শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩১ অপরাহ্ন

যুবকদের অবসর সময় কাটানোর উপায়

-মুকাররম বিন মুহসিন মাদানী*


আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে লক্ষ্য করে বলেন,

فَاِذَا  فَرَغۡتَ فَانۡصَبۡ- وَ اِلٰی  رَبِّکَ فَارۡغَبۡ

‘কাজেই আপনি যখনই অবসর পাবেন, ইবাদাতের কঠোর শ্রমে লেগে যাবেন এবং আপনার রবের প্রতি গভীরভাবে মনোযোগ দিবেন’ (সূরা আলাম নাশরাহ : ৭-৮)। ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, نِعْمَتَانِ مَغْبُوْنٌ فِيْهِمَا كَثِيْرٌ مِنَ النَّاسِ الصِّحَّةُ وَالْفَرَاغُ ‘এমন দু’টি নে‘মত আছে, যে দু’টিতে অধিকাংশ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। তা হচ্ছে, সুস্থতা আর অবসর’।[১]

ব্যস্ততা মানুষকে এক অজানা গন্তব্যের দিকে দ্রুতগতিতে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। প্রত্যেক মানুষ স্ব স্ব কাজে প্রচণ্ড ব্যস্ততার সাথে সময় অতিবাহিত করছে। ক্ষণস্থায়ী জাগতিক জীবনের উন্নয়ন ও অগ্রগতির পিছনে মানুষ বিদ্যুতের গতিতে ছুটে চলেছে। অবসর, অবকাশ ও ফুরসত পরিভাষাগুলো যেন মানুষ ভুলতে বসেছে। কথায় বলে, ‘কাজ নেই তো খই ভাজ’। খই ভাজা কাজটা যেমন সহজ নয়, তেমন এটা কোন কাজেরও নয়। পূর্বে এমন বুলি শোনা গেলেও ইদানিং আর শোনা যায় না। কারণ ঐ খই ভাজার মত সময়ও বর্তমান মানুষের কাছে নেই। দুনিয়াদারির বিভিন্ন পেশা ছাড়াও মানুষের নিকট আছে মোবাইল, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, নোট, আইপ্যাডের মত সময় পার করার অত্যাধুনিক ডিভাইস। ফেসবুকে ঢুকলেই আর যেন বের হওয়ার মত সুযোগ মিলে না। ইউটিউবের খবরগুলো যেন একটির চেয়ে আরেকটির মূল্য বেশি। টুইট করে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের কাতারে শামিল হওয়া যেন বর্তমানে ফ্যশান হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা সকলেই রাতের পর রাত, দিনের পর দিন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা টাচ স্কীনের উপর স্ক্রলিং করেই সময় অতিবাহিত করছে। গবেষণায় দেখা গেছে- বর্তমানে এ্যান্ড্রয়েট ফোন তথা টাচ ফোন ব্যবহারকারী একজন মানুষ দৈনিক অন্তত ১৭ হাজার বার আঙ্গুল স্পর্শ করে থাকে। ভাবুন তো- একদিন বা ২৪ঘণ্টা ফোন যদি না থাকে, তাহলে হাত, চোখ, মন-মানসিকতা কতটা নিরাপদ ও সুরক্ষিত থাকল! অথচ এটাও ভাবার সময় নেই। ‘দৈনিক প্রথম আলো’ পত্রিকার কলামিস্ট সুমন রহমান ২০১৭ সালের ২৮ জুলাই তারিখে তার ৩ বছরের গবেষণার ফল উল্লেখ করে বলেন, ‘আমার দীর্ঘ গবেষণায় যা পেয়েছি, অধিকাংশ মানুষ তার অবসর সময় পার করেন টেলিভিশন দেখে। তন্মধ্যে সিনেমা দেখেই সময় কাটাই ৪২.৬ শতাংশ মানুষ। এছাড়াও ইউটিউব, ফেসবুক, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, লাইভ ক্রিকেট খেলা, ফুটবল, কুস্তি ইত্যাদি অনুপোকারী অনুষ্ঠান দেখে মানুষ সময় কাটাই’। এভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে যে, অবসর সময় মানুষ কোন না কোনভাবে অতিবাহিত করে। অধিকাংশ মানুষ তার অবসর সময়গুলো অপ্রয়োজনীয়, অনুপোকারী ও অবহেলায় নষ্ট করে দেয়। অথচ অবসর সময়কে ভাল কাজ ও ফলদায়ক চিন্তা-গবেষণায় অতিবাহিত করা উচিত। কেননা অবসর সময় আল্লাহ প্রদত্ত অনন্য নে‘মত। যে ব্যাপারে অধিকাংশ মানুষই গাফেল থাকে। তাই জনস্বার্থ বিবেচনায় এমন কল্যাণকর কাজে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত রাখা কর্তব্য, যাতে করে সময়ও অতিবাহিত হয়, নেকী অর্জন করা যায় এবং সময়ের আবর্তনে তা স্থায়ী রূপ লাভ করে। নিম্নে অবসর সময় কিভাবে পার করা যেতে পারে, কিভাবে ফলদায়ক করা যায় এবং স্থায়ী ছাদাক্বায়ে জারিয়ার মত কাজে রূপান্তরিত করা যায় তার একটি রূপরেখা উল্লেখ করার প্রয়াস পাব ইনশাআল্লাহ।

