বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৪ অপরাহ্ন

ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর জীবন ও কর্ম

-আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ*


(শেষ কিস্তি)

ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর মানহাজ
ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) নির্দিষ্ট কোন মাযহাবের অনুসারী ছিলেন না। তিনি যেমন হাম্বলী মাযহাবের অনেক ফৎয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন, অনুরূপভাবে শাফেঈ মাযহাবের অনেক ফৎয়ার পক্ষেও মত দিয়েছেন। এমনকি হানাফী মাযহাবের অনেক ফৎয়ার পক্ষেও তিনি মত দিয়েছেন।

আল্লামা তাজ উদ্দীন আস-সুবকীর (রাহিমাহুল্লাহ) মতে, ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) শাফেঈ মাযহাবের অনুসারী ছিলেন।[১] আল্লামা ইবনুল ক্বাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)-এর মতে, ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) হাম্বলী মাযহাবের অনুসারী ছিলেন’।[২] মূলত তিনি একজন মুজতাহিদ ছিলেন। সালাফী মানহাজের অনুসরণ করতেন। তিনি নির্দিষ্ট কোন মাযহাবের অনুসারী ছিলেন না। যেমন

ইমাম ইবনু তাইমিয়াহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, أَمَّا الْبُخَارِيُّ وَأَبُودَاوُد فَإِمَامَانِ فِي الْفِقْهِ مِنْ أَهْلِ الِاجْتِهَادِ ‘ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) এবং ইমাম আবূ দাঊদ (রাহিমাহুল্লাহ) তারা উভয়ে মুজতাহিদ ফক্বীহ ছিলেন’।[৩]

আনোয়ার শাহ কাশ্মীরী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, إِنَّ الْبُخَارِيَّ عِنْدِيْ سَلَكَ مَسْلَكَ الاِجْتِهَادِ وَلَمْ يُقَلِّدْ أَحَدًا فِي كِتَابِهِ ‘আমার মতে, ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) একজন মুজতাহিদ ছিলেন। তিনি তার গ্রন্থে কারো তাক্বলীদ করেননি’।[৪]

শায়খ উছায়মীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, তিনি আরো বলেন,كاَنَ مُجْتَهِداً فِي الْفِقْهِ وَلَهُ دِقَّةٌ عَجِيْبَةٌ فِي اِسْتِنْبَاطِهِ مِنَ الْحَدِيْثِ ‘ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) ফক্বীহ মুজতাহিদ ছিলেন। হাদীছের মাসআলা সাব্যস্ত করার ক্ষেত্রে বিস্ময়কর সূক্ষ্ম জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন’।[৫]

উল্লেখ্য যে, যারা চার মাযহাবের কোন একটির তাক্বলীদ করা ফরয মনে করেন, তারা হঠকারিতা করে প্রত্যেক ইমামের নামের সাথে হানাফী, মালেকী, শাফেঈ, হাম্বলী ইত্যাদি উপাধি যোগ করে থাকেন। অথচ তাঁরা কেউ কোন মাযহাবের অনুসারী ছিলেন না। আল্লাহ আমাদেরকে হক্ব বুঝার তাওফীক্ব দিন।

‘আল-জামি‘উছ ছহীহ’ সংকলন
ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) ঠিক কোন্ সময়ে ‘জামি‘উছ ছহীহ’ গ্রন্থটি সংকলন শুরু করেছিলেন এ ব্যাপরে নির্ভরযোগ্য কোন তথ্য পাওয়া যায় না। তবে ধারণা করা হয়, ছহীহ বুখারীর সংকলন কার্য ২৩৩ হিজরীর আগে শেষ হয়। যেহেতু গ্রন্থটি সংকলনের পর তা মূল্যায়নের উদ্দেশ্যে তৎকালীন প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিছ ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ), আলী ইবনুল মাদীনী (রাহিমাহুল্লাহ) ও ইমাম ইয়াহইয়া ইবনু মাঈন (রাহিমাহুল্লাহ)-এর নিকটে পেশ করেন। তাঁরা সকলে গ্রন্থটির ভূয়সী প্রশংসা করেন।

মুহাম্মাদ মুহাম্মাদ আবু যাহব (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) যখন গ্রন্থটির সংকলন শেষ করলেন, তখন ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল, ইয়াহইয়া ইবনু মাঈন, আলী ইবনুল মাদীনী প্রমুখ মুহাদ্দিছের নিকট তা পেশ করলে, সকলেই তার প্রশংসা করেন। চারটি হাদীছ ব্যতীত তার সকল হাদীছের ছহীহ হওয়ার ব্যাপারে তারা স্বীকৃতি দেন। ইমাম উক্বাইলী বলেন, এই ৪টি হাদীছে ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর কথাই সঠিক। তথা ৪টি হাদীছও ছহীহ।[৬] এখানে ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) যাদের নিকটে ‘আল-জামি‘উছ ছহীহ’ গ্রন্থটি উপস্থাপন করেন, তাদের জন্ম-মৃত্যু সন নিরীক্ষণ করলে বুঝা যায়, তিনি ২১৭ হিজরী বা তার আগে ছহীহ বুখারীর সংকলন শুরু করেছেন এবং ২৩৩ হিজরী বা তার আগে শেষ করেছেন।

