উত্তর : এমতাবস্থায় ঐ নারীর উপর আত্মরক্ষা করা ফরজ। তিনি কিছুতেই ধর্ষকের কাছে নিজেকে অর্পণ করবেন না। এজন্য যদি দুর্বৃত্তকে হত্যা করা সম্ভব হয়, তবে নিজেকে বাঁচাতে তাই করবে। উদ্যত ব্যক্তিকে হত্যা করলে ঐ নারী দায়ী হবেন না। এমনকি কোন নারী প্রাণান্তকর চেষ্টা করার পর যদি নিজে নিহত হয়, তবে তিনি শহীদের মর্যাদা পাবেন। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, مَنْ قُتِلَ دُوْنَ مَالِهِ فَهُوَ شَهِيْدٌ وَمَنْ قُتِلَ دُوْنَ أَهْلِهِ أَوْ دُوْنَ دَمِهِ أَوْ دُوْنَ دِيْنِهِ فَهُوَ شَهِيْدٌ ‘যে ব্যক্তি তার সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে মারা গেল সে শহীদ। যে ব্যক্তি তার পরিবার রক্ষা করতে গিয়ে মারা গেল সে শহীদ। যে ব্যক্তি তার জীবন রক্ষা করতে গিয়ে মারা গেল সে শহীদ। যে ব্যক্তি তার দ্বীন রক্ষা করতে গিয়ে মারা গেল সে শহীদ’ (আবূ দাঊদ, হা/ ৪৭৭২)। অন্য হাদীছে এসেছে, উবাইদ ইবনু উমাইর (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
أَنَّ رَجُلًا أَضَافَ نَاسًا مِنْ هُذَيْلٍ فَأَرَادَ امْرَأَةً عَلَى نَفْسِهَا فَرَمَتْهُ بِحَجَرٍ فَقَتَلَتْهُ فَقَالَ عُمَرُ وَاَللهِ لَا يُودَى أَبَدًا
‘হুযাইল গোত্রের এক ব্যক্তি কিছু লোককে মেহমান হিসাবে গ্রহণ করল। সে ব্যক্তি মেহমানদের মধ্য থেকে এক মহিলাকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করেছিল। তখন সে মহিলা তাকে পাথর ছুড়ে মেরে লোকটিকে হত্যা করল। সে মহিলার ব্যাপারে ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, ‘আল্লাহর শপথ! কখনই পরিশোধ গ্রহণ করা হবে না (মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক হা/১৭৯১৯)।
ইবনু কুদামাহ (রাহিমাহুল্লাহ) উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘এইটুকু যখন সাব্যস্ত হল তখন ঐ নারীর আত্মরক্ষা করার সামর্থ্য থাকলে সেটা করা তার উপর ওয়াজিব। কেননা দুর্বৃত্তকে সুযোগ দেয়া হারাম। এক্ষেত্রে আত্মরক্ষা না করাটাই তো সুযোগ দেয়া’ (ইবনু কুদামাহ, আল-মুগনী, ২০তম খণ্ড, পৃ. ৩৭৯)। আর যদি কোন অসহায় নারী নিহত হওয়ার আশংকায় ধর্ষণের শিকার হয় তাহলে তার উপর কোন অপরাধ বা শাস্তি বর্তাবে না। তবে ধৈর্যধারণ করে মৃত্যুকে বরণ করে নিলে সেটা তার জন্য উত্তম হবে। কিন্তু মৃত্যুকে বরণ করে নেয়া তার উপর ফরজ নয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, فَمَنِ اضۡطُرَّ غَیۡرَ بَاغٍ وَّ لَا عَادٍ فَلَاۤ اِثۡمَ عَلَیۡہِ ‘অবশ্য যে লোক অনন্যোপায় হয়ে পড়ে এবং নাফরমানী ও সীমালঙ্ঘনকারী না হয়, তার জন্য কোন পাপ নেই’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৭৩, বিস্তারিত দ্র. সুনানে বায়হাক্বী, হা/১৭০৫০; ইবনুল কাইয়্যিম, আত-তুরুকুল হুকমিয়্যা, ‘অনুচ্ছেদ- ১)। তবে ধর্ষকের শাস্তি হল, তাকে তাৎক্ষণিক হত্যা করতে হবে অথবা শূলে চড়িয়ে মারতে হবে কিংবা বিপরীত পক্ষে হাত-পা কেটে দিতে হবে (মায়েদাহ ৩৩)।
প্রশ্নকারী : নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।