রামাযান মাসে প্রচলিত বিদ‘আত সমূহ

দ্বীন পরিপূর্ণ। এখানে বাড়ানো বা কমানোর কোন সুযোগ নেই। তদুপরি বর্তমানে ইসলামের চতুর্থ স্তম্ভ রামাযান মাসে ছিয়াম পালনের ক্ষেত্রে অসংখ্য নতুন আমলের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। যার পরিণতি অত্যন্ত মারাত্মক ও ধ্বংসাত্মক।

হাদীছের নামে প্রচার করা হয় যে, যে ব্যক্তি রামাযানের মানুষের মাঝে প্রচার করবে তার উপর জাহান্নামের আগুন হারাম করে দেয়া হবে। এটা কোন হাদীছ নয়। বিদ‘আতীদের অপপ্রচার।

চাঁদ দেখে সেদিকে আঙ্গুল ইশারা করা বিদ‘আত। কেননা এ ব্যাপারে কোন ছহীহ দলীল পাওয়া যায় না। শায়খ আলী ইবনু মাহফূয বলেন, ‘যে ব্যক্তি এমনভাবে নতুন চাঁদের দিকে হাত উঠিয়ে দু‘আ করবে এবং চুমু খাবে সে সুন্নাত বিরোধী কাজ করবে। কারণ এ বিষয়ে শারঈ কোন বিধান আছে এটা আমি জানি না’।[১] শায়খ বকর বিন আব্দুল্লাহ আবু যায়েদ (১৩৬৫-১৪২৯ হি.) বলেন, ‘শুধু রামাযানের চাঁদ দেখে সেদিকে হাত উঠিয়ে দু‘আ করা একটি নোংরা বিদ‘আত, বড় ধরনের অজ্ঞতা এবং আল্লাহ্র বিধানের সাথে বেআদবী’।[২] তবে চাঁদ দেখার সুন্নাতী পদ্ধতি হল দু‘আ পাঠ করা। দু‘আটি হল-

اَللّهُمَّ أَهْلِلْهُ عَلَيْنَا بِالْيُمْنِ وَالْإِيْمَانِ وَالسَّلَامَةِ وَالْإِسْلَامِ رَبِّىْ وَرَبُّكَ اللهُ

উচ্চারণ : আল্ল-হুম্মা আহলিলহু ‘আলায়না বিল ইউম্নি ওয়াল ঈমানি ওয়াস্ সালা-মাতি ওয়াল ইসলাম। রব্বী ওয়া রব্বুকাল্লহ’।

অনুবাদ : ‘হে আল্লাহ! এ চাঁদকে আমাদের মাঝে বরকত, ঈমান, শান্তি, নিরাপত্তা ও ইসলামের সাথে উদিত করুন। আমার রব ও তোমার রব আল্লাহ’।[৩]

শুধু রামাযান মাস উপলক্ষে মোমবাতি, বিভিন্ন রং-বেরং প্রদীপ জ্বালিয়ে আলোকসজ্জা করা এবং এর মাধ্যমে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করা বিদ‘আত।

কিছু কিছু মুসলিম দেশে দেখা যায়, চাঁদ দেখার পর পরস্পরের মাঝে প্রচার করার জন্য মিছিল বের করা হয়। সাথে ঢাক-ঢোল পিটানো হয় বা সাইরেন বাজানো হয়, মসজিদের মাইকে কুরআন তেলাওয়াত, বক্তৃতা ও গযল ইত্যাদি বাজানো হয়। এগুলো বিদ‘আতী কর্মের অন্তর্ভুক্ত।

রামাযানের প্রথম দিন প্রথম রাক‘আতে সূরা আন‘আম সম্পূর্ণ শেষ করা। অথচ আমলটি ভিত্তিহীন। মুহাদ্দিছগণ বলেন, এই বর্ণনার সনদের কোন ভিত্তি নেই (لا أصل له)। ধারণা করা হয় যে, এই সূরাটি একবারে এক সাথে অবতীর্ণ হয়েছিল। মুস্তাদরাকে হাকেমে (২/৩১৪), ইবনু আব্বাস, আলী ও জাবির (রাযিয়াল্লাহু আনহুম) হতে বর্ণিত। হাদীছটি সম্পর্কে ইমাম যাহাবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমি মনে করছি হাদীছটি মওযূ‘ বা জাল। যদিও ইমাম হাকেম বলেছেন, ইমাম মুসলিমের শর্তে হাদীছটি ছহীহ। কিন্তু শৈথিল্যবাদী হিসাবে তার এই মন্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়।