এই গ্রন্থটির ভূয়সী প্রশংসায় হাফিয আল-ইরাকী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, أَوَّلُ مَنْ صَنَّفَ فِي الصَّحِيْحِ … مُحَمَّدٌ وَخُصَّ بِالتَّرْجِيْحِ ‘এটিই একমাত্র ছহীহ হাদীছ সম্বলিত গ্রন্থ, যা সর্বপ্রথম সংকলন করেন ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈল আল-বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) এবং এটি বিশেষভাবে অগ্রাধিকার প্রাপ্ত’।[৭]

খায়রুদ্দীন আয-যিরাকলী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) প্রায় ছয় লক্ষ হাদীছ সংগ্রহ করেন এবং তা থেকে তার ছহীহ গ্রন্থে সে সকল হাদীছ গ্রহণ করেন, যেগুলোর রাবী সম্পর্কে তিনি নিশ্চিত হন। তিনিই ইসলামে প্রথম এধরণের ছহীহ গ্রন্থ সংকলন করেছেন’।[৮]

ইমাম খত্বীব বাগদাদী (রাহিমাহুল্লাহ) স্বীয় ‘তারীখে বাগদাদে’ বর্ণনা করেছেন, ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, صنفت كتابي الصحيح لست عشرة سنة خرجته من ستمائة ألف حديث ‘আমি আমার এই ছহীহ গ্রন্থটি ৬ লক্ষ হাদীছ থেকে যাচাই-বাছাই করে ১৬ বছরে লিখেছি’।[৯]

‘আল-জামি‘ঊছ ছহীহ’ সংকলনের প্রেক্ষাপট
ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) ‘আল-জামি‘ঊছ ছহীহ’ সংকলনের প্রেরণা তাঁর উস্তায ইসহাক্ব ইবনু রাহওয়াই (রাহিমাহুল্লাহ)-এর দারস থেকে লাভ করেন। ইবরাহীম বিন মা‘ক্বিল আন-নাসাফী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘আমি ইমাম বুখারীকে বলতে শুনেছি তিনি বলেন, আমি ইসহাক্ব বিন রাহওয়াইহ-এর নিকটে ছিলাম তখন আমাদের কিছু সাথী আমাদেরকে লক্ষ্য করে বলল, ‘যদি তোমরা রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ছহীহ সুন্নাহর উপর কোন সংক্ষিপ্ত কিতাব জমা করতে!’। তখন আমার অন্তরে কথাটি গেঁথে যায় এবং আমি এই বই লিখতে শুরু করি’।[১০]

ছহীহ বুখারী প্রণয়নে উদ্যোগী হওয়ার কারণ হিসাবে আরেকটি বর্ণনা পাওয়া যায়। ইমাম বুখারী ঢ় বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে স্বপ্নে দেখলাম। আমি যেন তার সামনে দাঁড়িয়ে আছি আর আমার হাতে একটি পাখা রয়েছে, আমি তা দিয়ে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর শরীর থেকে মাছি তাড়াচ্ছি। অতঃপর আমি কিছু স্বপ্নের তা‘বীরকারীগণকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তারা বললেন, ‘তুমি রাসূলকে মিথ্যা থেকে বাঁচাবে’। এই স্বপ্নই আমাকে ছহীহ বুখারী লিপিবদ্ধ করার প্রতি আগ্রহী করে তুলে’।[১১]

গ্রন্থের নামকরণ
ওলামায়ে কেরামের নিকট গ্রন্থটি ‘ছহীহুল বুখারী’ বা ‘আল-জামি‘ঊছ ছহীহ’ নামে পরিচিতি লাভ করেছে।

ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) এ গ্রন্থের নামকরণ করেছেন,

اَلْجَامِعُ الْمُسْنَدُ الصَّحِيْحُ الْمُخْتَصَرُ مِنْ أُمُوْرِ رَسُوْلِ اللهِ وَسُنَنِهِ وَأَيَّامِهِ

‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাজকর্ম, সুন্নাত ও সমকালীন অবস্থা সম্পর্কে নির্ভুল সনদযুক্ত হাদীছ সমূহের সংক্ষিপ্ত ও পূর্ণাঙ্গ সংকলন’।[১২] অন্যদিকে ইমাম ইবনু হাজার (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, اَلْجَامِعُ الصَّحِيْحُ الْمُسْنَدُ الْمُخْتَصَرُ مِنْ حَدِيْثِ رَسُوْلِ اللهِ وَسُنَنِهِ وَأَيَّامِهِ ‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্নাতসমূহ ও তার দিনাতিপাতের ঘটনাগুলোর ছহীহ ও সংযুক্ত সনদে বর্ণিত সংক্ষিপ্ত কিন্তু সার্বিক সংকলন’।[১৩]

