শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২৬ পূর্বাহ্ন
উত্তর : স্বামী মারা গেলে স্ত্রীকে ৪ মাস ১০ দিন ইদ্দত পালন করতে হবে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মারা যায়, তাদের স্ত্রীগণ চার মাস দশ দিন অপেক্ষা করবে। যখন তারা ইদ্দত (চার মাস দশ দিন) পূর্ণ করবে, তখন তারা নিজেদের জন্য কোন বিধিমত কাজ (সৌন্দর্যগ্রহণ বা বিবাহ) করলে, তাতে তোমাদের কোন পাপ হবে না। তোমরা যা কর, আল্লাহ্ সে সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত’ (সূরা আল-বাক্বারা: ২৩৪)। অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা সমগ্র স্ত্রী জাতিকে সম্বোধন করেছেন। প্রাপ্তবয়স্কা, অপ্রাপ্তবয়স্কা, যুবতী, বৃদ্ধা ও বন্ধ্যা সব ধরনের স্ত্রী এর অন্তর্ভুক্ত (ইবনে বায অফিসিয়াল ওয়েবসাইট)। এখানে সব ধরনের স্ত্রীদের সম্বোধন করা হয়েছে, স্বামীর সাথে তার বাসররাত হোক কিংবা না হোক। শুধু গর্ভবতী স্ত্রী ব্যতীত, কেননা গর্ভবর্তী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত (সূরা আত-ত্বালাক্ব: ৪; আল-মুগনী, ৮/১১৫; বিদায়াতুল মুজতাহিদ, ৩/১১৪; আল-ইক্বনা‘, ১/৩২৪)। বিবাহের পর বাসররাত না হয়ে থাকলেও পতিহীনা স্ত্রী ঐ ইদ্দত পালন করবে। নাবালিকা কিশোরী অথবা অতিবৃদ্ধা হলেও ইদ্দত পালন করতে হবে (মাজাল্লাতুল বুহূছিল ইসলামিয়্যাহ, ১৬/১১৪, ১২০, ১৩২)।

ইদ্দতের সময়কালে স্বামীহারা স্ত্রীর করণীয় ও বর্জণীয় বিষয়সমূহ হলো, ‘ইদ্দত চলাকালীন পতিহীনা স্ত্রী সাজসজ্জা ও রূপচর্চার যাবতীয় উপকরণ ও সুশোভিতকরণ পরিহার করবে। সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য রঙিন কাপড় যেমন লাল, নীল, গেরুয়া, টকটকে কমলা ও হলুদ রঙের কাপড় পরিধান করা থেকে বিরত থাকবে। অলংকার, আংটি পরিধান করবে না। সর্বপ্রকার প্রসাধন ও অঙ্গরাগ যেমন আতর বা সুগন্ধি, খিযাব, মেহেদী ও সুগন্ধযুক্ত তেল ব্যবহার করবে না। সুরমা বা কাজল ও প্রয়োজন ব্যতীত মাথায় চিরুনি লাগাবে না। স্বামীর গৃহে অবস্থান করবে। বিশেষ প্রয়োজনে দিনের বেলায় বাড়ি থেকে বাহির হতে পারে (যেমনঃ চিকিৎসা করার জন্য)। কিন্তু রাত্রিতে বের হওয়া সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ (উমদাতুল ফিক্বহ, ১/১০৭; আল-কাফী ফী ফিক্বহী আহলিল মাদীনা, ২/৬২২; আত-তামবীহু ফিল ফিক্বহিশ শাফিঈ, ১/২০১)। সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য কারুকার্য খচিত সাদা রঙের কাপড় পরিধান করাও নিষিদ্ধ (মাজাল্লাতুল বুহূছিল ইসলামিয়্যাহ, ১৯/১৫৮ পৃ.)। নির্দিষ্টভাবে কালো পোশাক ব্যবহারও বিধিসম্মত নয় (ফাতাওয়া আল-মার’আতুল মুসলিমাহ, পৃ. ৬৫)। সময় দেখার জন্য হাতে ঘড়ি বাঁধা দোষনীয় নয় (মাজাল্লাতুল বুহূছিল ইসলামিয়্যাহ, ১৯/১৫৮ পৃ.)। সর্বপ্রকার সুগন্ধি, সুবাসিত সাবান বা তৈলাদি ব্যবহার নিষিদ্ধ (মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল ইবনে উছাইমীন, ২/৮১৩ পৃ.)। এমনকি নিজের ছেলেমেয়ে বা অন্য কাউকে সুগন্ধি জাতীয় কিছু লাগিয়ে দিতেও পারবে না। যেহেতু সুগন্ধি হাতে এসে যাবে তাই (কিতাবুদ দাওয়াহ, ২/১৪৩ পৃ.)।

