শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:২৭ অপরাহ্ন

নির্যাতিত মানুষের আর্তচীৎকার ও আল্লাহর সাহায্য

-আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম*


পৃথিবীতে মোট জনসংখ্যা প্রায় ৬৮০ কোটি। তার মধ্যে মুসলিম ১৫৭ কোটি। অর্থাৎ বর্তমান বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ২৩ শতাংশ মুসলিম। এর মধ্যে সারা পৃথিবীতে ৩০ কোটি মুসলিম নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।[১] সা¤্রাজ্যবাদীরা তাদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য বিভিন্ন ভাবে মুসলিম নিধনের কাজ করছে। তাদের অমানবিক নির্যাতনে পৃথিবী এক ভয়ানক অগ্নিগর্ভ এবং মুসলিম হত্যাযজ্ঞের মহাসাগরে পরিণত হয়েছে। নির্যাতিত মানুষের আর্তচীৎকারে পৃথিবীর আকাশ ভারি হয়ে উঠেছে। বর্তমানে ভারতের দিল্লীতে মুসলিমদের উপর নির্যাতন, তাদেরকে হত্যা, ঘর-বাড়ী, দোকানগুলো আগুনে জ্বালিয়ে দেয়া, মসজিদের মিনার ভেঙ্গে সেখানে হিন্দুত্ববাদী পতাকা টানিয়ে দেয়া, মসজিদে আগুন দিয়ে ধ্বংস করা এবং পবিত্র কুরআনে আগুন ধরিয়ে দেয়ায় বিশ্বের সকল মুসলিমদের অন্তরে রক্তক্ষরণ চলছে।[২] এটি মুসলিমদের উপর অত্যাচারের আরেকটি মাত্রা যোগ হল। ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে যে, এভাবে মুসলিমরাই বিভিন্ন দেশে নির্যাতিত হচ্ছে।

চীনে দীর্ঘ ৭০ বছর যাবৎ জিনজিয়াং প্রদেশের উইঘুর সম্প্রদায়ের ১ কোটি ১০ লাখ মুসলিম চীন সরকারের নির্মম, বিভীষিকাময় নির্যাতন ও নৃশংতার সাক্ষী।[৩] বিশেষ করে ১০ লাখ উইঘুর মুসলিমকে বন্দি করে মুসলিমদের অস্তিত্ব মুছে ফেলার নামে বন্দিদের ওপর নিপীড়ন ও নির্যাতন চলছে।[৪] ধর্মীয় শিক্ষা নিষিদ্ধ, মসজিদ ভেঙ্গে দেয়া, ধর্মীয় কার্যাবলীর উপর নানা বিধিনিষেধ আরোপ ও গৃহহীন করা, বাড়িতে ঢুকে প্রিয়জনদের ধরে নিয়ে যাওয়া, দাঙ্গা, নারীদের ধর্ষণ, নির্বিচারে গ্রেপ্তার, জেল-জরিমানা, রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সহায়তায় নিরীহ উইঘুরকে হত্যা করা এবং উইঘুরদের নিজস্ব সংস্কৃতি ধ্বংস করার জন্য চীনের অন্য অঞ্চল থেকে মূল চীনাদের জিনজিয়াং এনে পুনর্বাসন করার মাধ্যমে নির্যাতন করা ইত্যাদি। জিনজিয়াং প্রদেশে সংবাদ মাধ্যম নিষিদ্ধ। তাই এসব অত্যাচারের নির্মমতা মানুষ খুব কমই জানতে পারে।[৫]

‘কাশ্মীর’ হল মানুষের আর্তচীৎকার, অবিরত রক্তের ¯্রােত, হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও লুটতরাজের এক অগ্নিগর্ভ। কাশ্মীরের ৮০ লক্ষ নিরীহ মুসলিম নির্যাতিত বছরের পর বছর। জীবন্ত পুড়িয়ে মারা, দড়িতে বেঁধে ঝিলাম নদীর পানিতে ডুবিয়ে মারা, গুলি করে হত্যা করা, গৃহহারা, গুম এবং পঙ্গু করা ইত্যাদি। কাশ্মীর এক মৃত উপত্যকা। সবুজ যমীনজুড়ে ছোপ ছোপ রক্ত, বাতাসে লাশের গন্ধ। ভারত গোটা কাশ্মিরকে কারাগার বানিয়ে রেখেছে। ভূস্বর্গ খ্যাত অঞ্চলটি এখন মৃত্যু উপত্যকা।

‘ফিলিস্তীন’ নামটির অর্থই এক ভয়াবহ অগ্নিগর্ভ, মুসলিম হত্যাযজ্ঞের মহাসাগর। বোমা, ক্ষেপণাস্ত্র, গুলা-বারুদ ও বিস্ফোরণের অন্ধকূপ; সা¤্রাজ্যবাদীদের অস্ত্রের পরীক্ষাগার।[৬]