বিশ্লেষণ : এখানে জামে‘ বলতে এমন গ্রন্থকে বুঝানো হয়, যাতে ইসলামের সার্বিক বিষয়াদির আলোচনা থাকে। অনেকেই মৌলিক ৮টি অধ্যায়ের আলোচনাকে কোন গ্রন্থের জামে‘ হওয়ার জন্য যথেষ্ট মনে করেছেন। ড. নুরুদ্দীন আতার (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

الجامع في اصطلاح المحدثين: هو كتاب الحديث المرتب على الأبواب الذي يوجد فيه أحاديث في جميع موضوعات الدين وأبوابه، وعددها ثمانية أبواب رئيسية. هي: العقائد، الأحكام، السير، الآداب، التفسير، الفتن، أشراط الساعة، المناقب

‘মুহাদ্দিছগণের পরিভাষায় জামি‘ এমন হাদীছের কিতাব, যাতে এমন বাবসমূহ সন্নিবেশিত হয় যে সকল বাবে দ্বীনের সকল বিষয়ের মূল অধ্যায়ের সংখ্যা ৮টি। আর তা হলো, আক্বীদা, আহকাম, সীরাত, আদব, তাফসীর, ফিৎনা, ক্বিয়ামতের আলামতসমূহ, মানাক্বিব।[১৪]

মুসনাদ : ছাহাবায়ে কেরাম (রাযিয়াল্লাহু আনহুম)-এর নামের উপর ভিত্তি করে যে গ্রন্থ সাজানো হয়, তাকে মুসনাদ বলা হয়।

ছহীহ : যে হাদীছের সকল রাবী ন্যায়পরায়ণ ও স্মৃতিশক্তির দিক থেকে মযবূত। সনদে কোন বিচ্ছিন্নতা নেই। হাদীছ ইল্লাত বা গোপন ত্রুটি ও শায থেকে মুক্ত।

মুখতাছার : অর্থ সংক্ষিপ্ত।

‘আল-জামি‘উছ ছহীহ’-এর বৈশিষ্ট্য
ছহীহুল বুখারী গ্রন্থটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্টের অধিকারী। এর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে-

ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) বাবের অন্তর্ভুক্ত হাদীছগুলোর মর্মার্থ ও শিক্ষার উপর ভিত্তি করে ترجمة الباب বা অধ্যায়ের অর্থ নির্ধারণ করেছেন।
অনেক অধ্যায়ের শিরোনামের বক্তব্য অনুযায়ী পবিত্র কুরআনের আয়াত সংযোজন।
ছহীহুল বুখারীতে ছুলাছিয়াত হাদীছের সংখ্যা ২২টি, যা অন্য কোন হাদীছ গ্রন্থে নেই।[১৫] সনদের মধ্যে তিন জন রাবীর মাধ্যমে যে হাদীছ রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে গ্রন্থাকার পর্যন্ত পৌঁছে, তাকে ছুলাছিয়াত হাদীছ বলে। এটি এ গ্রন্থের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট, যা এ গ্রন্থের মর্যাদা ও গুরুত্বকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে।
ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) তার ছহীহ বুখারীর অনেক অধ্যায় সেই হুকুমের ইতিহাস দিয়ে শুরু করেন। যেমন তিনি তার গ্রন্থ শুরু করেছেন ‘কায়ফা বাদাআল অহি’। তথা ‘কিভাবে অহি শুরু হয়েছে’ অধ্যায় দিয়ে। তারপর তিনি অহি শুরু হওয়ার ইতিহাস বলেছেন।
ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) মাসআলা সাব্যস্ত করার জন্য একই জাতীয় হাদীছকে বিভিন্ন অধ্যায়ে একাধিকবার উল্লেখ করেছেন।
ছহীহুল বুখারী গ্রন্থের সূচনা ও সমাপ্তির মধ্যে একটি সম্পর্ক বিদ্যমান। যেমন সূচনা হয়েছে নিয়ত এর হাদীছের মাধ্যমে। কেননা নিয়তের উপর সকল কাজ নির্ভরশীল। আর সমাপ্ত করা হয়েছে তাওহীদ বিষয়ক হাদীছ দ্বারা। কারণ তাওহীদ হচ্ছে আখিরাতের মুক্তির একমাত্র মাপকাঠি।
এতে শুধু ছহীহ হাদীছ সংকলন করেছেন। তিনি ৬ লক্ষ হাদীছ থেকে অত্র কিতাব সংকলন করেন। ছহীহ বুখারীতে তিনি শুধু ছহীহ হাদীছ সংকলন করেছেন। যেমন তিনি বলেন,

مَا أَدْخَلْتُ فِي كِتَابِي اَلْجَامِع إِلَّا مَا صَحَّ

‘আমি আমার অত্র জামে‘ কিতাবে ছহীহ হাদীছ ব্যতীত অন্য কিছুই সংযুক্ত করিনি’।[১৬]
প্রতিটি হাদীছের পূর্বে গোসল ও ছালাত : ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, مَا وَضَعْتُ فِي كِتَابِ الصَّحِيْحِ حَدِيْثًا إلا اغتسلت قبل ذلك وصليت ركعتين ‘ছহীহ বুখারীর প্রতিটি হাদীছ লিখার পূর্বে আমি গোসল ও দুই রাক‘আত ছালাত আদায় করেছি’।[১৭]
ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) সম্পর্কে অনেক মুহাদ্দিছ বলেছেন, ‘ইমাম বুখারী তার ছহীহ বুখারীর অধ্যায়গুলো রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কবর ও মিম্বারের মাঝে বসে লিপিবদ্ধ করেছেন এবং প্রতিটি অধ্যায়ের জন্য আলাদা করে দুই রাক‘আত ছালাত আদায় করেছেন’।[১৮]

ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) প্রতিটি হাদীছ সংকলনের পূর্বে শুধু গোসল ও দুই রাক‘আত ছালাত নয়; বরং ইস্তিখারাও করতেন। যেমন তিনি বলেন,

صَنَّفْتُ كِتَابِي الْجَامِعَ فِي الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ وَمَا أَدْخَلْتُ فِيْهِ حَدِيْثًا حَتَّى اِسْتَخَرْتُ اللهَ تَعَالَى وَصَلَّيْتُ رَكْعَتَيْنِ وَتَيَقَّنْتُ صِحَّتَهُ

‘আমি ছহীহ বুখারী মসজিদে হারামে বসে লিখেছি। আর প্রতিটি হাদীছ উল্লেখ করার পূর্বে দুই রাক‘আত ছালাত আদায় করেছি এবং ইস্তিখারা করেছি। অতঃপর হাদীছের ছহীহ হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে তা ছহীহ বুখারীতে সন্নিবেশিত করেছি’।[১৯]

‘আল-জামি‘ঊছ ছহীহ’-এর শর্তসমূহ
হাদীছের বর্ণনাকারীকে অবশ্যই মুসলিম হতে হবে। কেননা মুশরিকদের কোন বর্ণনা গ্রহণযোগ্য নয়।
বিবেকসম্পন্ন হতে হবে। পাগল বা একদম ছোট শিশুর হাদীছ গ্রহণযোগ্য নয়।
সত্যবাদী হতে হবে। এটি নবীগণ ও সৎব্যক্তিদের বৈশিষ্ট্য।
ন্যায়পরায়ণ হতে হবে। ফাসেক্ব বা পাপিষ্ঠ ব্যক্তির হাদীছ গ্রহণযোগ্য নয়। আহলে ইলমগণ একমত যে, ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি ছাড়া অন্য কারো হাদীছ গ্রহণযোগ্য নয়।
রাবী যেন মুদাল্লিস না হয়। মুদাল্লিস রাবীর হাদীছ ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) শুধু তখনই গ্রহণ করেন, যখন বর্ণনাকারী শ্রবণের বিষয়ে স্পষ্ট শব্দ ব্যবহার করে। চাই সেই সনদেই হোক বা অন্য সনদে।
মযবূত স্মৃতিশক্তির অধিকারী হতে হবে।
বর্ণনাকারীর যেন তার শায়খের সাথে অন্ততপক্ষে একবার হলেও সাক্ষাৎ হয়। এই সাক্ষাতের স্পষ্ট প্রমাণ থাকতে হবে।
বর্ণনাকারী যেন প্রবৃত্তির অনুসারী ও বিদ‘আতী না হয়।[২০]

ছহীহুল বুখারীর হাদীছ সংখ্যা
ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) ছয় লক্ষ হাদীছ থেকে যাচাই-বাছাই এবং নির্বাচনের মাধ্যমে পূর্ণ ১৬ বছরে ‘আল-জামি‘উছ ছহীহ’ গ্রন্থটি সংকলন করেন। ইবনুছ ছালাহ ও নববী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর মতে, পুনরুল্লেখ সহ ‘জামি‘উছ ছহীহ’ গ্রন্থের হাদীছ সংখ্যা হবে ৭২৭৫টি। পুনরুল্লেখ ছাড়া হাদীছ সংখ্যা হবে ৪০০০টি।[২১] তবে আধুনিক গণনা মতে পুনরুল্লেখ সহ হাদীছের সংখ্যা ধরা হয় ৭৫৬৩টি। এ গ্রন্থে ২২টি ছুলাছিয়াত সনদের হাদীছ রয়েছে। ১৬০টি অধ্যায় এবং ৩৪৫০টি অনুচ্ছেদ রয়েছে।

ছহীহুল বুখারীর প্রসিদ্ধ ব্যাখ্যাগ্রন্থসমূহ
এ গ্রন্থের বিশুদ্ধতা ও গ্রহণযোগ্যতার বিবেচনায় যুগে যুগে অসংখ্য ব্যাখ্যাগ্রন্থ লেখা হয়েছে। হাজী খলীফা তাঁর ‘কাশফুল যুনূন’ গ্রন্থে ছহীহ বুখারীর ৮২-এর ঊর্ধ্বে শারাহ গ্রন্থের নাম উল্লেখ করেছেন।[২২] এখানে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ব্যাখ্যাগ্রন্থের নাম তুলে ধরা হলো।