কুরআন শিক্ষা করা

কুরআন শিক্ষা করা ও অপরকে শিক্ষা দেয়া পৃথিবীর সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ কাজ। তাই অবসর সময়গুলোতে সর্বশ্রেষ্ঠ কাজ কুরআন শিক্ষা করে পার করা উচিত। এছাড়া কুরআন প্রত্যেক মুসলিমকেই শিখা উচিত। কেউ পিতা-মাতার সচেতনতা কিংবা পরিবেশগত কারণে ছোটবেলা থেকেই কুরআন শিখতে পারে। আবার অনেকের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তাদের কুরআন শিখা হয় না। তাই জীবনের যেকোন স্তরে অবসর সময় পেলেই ১/২ মাসে মহান সৃষ্টিকর্তার কালাম আল-কুরআন শিখতে পারেন। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, خَيْرُكُمْ مَنْ تَعَلَّمَ الْقُرْآنَ وَعَلَّمَهُ ‘তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তি সর্বোত্তম যে কুরআন শিখে এবং অন্যকে শেখায়’।[২] তাছাড়াও কুরআন শেখার ব্যাপারে একটি চমৎকার হাদীছ রয়েছে যা আমাদের যথেষ্ঠ অনুপ্রেরণা দেয়। যেমন আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

مَثَلُ الَّذِىْ يَقْرَأُ الْقُرْآنَ وَهْوَ حَافِظٌ لَهُ مَعَ السَّفَرَةِ الْكِرَامِ وَمَثَلُ الَّذِىْ يَقْرَأُ الْقُرْآنَ وَهْوَ يَتَعَاهَدُهُ وَهْوَ عَلَيْهِ شَدِيْدٌ فَلَهُ أَجْرَانِ

‘কুরআন সম্পর্কে অভিজ্ঞ ব্যক্তি ঐসব ফেরেশতাগণের সাথে থাকবে, যারা আল্লাহর অনুগত, মর্যাদাবান এবং লেখক। আর যে ব্যক্তি কুরআন পাঠ করে এবং তার জন্য কষ্টকর হওয়া সত্ত্বেও বারবার পড়ে সে ব্যক্তির জন্য দ্বিগুণ পুরস্কার’।[৩]

কুরআন তেলায়াত করা

কুরআন শেখা বা শেখানো আর কুরআন তেলায়াত করা দু’টি ভিন্ন বিষয়। তাই যারা কুরআন পড়তে পারে তারা অবসর সময়ে অধিকহারে কুরআন তেলায়াত করতে পারেন। মনীষীদের জীবনী আলোচনা করলে স্পষ্ট হয়, তারা কুরআন তেলাওয়াত করে জীবনে কত সময় পার করেছেন। আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলেন, কত দিনে কুরআন খতম করা উচিত? তিনি বলেন, চল্লিশ দিনে, এক মাসে, বিশ দিনে, পনের দিনে, দশ দিনে এবং সাত দিনে।[৪] সুতরাং যারা অবসর সময় পাই বিশেষ করে রামাযান মাসে এ ব্যাপারে বেশী সতর্ক হওয়া উচিত। কেননা অবসর সময় ভাল কোন কাজে পার না করলেও তা কিন্তু পার হয়ে যাবেই, অবশিষ্ট থাকবে না। তাই সালাফদের মত অন্তত বেশি বেশি কুরআন তেলায়াত করে কাটানো উচিত। যেমন,

১). ক্বাতাদাহ (রাহিমাহুল্লাহ) সাধারণত প্রতি ৭ দিনে কুরআন খতম করতেন। রামাযান আসলে প্রতি ৩ দিনে আর রামাযানের শেষ দশকে প্রতি রাতে একবার খতম করতেন।

২). ইমাম যুহরী (রাহিমাহুল্লাহ) হাদীছের প্রখ্যাত রাবী হলেও রামাযান মাস আসলে তার কাজই ছিল শুধু কুরআন তেলাওয়াত করা এবং ক্ষুধার্তকে খাদ্য দেয়া।