‘আফগানিস্তান’ ভূসম্পদ সমৃদ্ধ হওয়ায় সা¤্রাজ্যবাদী চক্রের লোলুপ দৃষ্টি থেকে এই মুসলিম প্রধান দেশটি রক্ষা পায়নি। বিভিন্ন সময়ে আক্রান্ত হয়েছে বারবার। সেখানে আগ্রাসন চালিয়ে কেউ স্থায়ী হতে পারেনি।[৭] যুদ্ধবিধ্বস্ত দরিদ্র ও সমস্যাক্লিষ্ট দেশটিতে হত্যাকা- বন্ধ হয়নি। সর্বদা বোমা হামলা ও সংঘর্ষ চলেছে।

‘ইরাক’ আগ্রাসীদের করাল গ্রাসে নিপতিত এবং রক্তাক্ত হয়েছে বার বার। ক্ষতবিক্ষত হয়েছে স্মৃতি বিজড়িত পাদপীঠ, পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে, লুণ্ঠিত হয়েছে তার প্রতœসম্ভার। আক্রান্ত হয়েছে রক্তপিপাসুদের হিং¯্র ছোবলে। সভ্যতার লীলাক্ষেত্রের পতন হয় হালাকু খাঁর হামলায়। হত্যা করেছিল প্রায় ১৬ থেকে ১৮ লক্ষ বনু আদম।[৮] সেদিন মুসলিমদের রক্ত¯্রােত যে ধারায় প্রবাহিত হয়েছিল, বিশ্ব ইতিহাস আর কখনো তা অবলোকন করেনি। দোজলা, ফোরাত, শাতিল পানিরাশির পরিবর্তে পরিণত হয়েছিল রক্তগঙ্গায়। ধ্বংস্তূপে পরিণত হয়েছিল ঐতিহ্যবাহী বাগদাদ। একবিংশ শতাব্দীর সূচনালগ্নে ইরাক আবারও আক্রান্ত হয় পাশ্চাত্যের ইঙ্গ-মার্কিন সৈন্য দ্বারা। হালাকুর ন্যায় এই আক্রমণেও লক্ষ লক্ষ নিরীহ ইরাকীকে বোমা মেরে হত্যা করা হয়।[৯] মাতা-পিতার সম্মুখে ছিন্নভিন্ন হয়েছে হাজারো শিশুর তরতাজা ¯েœহময়ী দেহ। চির পঙ্গুত্ব বরণ করেছে লক্ষ লক্ষ আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা। ইরাকের নিরীহ মানুষের আর্তচীৎকারে বিশ্ববাসী স্থম্ভিত হয়। সভ্যতার বাগদাদ প্লাবিত হয়েছে রক্তের বন্যায়।

‘বসনিয়া-হার্জেগোভিনা’-কে সার্ব সংখ্যালঘুরা যুগোশ্লাভিয়ার সার্ব সেনাবাহিনীর অস্ত্রের সাহায্যে নিরস্ত্র বসিনয়ার উপর ইতিহাসের বর্বর গণহত্যা, গণধর্ষণ চালায়। সভ্য ইউরোপ এবং সভ্য আমেরিকা সার্ব জঙ্গীদের দ্বারা নিরীহ বসনিয়ান মেয়েদের নির্মম গণধর্ষণ এবং বসনিয়দের গণহত্যা অবলোকন করে। সেখানে মুসলিমদের উপর চরম নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ শুরু হয়। এতে লক্ষাধিক মুসলিমের মৃত্যু হয়। ২০ লাখ মুসলিমকে তাদের ঘরবাড়ি ও সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ করা হয়।[১০] ‘চেচনিয়া’ রাশিয়ার অধীন একটি ক্ষুদ্র অঞ্চল।[১১] মুসলিম দেশ হিসাবে নির্যাতিত মানুষের আর্তচীৎকারের ইতিহাস দীর্ঘ দিনের। ‘কসোভো’ নামটি বিশ্ববাসীর কাছে অপরিচিতই ছিল। মুসলিম নিধনের নিরাপদ ভূমি হওয়ায় বিশ্ব এর সম্পর্কে জানতে পারে। গোঁড়া খ্রিস্টান কর্তৃক পাশ্চাত্য প্রভুদের মদদে যুগ যুগ ধরে কসোভোর শতকরা ৯০ ভাগ মুসলিম নির্যাতিত হয়ে আসছে। সার্ব বাহিনীর আগ্রাসনে বহু নিরীহ মুসলিম নিহত হয় এবং ২ লাখ ৭৫ হাজারের মত গৃহহীন হয়।[১২]

