধ করতেন
আলী ইবনু আবি তালিব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক রাতে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর এবং রাসূলের মেয়ে ফাতিমা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর নিকট আসলেন। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা ছালাত পড়েছ কি? আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমাদের জীবন তো আল্লাহর হাতে। তিনি আমাদেরকে যখন জাগাতে চান, জাগিয়ে দেন। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চলে গেলেন, তার কথার জবাব দিলেন না। আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমি শুনতে পেলাম, তিনি চলে যাচ্ছেন, আর ঊরুতে হাত মেরে মেরে বলছেন, ‘মানুষ অধিকাংশ বিষয়েই বিতর্কপ্রিয়’ (সূরা আল-কাহফ : ৫৪)।[৪]
ইবনু বাত্তাল (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, উক্ত হাদীছে রাতের ছালাতের ফযীলত এবং পরিবার ও নিকটাত্মীয়দের সতর্ক করার কথা ফুটে উঠেছে।
আল্লামা ত্বাবারী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের ছালাত আদায়ে উৎসাহ দেয়ার জন্য জামাতা আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ও মেয়ে ফাতেমাকে দু’বার জেগে দিয়েছিলেন, যে সময়কে আল্লাহ তা‘আলা সৃষ্টিজগতের আরাম-আয়েশের জন্য নির্ধারণ করেছেন। যখন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের ছালাতের ছাওয়াব ও এর আদায়কারীর মর্যাদা সম্পর্কে অবগত হলেন, তখন জামাই ও মেয়ের জন্য আরাম-আয়েশের তুলনায় এর ফযীলত অর্জনকে পসন্দ করলেন।[৫]
(ثُمَّ سَمِعَهُ وَهُوَ مُدْبِرٌ يَضْرِبُ فَخِذَهُ) অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর এমন তড়িৎ উত্তরে আশ্চর্য এবং আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর অজুহাত তাঁর পসন্দ না হওয়ায় তিনি ঊরুতে আঘাত করেছিলেন। হ্যাঁ, এখানে কাজটি যেহেতু ফরয না হয়ে নফল ছিল, তাই রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (বাধ্য না করে) সেখান থেকে প্রস্থান করেন, যদি ফরয হত, তাহলে তাদেরকে এভাবে ছেড়ে দিয়ে চলে যেতেন না। প্রকৃত বিষয় সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলাই অধিক অবগত।[৬]
নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কন্যাদের অনুভূতিকে প্রাধান্য দিতেন এবং তাদের রাগের কারণে নিজেও রাগ করতেন
মিসওয়ার ইবনু মাখরামাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আলী ইবনু আবি তালিব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) নবী-তনয়া ফাতিমাকে ঘরে রেখেই আবূ জাহলের কন্যাকে বিবাহের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ফাতিমা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) এ খবর শুনে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললেন, লোকেরা কথোপকথন করে যে, আপনি আপনার কন্যাদের সম্বন্ধে রাগ প্রকাশ করেন না। আর এই যে, আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) আবূ জাহলের কন্যাকে বিবাহ করতে যাচ্ছেন। মিসওয়ার (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, তখন নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়ালেন। এ সময় আমি শুনলাম, তিনি তাশাহ্হুদ পড়লেন এবং বললেন, আমি আবুল ‘আছ ইবনু রাবী‘র নিকট বিয়ে দিয়েছি, সে আমাকে যা বলেছে তা বাস্তবে পরিণত করেছে। আর মুহাম্মাদ কন্যা ফাতিমা আমারই একটা টুকরা, আমি অপসন্দ করি যে, লোকে তাকে ফিতনায় ফেলুক। আল্লাহর শপথ! আল্লাহর রাসূলের মেয়ে ও আল্লাহর শত্রুর মেয়ে কোন লোকের নিকট কখনো একসাথে মিলিত হতে পারে না। মিসওয়ার (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, তারপর আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) প্রস্তাব প্রত্যাহার করেন।[৭]
ওলামায়ে কেরাম অনেকগুলো কারণ উল্লেখ করেছেন, যে কারণে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে দ্বিতীয় বার বিবাহ করতে নিষেধ করেছিলেন, এই কারণগুলোকে মৌলিক চারটি ভাগে ভাগ করা যায়
প্রথম : আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর দ্বিতীয় বিবাহ ফাতিমা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর জন্য কষ্টদায়ক। আর ফাতেমাকে কষ্ট দেয়া মানেই রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কষ্ট দেয়া। আর নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কষ্ট দেয়া কবীরা গুনাহ। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিজের কথায় তাই ফুটে উঠেছে। তিনি বলেন, فَإِنَّمَا هِيَ بَضْعَةٌ مِنِّيْ يُرِيْبُنِيْ مَا أَرَابَهَا وَيُؤْذِيْنِيْ مَا آذَاهَا ‘নিশ্চয় সে (ফাতেমা) হচ্ছে আমার কলিজার টুকরা এবং সে যা ঘৃণা করে, আমিও তা ঘৃণা করি এবং তাকে যা কষ্ট দেয়, তা আমাকেও কষ্ট দেয়।[৮] এ বিধান রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কন্যাগণ ব্যতীত অন্যদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
দ্বিতীয় : ফাতেমা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর দ্বীনের ব্যাপারে ফিতনার আশংকায় রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমনটা বলেছিলেন। যেমন ছহীহুল বুখারীতে এসেছে, وَأَنَا أَتَخَوَّفُ أَنْ تُفْتَنَ فِيْ دِيْنِهَا ‘আমি আশঙ্কা করছি, সে দ্বীনের ব্যাপারে পরীক্ষার সম্মুখীন হয়ে পড়বে’।[৯] মেয়েরা সৃষ্টিগতভাবেই অনেক বেশি ঈর্ষাপরায়ণ। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভয় পাচ্ছিলেন, হয়তো ফাতেমা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর মনে এমন ঈর্ষা তৈরি হবে যা তার অবস্থা ও মর্যাদার সাথে যায় না, কেননা তিনি গোটা বিশ্ব জগতের নারীদের সরদার।
বিশেষত ফাতেমা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) তার মাকে হারিয়েছিলেন, অতঃপর এক এক করে বোনদেরকে হারিয়েছেন। তার এমন কোন আপনজন অবশিষ্ট ছিল না, যাদের নিকটে ঈর্ষার সময় মনের গোপন কথাগুলো বলে হালকা হবেন। হাফেয ইবনে হাজার (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, এটি ছিল মক্কা বিজয়ের পরের ঘটনা। তখন নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অন্য কোন কন্যাই বেঁচে ছিল না। আর ফাতেমা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) তার মায়ের মৃত্যুর পর একমাত্র তার এসকল বোনদেরকেই কাছে পেয়েছিল। ফলে (বোনদের মৃত্যুর পর) ফাতেমার মধ্যে ঈর্ষা প্রবেশ করলে তা তার দুশ্চিন্তাকে আরো বৃদ্ধি করত।[১০]