অধিক সতর্কতা অবলম্বনের জন্য সন্দেহপূর্বক রামাযানের একদিন আগে ছিয়াম রাখা বিদ‘আত। এ ব্যাপারে রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, مَنْ صَامَ الْيَوْمَ الَّذِى يَشُكُّ فِيهِ النَّاسُ فَقَدْ عَصَى أَبَا الْقَاسِمِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ‘যে ব্যক্তি সন্দেহের দিনে ছিয়াম পালন করবে, সে আবুল ক্বাসেম মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে অস্বীকার করল’।[৪]

অনেক ঋতুবতী মহিলা মনে করেন, রামাযানে দিনের বেলা পানাহার করা থেকে দূরে থাকলে ছওয়াব হয়। আবার কেউ কেউ নিয়ত না করেই পুরা দিন কিছুই পানাহার করেন না। অথচ এটা শরী‘আতের স্পষ্ট লংঘন।

ছিয়াম অবস্থায় সাধারণ কথা বলাকে অনেকেই গুনাহের কাজ মনে করেন, যা বিদ‘আত। শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তায়মিয়া (মৃত ৭২৮ হি.) বলেন, ‘ছিয়াম অবস্থায় চুপ থাকা বা সাধারণ কথা-বার্তা থেকে বিরত থাকা সকল আলেমদের ঐকমত্যে অপসন্দনীয় বিদ‘আত’।[৫] ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,

بَيْنَا النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ إِذَا هُوَ بِرَجُلٍ قَائِمٍ فَسَأَلَ عَنْهُ فَقَالُوْا أَبُوْ إِسْرَائِيْلَ نَذَرَ أَنْ يَقُوْمَ وَلَا يَقْعُدَ وَلَا يَسْتَظِلَّ وَلَا يَتَكَلَّمَ وَيَصُوْمَ فَقَالَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُرْهُ فَلْيَتَكَلَّمْ وَلْيَسْتَظِلَّ وَلْيَقْعُدْ وَلْيُتِمَّ صَوْمَهُ

‘এক সময় নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কথা বলছিলেন। সেখানে এক লোককে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখে তার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। লোকেরা বলল, সে আবু ইসরাঈল, সে মানত করেছে যে, সে দাঁড়িয়ে থাকবে, বসবে না, ছায়া গ্রহণ করবে না, কারো সাথে কথা বলবে না এবং ছিয়াম পালন করবে। অতঃপর নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাকে নির্দেশ দাও যে, সে যেন কথা বলে, ছায়া গ্রহণ করে, বসে এবং তার ছিয়াম পূর্ণ করে’।[৬]

তারাবীহর ছালাতে যেদিন পবিত্র কুরআন খতম হবে সেদিন অর্থাৎ ২৭ রামাযানে একটি পানি ভর্তি বড় পাত্র ইমাম ছাহেবের কাছাকাছি রাখা হয়। আর ইমাম ছাহেব সেদিন কুরআন খতম করে ছালাত শেষে ঐ পানিতে ফুঁক দেন। আর সেই পানি মুছল্লীরা বরকতের আশায় তা বাড়ীতে নিয়ে যান। এটি একটি নোংরা বিদ‘আত। এ থেকে বিরত থাকতে হবে।