‘সোমালিয়া’ আজও বিশ্বের বুকে মৃত্যুকূপ হিসাবে পরিচিত। এখানে কত মানুষ যে নিতহ হয়েছে, তার কোন হিসাব নেই। এদেশের মুসলিমদের অধিকার বলতে কিছু নেই। তারা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসের অসহায় শিকার। ‘লিবিয়াতে’ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ‘নো ফ্লাই জোন’, ‘অপারেশন অডিসি ডন’ এবং ‘অপারেশন মারমেইড ডন’-এর নামে বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে চরম অরাজকতা সৃষ্টি করেছে। সা¤্রাজ্যবাদী দেশগুলো এখানে আসন গাড়ার কারণে দেশটির সর্বক্ষেত্রে নৈরাজ্য দেখা দিয়েছে। ‘সিরিয়া’ মুসলিম ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ খুবই প্রাচীন দেশ। প্রেসিডেন্ট আসাদ ও তার সহোদর কর্নেল রিফাত আসাদের নেতৃত্বে সিরিয়ান সেনাবাহিনী সুন্নী মুুসলিমদের উপর যে আক্রমণ ও গণহত্যা পরিচালনা করেছিল, তা নিকট অতীতে বিরল। এই হত্যাকা-ে গুম, গ্রেফতার ও দেশত্যাগী ছাড়াও বহু মসজিদ ও কবরস্থান গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। অলিতে-গলিতে এই হত্যাযজ্ঞ চলে। হাযার হাযার মানুষকে হত্যা করা হয়। স্বৈরশাসক ও তার বাহিনীর হাতে গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ পরিচালিত হয়। সিরিয়ায় সহিংসতার হাত থেকে জান বাঁচাতে গত দু’বছরে ১০ লক্ষ মানুষ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে আশ্রয় নিয়েছে। আর দেশের ভেতরে গৃহহারা হয়েছে আরো লক্ষ লক্ষ মানুষ। সিরিয়ায় গত পাঁচ বছরের গৃহযুদ্ধে অন্তত ৪ লাখ মানুষ নিহত হয়েছে।[১৩] অন্তত ১৫ লাখ মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করেছে, বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ৬১ লাখ মানুষ, বিদেশে চলে গেছে ৫৬ লাখ।[১৪] ইউরোপীয় শক্তি সুদানের স্বাধীনতা হরণে তৎপরতা থেকেই যায়। সুদানে গৃহযুদ্ধে প্রায় ৪ লাখ লোক নিহত হয়।[১৫] এই হল বর্তমান বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মুসলিম নির্যাতনের দৃশ্য।

কেন এই নির্যাতন?

যুগে যুগে মুসলিম-মুমিনদের উপর এই চেয়েও বর্বর নির্যাতন হয়েছে। এই নির্যাতনের মূল কারণ হল আল্লাহর তাওহীদের স্বীকৃতি এবং আনুগত্য পোষণ। যুগে যুগে যারাই অহীর বিধানের নিকট আত্মসমর্পণ করে তার উপর অবিচল থেকেছে, তাদের উপরই কাফির-মুশরিকরা অমানবিক নির্র্যাতন করেছে। তাছাড়া কাফির-মুশরিকদের নির্যাতনের মধ্যে আল্লাহর পরীক্ষাও বিদ্যমান আছে। কুরআন ও সুন্নাহ গভীরভাবে অধ্যয়ন করলে কারণগুলো সম্পর্কে আমরা অবগত হতে পারব ইনশাআল্লাহ। কারণগুলো নি¤œরূপ

০১. আত্মসমর্পণ : ইসলাম অর্থ হল- ‘আল্লাহর তাওহীদ তথা তাঁর এককত্বের নিকট আত্মসমর্পণ করা, আনুগত্যের মাধ্যমে তাঁর বশ্যতা স্বীকার করা এবং শিরক ও তার অনুসারীবৃন্দ হতে বিশুদ্ধ হওয়া’।[১৬] আর মুসলিম অর্থ আত্মসমর্পণকারী (সূরা আলে-‘ইমরান : ১০২)। প্রত্যেক নবী-রাসূল একনিষ্ঠভাবে আল্লাহ তা‘আলার নিকট আত্মসমর্পণ করেছিলেন। তাঁরা ছিলেন নিজ নিজ উম্মতের প্রথম আত্মসমর্পণকারী এবং তাঁরাও সে ঘোষণা প্রদান করেছিলেন (সূরা ইউনুস : ৭২; সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৩১-১৩২; সূরা ইউসুফ : ১০১; সূরা আন-নামল : ৪৪; সূরা আল-মায়িদাহ : ৪৪; সূরা আল-আন‘আম : ১৬১-১৬৩)। আর এ কারণে তারা ছিলেন নির্যাতিত (সূরা শু‘আরা : ১১৬; সূরা মারইয়াম : ৪৬ ), জ্বলন্ত হুতাশনে নিক্ষিপ্ত (সূরা আল-আম্বিয়া : ৬৮) এবং হত্যাকৃত (সূরা আল-বাক্বারাহ : ৬১)। বর্তমানেও যারা নির্যাতিত হচ্ছেন, তাদের কারণও একই। কুফরী শক্তির বিরুদ্ধে তাওহীদি চেতনা গ্রহণ করার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মুসলিমরা নির্যাতিত।