৩). ইমাম মালেক (রাহিমাহুল্লাহ) রামাযান মাস আসলে সবার অগোচরে চলে যেতেন বা হারিয়ে যেতেন- হাদীছের কোন দারস দিতেন না; বরং শুধু কুরআন তেলাওয়াত নিয়ে থাকতেন।[৫] তাই প্রত্যেক মুসলিমকে রামাযানের অবসর সময়ে বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত করে কাটানোর চেষ্টা করা উচিত।

লেখালেখি করা

আরবীতে একটি কথা প্রচলন আছে- من يكتب يقرأ مرتين ‘যে লিখে সে দুইবার পড়ে’। দুনিয়াতে রেখে যাওয়া যত অবদান আছে তন্মধ্যে লেখালেখি অন্যতম। যা স্থায়ী অবদান। কেননা ছাদাক্বায়ে জারিয়ার মধ্যে ‘উপকারী ‘ইলম’ একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিশুদ্ধ ‘ইলম অনুযায়ী অন্যকে শিক্ষা দেয়া, বক্তৃতা দেয়া, যার দ্বারা অনেকেই উপকৃত হতে পারে। আবার বিশুদ্ধ ‘ইলম অর্জন করে অথবা ইলম অনুযায়ী লেখালেখি করা অন্যতম একটি খেদমত, যার দ্বারা যুগ যুগ বা ক্বিয়ামত পর্যন্ত জাতি উপকৃত হতে পারে। তাই অবসর সময় লেখালেখি করে কাটানো যেতে পারে। বর্তমানে মিডিয়ার যুগে আমার অংশগ্রহণ কতটুকু? বিভিন্ন ইলেক্ট্রিক মিডিয়া, প্রিণ্ট মিডিয়ার মাধ্যমে যে মিথ্যা ছড়ানো হচ্ছে অন্তত তার প্রতিবাদ স্বরূপ হলেও লেখালিখি করা উচিত। বর্তমানে বিভিন্ন লিখনির দিকে দৃষ্টিপাত করলেই বুঝা যায় যে, সেখানে শুধু ইসলাম, ছহীহ আক্বীদা এবং ছহীহ সুন্নাহ বিরোধী তথ্য-উপাত্তে ভরপুর। মানুষের সামনে অন্তত সত্যটা তুলে ধরার জন্য এ ব্যাপারে যাদের যথেষ্ঠ দক্ষতা আছে তাদের লেখালেখি করা আবশ্যক। এছাড়া অবসর সময়ে লেখালেখিতে ব্যস্ত থাকলে অহেতুক অনেক কর্মই পরিহার করা সম্ভব।

লেইজার স্টাডিজ

অবসর-অধ্যয়ন, গ্রুপ স্টাডি বা স্টাডি চ্যালেঞ্জ ইত্যাদির মাধ্যমে অবসর সময় কাটানো যেতে পারে। এতে করে অনেক উপকারও পাওয়া সম্ভব। যারা গ্রুপে আসে তারা অধিকাংশ মেধাবী হয়ে থাকে অন্তত কিছু মেধাবীদের সংস্পর্শে সময় পার করা যায়, ভাল বুদ্ধি দিয়ে ভাল পরিকল্পনা করা যায়, গঠনমূলক কাজের প্রেরণা পাওয়া যায় এবং জ্ঞানের পরিধি বাড়তে থাকে। অবসরে উপকারী পঠনের মাধ্যমে নিজেকে বিকশিত করাই এর মূল উদ্দেশ্য। কওমী মাদ্রাসায় এই অবসরে গ্রুপ স্টাডির মাধ্যমে সময় পার করাকে বলে তাকরার। যেখানে ক্লাসের সব শ্রেণীর শিক্ষার্থীই পাঠ বুঝতে সক্ষম হয় এবং অলস সময় কাটানোর আর কোন সুযোগ থাকে না।

ভাষা শিখা

ইংরেজীতে একটি প্রবাদ আছে- More languages equal more opportunities. কথাটি হয়তো দুনিয়ামুখী; কিন্তু এটি অবসর সময় কাটানোর একটি দারুন সুযোগ। তারপরও দাওয়াতী ময়দানে এই ভাষা আপনার কাজ দেবে। মক্কা-মদীনা একমাত্র জায়গা, যেখানে দুনিয়ার সব ভাষাভাষীর মানুষ পাওয়া যায়। দূর থেকে আসা আল্লাহর এই মেহমানরা দ্বীন সম্পর্কে কত অজ্ঞ তা নিজ চোখে না দেখলে হয়তো পাঠককে বুঝানো যাবে না। অনেক দেশ আছে, যারা এখনো সভ্যতার ছায়া পর্যন্ত পায়নি। তাদের কাছে অন্তত এটা বলা শিখুন যে, এটা সুন্নাত নয় বা এটা জায়েয না। উর্দূভাষী বা পাকিস্তানীরা বাঙ্গালীদের তো আপন ভাইয়ের মত এসে বলবে, ‘মেরে ভাই আপ কেইসা হোওয়া, ঠিক হাই?’ তখন অন্তত তার জবাব দেয়া উচিত। তাছাড়া আমাদের বাংলা ভাষাও অনেকের সুন্দর না। অধিকাংশ মানুষই আঞ্চলিক ভাষা বললেও অন্যের কাছে তারা ভাল ভাষাই শুনতে পসন্দ করে। তাই অবসর সময় ভাষা শিক্ষার মাধ্যমে কাটানো উচিত।

