সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ০৩:৫৫ অপরাহ্ন
উত্তর : তখন রোমের সম্রাটকে বলা হত ‘ক্বাইসার’। সেই সময় রোমের রাজা ছিলেন ‘হিরাক্লিয়াস’। তিনি খ্রিষ্টান হলেও নবী (ﷺ)-এর রিসালাতে বিশ্বাসী ছিলেন। নবী (ﷺ)-এর পক্ষ থেকে তার নিকট পত্র প্রেরণ করা হয়েছিল। তিনি উক্ত পত্রটিকে সত্যায়িত করেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত ঈমান আনেননি (ছহীহ বুখারী, হা/৭, ৫১, ২৬৮১; ছহীহ মুসলিম, হা/১৭৭৩)। পক্ষান্তরে পারস্যের সম্রাটকে বলা হত ‘কিসরা’। সেই সময় পারস্যের রাজা ছিলেন ‘খসরু ইবনে হুরমুয’। নবী করীম (ﷺ)-এর নিকটেও পত্র প্রেরণ করেছিলেন। কিন্তু সে পত্রটি পড়ার পর সে ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলল। (এ ঘটনার খবর পেয়ে) রাসূল (ﷺ) তাদের জন্য বদদু‘আ করেন যে, তাদেরকেও যেন সম্পূর্ণরূপে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয় (ছহীহ বুখারী, হা/৬৪, ২৯৩৯)।

নবী (ﷺ)-এর যুগে রোম ও পারস্য দু’টি বৃহৎ শক্তিশালী সাম্রাজ্য ছিল। পারসিকরা ছিল অগ্নিপূজক মুশরিক আর রোমানরা ছিল খ্রিষ্টান (আহলে কিতাব)। সূরা রূমের মধ্যে রোমক ও পারসিকদের যুদ্ধের কাহিনী আলোচিত হয়েছে। তাদের উভয়পক্ষই ছিল কাফির। তাদের মধ্যে কারও বিজয় এবং কারও পরাজয় বস্তুত ইসলাম ও মুসলিমদের জন্য কোন কৌতুহলের বিষয় ছিল না। কিন্তু যেহেতু উভয় কাফির দলের মধ্যে পারসিকরা ছিল অগ্নিপূজারী মুশরিক এবং রোমকরা ছিল খ্রিষ্টান আহলে কিতাব। ফলে এরা ছিল মুসলিমদের অপেক্ষাকৃত নিকটবর্তী (তাফরীরে ইবনে কাছীর, সূরা রূমের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য)।

মক্কার মুশরিকদের সহানুভূতি ছিল পারসিকদের প্রতি; কারণ তারা উভয়েই গায়রুল্লাহর উপাসক ছিল। পক্ষান্তরে মুসলিমদের সহানুভূতি রোমের খ্রিষ্টান রাজ্যের প্রতি ছিল; কারণ খ্রিষ্টানরাও মুসলিমদের মত (আহলে কিতাব) ছিল এবং অহী ও রিসালাতের প্রতি বিশ্বাসী ছিল। তাদের উভয়ের মধ্যে যুদ্ধ-বিবাদ লেগেই থাকত। নবী (ﷺ)-এর নবুয়াত প্রাপ্তির কয়েক বছর পর পারসিকরা খ্রিষ্টানদের উপর বিজয়লাভ করার ফলে মুশরিকরা আনন্দিত এবং মুসলিমরা হতাশ হয়ে পড়ে। সেই সময় সূরা রূমের আয়াতগুলো অবতীর্ণ হয়। যাতে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে যে, কয়েক বছরের মধ্যে রোমানরা বিজয়ী হবে এবং বিজয়ীরা পরাজিত ও পরাজিতরা বিজয়ী হয়ে যাবে। বাহ্যিক দৃষ্টিতে উক্ত ভবিষ্যদ্বাণী অসম্ভব মনে হলেও আল্লাহর উক্ত বাণীর ফলে মুসলিমদের মনে দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে, তা অবশ্যই সংঘটিত হবে। যার ফলে আবূ বাকর সিদ্দীক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) উবাই ইবনে খালফ ও আবূ জাহলের সাথে বাজি করে ফেলেন যে, তিন অথবা পাঁচ বছরের মধ্যে রোমানরা বিজয়ী হবেই।