০২. ঈমান : ঈমান হল ‘অন্তরে বিশ্বাস, মুখে স্বীকৃতি এবং কর্মে সম্পাদন করা’।[১৭] যারা আল্লাহ, ফেরেশতা, আসমানী কিতাবসমূহ, রাসূলগণ, বিচার দিবস এবং তাক্বীদের ভাল-মন্দের উপর ঈমান আনয়ন করে অন্তরে বিশ্বাস করে, মুখে স্বীকৃতি দেয় এবং উপরিউক্ত ঈমান অনুযায়ী আমল করে, তারাই সত্যবাদী মুমিন (সূরা আনফাল : ২-৪)। আর যারা এগুলো অস্বীকার করে, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَ مَنۡ یَّکۡفُرۡ بِالۡاِیۡمَانِ فَقَدۡ حَبِطَ عَمَلُہٗ وَ ہُوَ فِی الۡاٰخِرَۃِ مِنَ الۡخٰسِرِیۡنَ ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে কুফরী করে তার আমল নিস্ফল হয়ে যাবে এবং সে পরকালে সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হবে’ (সূরা আল-মায়িদা : ৫)। অর্থাৎ যে আল্লাহর উপর, আসমানী কিতাবসমূহ, রাসূলগণ এবং শরী‘আতের অন্যান্য বিষয়ের প্রতি যেভাবে ঈমান আনা ফরয সেভাবে ঈমান না এনে কুফরী করবে, তাহলে তার আমল নষ্ট হয়ে যাবে এবং তার কুফরীর উপর মৃত্যু হবে (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২১৭)।[১৮] আর এই কুফরী থেকে বাঁচার জন্য যারা আল্লাহর উপর ঈমান এনেছিল, তারাই নির্যাতিত হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ مَا نَقَمُوۡا مِنۡہُمۡ اِلَّاۤ اَنۡ یُّؤۡمِنُوۡا بِاللّٰہِ الۡعَزِیۡزِ الۡحَمِیۡدِ ‘তারা তাদেরকে নির্যাতন করেছিল শুধু এই (অপরাধের) কারণে যে, তারা সে পরাক্রান্ত প্রশংসিত আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল’ (সূরা আল-বুরূজ : ৫)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, الَّذِیۡنَ اُخۡرِجُوۡا مِنۡ دِیَارِہِمۡ بِغَیۡرِ حَقٍّ اِلَّاۤ اَنۡ یَّقُوۡلُوۡا رَبُّنَا اللّٰہُ ‘তাদেরকে তাদের ঘরবাড়ী হতে অন্যায়ভাবে বহিস্কৃত করা হয়েছে শুধু এ কারণে যে, তারা বলে; আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ’ (সূরা আল-হজ্জ : ৪০)।

০৩. পরীক্ষা : মুমিনদের উপর অনেক সময় বিভিন্ন বিপদ-আপদ, যন্ত্রণা, ক্লেশ, দুর্ভিক্ষ আসে এবং তাদেরকে প্রকম্পিত করা হয়, এগুলো আল্লাহর পরীক্ষা। এগুলোর মাধ্যমে আল্লাহ ঈমানদারদের পরীক্ষা করেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

اَحَسِبَ النَّاسُ اَنۡ یُّتۡرَکُوۡۤا اَنۡ یَّقُوۡلُوۡۤا اٰمَنَّا وَ ہُمۡ لَا یُفۡتَنُوۡنَ . وَ لَقَدۡ فَتَنَّا الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِہِمۡ فَلَیَعۡلَمَنَّ اللّٰہُ الَّذِیۡنَ صَدَقُوۡا وَ لَیَعۡلَمَنَّ الۡکٰذِبِیۡنَ

