উত্তর : এখানে জান্নাত হারাম বলতে অমুসলিমদের বুঝানো হয়েছে। আর মুসলিমদের জন্য ধমকি স্বরূপ বলা হয়েছে। কেননা কাবীরাহ গুনাহের জন্য জান্নাত হারাম হয় না। বরং শিরকে আকবার এবং কুফরী অবস্থায় বিনা তওবায় মারা গেলে জান্নাত হারাম হয়। তাছাড়া মুসলিমরা চিরস্থায়ী জাহান্নামী নয়। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোন ধারালো অস্ত্র দ্বারা আত্মহত্যা করবে, জাহান্নামের মধ্যে সে অস্ত্র দ্বারা তাকে শাস্তি প্রদান করা হবে’ (ছহীহ মুসলিম, হা/১০৯)। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করবে, সে জাহান্নামে (অনুরূপভাবে) নিজেকে ফাঁস লাগাতে থাকবে। আর যে ব্যক্তি বর্শার আঘাতে আত্মহত্যা করবে, সে জাহান্নামে বর্শা বিদ্ধ হতে থাকবে’ (ছহীহ বুখারী, হা/১৩৬৫; মিশকাত, হা/৩৪৫৪)।
আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের ফক্বীহগণ এ ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন যে, যে ব্যক্তি আত্মহত্যা করবে, সে ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবে না। তার উপর ছালাত আদায় করা হবে এবং তার পাপ তার উপর বর্তাবে। তাকে মুসলিমদের কবরস্থানে দাফন করা হবে (ইবনু বাত্তাল, শারহু ছহীহিল বুখারী, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৩৪৯)। মুহাল্লিব (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, উপরিউক্ত হাদীছগুলোর ব্যাপারে আলেমগণ বলেছেন, ‘আল্লাহ চাইলে তাঁর অঙ্গীকার তথা শাস্তি প্রদান বাস্তবায়ন করতে পারেন। কেননা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের আক্বীদা হল, পাপীদের শাস্তি প্রদান করার ক্ষেত্রে আল্লাহর ইখতিয়ার রয়েছে। আল্লাহ চাইলে তাঁকে ক্ষমা করতে পারেন, আবার শাস্তিও দিতে পারেন। যদি তিনি শাস্তি প্রদান করেন, তাহলে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত শাস্তি প্রদান করার পর তাঁর ঈমানের কারণে তাকে জান্নাত দিবেন এবং তার উপর থেকে চিরস্থায়ী জাহান্নামের শাস্তি তুলে নিবেন (ঐ, শারহু ছহীহিল বুখারী, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৩৫০)। তাই নির্ধারিত শাস্তিভোগের পর আল্লাহর দয়ায় কালেমা ত্বাইয়েবার বরকতে মুক্তি পাবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করবে (ইবনু মাজাহ, হা/৬০, সনদ ছহীহ)। আল্লাহ তা‘আলাই অধিক অবগত।
প্রশ্নকারী : বদরুল ইসলাম, হরিপুর, বাগমারা।