এটা এক আশ্চর্য ধরনের বিদ‘আত। বর্তমানে বিশেষ করে মেয়েরা পুরা মাস ধরে অনেক কষ্ট করে কুরআন পড়েন ও খতমও করেন। অতঃপর রামাযানের শেষের দিকে মসজিদের হুজুর বা তারাবীহর ইমামদের ডেকে সেটা আবার বখশিয়ে নেন। হয়ত অনেকের কাছে শব্দটি নতুন। কিন্তু চরম বাস্তবতা এটাই। ইমাম বিশেষ মুনাজাতের মাধ্যমে যার নাম বলা হয়, সরাসরি তার নামেই বখশিয়ে দেন। অর্থাৎ এই কুরআন পড়ে পাঠক যত নেকী কামাই করেছিলেন, তার সবই বাবা-মা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজনের জীবিত বা মৃত যে কোন ব্যক্তির নামে দিয়ে দেয়া হয়। এটা হয় সাধারণত ২৭ রামাযানের রাত্রিতে। সেদিন হুজুর অনেক ব্যস্ত থাকেন। বলা যায়, প্রায় ফজর পর্যন্ত ইমাম ছাহেবদের এই কষ্টটা করতে হয়। তবে কষ্টতেও মজা আছে। কারণ প্রত্যেক বাড়ী থেকেই বিশেষ মুনাজাতের জন্য লোকেরা বিশেষ ইনকাম হাদিয়া দিয়ে দেন। পুরা রামাযানে তারাবীহ পড়িয়ে যা হয়, এক রাতে তার চেয়ে অনেক বেশি হয়। এটা বিনা পূজির বিদ‘আতী ব্যবসা।

কুরআন পড়লে অসংখ্য নেকী হয়[৭] কিন্তু অন্য কারো জন্য কুরআন পড়ে দেয়া ঠিক নয়। এটি একটি আবিষ্কৃত নতুন বিদ‘আত। সমাজে যারা কুরআন পড়তে পারেন না কিন্তু ছালাত আদায় করেন, তারা কোন হাফেয বা ইমামদের ধরে কুরআন পড়ান, আর উনি বসে বসে শুনেন। এমতাবস্থায় যখন শ্রোতার কোন কাজের সময় হয়, তখন পাঠককে বলেন, ‘আচ্ছা হুজুর রাখেন, আবার অমুক সময় আসব’। এভাবে শুনে শুনে কুরআন খতম করেন। আর শেষে হুজুরকে বিশেষ হাদিয়া দেয়া হয়। দুঃখের বিষয় হল- ঐ এক মাস বড় ছাহেব যদি কুরআন পড়তেন, তাহলে হয়তো অনেক এগিয়ে যেতে পারতেন। আর এর মর্যাদাও অনেক বেশি। হাদীছটি খেয়াল করুন- আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

مَثَلُ الَّذِي يَقْرَأُ القُرْآنَ وَهُوَ حَافِظٌ لَهُ مَعَ السَّفَرَةِ الكِرَامِ البَرَرَةِ وَمَثَلُ الَّذِي يَقْرَأُ وَهُوَ يَتَعَاهَدُهُ وَهُوَ عَلَيْهِ شَدِيدٌ فَلَهُ أَجْرَانِ

কুরআনের হাফিয বা পাঠক লিপিকার সম্মানিত ফিরিশতাদের মত। (কুরআন শিখতে গিয়ে) খুব কষ্টদায়ক হওয়া সত্ত্বেও যে বারবার কুরআন পাঠ করার চেষ্টা করে, সে দ্বিগুণ নেকী পাবে।[৮]