আলামুল হাদীছ (أعلام الحديث) : লিখেছেন, আবু সুলায়মান হামদ বিন মুহাম্মাদ আল-খাত্ত্বাবী (রাহিমাহুল্লাহ)। তিনি ৩৮৮ হিজরীতে মারা যান। ছহীহ বুখারীর এটিই সর্বপ্রথম লিখিত ব্যাখ্যা গ্রন্থ।[২৩]
শারহু ছহীহিল বুখারী (شرح صحيح البخاري) : লিখেছেন, আবুল হাসান আলী বিন খালফ বিন বাত্তাল আল-কুরতুবী আল-মালেকী। তিনি ৪৪৯ হিজরীতে মারা গেছেন। প্রকাশিত ছহীহ বুখারীর ব্যাখ্যাগুলোর মধ্যে ২য় পুরাতন ব্যাখ্য গ্রন্থ এটি।[২৪]
শারহু মুশকিলিল বুখারী (شرح مشكل البخاري) : ব্যাখ্যা গ্রন্থটি লিখেছেন, মুহাম্মাদ ইবনু সাঈদ ইবনু ইয়াহইয়া আল-ওয়াসিত্বী। তিনি ৬৩৭ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন।
শারহুল বুখারী (شرح البخاري) : লিখেছেন, ইমাম মুহীউদ্দীন আবু যাকারিয়া ইয়াহইয়া বিন শারাফ আন-নাবাবী (রাহিমাহুল্লাহ)। তিনি ছহীহ মুসলিমের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যাখ্যা গ্রন্থ আল-মিনহাজের লেখক। ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) মহান আল্লাহর নিদর্শনাবলীর মধ্যে একজন। তিনি ৬৩১ হিজরীতে জন্মগ্রহণ করে ৬৭৬ হিজরীতে মারা যান।
আত-তানক্বীহ ফি শারহিল জামি‘ আছ-ছহীহ (التنقيح في شرح الجامع الصحيح) : লিখেছেন, ইমাম বদরুদ্দীন মুহাম্মাদ ইবনু বাহাদুর আয-যারকাশী (মৃ. ৭৯৪ হিজরী)।[২৫]
আল-কাওয়াকিবুদ দারারী (الكواكب الدراري) : লিখেছেন, মুহাম্মাদ বিন ইউসুফ আল-কিরমানী (রাহিমাহুল্লাহ)। তিনি ৭৮৬ হিজরীতে মারা গেছেন।[২৬]
আত-তাওযীহ লি শারহিল জামি‘ঊছ ছহীহ (التوضيح لشرح الجامع الصحيح) : লিখেছেন, সিরাজুদ্দীন ওমর বিন আলী ইবনুল মুলাক্কিন (রাহিমাহুল্লাহ)। তিনি প্রায় তিন শতাধিক গ্রন্থ লিখেছেন। ইমাম ইবনুল মুলাক্কিন ৮০৪ হিজরীতে মৃত্যুবরণ করেছেন। তার ব্যাখ্যা গ্রন্থটি ৩৫ খ-ে প্রকাশিত।
ফাৎহুল বারী (فتح الباري) : লিখেছেন, আবুল ফারজ যায়নুদ্দীন ইবনু রজব হাম্বলী (রাহিমাহুল্লাহ)। তিনি ৭৯৫ হিজরীতে মারা যান। তিনি ছহীহ বুখারীর কিতাবুল জানায়েয পর্যন্ত ব্যাখ্যা লিখেছিলেন।
ফাৎহুল বারী )فتح الباري بشرح صحيح البخاري( : লিখেছেন, হাফেয ইবনু হাজার আসক্বালানী (রাহিমাহুল্লাহ)। পূর্ণ নাম- আহমাদ বিন আলী বিন হাজার আসক্বালানী। তিনি ৮৫২ হিজরীতে মৃত্যুবরণ করেন। এ পর্যন্ত ছহীহ বুখারীর উপর লিখিত সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ ধরা হয় এটিকে।
ঊমদাতুল ক্বারী (عمدة القاري) : লিখেছেন, পূর্ণ নাম মাহমূদ বিন আহমাদ বদরুদ্দীন আল-আইনী। তিনি ৮৫৫ হিজরীতে মারা যান। প্রায় ২৫ খ-ে প্রকাশিত ছহীহ বুখারীর উপর তার বিখ্যাত ব্যাখ্যা গ্রন্থ ঊমদাতুল ক্বারী।
ইরশাদুস সারী শারহ ছহীহ আল-বুখারী (إرشاد الساري شرح صحيح البخاري) : লিখেছেন, শিহাবুদ্দীন আহমাদ বিন মুহাম্মাদ আল-ক্বাসতাল্লানী (রাহিমাহুল্লাহ)। ছহীহ বুখারীর যত ব্যাখ্যা গ্রন্থ ওলামায়ে কেরামের মাঝে প্রসিদ্ধি অর্জন করেছে, তন্মধ্যে ক্বাসতাল্লানী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর লিখিত ইরশাদুস সারী অন্যতম। ইমাম ক্বাসতাল্লানী (রাহিমাহুল্লাহ) ৮৫১ হিজরীতে জন্মগ্রহণ করেন এবং ৯২৩ হিজরীতে মারা যান।
১২. শারহু ছহীহিল বুখারী (شرح صحيح البخاري): লিখেছেন, শায়খ মুহাম্মাদ ইবনু ছালিহ আল-উছাইমীন। তিনি ১৯২৯ খ্রি. সালে জন্ম গ্রহণ করেন এবং ২০০১ সালে মৃত্যুবরণ করেন। এটি মাকতাবাতুল ইসলামিইয়্যাহ, কায়রো, মিসর থেকে ২০০৮ সালে প্রকাশিত হয়।