তৃতীয় : রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মেয়ে ও একজন আল্লাহর শত্রুর মেয়ের একই ব্যক্তির অধীনে থাকাকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য। যেমন নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, وَاللهِ لَا تَجْتَمِعُ بِنْتُ رَسُوْلِ اللهِ وَبِنْتُ عَدُوِّ اللهِ عِنْدَ رَجُلٍ وَاحِدٍ أَبَدًا ‘আল্লাহর শপথ! আল্লাহর রাসূলের মেয়ে ও আল্লাহ শত্রুর মেয়ে কোন লোকের নিকট কখনো একসাথে মিলিত হতে পারে না’।[১১]
চতুর্থ : ফাতেমা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর অধিকারকে সম্মান জানানো এবং তার অবস্থান ও মর্যাদা তুলে ধরার জন্য এমন বিধান দেয়া হয়েছে।
এই সমষ্টিগত ও বিক্ষিপ্ত কারণগুলোর কারণে নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আলী ইবনু আবি তালিব (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে (দ্বিতীয় বার) বিবাহ করতে নিষেধ করেছিলেন। এছাড়া এই ঘটনা থেকে যারা বহু বিবাহের ক্ষেত্রে সীমানা নির্ধারণের দলীল খুঁজেন তাদের জন্য এতে ন্যূনতম দলীল নেই। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই সংশয় ও অস্পষ্টতাকে এই ঘটনার মধ্যকার নিম্নোক্ত উক্তি দ্বারা দূর করেছেন। তিনি বলেন, وَإِنِّيْ لَسْتُ أُحَرِّمُ حَلاَلًا وَلَا أُحِلُّ حَرَامًا ‘আমি হালালকে হারাম এবং হারামকে হালালকারী নই’।[১২]
কন্যাদের সাথে নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উত্তম আচরণের আরেকটি নমুনা হল, তিনি তাদেরকে আনন্দিত করতে সদা সচেষ্ট ছিলেন
আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চলার ভঙ্গিতে চলতে চলতে ফাতিমা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) আমাদের নিকট আগমন করলেন। তাকে দেখে নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমার স্নেহের কন্যাকে অনেক অনেক মুবারকবাদ। তারপর তাকে তাঁর ডানপাশে অথবা বামপাশে (রাবির সন্দেহ) বসালেন এবং তার সাথে চুপিচুপি (কী যেন) কথা বললেন। তখন তিনি (ফাতিমা) (রাযিয়াল্লাহু আনহা) কেঁদে দিলেন। আমি [আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)] তাকে বললাম কাঁদছেন কেন? নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পুনরায় চুপিচুপি তার সাথে কথা বললেন। তিনি [ফাতিমা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)] এবার হেঁসে উঠলেন। আমি [আয়িশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)] বললাম, আজকের মত দুঃখ ও বেদনার সাথে সাথে আনন্দ ও খুশী আমি আর কখনো দেখিনি। আমি তাকে [ফাতিমা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)] জিজ্ঞেস করলাম, তিনি (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কী বলেছিলেন? উত্তর তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর গোপন কথাকে প্রকাশ করব না। পরিশেষে নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইন্তেকাল হয়ে যাওয়ার পর আমি তাকে আবার জিজ্ঞেস করলাম, তিনি কী বলেছিলেন? তিনি