‘মানুষ কি মনে করেছে যে, ‘আমরা ঈমান এনেছি’ এ কথা বললেই তাদেরকে অব্যাহতি দেয়া হবে এবং তাদেরকে পরীক্ষা করা হবে না? আমরাতো তাদের পূর্ববর্তীদেরকেও পরীক্ষা করেছিলাম; আল্লাহ অবশ্যই প্রকাশ করে দিবেন কারা সত্যবাদী ও কারা মিথ্যাবাদী’ (সূরা আল-আনকাবূত : ১-২)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘তোমরা কি মনে করে নিয়েছ যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করেই ফেলবে? অথচ তোমাদের অবস্থা এখনও তাদের মত হয়নি যারা তোমাদের পূর্বে বিগত হয়েছে; তাদেরকে বিপদ ও দুঃখ স্পর্শ করেছিল এবং তাদেরকে প্রকম্পিত করা হয়েছিল; এমনকি রাসূল ও তৎসহ বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ বলেছিলেন, কখন আল্লাহর সাহায্য আসবে? সতর্ক হও, নিশ্চয় আল্লাহর সাহায্য নিকটবর্তী’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২১৪)। খাব্বাব ইবনু আরাত (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে কোন বিষয়ে অভিযোগ পেশ করলাম। তখন তিনি কা’বা ঘরের ছায়ায় তাঁর চাদরকে বালিশ বানিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। আমরা বললাম, আমাদের জন্য কি সাহায্য চাইবেন না? আমাদের জন্য কি দু‘আ করবেন না? তিনি বললেন,

قَدْ كَانَ مَنْ قَبْلَكُمْ يُؤْخَذُ الرَّجُلُ فَيُحْفَرُ لَهُ فِى الأَرْضِ فَيُجْعَلُ فِيْهَا فَيُجَاءُ بِالْمِنْشَارِ فَيُوضَعُ عَلَى رَأْسِهِ فَيُجْعَلُ نِصْفَيْنِ وَيُمَشَّطُ بِأَمْشَاطِ الْحَدِيْدِ مَا دُوْنَ لَحْمِهِ وَعَظْمِهِ فَمَا يَصُدُّهُ ذَلِكَ عَنْ دِيْنِهِ

‘তোমাদের আগের লোকদের মাঝে এমন ব্যক্তিও ছিল, যাকে ধরে নিয়ে তার জন্য যমীন গর্ত করা হত। তারপর করাত এনে মাথায় আঘাত হেনে দু’ টুকরা করে ফেলা হত। লোহার শলাকা দিয়ে তার গোশত ও হাড্ডি খসানো হত। তা সত্ত্বেও তাকে তার দ্বীন থেকে ফিরিয়ে রাখতে পারত না’।[১৯]

এই পরীক্ষা হবে মূলত ঈমানী পরীক্ষা। কে কতটুকু তার ঈমানের উপর সুদৃঢ় থাকতে পারে। আর এ কারণেই আল্লাহ তা‘আলা মুমিন বান্দাদের তাদের ঈমান অনুপাতে পরীক্ষা করবেন। হাদীছে এসেছে, সা‘দ ইবনু আবু ওয়াক্কাছ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার জিজ্ঞেস করা হল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! বিপদ দ্বারা সর্বাপেক্ষা অধিক পরীক্ষা করা হয় কাদের কে? রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন,

اَلْأَنْبِيَاءُ ثُمَّ الْاَمْثَلُ فَالْأَمْثَلُ يُبْتَلَى الرَّجُلُ عَلَى حَسَبِ دِيْنِهِ فَإِنْ كَانَ صُلْبًا فِىْ دِيْنِهِ اِشْتَدَّ بَلَاؤُهُ وَإِنْ كَانَ فِىْ دِيْنِهِ رِقَّةٌ هُوِّنَ عَلَيْهِ فَمَا زَالَ كَذَلِكَ حَتَّى يَمْشِيَ عَلَى الْأَرْضِ مَا لَهُ ذَنْبٌ

‘নবীদের, অতঃপর তাঁদের তুলনায় যারা উত্তম তাদের। মানুষ তার দ্বীনদারীর অনুপাতে বিপদগ্রস্ত হয়। যদি সে তার দ্বীনের ব্যাপারে শক্ত হয়, তার বিপদও কঠিন হয়। যদি তার দ্বীনের ব্যাপারে শিথিলতা থাকে, তার বিপদও সহজ হয়। তার এরূপ বিপদ হতে থাকে, শেষ পর্যন্ত সে পৃথিবীতে চলাফেরা করে, অথচ তার কোন গোনাহ থাকে না।[২০]