দুনিয়ার সবচেয়ে বেশী মানুষ যে ভাষায় কথা বলে তা হচ্ছে মান্দারিন বা চিনা ভাষায়। মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থাকতে আমার রুমমেট ছিল ইয়ামানী বন্ধু ‘ফারেস ফালাহ’। যাকে একজন এ্যারাবিয়ান হওয়ার পরও চাইনা ভাষা শিখতে দেখতাম। কেননা সেখানে একটি বিষয় খুব শুনা যেত যে, কেউ যদি আরবীর সাথে চিনা ভাষা শিখতে পারে, তাহলে দুনিয়া বা আখিরাতে নাজাত বা মুক্তির জন্য কোন চিন্তা করতে হবে না। যা শিখলে দুনিয়াতে প্রচুর সম্পদ উপার্জনের সম্ভাবনা আছে অনুরূপ তাদের মাঝে দাওয়াতী কাজ করেও আখিরাতের নাজাত নিশ্চিত করা যেতে পারে।

স্বেচ্ছায় সেবা দিন

যাকে বলে বেগার দেয়া। বিভিন্ন অঞ্চলে এই বেগার দেয়াই অনেক বড় কাজ। ধানের খড় গোছানোর জন্য অর্থের বিনিময়ে কামলা না নিয়ে এলাকার পরস্পর পরস্পরে স্বেচ্ছায় সেবা দানের মাধ্যমে এক সামাজিক বন্ধন তৈরি হয়। হয়তো কিছু আপ্যায়নের ব্যবস্থা থাকে মাত্র। তাতে পরস্পর মহব্বত তৈরি হয়, অপরের সম্পদের প্রতি দরদও তৈরি হয়। তাই স্বেচ্ছায় সেবা দান অনেক বড় একটি গুণ।

বই পড়ুন

বহুল প্রচলিত একটি বাক্য, যা বহু বিদ্বানের মুখে শোনা যায়। দার্শনিক এ্যরিস্টোটালকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ‘আপনি একজন ব্যক্তিকে কিভাবে বিচার করবেন যে,  লোকটি কেমন বা কোন্ মাপের?’ দার্শনিক এ্যারিস্টোটাল জবাব দিয়েছিলেন, أسأله كم كتابا يقرأ وماذا يقرأ ‘আমি তাকে জিজ্ঞেস করব, সে কতগুলো বই পড়েছে এবং বইগুলো কী বিষয়ে ছিল’। মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর কুরআন নাযিলের সময় প্রথম শব্দটি ছিল ‘পড়’। বই পড়া প্রতিযোগিতা দিয়ে অথবা নিজেই বইপড়া চ্যালেঞ্জ নিয়ে অবসর সময় কাটানো যেতে পারে। আমরা অনেকেই পড়তে আগ্রহী। কিন্তু সে পড়াটাই যদি কুরআনের বঙ্গানুবাদ, ইসলামী সাহিত্য, বাংলা হাদীছ, নবী-রাসূল-ছাহাবীদের জীবনী অথবা সালাফদের লিখিত বিভিন্ন লিখনী থেকে বাছাইকৃত বই পড়া যায়, তাহলে মানুষের মন-মানসিকতা ভাল থাকে। বইপড়া সম্পর্কে প্রখ্যাত কতিপয় বিদ্বানের প্রসিদ্ধ কিছু উক্তি তুলে ধরা যায়- যেমন বলা হয়,

১). الكتاب نافذة نتطلع من خلالها إلى العالم ‘বই হল জানালার মত, যে জানালা দিয়ে পুরো পৃথিবী দেখা যায়’।

২).لا ينمو الجسد إلا بالطعام والرياضة ولا ينمو العقل إلا بالمطالعة والتفكير ‘খাদ্য ও পরিচর্যা ছাড়া যেমন কোন শরীর বেড়ে ওঠে না, অনুরূপ চিন্তা পড়াশোনা ছাড়াও মানুষের বিবেক-বুদ্ধির সন্ধান পাওয়া যায় না’। বই পড়া ভাল কাজ মনে করে অনেকেই আমরা শুধু বই পড়েই থাকি। কিন্তু এ্যরিস্টোটলের উক্তি এবং আব্বাস মাহমূদ আল-আক্কাদের উক্তির আলোকে বলতে হয় মনোযোগ ও বিষয় নির্বাচন করা যরূরী।