ছহীহুল বুখারী সম্পর্কে মনীষীগণের অভিমত
(ক) ইমাম নাসাঈ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, أجود هذه الكتب كتاب البخارى. وأجمعت الأمة على صحة هذين الكتابين، ووجوب العمل بأحاديثهما. ‘হাদীছের গ্রন্থগুলোর মধ্যে সর্বাধিক উত্তম গ্রন্থ হচ্ছে ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর গ্রন্থ। আর সমগ্র উম্মত এ দু’টি গ্রন্থের বিশুদ্ধতা ও এ দু’টি গ্রন্থের হাদীছের উপর আমল করা ওয়াজিব হওয়া সম্পর্কে ঐকমত্য পোষণ করেছেন’।[২৭]

(খ) ইমাম ইবনুছ ছালাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, وَهَذَا الْقِسْمُ جَمِيْعُهُ مَقْطُوْعٌ بِصِحَّتِهِ وَالْعِلْمُ الْيَقِيْنِيُّ النَّظَرِيُّ وَاقِعٌ بِهِ ‘যে সমস্ত হাদীছের বিষয়ে ইমাম বুখারী ও মুসলিম একমত পোষণ করেছেন সেগুলো নিঃসন্দেহে ছহীহ এবং সেগুলোর দ্বারা নিশ্চিত জ্ঞানের উপকারিতা পাওয়া যায়’।[২৮]

(গ) ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

اِتَّفَقَ الْعُلَمَاءُ عَلَى أَنَّ أَصَحَّ الْكُتُبِ بَعْدَ الْقُرْآنِ الْكَرِيْمِ اَلصَّحِيْحَانِ : صَحِيْحُ الْبُخَارِيُّ وَ صَحِيْحُ مُسْلِمُ وَتَلَقَّاهُمَا الْأُمَّةُ بِالْقَبُوْلِ. وَكِتَابُ الْبُخَارِيُّ أَصَحُّهُمَا صَحِيْحًا وَ أَكْثَرُهُمَا فَوَائِدَ

‘এ ব্যাপারে মুহাদ্দিছীনে কেরাম একমত যে, কুরআনুল কারীমের পর সর্বাধিক ছহীহ কিতাব হচ্ছে ছহীহ বুখারী ও মুসলিম। উম্মত এদু’টি গ্রন্থকে সাদরে গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে ছহীহ বুখারী বেশি বিশুদ্ধ ও উপকারী’।[২৯]

(ঘ) তাজউদ্দীন আস-সুবকী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, أما كِتَابه الْجَامِع الصَّحِيح فأجل كتب الْإِسْلَام وأفضلها بعد كتاب الله ‘তাঁর কিতাব ‘আল-জামি‘উছ-ছহীহ’ ইসলামী গ্রন্থমালার মধ্যে সর্বাধিক মর্যাদাসম্পন্ন এবং আল্লাহর কিতাবের পর অধিক ফযীলতপূর্ণ কিতাব’।[৩০]

(ঙ) শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়াহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, فَلَيْسَ تَحْتَ أَدِيمِ السَّمَاءِ كِتَابٌ أَصَحُّ مِنْ الْبُخَارِيِّ وَمُسْلِمٍ بَعْدَ الْقُرْآنِ ‘অতঃপর আসমানের নীচে পবিত্র কুরআনের পরে ছহীহ বুখারী ও ছহীহ মুসলিমের চেয়ে বিশুদ্ধ কোন গ্রন্থ নেই’।[৩১]

(চ) ইবনু হাজার আসকালানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

وكتاباهما (البخاري ومسلم) أصح الكتب بعد كتاب الله العزيز

‘ছহীহ বুখারী ও মুসলিম কিতাবুল্লাহর পর সবচেয়ে বিশুদ্ধ গ্রন্থ’।[৩২]

মৃত্যু ও দাফন
ইমাম ইবনু আদী, হাসান ইবনে হুসাইন আল-বাযযায থেকে বর্ণনা করেন, ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) ২৫৬ হিজরীতে শনিবারের দিন ঈদুল ফিতরের রাতে এশার ছালাতের সময় মারা যান। তাকে ঈদুল ফিতরের দিন যোহরের ছালাতের পর দাফন করা হয়। তখন তার বয়স হয়েছিল ১৩ দিন কম ৬২ বছর।[৩৩]