বললেন, তিনি প্রথমবার আমাকে বলেছিলেন, জিবরীল (আলাইহিস সালাম) প্রতি বছর একবার আমার সঙ্গে পরস্পর কুরআন পাঠ করতেন, এ বছর দু’বার এরূপ পড়ে শুনিয়েছেন। আমার মনে হয় আমার বিদায় কাল ঘনিয়ে এসেছে এবং এরপর আমার পরিবারের মধ্যে তুমিই সর্বপ্রথম আমার সাথে মিলিত হবে। তা শুনে আমি কেঁদে দিলাম। দ্বিতীয়বার বলেছিলেন, তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, জান্নাতবাসী মহিলাদের অথবা মুমিন মহিলাদের তুমি সরদার (নেত্রী) হবে। এ কথা শুনে আমি হেসেছিলাম।[১৩]
কন্যাকে আল্লাহর যিকির ও দু‘আর জন্য উদ্বুদ্ধ করতেন
আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফাতেমাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমি তোমাকে যে ওসিয়ত করছি তা শুনতে কিসে তোমাকে বাধা দিচ্ছে, তুমি সকাল-সন্ধ্যায় বলবে, ‘হে চিরঞ্জীব! শাশ্বত! ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার রহমত প্রার্থী। আমার সবকিছু সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করে দিন। আমাকে এক পলকের জন্যও আমার নিজের নিকট সোপর্দ করবেন না।[১৪] এখানে (وَلَا تَكِلْنِي إِلَى نَفْسِي) অর্থ হল, আমাকে আমার নিজের নাফসের উপর সোপর্দ করবেন না এবং আমাকে পরিত্যক্ত অবহেলিত অবস্থায় ছাড়বেন না। আর (طَرْفَةَ عَيْنٍ) অর্থ হল, ‘চোখের পলক’।[১৫]
নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কন্যাদেরকে বিভিন্ন উপহার সামগ্রী প্রদান করতেন
আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার কাছে রেশমী সূচিকর্ম খচিত একটি চাদর পাঠালেন। আমি সেটি পরিধান করে বের হলে, তিনি বললেন, হে আলী! তোমার পরিধানের জন্য এটিকে আমি পাঠাইনি। এটা দ্বারা তুমি ফাতেমাদের ওড়না বানিয়ে দাও।[১৬] এখানে (اجعلها خمرا) হল (خمار) এর বহুবচন, যার অর্থ মাথা ঢাকা। আর (بَيْنَ الْفَوَاطِمِ) এর মধ্যে (الْفَوَاطِمِ) দ্বারা উদ্দেশ্য হল, নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মেয়ে ফাতেমা, আলী ইবনু আবি তালিবের কন্যা ফাতিমা বিনতে আসাদ এবং ফাতিমা বিনতে হামযাহ ইবনে আব্দুল মুত্তালিব উদ্দেশ্য।[১৭]
কন্যাদেরকে সমবেদনা জানাতেন এবং বিপদাপদে তাদেরকে সান্ত্বনা দিতেন
উসামাহ ইবনু যায়েদ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জনৈকা কন্যা (যায়নাব) তাঁর (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট লোক পাঠালেন যে, আমার এক পুত্র মরণাপন্ন অবস্থায় রয়েছে, তাই আপনি আমাদের নিকট আসুন। তিনি বলে পাঠালেন, (তাকে) সালাম দিবে এবং বলবে, আল্লাহরই অধিকারে যা কিছু তিনি নিয়ে যান, আর তাঁরই অধিকারে যা কিছু তিনি দান করেন। তাঁর নিকট সকল কিছুরই একটি নির্দিষ্ট সময় আছে। কাজেই সে যেন ধৈর্যধারণ করে এবং ছাওয়াবের অপেক্ষায় থাকে। তখন তিনি তাঁর কাছে কসম দিয়ে পাঠালেন, তিনি যেন অবশ্যই আগমন করেন। তখন তিনি দণ্ডায়মান হলেন এবং তাঁর সাথে ছিলেন সা‘দ ইবনু উবাদাহ, মু‘আয ইবনু জাবাল, উবাই ইবনু কা’ব, যায়েদ ইবনু ছাবিত (রাযিয়াল্লাহু আনহুম) এবং আরও কয়েকজন। তখন শিশুটিকে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে তুলে দেয়া হল। তখন সে ছটফট করছিল। বর্ণনাকারী বলেন, আমার ধারণা যে, তিনি এ কথা বলেছিলেন, যেন তার শ্বাস মশকের মত (শব্দ হচ্ছিল)। আর নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দু’ চক্ষু বেয়ে অশ্রু ঝরছিল। সা‘দ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! একি? তিনি বললেন, এ হচ্ছে রহমত, যা আল্লাহ তাঁর বান্দার অন্তরে গচ্ছিত রেখেছেন। আর আল্লাহ তো তাঁর দয়ালু বান্দাদের প্রতিই দয়া করেন।[১৮]