নির্যাতিত মানুষের আর্তচীৎকার এবং আল্লাহর সাহায্য

যুগে যুগে যালিমদের হঠকারিতা, অবাধ্যতা, যিদ, ঔদ্ধত্য বৃদ্ধি পেয়েছিল। তারা ক্ষমতা, সংখ্যাশক্তি ও ধনাঢ্যতার শিখরে উপনীত হয়ে দিগি¦দিক জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিল। আর এ কারণে আখেরাতেকে অস্বীকার ও প্রত্যাখান করে দুনিয়া নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল। নবী-রাসূল ও মুমিনদের দাওয়াতকে তাচ্ছিল্য ভরে প্রত্যাখান করেছিল। আর যারা অহীর বিধানকে গ্রহণ করেছিল সেই নবী-রাসূল, মুসলিম-মুমিনদের উপর অমানবিক নির্যাতন করেছিল। তবুও আল্লাহ যালিমদের সামান্য অবকাশ দিয়েছিলেন। আল্লাহর চিরন্তন নীতি এই যে, তিনি অবাধ্য জাতিকে সাময়িকভাবে অবকাশ দেন (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৫)। কিন্তু তাদের শাস্তির মাত্রা যখন অস্বাভাবিক মাত্রায় পৌঁছেছে, নির্যাতিত মানুষের আর্তচীৎকারে যমীন যখন ভারি হয়েছিল। তখন আল্লাহ তা‘আলা যালিমদের উপর আসমানী শাস্তি প্রেরণ করেছেন এবং মুমিনদের সাহায্য করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

فَتِلۡکَ بُیُوۡتُہُمۡ خَاوِیَۃًۢ بِمَا ظَلَمُوۡا اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیَۃً لِّقَوۡمٍ یَّعۡلَمُوۡنَ – وَ اَنۡجَیۡنَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ کَانُوۡا یَتَّقُوۡنَ

‘এই তো তাদের ঘর-বাড়ি, সীমালঙ্ঘন হেতু যা জনশূন্য অবস্থায় পড়ে আছে; এতে জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে। এবং যারা মুমিন ও মুত্তাক্বী ছিল তাদেরকে আমরা উদ্ধার করেছি’ (সূরা আন-নামল : ৫২-৫৩)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَ کَذٰلِکَ اَخۡذُ رَبِّکَ اِذَاۤ اَخَذَ الۡقُرٰی وَ ہِیَ ظَالِمَۃٌ اِنَّ اَخۡذَہٗۤ اَلِیۡمٌ شَدِیۡدٌ ‘এবং এরূপেই তোমার রবের পাকড়াও; যখন তিনি যালিমদের কোন বসতিকে পাকড়াও করেন। নিশ্চয় তাঁর পাকড়াও অতি কঠোর যন্ত্রণাদায়ক’ (সূরা হূদ : ১০২)। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, إِنَّ اللهَ لَيُمْلِىْ لِلظَّالِمِ حَتَّى إِذَا أَخَذَهُ لَمْ يُفْلِتْهُ ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ অত্যাচারীকে পৃথিবীতে সুযোগ ও অবকাশ দিয়ে থাকেন। আবার যখন তাকে ধরেন তখন আর ছাড়েন না’।[২১] যুগে যুগে নির্যাতিত মানুষের আর্তচীৎকারে আল্লাহর সাহায্য নেমে এসেছে এবং যালিমদেরকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। যেমন- নূহ (আলাইহিস সালাম)-এর সম্প্রদায়কে প্লাবনের মাধ্যমে (সূরা হূদ : ৩৭-৪৮), হূদ (আলাইহিস সালাম)-এর সম্প্রদায় ‘আদ জাতিকে এক প্রচ- ঘুর্ণিঝড়ের মাধ্যমে (সূরা আল-হাককাহ : ৬), ছালেহ (আলাইহিস সালাম)-এর সম্প্রদায় ছামূদ জাতিকে এক ভয়ঙ্কর আওয়াজ ও প্রলয়ংকারী ভূমিকম্প দ্বারা (সূরা আল-হাককাহ : ৫; সূরা হূদ : ৬৭; সূরা আল-‘আরাফ : ৭৮), লূত (আলাইহিস সালাম)-এর সম্প্রদায় কে প্রচ- নিনাদের মাধ্যমে তাদের শহরগুলোকে উপরে উঠিয়ে উপুড় করে ফেলে এবং প্রবল বেগে ঘুর্ণিবায়ুর সাথে প্রস্তর বর্ষণ করে (সূরা হূদ : ৮২-৮৩), শো‘আয়েব (আলাইহিস সালাম)-এর সম্প্রদায় কে বিকট গর্জন ও বজ্রনিনাদে (সূরা হূদ : ৯৪-৯৫), মূসা (আলাইহিস সালাম)-এর সম্প্রদায় কে দুর্ভিক্ষ, তুফান, পঙ্গপাল, উকুন, ব্যাঙ, রক্ত, প্লেগ (সূরা আল-‘আরাফ : ১৩০-১৩৪) এবং সাগড় ডুবির মাধ্যমে (সূরা আশ-শো‘আরা : ৬০-৬৬) এবং হস্তী বাহিনীর উপর ঝাঁকে ঝাঁকে পাখির মাধ্যমে তাদের উপর প্রস্তর কংকর নিক্ষেপ করে (সূরা আল-ফীল : ১-৫) ধ্বংস করা হয়েছে। যুগে যুগে বিভিন্ন ভাবে মুমিনদের সাহায্য করা হয়েছে এবং যালিমদের ধ্বংস করা হয়েছে। শেষ নবী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও মুমিনদেরকে আল্লাহ সাহায্য করেছিলেন (সূরা আলে ‘ইমরান : ১২৩-১২৭) এবং যালিমদের ধ্বংস করেছিলেন।[২২] এমনিভাবে যারাই নিজের উপর এবং মুসলিম-মুমিনদের উপর অত্যাচার করবে, আল্লাহ তাদেরকে যে কোন শাস্তির মাধ্যমে ধ্বংস করে দিবেন ইনশাআল্লাহ। বর্তমান বিশ্বের অন্যতম প্লেগ বা মহামারী ‘করোনা ভাইরাস’- সেই আসমানী শাস্তিরই একটি।[২৩] আল্লাহ তা‘আলা গুরু শাস্তির পূর্বে পৃথিবীতে অবশ্যই লঘু শাস্তি আস্বাদন করান, যাতে যালিমরা ফিরে আসে (সূরা আস-সাজদাহ : ২১)।