৩). আব্বাস মাহমূদ বলেন, اقرأ كتابا جيدا ثلاث مرات أنفع لك من أن تقرأ ثلاث كتب جيدة ‘তিনটি কিতাব স্বাভাবিকভাবে পড়ার চাইতে একটি কিতাবই প্রয়োজনে ৩ বার সুন্দরভাবে পড়, সেটাই বেশি উপকারী হবে’। যদি কোন বই বিষয়বস্তু না জেনেই পড়া হয়ে যায়, তাও সেটাও যেন বেকার না হয়, সেখান থেকে কী উপকার পাওয়া যায় তা কাজে লাগানো উচিত।

৪). আব্বাস মাহমূদ আল-আক্কাদ চমৎকার বলেছেন, اقرأ ما ينفعك ولكنى أقول بل انتفع بما تقرأ ‘তোমার দায়িত্বশীলরা তোমাকে বলবে, যা উপকারী তুমি তাই পড়। কিন্তু আমি বলি, তুমি যা পড়ছ তাই-ই ফলদায়ক কর’।

৫). জনৈক চাইনিজ মনীষীর জীবনী থেকে পাওয়া যায় যে, তিনি বলেন, When you have read a book for the first time, you get to knwo a friend; read it for a second time and you meet an old friend. ‘যখন তুমি একটি বই একবার পড়বে, তখন তুমি ভাববে আমি নতুন বন্ধু পেয়েছি। আর সেটাই যদি দ্বিতীয়বার পড়, তোমার মনে হবে আমার পুরাতন বন্ধুর সাক্ষাৎ পেলাম’।

শরীর চর্চা

শরীর চর্চা বা ব্যায়ামের মাধ্যমে ব্যক্তির টেনশন, অস্থিরতা, অবসাদ, দুঃশ্চিন্তা, হতাশা ইত্যাদি দূর করতে সহায়তা করে, বাড়তি ওজন কমায়, সুস্থ ও সুঠাম দেহের অধিকারী হওয়া যায়, নানা ধরণের রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব হয় এবং মানুষিক উদ্যম তৈরি হয়। বর্তমান ‘বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা’র গবেষণায় দেখা গেছে, শরীর চর্চার মাধ্যমেও মানুষের অনাকাক্সিক্ষত বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব এবং এটা প্রাকৃতিক উপায়। তাই অবসর সময় অন্যান্য ভাল কাজের সাথে যদি শরীর চর্চা বা ব্যায়ামের মাধ্যমেও পার করি, তাও একটি উত্তম কাজ।

পর্যাপ্ত ঘুমানো

হে যুবক ভাই! মনে রাখবেন ঘুমটাও একটি ইবাদত। কেউ যদি এশার ছালাত জামা‘আতে পড়ে ঘুমাই, তাহলে সে যেন রাতের অর্ধেক সময় ছালাতে কাটাল। আর এশার সাথে কেউ যদি ফজর ছালাতও জামা‘আতের সাথে আদায় করে, তাহলে সে যেন পুরো রাত ছালাত আদায়ের মাধ্যমেই কাটাল। বর্তমানে মানুষ ঘুমাতে গিয়েও যথেষ্ঠ সময় নষ্ট করে ফেলে। কেউ কেউ টিভি, মোবাইলে প্রায় পুরো রাত কাটিয়ে ফজরের পূর্বে ঘুমিয়ে যায়। কেউবা আবার গল্প করে রাত কাটিয়ে সকালে ঘুমাই ইত্যাদি। তারই মাঝে শরীরকে আরাম দেয়ার জন্য ওযূ ও মেসওয়াক করে কেউ যদি ঘুমায়, তাহলে তার জন্য পুরো রাত ফেরেশতারা দু‘আ করতে থাকে। আমরা জালসা প্রোগ্রামে শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে বলে থাকি, এই গভীর রাতে মুসলিমদের সবচেয়ে উত্তম ইবাদত হল ঘুমানো যদিও আমি এখন বক্তৃতা করছি। যদি আপনি না ঘুমান তাহলে সবচেয়ে উত্তম এই জালসায় এসে কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক আলোচনা শ্রবণ করা। এ দু’য়ের কোন একটি ছাড়া যা করছেন তার জন্য হয়তো আপনাকে কাঠগড়াই জবাবদীহি করতে হবে। রাত জাগার জন্য প্রয়োজনে নাইটগার্ড এর চাকুরী নিন। প্রয়োজন ছাড়া রাত জাগা অপরাধ। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এশার পরে কথা বলাই অপসন্দনীয় ছিল।

