উত্তর : শাসকের কোন অন্যায় কাজের আনুগত্য করা বা সহযোগিতা করা যাবে না। এমনকি তার অন্যায় কাজের প্রতি সন্তুষ্ট হওয়া যাবে না। বরং যাবতীয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রতিবাদ করতে হবে, শাসকের সামনে হক্ব কথা বলতে হবে, সঠিক পথে পরিচালনা করার চেষ্টা করতে হবে এবং হেদায়াতের জন্য আল্লাহর নিকট দু‘আ করতে হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, لَاطَاعَةَ لِمَخْلُوْقٍ فِىْ مَعْصِيَةِ الْخَالِقِ ‘সৃষ্টিকর্তার অবাধ্যতা করে সৃষ্টির কোন আনুগত্য নেই’ (শারহুস সুন্নাহ, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/৩৬৯৬ ‘নেতৃত্ব’ অধ্যায়)। অন্য হাদীছে আছে, ‘তোমাদের মধ্যে অনেক আমীর হবে, যাদের কোন কাজ তোমরা ভাল মনে করবে, কোন কাজ মন্দ মনে করবে। এক্ষণে যে ব্যক্তি ঐ মন্দ কাজের প্রতিবাদ করবে, সে মুক্তি পাবে। যে ব্যক্তি ঐ কাজকে অপসন্দ করবে, সেও নিরাপত্তা পাবে। কিন্তু যে ব্যক্তি ঐ মন্দ কাজে সন্তুষ্ট থাকবে ও তার অনুসরণ করবে (সে মুক্তিও পাবে না, নিরাপত্তাও পাবে না)। ছাহাবীগণ বললেন, তাহলে কি আমরা তখন ঐ শাসকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব না? রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, না, যতক্ষণ তারা ছালাত আদায় করে’ (ছহীহ মুসলিম, হা/১৮৫৪; মিশকাত, হা/৩৬৭১ ‘নেতৃত্ব ও পদ মর্যাদা’ অধ্যায়; বঙ্গানুবাদ মিশকাত ৭/২৩৩ পৃ.)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘আর তোমরা যখন তোমাদের শাসকদের নিকট থেকে এমন কিছু দেখবে, যা তোমরা অপসন্দ কর, তখন তোমরা তার কাজকে অপসন্দ কর; কিন্তু তাদের থেকে আনুগত্যের হাত ছিনিয়ে নিয়ো না’ (ছহীহ মুসলিম, হা/১৮৫৫)। দাওরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে ইবনু তীন বর্ণনা করেন, ‘স্বৈরাচার শাসকদের সম্পর্কে ওলামায়ে কেরাম যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা হল, বিশৃংখলা-বিপর্যয় এবং সীমালংঘন ছাড়াই যদি তার থেকে আনুগত্যের বন্ধন ছিন্ন করা যায়, তাহলে তা অবশ্যই করা যাবে। অন্যথা ধৈর্যধারণ করা ওয়াজিব’ (ফাৎহুল বারী, ১৩তম খণ্ড, পৃ. ১০)। ইমাম ইবনে তায়মিয়াহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, اَلصَّبْرُ عَلَى جَوْرِ الْأَئِمَّةِ أَصْلٌ مِّنْ أُصُوْلِ السُّنَّةِ وَالْجَمَاعَةِ ‘স্বৈরাচার শাসকদের উপর ধৈর্যধারণ করা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের মূলনীতি সমূহের মধ্যে অন্যতম একটি মূলনীতি’ (মিনহাজুস সুন্নাহ, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৫২৭)।
প্রশ্নকারী : আব্দুর রাযযাক, চারঘাট, রাজশাহী।