অতএব যালিমদের জন্য সতর্কবাণী হল, আল্লাহ তাদের ব্যাপারে গাফেল নন (সূরা ইবরাহীম : ৪২)। আর আল্লাহর পক্ষ থেকে ধ্বংসস্থলগুলো বর্তমান কালের যালেমদের থেকে খুব বেশী দূরে নয়’ (হূদ : ৮৩)। পূর্ববর্তী জাতিকে আল্লাহ যেভাবে ধ্বংস করেছেন, বর্তমান যালিমদেরকেও আল্লাহ ঐভাবেই ধ্বংস করবেন (সূরা আল-বাক্বারাহ : ৫৯)।[২৪] পার্থক্য এটুকুই যে, তাদেরকে সমূলে ধ্বংস করা হয়েছিল, কিন্তু শেষ উম্মতের যালিমদেরকে সমূলে ধ্বংস করা হবে না (সূরা আল-হাজ্জ : ৪০)।[২৫] আর মুসলিম-মুমিনদের জন্য আশার বাণী হল, আল্লাহ অবশ্যই মুসলিম-মুমিনদেরকে সাহায্য করবেন। যদি তারা ধৈর্যধারণ করে এবং তাক্বওয়া অবলম্বন করে। আর সাহায্য তো শুধুমাত্র পরাক্রমশালী মহাবিজ্ঞ আল্লাহর তরফ থেকে হয়ে থাকে। যাতে ধ্বংস করে দেন কাফিরদের কোন দলকে অথবা লাঞ্ছিত করে দেন তাদের, যেন তারা নিরাশ হয়ে ফিরে যায় (সূরা আলে ‘ইমরান : ১২৩-১২৭)। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে ধৈর্যধারণ এবং তাক্বওয়া অর্জন করার তাওফীক্ব দান করুন-আমীন!!