ভ্রমণ করুন

বন্ধু বা পরিবারকে সাথে নিয়ে ঘুরতে যান। আল-কুরআন সফরের ব্যাপারে যথেষ্ঠ উৎসাহিত করেছে। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজেও আল্লাহর নে‘মত দেখার জন্য বাহিরে যেতেন। মহান আল্লাহ তাঁর সৃষ্টিকর্ম কিভাবে সম্পন্ন করেছেন তা আবার কিভাবে সৃষ্টি করবেন তা দেখার জন্য মুসলিমদের উচিত দুনিয়ার বিভিন্ন স্পটে সফর করে দেখা। মহান আল্লাহ বলেন, قُلۡ سِیۡرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ فَانۡظُرُوۡا کَیۡفَ بَدَاَ  الۡخَلۡقَ ثُمَّ اللّٰہُ یُنۡشِیُٔ النَّشۡاَۃَ الۡاٰخِرَۃَ ‘(হে নবী!) আপনি বলুন, তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর এবং দেখ, কিভাবে তিনি সৃষ্টিকর্ম শুরু করেছেন। অতঃপর আল্লাহ পুর্নবার সৃষ্টি করবেন’ (সূরা আল-‘আনকাবূত : ২০)। আমরা যখন মাদায়েন ছালেহের সেই অভিশপ্ত শহর ঘুরতে যাই, তখন মিথ্যাবাদীদের চরম পরিণতি দেখে বারবার মনে হচ্ছিল- রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই জায়গা অতিক্রম করার সময় কান্নার মত চেহারা নিয়ে মাথায় হাত দিয়ে দ্রুতগতিতে পার হয়েছিলেন। ভাবখানা এমন যে, এখনই আকাশ থেকে কিছু একটা মাথার উপর পড়বে। মহান আল্লাহ বলেন,

قُلۡ سِیۡرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ ثُمَّ انۡظُرُوۡا کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ  الۡمُکَذِّبِیۡنَ

‘তোমরা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ কর, অতঃপর দেখ, মিথ্যাবাদীদের পরিণাম কী হয়েছে?’ (সূরা আল-আন‘আম : ১১)। তাই অবসর সময়ে পেলেই মহান আল্লাহর মহা সৃষ্টিকর্ম অবলকোন করুন, সমুদ্র দেখুন, পাহাড়ে উঠে আল্লাহর মহত্ত দেখুন। আকাশের দিকে তাকিয়ে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মহান আল্লাহর সৃষ্টিকৌশল দেখতেন। মহান আল্লাহও আকাশ, উট, যমীন, পাহাড় দেখার জন্য বলেছেন (সূরা আল-গাশিয়াহ : ১৭-২০)।

পরিকল্পনা করা

সুন্দর সুন্দর পরিকল্পনা তৈরি করা এবং সেগুলো স্মৃতিপটে সংরক্ষণ করা কিংবা খাতায় লিপিবদ্ধ করা।  এমন পরিকল্পনা তৈরি করুন, যা ব্যক্তি, পরিবার বা জাতির উপকারে আসবে। এলাকার মানুষকে কিভাবে কুরআন শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসা যায়। ইসলামবিমুখ মানুষকে কিভাবে ইসলামের দিকে আনয়ন করা যায়,  এলাকায় ভাল কোন এ্যাম্বুলেন্স নেই তার অভাব কিভাবে মেটানো যায় তার একটা প্লান তৈরি করুন। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে শহরাঞ্চল পর্যন্ত অধিকাংশ মসজিদে আবর্জনা ও নোংরায় ভর্তি থাকে, তাকে কিভাবে পরিষ্কার রাখা যায়, মুছল্লীদের আনন্দ দেয়া যায়, তার ওয়াশরুমটা কিভাবে রুচিশীল করা যায়, কার্পেটগুলো কিভাবে আরো স্বচ্ছ ও সুন্দর রাখা যায় ইত্যাদি পরিকল্পনা করা যায়। এভাবে ক্রমান্বয়ে সমাজের সার্বিক ক্ষেত্রে উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য একক বা সম্মিলিতভাবে পরিকল্পনা করা যেতে পারে। কেননা অবসর সময়কে অন্যান্য কাজের সাথে এ পরিকল্পনা তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকলে পরিকল্পনা মাফিক কাজ করা সহজ হয়।