ইমাম ইবনু আদী (রাহিমাহুল্লাহ) আব্দুল কুদ্দূস আস-সমরকন্দী থেকে বর্ণনা করেন, ‘ইমাম বুখারী সমরকন্দ থেকে দুই ফারসাখ দূরে ‘খারতাংক’ নামক গ্রামে এসে পৌঁছলেন। সেখানে তার আত্মীয়-স্বজনের বাড়ী ছিল, তাদের নিকটেই তিনি অবস্থান গ্রহণ করলেন। আব্দুল কুদ্দূস আস-সমরকন্দী বলেন, একদিন রাতে আমি শুনলাম, তিনি তাহাজ্জুদের ছালাত শেষে দু‘আ করছেন এবং বলছেন, اللهم إنه قد ضاقت على الأرض بما رحبت فاقبضني إليك ‘হে আল্লাহ! এই বিশাল দুনিয়া আমার জন্য সংকীর্ণ হয়ে গেছে। তুমি আমাকে তোমার নিকট উঠিয়ে নাও’। এই দু‘আ করার এক মাসের মধ্যে মহান আল্লাহ তাকে দুনিয়া থেকে উঠিয়ে নিলেন। আর তার কবর আজও খারতাংকে রয়েছে।[৩৪]

দাফন পরবর্তী অলৌকিক ঘটনা
মৃত্যুর পর ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) এর কবর থেকে সুগন্ধি বের হত মর্মে বর্ণনা পাওয়া যায়। গালিব ইবনু জিবরীল বলেন, ‘যখন আমরা তাকে দাফন করলাম, তখন তার কবর থেকে মিসকের চেয়েও উন্নত মানের সুগন্ধি বের হল এবং কয়েকদিন যাবত এই সুগন্ধি ছিল। অতঃপর তার কবর বরাবর একটি আলোকরশ্মি আসমান পর্যন্ত বিরাজ করছিল। জনগণ এটা নিয়ে আলোচনা করতে লাগল ও আশ্চর্য হয়ে গেল। তারা কবর থেকে মাটি উঠিয়ে নিয়ে যেতে লাগল। এমনকি কবর প্রকাশিত হওয়ার উপক্রম হল। আমরা পাহারাদারের সাহায্যেও কবর হেফাযত করতে পারছিলাম না। এ ব্যাপারে আমরা পরাস্ত হয়ে গেলাম এবং কবরের উপর কাটাযুক্ত কাঠ দিয়ে দিলাম। যাতে কেউ কবর পর্যন্ত পৌঁছতে না পারে। তার কবরের এই সুগন্ধি বহুদিন যাবত ছিল। আর যারা তার বিরোধী ছিল, তারা ইমাম বুখারীর সত্যিকার মর্যাদা বুঝতে পারল এবং তার কবরের নিকটে এসে আফসোস এবং তওবা করতে লাগল’।[৩৫]

উপসংহার
ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) ছিলেন হিজরী তৃতীয় শতাব্দীর সবচেয়ে বড় হাদীছ বিশারদ, হাফিয ও মুহাদ্দিছ। তিনি হাদীছ অন্বেষণের জন্য অনেক দেশ ভ্রমণ করেন। তিনি অত্যন্ত মেধাবী ও পরহেযগার ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর সংকলিত ‘আল-জামি‘ গ্রন্থটি কুরআনুল কারীমের পর সর্বাধিক বিশুদ্ধ গ্রন্থ। তিনি এ গ্রন্থটি ছাড়াও আরো অনেক গ্রন্থ রচনা করছেন, যা আমাদের জন্য আলোর দিশারী। এই ক্ষনজন্মা মহাপুরুষকে আল্লাহ জান্নাতুল ফেরদাউসে সুউচ্চ মাকাম দান করুন-আমীন!