* পি-এইচ. ডি গবেষক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

তথ্যসূত্র:-

[১]. সেখ মোহাম্মদ ইসমাঈল ও কাজী জহুরুল হক, ইসলাম ও আধুনিক মুসলিম জাহান (ঢাকা : বিশ্ব সাহিত্য ভবন, আগস্ট ২০০১ খৃ.), পৃ. ২১০।
[২]. ‘দিল্লীতে মসজিদে আগুন, ভস্মীভূত কোরআন’ দৈনিক যুগান্তর, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০।
[৩]. ‘চীনে ভয়াবহ মুসলিম নির্যাতন, নিশ্চুপ গোটা বিশ্ব’ দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন, ৩ নভেম্বর ২০১৯।
[৪]. ‘উইঘুর মুসলিম নির্যাতন : চীনের গোপন নথি ফাঁস’ দৈনিক যুগান্তর, ১৮ নভেম্বর ২০১৯।
[৫]. ‘চীনে ভয়াবহ মুসলিম নির্যাতন, নিশ্চুপ গোটা বিশ্ব’ দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন, ৩ নভেম্বর ২০১৯।
[৬]. বিস্তারিত জানার জন্য পড়–ন- সাইদুর রহমান এবং মুহাম্মাদ সিদ্দিক রচিত, ‘ইসরাইল ও মুসলিম জাহান’; মোহাম্মদ রেজাউল করীম রচিত, ‘ফিলিস্তিন সমস্যার ক্রমবিবর্তন’; তারেক শামসুর রেহমান রচিত, ‘আন্তর্জাতিক রাজনীতি’।
[৭]. ‘আফগানিস্তান : সাম্রাজ্যবাদীদের মরণ ফাঁদ’, আমার দেশ, ০২ জানুয়ারী ২০১৩; ‘আফগানিস্তান : সাম্রাজ্যবাদীদের মরণ ফাঁদ’, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম, ২৮ ডিসেম্বর ২০১২।
[৮]. ‘হালাকু খানের বাগদাদ ধ্বংসের কাহিনী’ দৈনিক সংগ্রাম, ৩১ ডিসেম্বর ২০১১; ‘বাগদাদে হালাকু খানের ধ্বংসলীলা’ দৈনিক ইনকিলাব, ২ ফেব্রুয়ারী ২০১৯।
[৯]. উইকিপিডিয়া।
[১০]. ইসলাম ও আধুনিক মুসলিম জাহান, পৃ. ২০৮-২০৯; উইকিপিডিয়া।
[১১]. উইকিপিডিয়া।
[১২]. মুহাম্মাদ আবু আহসান, কসোভোয় মুসলিম নিধন : মানবতার করুণ আর্তনাদ, মাসিক আত-তাহরীক, ২য় বর্ষ, ৪র্থ সংখ্যা, জানুয়ারী ১৯৯৯ খৃ., পৃ. ২৩।
[১৩]. দৈনিক নয়া দিগন্ত, ২৫ এপ্রিল, ২০১৬।
[১৪]. ‘সিরিয়া যুদ্ধ, মৃত ও হাহাকারের দেশ’ আমাদের সময়, ১৪ জানুয়ারী ২০১৯।
[১৫]. ‘দক্ষিণ সুদানে গৃহযুদ্ধে নিহত ৪ লাখ’ ঢাকা টাইমস, ৮ মার্চ ২০২০।
[১৬]. মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল ওয়াহহাব ইবনু আলী আল-ইয়ামানী, আল-ক্বাওলুল মুফীদ ফী আদিল্লাতিত তাওহীদ (বৈরূত : দারু ইবনি হাযম, ১৪২৭ হি./২০০৬ খৃ.), পৃ. ৪৩।
[১৭]. ইবনু ঈসা, তাওযীহুল কাফিয়্যাহ আশ-শাফিয়্যাহ, ২য় খ-, পৃ. ১৩৯; আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল মুহসিন আল-বদর, যিয়াদাতুল ঈমান ওয়া নুক্বছানিহি ওয়া হুকমিল ইসতিছনাই ফীহ (রিয়ায : মাকতাবাতু দারিল কলম, ১ম সংস্করণ ১৪১৬ হি./১৯৯৬ খ্রি.), পৃ. ১১০।
[১৮]. আব্দুর রহমান ইবনু নাছির আস-সা‘দী, তাইসীরুল কারীমির রহমান ফী তাফসীরি কালামিন মান্নান (বৈরূত : মুওয়াসসাসাতুর রিসালাহ, ১৪২০ হি.), পৃ. ২২১।
[১৯]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৯৪৩; আবূ দাঊদ, হা/২৬৪৯।
[২০]. তিরমিযী, হা/২৩৯৮; ইবনু মাজাহ, হা/৪০২৩; সনদ ছহীহ।
[২১]. ছহীহ বুখারী, হা/৪৬৮৬।
[২২]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৯৬০।
[২৩]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৪৭৪।
[২৪]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৪৭৩, ৩৪৭৪।
[২৫]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৮৮৯, ২৮৯০।




প্রসঙ্গসমূহ »: সাময়িক প্রসঙ্গ
ইহুদী ও পশ্চিমা পরাশক্তির ধূর্তামি এবং ফিলিস্তিনের পরিণতি - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর শানে আপত্তিকর কটুক্তি ও আমাদের করণীয় (২য় কিস্তি) - হাসিবুর রহমান বুখারী
নির্যাতিত মানুষের আর্তচীৎকার ও আল্লাহর সাহায্য - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
কাশ্মীর দখল : মুসলিমমুক্ত করার নীলনকশা - মুহাম্মাদ আমীনুল ইসলাম
মানব বিধ্বংসী এনার্জি ড্রিংকস - এহসান বিন মুজাহির
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও প্রতিকার : একটি পর্যালোচনা - মুহাম্মাদ আমীনুল ইসলাম
ধর্ষন : বিকৃত মানসিকতার ভয়ংকর আক্রমণ - আব্দুল্লাহ আল-মামুন
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর শানে আপত্তিকর কটুক্তি ও আমাদের করণীয় (শেষ কিস্তি) - হাসিবুর রহমান বুখারী
ক্যাসিনো : মদ্যপ, জুয়াড়ি ও যৌনাচারের আখড়া - আব্দুল্লাহ আল-মামুন
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর শানে আপত্তিকর কটুক্তি ও আমাদের করণীয় - হাসিবুর রহমান বুখারী
করোনা ভাইরাস - আব্দুল্লাহ আল-মামুন
ইসলামে মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক - তানযীল আহমাদ

ফেসবুক পেজ