পরিবারকে সময় দেয়া

তাদের সাথে ফোনে সময় দিন, যোগাযোগ করুন, খোঁজ-খবর নিন। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, إِنَّ لِزَوْرِكَ عَلَيْكَ حَقًّا وَإِنَّ لِزَوْجِكَ عَلَيْكَ حَقًّا ‘নিশ্চয় তোমার প্রতিবেশীর জন্য তোমার উপর হক্ব আছে এবং তোমার স্ত্রীর প্রতিও তোমার হক্ব আছে’।[৬] স্মর্তব্য যে, পরিবারকে সময় দেয়াও একটি কাজ। আরেকটি চমৎকার হাদীছ বর্ণিত হয়েছে- আবুদ্দারদা ও সালমান (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)-এর মধ্যে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভ্রাতৃত্বের বন্ধন তৈরি করে দেন। সালমান একদিন আবুদ্দারদার বাড়িতে ঘুরতে গিয়ে উম্মুদ্দারদার পোশাক দেখে বুঝতে পারলেন। আবুদ্দারদা ও সালমান (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) এক সাথে খেতে বসেন। আবুদ্দারদা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ছায়েম তাই খেতে চাইলেন না, কিন্তু সালমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বাদ সাধলেন যে, তাঁর সাথে খেতেই হবে। শেষ পর্যন্ত নফল ছিয়াম ভেঙ্গে খাওয়াতে সঙ্গ দিলেন। রাতে সবাই ঘুমানোর পর আবুদ্দারদা যখন ছালাতের জন্য বের হতে চাচ্ছিলেন, তখন সালমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হাত ধরে প্রতিরোধ করলেন। শেষে দু’জন একসাথে ছালাত আদায় করলেন এবং সালমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) তাকে কিছু কথা বললেন। সালমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) আবুদ্দারদা (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে বললেন,

إِنَّ لِرَبِّكَ عَلَيْكَ حَقًّا وَلِنَفْسِكَ عَلَيْكَ حَقًّا وَلأَهْلِكَ عَلَيْكَ حَقًّا فَأَعْطِ كُلَّ ذِىْ حَقٍّ حَقَّهُ

‘আপনার উপর আপনার রবের হক্ব আছে, আপনার উপর আপনার হক্ব আছে এবং আপনার উপর আপনার স্ত্রীর হক্ব আছে। আপনি প্রত্যেক হকদারের হক্ব আদায় করবেন’।[৭] পরিবারের খোঁজ-খবর নেয়ার সাথে সাথে প্রতিবেশীর খোঁজ-খবর নেয়াও আবশ্যক। কারণ অন্য হাদীছে নিজ শরীর, চোখ, স্ত্রী এবং প্রতিবেশীর খোঁজ-খবরের কথা এসেছে।[৮]

সুস্থ বিনোদনে সম্পৃক্ত হোন

আমরা জানি প্রত্যেক মানুষের বিনোদন বলে কিছু থাকে। এক্ষেত্রে আমরা সুস্থ বিনোদন নিতে বা দিতে ব্যর্থ হলে অবশ্যই মানুষ অসুস্থ বিনোদনে আসক্ত হবে। সবাই বিনোদন মানে বুঝে গান শোনা, মুভি দেখা, যাত্রামঞ্চে যাওয়া, বৈধ-অবৈধ খেলায় অংশগ্রহণ করা। অথচ এগুলো বিনোদন হলেও সুস্থ বিনোদন না। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজ স্ত্রী আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-কে আনন্দ দেয়ার জন্য বা বিনোদন দেয়ার জন্য খেলা দেখিয়েছেন, যতক্ষণ আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর মন চায়। খোলায় অংশগ্রহণ করেছেন তাতে নিজে জিতেছেন আবার আয়শা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-কেও জিতিয়েছেন। হজ্জের সফর, যুদ্ধের সফর বিভিন্ন সময় প্রয়োজনে লটারী করে স্ত্রীদের নির্ধারণ করে তাদের সঙ্গে নিয়েছেন। তাদের কাছে পরামর্শ নিয়েছেন এবং তাদের বিভিন্ন বৈধ চাহিদাও পূরণ করেছেন।

