উত্তর : যদি মানবীয় আকার-আকৃতি গঠিত হওয়ার পর, অর্থাৎ হস্ত, মস্তক, পা বা অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গঠিত হওয়ার পর ভ্রুণ বা বাচ্চা বিনষ্ট হয়! সেক্ষেত্রে এটি নিফাস (প্রসবোত্তর স্রাব) বলে বিবেচিত হবে। এ অবস্থায় পবিত্র হওয়ার পূর্বে অথবা চল্লিশ দিন পরিপূর্ণ হওয়ার পূর্বে সহবাস, ছালাত ও ছিয়াম থেকে বিরত থাকবে। অতঃপর যখন ৪০ দিন পূর্ণ হবে কিংবা যদি চল্লিশ দিন পরিপূর্ণ হওয়ার আগেই পবিত্র হয়ে যায়, তৎক্ষণাৎ ফরয গোসল করে ছালাত আদায় ও ছিয়াম পালন করা তার জন্য অপরিহার্য এবং স্বামীর সাথে সহবাস করাও বৈধ হবে। আর যদি মানবীয় আকার-আকৃতি গঠিত হওয়ার পূর্বেই রক্তপিণ্ড অথবা মাংসপিণ্ড অবস্থায় বিনষ্ট হয়! তখন সেটি মুস্তাহাযা (হায়েয ও নিফাস ব্যতীত অতিরিক্ত রক্তস্রাবকে ইস্তিহাযা এবং সে মহিলাকে মুস্তাহাযা বলা হয়) বলে বিবেচিত হবে। এক্ষেত্রে তাকে ছালাত আদায়, ছিয়াম পালন সহ সব কিছুই করতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, মাতৃগর্ভে ভ্রুণের বয়স ৮১ (একাশি) দিন অতিবাহিত হলে মানুষের আকার-আকৃতি ধারণ করে। যদি নিশ্চিত হয় যে, তিন মাস বয়সের ভ্রুণ পতিত হয়েছে, তবে নির্গত স্রাব নিফাসের স্রাব বলেই গণ্য হবে। কিন্তু যদি এই গর্ভপাত ৮০ (আশি) দিনের কমে হয়, তবে ক্ষরিত পদার্থ নষ্ট রক্তস্রাব বলে গণ্য হবে। তাই এই অবস্থায় সে ছালাত, ছিয়াম, সহবাস প্রভৃতি পরিত্যাগ করবে না। অতএব নারীর উপর আবশ্যক হচ্ছে, দিনগুলোকে স্মরণে রাখা এবং ৮০ দিনের পূর্বে গর্ভপাত হচ্ছে, না-কি অতিবাহিত হওয়ার পর, সে সম্পর্কে সুনিশ্চিত হওয়া (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৪২২-৪২৩; ইবনু বায, ফাতাওয়া ইসলামিয়্যা, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৪৩; ইবনু বায, মাজমূঊ ফাতাওয়া, ১০ম খণ্ড, পৃ. ২২৭; ফাতাওয়া আল-মার’আতুল মুসলিমাহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩০৪-৩০৫; উছায়মীন, ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম, প্রশ্ন নং-১৮২ ‘তাহারাত’ অধ্যায় দ্র.)।
প্রশ্নকারী : মিরাজ, রংপুর।