উক্ত বাজির কথা নবী (ﷺ) জানতে পারলে তিনি বললেন, بِضْعٌ শব্দটি তিন থেকে নয় পর্যন্ত সংখ্যা বুঝাতে ব্যবহার হয়। অতএব পাঁচ বছর বাজির সময় কম করে ফেলেছ, এতে আরো সময় বাড়িয়ে নাও। সুতরাং নবী (ﷺ)-এর কথামত আবূ বাকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) তাঁর প্রস্তাবিত সময় আরো কিছু বাড়িয়ে দিলেন। ফল এই দাঁড়ালো যে, রোমানরা নয় বছর সময়ের মধ্যেই (সূরা অবতীর্ণ হওয়ার) ঠিক সপ্তম বছরে পুনরায় পারসিকদের উপর জয়যুক্ত হল। যাতে মুসলিমগণ অনেক অনেক আনন্দিত হয়েছিলেন (তিরমিযী, হা/৩১৯৩, ৩১৯৪)। বিভিন্ন হাদীছ থেকে জানা যায় যে, হিজরতের পাঁচ বছর পূর্বে এই ঘটনা সংঘটিত হয় এবং সাত বছর পূর্ণ হওয়ার পর বদর যুদ্ধের সময রোমকরা পারসিকদের বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করে (তাফসীরে সা‘দী, সূরা রূমের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য)।


প্রশ্নকারী : নূর আলম, রংপুর।





প্রশ্ন (৩৯) :  ছালাতুল ইসতিখারা, ছালাতুল ইসতিসকা, ছালাতুল হাজাত, ছালাতুত তাওবাহ, সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণের ছালাত, ইশরাক ও চাশতের ছালাত, ছালাতুয যোহা ইত্যাদি ছালাতগুলো সুন্নাতে মুওয়াক্কাদা, সুন্নাতে গায়ের মুওয়াক্কাদা, না-কি নফল ছালাত? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৮) : অনেক বক্তা বলেন, জুমু‘আর দিনটি গরীবের হজ্জ। এই দাবী কি সত্য? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১২) : বর্তমানে ছোট বাচ্চাদের খেলনা হিসাবে বিভিন্ন প্রাণীর আকৃতির পুতুল বানানো হচ্ছে। বাচ্চাদের এগুলো ক্রয় করে দেয়া যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৭) : মক্কায় একদিনের ছিয়াম বাইরের এক লক্ষ ছিয়ামের সমতুল্য। সেখানে এক দেরহাম খরচ করলে এক লক্ষ দেরহামের সমান এবং একটি নেকী করলে এক লক্ষ নেকীর সমান ছওয়াব পাওয়া যায়। বিভিন্ন হাদীছে মসজিদে নববীর ছওয়াব সমজিদে আক্বছার চেয়ে অধিক এসেছে। অথচ এখানে উভয় মসজিদের ছওয়াব পঞ্চাশ হাজার বলা হয়েছে। এর অর্থ করা হয়েছে, প্রত্যেক মসজিদের ছওয়াব পূর্ববর্তী মসজিদ হিসাবে বলা হইয়াছে অর্থাৎ জামে মসজিদের ছওয়াব পাঁচশ’ ছালাত নয়, বরং মহল্লার মসজিদ হতে পাঁচশ’ গুণ বেশী। এই হিসাব মতে জামে মসজিদে বার হাজার পাঁচশ’ (১২৫০০) ছালাতের ছওয়াব। মসজিদে আকছার ছওয়াব বাষট্টি কোটি পঞ্চাশ লক্ষ (৬২৫০০০০০০), মদীনার মসজিদের ছওয়াব তিন নিল বার খর্ব পঞ্চাশ আরব (৩১২৫০০০০০০০০০০) এবং হারাম শরীফের ছওয়াব একত্রিশ শঙ্ঘ পঁচিশ পদ্ম, (৩১২৫০০০০০০০০০০০০০০০) (ফাযায়েলে হজ্জ, পৃ. ৯২)। তাবলীগী নিসাবের ‘ফাযায়েলে হজ্জ’ কিতাবে বর্ণিত উক্ত ফযীলত কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৪১) : ঈদের খুৎবা কয়টি? কোথাও একটি আবার কোথাও দু’টি দিতে দেখা যায়। কোনটি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১২) : জামা‘আতে ছালাত আদায় করার বিধান কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৪০) : রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কবর ত্বাওয়াফ করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৬) : সউদী আরবের স্থায়ী গবেষণা ও ফাতাওয়া বোর্ড মুনাজাতের ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত দিয়েছে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৫) : টিভি, ফ্রিজ, এসি, রাইস কুকার, গান বাজানোর সাউন্ডবক্স, কম্পিউটার, ক্যামেরা, স্মার্ট মোবাইল ইত্যাদি সার্ভিসিং বা মেরামতের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করা কি হালাল হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৯) : ঈদুল আযহার চাঁদ দেখা দিলে, আক্বীক্বার জন্য পশু যব্হ করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২০) : কোন্ কাজগুলো ডান দিক থেকে এবং কোন্ কাজগুলো বাম দিক থেকে শুরু করা সুন্নাত? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৫) : আউয়াল ওয়াক্তে ফরয ছালাত আদায় করে বিলম্বিত ওয়াক্তে মসজিদে ছালাত আদায়ের ক্ষেত্রে মুছল্লী কি নফল ছালাতের নিয়ত করবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