অবশ্য মাসিক থেকে পবিত্রতার সময় দুর্গন্ধ দূরীকরণার্থে লজ্জাস্থানে সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারে (লিক্বাউল বাব আল-মাফতূহ ইবনে উছাইমীন, ২৪/১৩ পৃ.)। স্বামীর বাসস্থানে কোন আত্মীয় না থাকলে ভয়ের কারণে বা পানাহারের প্রয়োজনে অন্য কোন আত্মীয়র বাড়িতে ইদ্দত পালন করা যায় (মাজাল্লাতুল বুহূছিল ইসলামিয়্যাহ, ১৯/১৬৮ পৃ.)। ইদ্দতের মাঝে বোগল ও গুপ্তাঙ্গের লোম এবং নখাদি কেটে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা, মাছ-গোশত, ফলমূল ইত্যাদি উত্তম খাদ্য খাওয়া দূষণীয় নয়। যেমন চাঁদের মুখ দেখতে নেই, বিয়ের কনে স্পর্শ করতে নেই প্রভৃতি ধারণা ও আচার কুসংস্কার (তামবীহাতুল মুমিনাত, পৃ. ১৫৪-১৫৫)। উম্মু আতিয়্যাহ্ ম বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন, ‘...এ সময় তোমরা সুরমা এবং কোন প্রকারের সুগন্ধি ব্যবহার করবে না। হালকা রঙিন পোশাক ব্যতীত অন্য কোন চকচকে রঙিন পোশাক পরিধান করবে না। তবে ঋতুবতী মহিলারা পবিত্রতার গোসল করার পর আজফারের খোশবু মিশ্রিত বস্ত্রখণ্ড লজ্জাস্থানে রাখতে পারেন। খিযাব ও মেহেদী লাগাতে পারবে না এবং আমাদের জানাযার পেছনে যেতে নিষেধ করা হত’ (ছহীহ বুখারী, হা/৩১৩, ১২৭৮; ছহীহ মুসলিম, হা/৯৩৮; আবূ দাঊদ, হা/২৩০২-২৩০৩; নাসাঈ, হা/৩৫৩৪; ইবনু মাজাহ, হা/২০৮৭)।


প্রশ্নকারী : আনোয়ার হোসেন, নিতপুর, পোরশা, নওগাঁ।





প্রশ্ন (২) : ‘আমার পরে কেউ যদি নবী হত, তাহলে ওমরই হত’- বক্তব্যটি কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩০) : কোর্টের মাধ্যমে বিবাহ বৈধ হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩২) : যারা সীমান্ত এলাকায় বসবাস করে তারা রক্ষী বাহিনীকে ঘুষ দিয়ে ভারত থেকে বিভিন্ন মাল নিয়ে এসে ব্যবসা করে। এই ব্যবসা কি হালাল? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৬) : কোন পাপ কাজ হতে দেখলে কেউ যদি মনে মনে ঘৃণা করে তাহলে তাকে দুর্বল স্তরের মুমিন বলে। এক্ষণে কেউ যদি পাপ কাজকে ঘৃণা না করে, তাহলে কি তাকে মুসলিম বলা যাবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১২) : যেকোন মসজিদে ই‘তিকাফ করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৯) : মেয়েরা হাতে-পায়ে আলতা দিতে পারবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৬) : ছাদাক্বাতুল ফিতর মিসকীনকে দিতে হবে। এই মিসকীন বলতে কাকে বুঝানো হয়েছে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৩) : পাত্রী দ্বীনদার কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখা গেল পাত্রী ফেসবুক মেসেঞ্জারে অন্য ছেলেদের সাথে কথা বলে। জানা সত্ত্বেও ওই পাত্রীকে বিয়ে করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩) : তৃতীয় সিজারের সময় ডাক্তাররা মহিলার নাড়ি উল্টিয়ে দেয়। কারণ ৪র্থ সন্তান আসলে মহিলার জীবনের ঝুঁকি রয়েছে। এটা কি জায়েয? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৪) : রামাযানের ছিয়ামের জন্য নিয়ত করা কি অপরিহার্য? প্রতিটি ছিয়ামের জন্যই কি নিয়ত করতে হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৮) : জনৈক আলেম বলেন, বান্দা যখন ছাদাক্বাহ প্রদান করে, তখন যেন সে তার চোয়াল থেকে সত্তর জন শয়তানকে বিতাড়িত করল। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৭)  : জনৈক ব্যক্তি বলেছেন, যারা চার মাযহাব কিংবা চার তরীক্বা মানবে না তারা কাফের। উক্ত দাবী কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