রামাযানের ২৭ রাত্রিতে কিংবা শেষ দশকের কোন এক বিজোড় রাত্রে ইমাম ছাহেব সবাইকে নিয়ে জামা‘আতের সাথে এ ছালাত আদায় করে থাকেন। অথচ এটা বিদ‘আত। পারলে দিনে একবার, নইলে সপ্তাহে, মাসে, বছরে কিংবা জীবনে একবার পড়বে। তাতে আগে-পিছের জানা-অজানা, ছোট-বড় সব গোনাহ মাফ হয়ে যাবে।[৯] কিন্তু এই ছালাতের ছহীহ কোন দলীল নেই। ছালাতুত তাসবীহ সম্পর্কে যে হাদীছগুলো বর্ণিত হয়েছে, সেগুলোর বিশুদ্ধতা নিয়ে মুহাদ্দিছগণের মাঝে অনেক মতানৈক্য রয়েছে। কেউ এ সম্পর্কিত হাদীছকে ‘মুরসাল’, কেউ ‘মওকূফ’, কেউ ‘যঈফ’, কেউ ‘মওযূ’ বা জাল বলেছেন। সঊদী আরবের সর্বোচ্চ উলামা পরিষদ মন্তব্য করেছেন, صَلَاةُ التَّسْبِيْحِ بِدْعَةٌ وَحَدِيْثُهَا لَيْسَ بِثَابِتٍ بَلْ هُوَ مُنْكَرٌ وَذَكَرَهُ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ فِى الْمَوْضُوْعَاتِ ‘ছালাতুত তাসবীহ’ বিদ‘আত। এর হাদীছ প্রমাণিত নয়; বরং মুনকার বা অস্বীকৃত। কোন কোন মুহাদ্দিছ জাল হাদীছের মধ্যে একে উল্লেখ করেছেন’।[১০] যদিও আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) উক্ত হাদীছের যঈফ সূত্রসমূহ পরস্পরকে শক্তিশালী করে বলে তাকে স্বীয় ছহীহ আবুদাঊদে উল্লেখ করেছেন (হা/১১৫২)। তবুও এরূপ বিতর্কিত, সন্দেহযুক্ত ও দুর্বল ভিত্তির উপরে কোন ইবাদত বিশেষ করে ছালাত প্রতিষ্ঠা করা যায় না। তাই এ থেকে বিরত থাকাই উত্তম। উল্লেখ্য, এই ছালাতকে অনেকেই ‘লাইলাতুল ক্বদর’-এর ছালাত বলে থাকে। এটাও বিদ‘আত।

একটি অস্বীকৃত হাদীছের উপর ভিত্তি করে সাধারণ মানুষ উক্ত ধারণা পোষণ করে থাকে। এমনকি কিছু আলেমও মনে করেন, অন্য মাসের চেয়ে রামাযানে কোন ফরয ইবাদত করলে তা ৭০ গুণ বৃদ্ধি করা হয়। অথচ মুহাদ্দিছগণের ঐকমত্যে হাদীছটি ‘মুনকার’।[১১]

রামাযানকে তিনভাগে বিভক্ত করা সম্পর্কি বর্ণিত হাদীছটি যঈফ ও মুনকার।[১২] যেখানে বলা হয়েছে যে, ‘এটি এমন একটি মাস, যার প্রথম ভাগ রহমত, মাঝভাগ মাগফিরাত এবং শেষভাগ জাহান্নাম থেকে মুক্তি’।[১৩] অথচ আল্লাহর রহমত, ক্ষমা ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে কোন সীমাবদ্ধ নয়। এছাড়া এটা একাধিক ছহীহ হাদীছের বিরোধী। রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

إِذَا دَخَلَ شَهْرُ رَمَضَانُ فُتِحَتْ أَبْوَابُ السَّمَاءِ وَفِي رِوَايَةٍ فُتِّحَتْ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ وَغُلِّقَتْ أَبْوَابُ جَهَنَّمَ وَسُلْسِلَتِ الشَّيَاطِينُ وَفِي رِوَايَةٍ فُتِحَتْ أَبْوَابُ الرَّحْمَةِ

‘যখন রামাযান মাস আগমন করে, তখন আসমানের দরজা সমূহ খুলে দেয়া হয়। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, জান্নাতের দরজা সমূহ খুলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজা সমূহ বন্ধ করা হয় ও শয়তানকে শৃঙ্খলিত করা হয়। অন্য বর্ণনায় এসেছে, রহমতের দরজা সমূহ খুলে দেয়া হয়’।[১৪] তাই রামাযানকে রহমত, মাগফিরাত ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি এ তিন ভাগে ভাগ করা বিদ‘আত।