* এম. ফিল গবেষক, আরবী বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

তথ্যসূত্র :
[১]. তাবাকাতুশ শাফিইয়্যাহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ১৬-২০।
[২]. ইলামুল মু‘আক্বিঈন, ১ম খণ্ড, পৃ. ২২৬।
[৩]. মাজমু‘উল ফাতাওয়া ২০তম খণ্ড, পৃ. ৪০।
[৪]. আনোয়ার শাহ কাশ্মিরী, ফায়যুল বারী, ১ম খণ্ড, পৃ. ৪৩৮।
[৫]. মুহাম্মাদ ছালিহ আল-উছাইমিন, মুছতালাহুল হাদীছ, পৃ. ৪৭।
[৬]. মুহাম্মাদ মুহাম্মাদ আবু যাহব, আল-হাদীছ ওয়াল মুহাদ্দিছূন, পৃ. ৩৭৮।
[৭]. হাফিয সাখাবী, ফাৎহুল মুগীছ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৪১।
[৮]. খায়রুদ্দীন আয-যিরাকলী, আ‘লাম, ৬ষ্ট খণ্ড, পৃ. ৩৪।
[৯] আবু ইয়ালা, ত্ববাক্বাত আল হানাবিলা ১ম খণ্ড, পৃ. ২৭৬; ইবনুল মুলাক্কিন, আল-বাদরুল মুনীর ১ম খণ্ড, পৃ. ২৯৭।
[১০]. তারীখ বাগদাদ ২য় খণ্ড, পৃ. ৮; তাহযীবুল কামাল ২৪তম খণ্ড, পৃ. ৪৪২; সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ১২তম খণ্ড, পৃ. ৪০১।
[১১]. ইমাম নাবাবী, তাহযীবুল আসমা ওয়াল লুগাত, ১ম খণ্ড, পৃ. ৭৪; আল্লামা কাসতালানী, ইরশাদুুস সারী ১ম খণ্ড, পৃ. ২৯।
[১২]. ইমাম নাবাবী, তাহযীবুল আসমা, ১ম খণ্ড, পৃ. ৭৩।
[১৩]. ড. মুহাম্মাদ ইবনু মাতর আয-যাহরানী, তাদবীনুস সুন্নাহ, পৃ. ১১২।
[১৪]. ড. নূরুদ্দীন আতার, মানহাজুন নাকদ ফী ‘ঊলূমিল হাদীছ (সিরিয়া: দারুল ফিকর, ১৯৮১ খ্রি.) পৃ. ১৯৮।
[১৫]. ইবনু হাজার, ফাতহুল বারী, ১ম খণ্ড, পৃ. ২০২।
[১৬]. তাহযীবুল কামাল, ২৪তম খণ্ড, পৃ. ৪৪২; ফাৎহুল বারী ১ম খণ্ড, পৃ. ৭।
[১৭]. হাদইউস সারী, পৃ. ৭।
[১৮]. তাহযীবুল আসমা ওয়াল লুগাত ১ম খণ্ড, পৃ. ৭৪; তারীখে বাগদাদ ২য় খণ্ড, পৃ. ৩২২।
[১৯]. কাসতালানী, ইরশাদুস সারী ১ম খণ্ড, পৃ. ২৯।
[২০]. ইমাম হাযিমী, শুরূতুল আইম্মা আল-খামছা (বৈরূত : দারুল কুতুব আল-ইলমিয়্যাহ, ১৯৮৪ খ্রি.) পৃ. ৫০-৫৬।
[২১]. তাহযীবুল আসমা ওয়াল লুগাত, ১ম খণ্ড, পৃ. ৭৫।
[২২]. হাজী খলীফাহ, কাশফুল যুনূন, ১ম খণ্ড, পৃ. ৫৪৫।
[২৩]. প্রাগুক্ত, ১ম খণ্ড, পৃ. ৫৪৫।
[২৪]. প্রাগুক্ত, ১ম খণ্ড, পৃ. ৫৪৫-৫৪৬।
[২৫]. প্রাগুক্ত, ১ম খণ্ড, পৃ. ৫৪৫।
[২৬]. প্রাগুক্ত, ১ম খণ্ড, পৃ. ৫৪৬।
[২৭]. ইমাম নববী, তাহযীবুল আসমায়ি ওয়াল লুগাত, ১ম খণ্ড, পৃ. ৭৪।
[২৮]. মুকাদ্দামা ইবনুছ ছালাহ, পৃ. ২৮।
[২৯]. হাজী খলীফাহ, কাশফুল যুনূন, ১ম খণ্ড, পৃ. ৫৪১।
[৩০]. ইমাম সুবকী, তাবাকাতুশ শাফিইয়্যাহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ২১৫।
[৩১]. মাজমূ‘ঊল ফাতাওয়া, ১৮শ খণ্ড, পৃ. ৭৪।
[৩২]. ইবনু হাজার, ফাতহুল বারী, ১ম খণ্ড, পৃ. ১০।
[৩৩]. ইবনু আদী, আছামী, পৃ. ৭৪।
[৩৪]. আছামী, পৃ. ১৬৭।
[৩৫]. সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ১২শ খণ্ড, পৃ. ৪৬৭; তারীখুল ইসলাম, ৬ষ্ট খণ্ড, পৃ. ১৪০।




প্রসঙ্গসমূহ »: জীবন কথা নবী-রাসূল
আল্লামা মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) - শায়খ আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানী
সৈয়দ নাযীর হুসাইন দেহলভী - প্রফেসর এ কে এম শামসুল আলম
আল্লামা শাহ ইসমাঈল শহীদ (রাহিমাহুল্লাহ) (৩য় কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর জীবন ও কর্ম (শেষ কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ
আল্লামা শাহ ইসমাঈল শহীদ (রাহিমাহুল্লাহ) (২য় কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
সাঈদ ইবনু জুবায়ের (রাহিমাহুল্লাহ) - প্রফেসর এ কে এম শামসুল আলম
আল্লামা মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) - শায়খ আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানী
ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর জীবন ও কর্ম (২য় কিস্তি ) - আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ
আল্লামা নওয়াব ছিদ্দীক হাসান খান ভূপালী (রাহিমাহুল্লাহ) (২য় কিস্তি) - শায়খ আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানী
আল্লামা শাহ ইসমাঈল শহীদ (রাহিমাহুল্লাহ) (৪র্থ কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
আল্লামা শাহ ইসমাঈল শহীদ (রাহিমাহুল্লাহ) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
শাহ আব্দুল আযীয (রাহিমাহুল্লাহ) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান

ফেসবুক পেজ