দা‘ওয়াতী কাজ করা

মানুষ অবসর সময়কে হেলায় অতিবাহিত করে। মনে রাখা যরূরী যে, মুসলিম হিসাবে সকলকেই ইসলাম প্রচার ও প্রসারে আত্মনিয়োগ করা উচিত। এজন্য অবসর সময়কে আপনি দা‘ওয়াতী কাজে অতিবাহিত করতে পারেন। কাজ নেই তো কোন বন্ধু কিংবা আত্মীয়-স্বজনের সাথে দেখা করেন কিংবা তাদের খোঁজ-খবর নেন, সাথে সাথে ইসলামের কিছু কথাও শুনিয়ে দিন। ছালাত আদায় করছে কি না, কুরআন তেলাওয়াত করে কি না ইত্যাদি ব্যাপারে খোঁজ নিতে পারেন। এতদ্ব্যতীত অবসর সময়ে দা‘ওয়াতী কাজের জন্য নিজেকে গড়ে তোলার প্রস্তুতি গ্রহণ করা যেতে পারে। আরো উল্লেখ করা যায় যে, বর্তমান তথ্য-প্রযুক্তির এই অত্যাধুনিক যুগে নাটক, সিনেমা, টিকটক, লাইকি ইত্যাদি নোংরা ভিডিও না দেখে ফেসবুক, ওয়াটসআপ, ইউটিউব কিংবা টুউটারে কুরআনের কোন আয়াত, ছহীহ কোন একটি হাদীছ, সালাফদের কোন বাণী ইত্যাদি পোস্ট দেয়া, শেয়ার করা এবং ছহীহ আক্বীদা সম্পন্ন কোন আলিমদের বক্তব্য পোস্ট করা, শেয়ার করা কিংবা ম্যাসেজ করা ইত্যাদির মাধ্যমে অবসর সময় পার করা যেতে পারে। উল্লেখ্য, অবসর সময়ে দা‘ওয়াতী কাজের ক্ষেত্রে নিজ, নিজ পরিবার, নিজ আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদেরকে অগ্রাধিকার প্রদান করা উচিত।

কিছু একটা করুন

বলা হয়- ‘অলস মস্তিস্ক শয়তানের বাসা’। আপনি যখন অবসর সময় পার করছেন কিন্তু করার মত তেমন কোন কাজ নেই; তবুও একটা কিছু করুন, যা আপনার বা অন্যের উপকারী। যদিও সেটা নাও করা হয়, তাহলে সেখানেই শয়তান বাসা বেঁধে কর্মের পরিবর্তে কুকর্মের দিকে উৎসাহিত করবে। তাই কোন সময় বসে না থেকে অন্তত গল্পের বই  পড়ুন, কারো সাথে গঠনমূলক গল্প করুন, প্রয়োজনে কারো সাথে চা আড্ডা দিন বা রাস্তায় হাঁটুন। মাথায় রাখুন আমাকে কিছু একটা করা উচিত।

আল্লাহ তা‘আলা সকলকে অফুরন্ত অবসর সময়কে যথাযথ, উপকারী ও উত্তম কাজে লাগানোর সুযোগ করে দিন-আমীন!!



* এম.ফিল গবেষক, আরবী বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

তথ্যসূত্র : 
[১]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৪১২; তিরমিযী, হা/২৩০৪; মিশকাত, হা/৫১৫৫।
[২]. ছহীহ বুখারী, হা/৫০২৭; আবূ দাঊদ, ১৪৫২; মিশকাত, হা/২১০৯।
[৩]. ছহীহ বুখারী, হা/৪৯৩৭; ছহীহ মুসলিম, হা/৭৯৮।
[৪]. আবূ দাঊদ, হা/১৩৯৫, সনদ ছহীহ।
[৫]. ইবনু রজব হাম্বালী, লাতায়েফ মা‘আরিফ, পৃ. ১৮১; আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল মুহসিন আব্বাদ, ফিক্বহুল আদইয়া ওয়াল আযকার, পৃ. ৭২।
[৬]. ছহীহ বুখারী, হা/১৯৭৪।
[৭]. ছহীহ বুখারী, হা/৬১৩৯।
[৮]. ছহীহ বুখারী, হা/১৯৭৫।




মসজিদে করণীয় ও বর্জনীয় কাজসমূহ (শেষ কিস্তি) - মুহাম্মাদ ফাহিমুল ইসলাম
আতিথেয়তা - রাফিউল ইসলাম
পাশ্চাত্য বিশ্বে ইসলামফোবিয়া : সমস্যা ও সমাধান - মাযহারুল ইসলাম
এ্যাপস যামানা - আব্দুল্লাহ আল-মামুন
যুবকদের অবসর সময় কাটানোর উপায় - মুকাররম বিন মুহসিন মাদানী
সমকামিতা ও ট্রান্স জেন্ডার: সাম্রাজ্যবাদীদের নীল নকশা - মাযহারুল ইসলাম
শিক্ষার্থীর শিষ্টাচার - অনুবাদ : জাহিদ বিন মাসঊদ
শিক্ষার্থীর শিষ্টাচার (শেষ কিস্তি) - অনুবাদ : জাহিদ বিন মাসঊদ
শিক্ষার্থীর শিষ্টাচার (৫ম কিস্তি) - অনুবাদ : জাহিদ বিন মাসঊদ
শিক্ষার্থীর শিষ্টাচার (৩য় কিস্তি) - অনুবাদ : জাহিদ বিন মাসঊদ
যেমন ছিল সালাফদের রামাযান - মাযহারুল ইসলাম
শিক্ষার্থীর শিষ্টাচার (২য় কিস্তি) - অনুবাদ : জাহিদ বিন মাসঊদ

ফেসবুক পেজ