সাহারী সময়ের পূর্বে করতে হবে এটাই ঠিক। কিন্তু অতিরিক্ত সতর্কতার কারণে যদি দশ মিনিট বা পনের মিনিট পূর্বে হয়, তাহলে সেটা বিদ‘আত হবে। শায়খ ছালেহ আল-উছায়মীন (রাহিমাহুল্লাহ)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, বর্তমানে কিছু সময়সূচী দেখা যায়, যেখানে ‘সাহারী থেকে বিরত থাকার সময়’ উল্লেখ করা থাকে। যা হয় মূল ফজরের (আযান) দশ বা পনের মিনিট পূর্বে। এটা কি সুন্নাত না-কি বিদ‘আত? উত্তরে শায়খ বলেন, এটা একটি স্পষ্ট বিদ‘আত। সুন্নাত হিসাবে এর কোন ভিত্তি নেই। বরং সুন্নাত হল সম্পূর্ণ এর বিপরীত। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আর তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। অতঃপর ছিয়াম পূর্ণ কর রাত (সূর্যাস্ত) পর্যন্ত। আর যতক্ষণ তোমরা ই‘তিকাফ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান কর, ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীদের সাথে মিলামেশা কর না। এই হল আল্লাহ কর্তৃক বেঁধে দেয়া সীমা। অতএব এর কাছেও যেও না। এভাবেই আল্লাহ নিজের আয়াত সমূহ মানুষের জন্য বর্ণনা করেন, যাতে তারা বাঁচতে পারে’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৮৭)।

রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, বিলাল আযান দিবে রাতে। তখন তোমরা পানাহার কর, যতক্ষণ তোমরা আব্দুল্লাহ ইবনু উম্মে মাকতূমের আযান না শোন। আর ইবনু উম্মে মাকতূম ফযর হলেই আযান দেয়।[১৫] সুতরাং যারা এভাবে সাহারীর পূর্বেই সাহারী গ্রহণের সময় নির্ধারণ করেছে, তারা আল্লাহর দেওয়া ফরযের উপর বাড়াবাড়ি করেছে, যা বাতিল ও প্রত্যাখ্যাত।

রামাযান মাসে শেষ রাতে মুআযযিন কর্তৃক মাইকে উচ্চ আওয়াযে কুরআন তেলাওয়াত, গযল, ইসলামী সঙ্গীত বলা অথবা টেপ রেকর্ডার চালিয়ে বক্তাদের ওয়ায, গযল বাজানো কিংবা ‘ভায়েরা আমার, বোনেরা আমার! উঠুন, সাহারীর সময় হয়েছে, রান্না-বান্না করুন, খাওয়া-দাওয়া করুন’ ইত্যাদি বলে অনবরত ডাকাডাকি অথবা উঁচু আওয়াযে হুইসল বাজানো সবই শরী‘আতের নামে নতুন আবিষ্কার, যা স্পষ্ট বিদ‘আত।[১৬] এছাড়া এলাকার কিছু যুবক রামাযানের প্রতি রাতের শেষে মাইক নিয়ে সম্মিলিত কণ্ঠে গযল বা কাওয়ালী গেয়ে মানুষের বাড়ীর দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে চাঁদা আদায় করে অথবা মাইক বাজিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে থাকে। এ ছাড়াও এলাকা ভেদে ভিন্ন ভিন্ন বিদ‘আতী কার্যক্রম দেখা যায়। বরং এ সময় সাহারীর আযান দেয়া সুন্নাত।[১৭] অতএব মনগড়া পদ্ধতি পরিত্যাগ করে রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর শিখানো পদ্ধতিকে গ্রহণ করা যরূরী।

নিয়ত অর্থ, মনন করা বা সংকল্প করা। তাই মনে মনে ছিয়ামের নিয়ত করতে হবে। রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের পূর্বে ছিয়ামের নিয়ত করেনি, তার ছিয়াম হয়নি’।[১৮] মুখে আরবীতে নিয়ত পড়ার শারঈ কোন ভিত্তি নেই। মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত বলা বিদ‘আত। শাইখ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, النية وهى القصد و محلها القلب و تلفظ بها بدعة ‘নিয়ত অর্থ পরিকল্পনা করা। তার স্থান হল অন্তর। আর মুখে উচ্চারণ করা বিদ‘আত’।[১৯]