হাদীছে উল্লেখিত (هَذِهِ رَحْمَةٌ جَعَلَهَا اللهُ فِيْ قُلُوْبِ عِبَادِهِ وَإِنَّمَا يَرْحَمُ اللهُ مِنْ عِبَادِهِ الرُّحَمَاءَ) -এর অর্থ হল, ‘ধৈর্যধারণের ব্যাপারে উৎসাহ দেয়া এবং আল্লাহর ফায়সালার উপর সন্তুষ্ট থাকা’।
আল্লাহর তাক্বদীর (পূর্ব নির্ধারিত বিষয়) : আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের থেকে যা গ্রহণ করেন, সেগুলো তাঁর; তিনি একমাত্র তাঁর সম্পদই গ্রহণ করেন। অতএব তোমাদের জন্য উচিত হল, এতে তোমরা বিচলিত হবে না, যেমন কোন ব্যক্তির কাছে রাখা গচ্ছিত সম্পদ তার মালিক ফিরিয়ে নিলে তার জন্য বিচলিত হওয়া শোভা পায় না। (وله ما أعطي) অর্থাৎ যা তিনি তোমাদেরকে দান করেছেন তা তাঁর মালিকানার বাইরে নয়, বরং তা একমাত্র তাঁরই এবং যা ইচ্ছা তিনি তা নিয়ে করতে পারেন।
(فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ فَقَالَ لَهُ سَعْدٌ مَا هَذَا؟ يَا رَسُوْلَ اللهِ) অর্থাৎ সা‘দ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ধারণা করতেন, সকল ধরনের কান্না হারাম। অশ্রু ঝড়ানো হারাম। তিনি মনে করেছিলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভুলে গেছেন, এজন্য তিনি তাঁকে (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্মরণ করে দেন। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে জানালেন, শুধু (বিলাপ করা ছাড়া) কান্না এবং চোখে অশ্রু ঝড়ানো হারাম অথবা মাকরূহ নয়, বরং তা রহমত ও মর্যাদকর; নিশ্চয় বিলাপ ও শোক প্রকাশ করে কান্না করা হারাম। কান্না হয়তো রহমত ও মর্যাদার সাথে সম্পৃক্ত হয় অথবা বিলাপ ও শোক প্রকাশের জন্য করা হয়।
নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বীয় পুত্র ও কন্যার মৃত্যুতে চিন্তিত হয়েছিলেন
সন্তান হারানোর মাধ্যমে যারা পরীক্ষায় নিপতিত হয়েছে তারা জানুক যে, নিশ্চয় রাসূলুল্লাহর (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সকল ছেলে-মেয়ে মৃত্যুবরণ করেছিল। তাঁর মৃত্যুর পর ফাতেমা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) ব্যতীত কেউ বেঁচে ছিল না। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কোন এক সন্তান মৃত্যুবরণ করলে তার মৃত্যুতে তিনি চিন্তিত হোন, তার বিচ্ছেদে দু’চোখ বেয়ে অশ্রু ঝড়ান এবং এছাড়া আল্লাহর ভালোবাসা ও সন্তুষ্টিমূলক কথা ব্যতীত কিছুই বলেননি।
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ شَهِدْنَا بِنْتًا لِرَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ وَرَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَالِسٌ عَلَى القَبْرِ قَالَ فَرَأَيْتُ عَيْنَيْهِ تَدْمَعَانِ
আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) (উম্মে কুলছূমের মৃত্যু সম্পর্কে) বর্ণনা করেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এক কন্যা (উম্মে কুলছূম)-এর জানাযায় উপস্থিত হলাম। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কবরের পাশে বসেছিলেন। আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, তখন আমি তাঁর চোখ থেকে পানি ঝরতে দেখলাম।[১৯] এই অশ্রু বিসর্জন শোক ও আল্লাহর ফায়সালার প্রতি অসন্তুষ্টিমূলক ছিল না, বরং এটি ছিল রহমত ও দয়া-অনুকম্পার অশ্রু যা একমাত্র দয়াশীল ব্যক্তিদের চোখ থেকে ঝড়ে।
আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, (একদা) আমরা আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে আবূ সায়ফ কর্মকারের নিকট গেলাম। তিনি ছিলেন (নবী-তনয়) ইবরাহীম (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর দুধ সম্পর্কীয় পিতা। আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইবরাহীমকে তুলে নিয়ে চুমু খেলেন এবং নাকে-মুখে লাগালেন। অতঃপর (আরেক বার) আমরা তার (আবূ সায়ফ-এর) বাড়িতে গেলাম। তখন ইবরাহীম মুমূর্ষু অবস্থায়। এতে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উভয় চক্ষু হতে অশ্রু ঝরতে লাগল। তখন আব্দুর রহমান ইবনে আওফ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আর আপনিও? (ক্রন্দন করছেন?) তখন তিনি বললেন, অশ্রু প্রবাহিত হয় আর হৃদয় হয় ব্যথিত। তবে আমরা মুখে তাই বলি যা আমাদের রব পসন্দ করেন। আর হে ইবরাহীম! তোমার বিচ্ছেদে আমরা অবশ্যই শোকসন্তপ্ত।[২০]
আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চাইতে শিশুদের প্রতি বেশি দয়াশীল আর কাউকে আমি দেখিনি। তিনি বলেন, (নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ছেলে) ইবরাহীম মদীনার গ্রামাঞ্চলে দুধ পান করতেন। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে দেখার জন্য সেখানে যেতেন আর আমরাও তার সাথে যেতাম। তিনি দাইয়ের গৃহে ঢুকতেন, আর সেখানে ধুয়ায় আচ্ছন্ন থাকত। কেননা তার দুধপিতা কর্মকার (কামার) ছিল। তিনি ছেলেকে কোলে তুলে চুমু খেতেন। পরে তিনি প্রত্যাবর্তন করতেন। আমর ইবনে সাঈদ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, যখন ইবরাহীম (রাযিয়াল্লাহু আনহু) মৃত্যুবরণ করেন, তখন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ইবরাহীম আমার পুত্র, দুধ পান করা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে। তার জন্য দুধপিতা ও দুধমাতা রয়েছে, যারা জান্নাতে তাকে দুধ পান করার সময়-সীমা পর্যন্ত দুধ পান করাবে’।[২১] অর্থাৎ ইবরাহীম বুকের স্তন পানের বয়স শেষ হলে অথবা দুধ পান চলাকালে মৃত্যুবরণ করে, তখন তার দু’ বছর বয়স পূর্ণ হয়েছিল। তার মৃত্যুর সময় দুধ পানের বয়স শেষ হতে আরো ছয় বা সাত মাস বাকী ছিল, যা কুরআনুল কারীমের বক্তব্য অনুযায়ী দুধ ছাড়ানোর বয়স সীমা।
উক্ত হাদীছে- রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মহান চরিত্র ও আত্মীয়-স্বজন ও দুর্বলদের প্রতি তাঁর দয়ার বর্ণনা উঠে এসেছে। এতে পরিবার-পরিজন, শিশুদের প্রতি দয়া করা ও তাদেরকে চুম্বন করার ফযীলতের বর্ণনা তুলে ধরা হয়েছে।[২২]
স্বীয় কন্যার মৃতুতে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দিক-নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে, তিনি তাদের গোসল ও দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করেন, তাদের জানাযা ছালাত আদায় করেন, তাদেরকে দাফন করান, তাদের কবরের নিকটে অবস্থান করেন এবং তাদের জন্য দু‘আ করেন।
উম্মে আতিইয়াহ আনছারী (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (যখন উম্মে কুলছূম মৃত্যুবরণ করে) আমরা নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কন্যাকে গোসল দেয়ার সময় তিনি আমাদের কাছে এসে বললেন, তোমরা তাকে তিনবার, পাঁচবার অথবা প্রয়োজনে তার চেয়ে অধিকবার বরই পাতাসহ পানি দিয়ে গোসল দাও। আর শেষবারে কর্পুর দাও। তোমরা শেষ করে আমাকে জানাবে। তিনি বলেন, আমরা যখন শেষ করলাম, তখন আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর চাদর আমাদের দিকে নিক্ষেপ করে বললেন, এটা তার শরীরের সঙ্গে জড়িয়ে দাও।[২৩] এখানে (أَشْعِرْنَهَا إِيَّاهُ) অর্থ হল, তার শরীরে নিচের কাপড়কে তার শরীরের সাথে জড়িয়ে দাও।
বলা হয়ে থাকে যে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে দেরীতে ইযার (দেহের নিম্নাংশের বস্ত্র) দিয়েছিলেন যাতে গোসল শেষ করে তাদের কেউ যেন এই ইযার প্রথমে গ্রহণ করতে না পারে এবং যাতে সম্মানিত দেহের কাপড় মৃতের গায়ে যাওয়ার মাঝে ব্যবধান অল্প সময়ের হয় ও মধ্যস্ততাকারী না থাকে।
এই ছিল সন্তানদের সাথে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আচরণবিধি এবং তাদেরকে উত্তম ও সুন্দরভাবে লালন পালনের বর্ণনা।
(চলবে ইনশাআল্লাহ)
* এম.ফিল গবেষক, আরবী বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
[১]. ছহীহ মুসলিম, হা/২০৪।
[২]. ছহীহ বুখারী, হা/২৭৫৩।
[৩]. ইমাম নববী, শরহে ছহীহ মুসলিম, ৩য় খণ্ড, ৮০ পৃ.।
[৪]. ছহীহ বুখারী, হা/১১২৭, ৭৩৪৭; ছহীহ মুসলিম, হা/৭৭৫।
[৫]. ইবনে বাত্তাল, শরহে ছহীহুল বুখারী, ৩য় খণ্ড, পৃ. ১১৫।
[৬]. ইবনে বাত্তাল, শরহে ছহীহুল বুখারী, ৩য় খণ্ড, পৃ. ১১৫; আল্লামা সিন্দী, হাশিয়ায়ে নাসাঈ, ৩য় খণ্ড, পৃ. ২০৫।
[৭]. ছহীহ বুখারী, হা/৩১১০; ছহীহ মুসলিম, হা/২৪৪৯।
[৮]. ছহীহ বুখারী, হা/৫২৩০।
[৯]. ছহীহ বুখারী, হা/৩১১০।
[১০]. ইবনে হাজার, ফাৎহুল বারী, ৭ম খণ্ড, পৃ. ৮৬।
[১১]. ছহীহ বুখারী, হা/৩১১০; ছহীহ মুসলিম, হা/২৪৪৯।
[১২]. ছহীহ বুখারী, হা/৩১১০।
[১৩]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৬২৩-৩৬২৪।
[১৪]. ইবনু সুন্নী, আমালুল ইয়াওম ওয়াল লাইলাহ, হা/৪৮; আলবানী, ছহীহুল জামে‘, হা/৫৮২০; হাসান।
[১৫]. ফায়যুল কাদীর, ২য় খণ্ড, পৃ. ১৪৭।
[১৬]. ছহীহ বুখারী, হা/২৬১৪; ছহীহ মুসলিম, হা/২০৭১; ইবনে মাজাহ, হা/৩৫৯৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭১২।
[১৭]. ইমাম নববী, শরহে ছহীহ মুসলিম, ১৪তম খণ্ড, পৃ. ৫১।
[১৮]. ছহীহ বুখারী, হা/১২৮৪; ছহীহ মুসলিম, হা/৯২৩।
[১৯]. ছহীহ বুখারী, হা/১২৮৫।
[২০]. ছহীহ বুখারী, হা/১৩০৩; ছহীহ মুসলিম, হা/২৩১৫।
[২১]. ছহীহ মুসলিম, হা/(৬৩)-২৩১৬।
[২২]. ইমাম নববী, শরহে ছহীহ মুসলিম, ১৫তম খণ্ড, পৃ. ৭৬।
[২৩]. ছহীহ বুখারী, হা/১২৬১; ছহীহ মুসলিম, হা/(৩৬)-৯৩৯।