অধিক পরহেযগারিতা ও তাক্বওয়ার প্রদর্শন করতে গিয়ে সতর্কতা স্বরূপ নির্ধারিত সময়ের সাথে আরো কয়েক মিনিট সময় যোগ করে ইফতরা করা হয়। যা প্রকাশ্য বিদ‘আত ও সূক্ষ্ম জালিয়াতি ছাড়া কিছুই নয়। কেননা রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, لَا يَزَالُ النَّاسُ بِخَيْرٍ مَا عَجَّلُوا الفِطْرَ ‘মানুষ ততদিন কল্যাণের উপর থাকবে, যতদিন তাড়াতাড়ি ইফতার করবে’।[২০] রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেন, وَغَرَبَتِ الشَّمْسُ فَقَدْ أَفْطَرَ الصَّائِمُ ‘সূর্যাস্তের সাথে সাথেই ছায়েম ইফতার করবে’।[২১] ছহীহ বুখারীতে বর্ণিত পূর্বের হাদীছে ‘তাড়াতাড়ি ইফতার করা’-কে কল্যাণের উপর থাকার কথা বলা হয়েছে। এখানে ‘তাড়াতাড়ি ইফতার করা’ বলতে যথাসময় ইফতার করাকে বুঝানো হয়েছে। সময়ের আগে নয়। অর্থাৎ সূর্যাস্তের সাথে সাথে ছায়েম ইফতার করবে। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, لَا يَزَالُ الدِّيْنُ ظَاهِرًا مَا عَجَّلَ النَّاسُ الْفِطْرَ لأَنَّ الْيَهُوْدَ وَالنَّصَارَى يُؤَخِّرُوْنَ ‘দ্বীন ততদিন বিজয়ী থাকবে, যতদিন লোকেরা জলদি ইফতার করবে। কেননা ইহূদী ও খ্রীষ্টানরা ইফতার বিলম্বে করে’।[২২]

ইবনু হাজার আসক্বালানী (৭৭৩-৮৫২ হিঃ) বলেন, ইফতারের সময় অযথা বিলম্ব করা একটি জঘন্য বিদ‘আতের অন্তর্ভুক্ত। মনে হচ্ছে সে ইবাদতের মধ্যে ‘ইহত্বিয়াত’ তথা অধিক সর্তকতা অবলম্বন করবে। আর বিষয়টি অল্প মানুষই জানে। এর মাধ্যমে আযানকে সূর্যাস্তেরও কিছু পর পর্যন্ত বিলম্ব করে সাধারণ মানুষের উপর যুলুম করা হয়। ধারণার উপর ইবাদত করতে গিয়ে তারা ইফতারকে বিলম্ব করছে, অনুরূপভাবে সাহারীও আগে আগে সম্পন্ন করছে, যা স্পষ্ট সুন্নাত বিরোধী আমল। ফলে তাদের কল্যাণ কমে যাচ্ছে এবং খারাবী বৃদ্ধি পাচ্ছে। আল্লাহ আমাদের সাহায্য করুন-আমীন!![২৩]

তারাবীহর ছালাত সুন্নাত। এটা ওয়াজিব বা ফরয কিংবা সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহও নয়, বরং এটি সুন্নাত। যদি কেউ পড়ে, তাহলে তার জন্য নিঃসন্দেহে অফুরন্ত নেকী ও মর্যাদা রয়েছে। পূর্বের (ছগীরা) গোনাহ মাফের গ্যারান্টি রয়েছে। কিন্তু ছিয়ামের জন্য তারাবীহর ছালাতকে আবশ্যিক করে নেয়া কিংবা অন্যকে এ ভাবে বলা যে, তারাবীহর ছালাত আবশ্যক, পড়তেই হবে। তুমি ছিয়াম রাখবে, অথচ তারাবীহ পড়বে না? এ সকল কথার শারঈ কোন ভিত্তি নেই। উল্লেখ্য, তারাবীহ ছালাতের কোন ক্বাযাও নেই এবং ছেড়ে দিলে কোন গুনাহও হবে না। তবে অফুরন্ত নেকী থেকে বঞ্চিত হবে।

বিষয়টি নতুন হলেও আমাদের দেশে তারাবীহর মুছল্লীদের মধ্যে একটি অলিখিত নিয়ম করা আছে যে, প্রত্যেক মসজিদে একই সমান ক্বিরাআত পড়তে হবে। যেমন সিলেটে প্রথম দেড় পারা পড়বে, অনুরূপ ঢাকা, চিটাগাং, রাজশাহী, ফরিদপুর সব জায়গাই একই ক্বিরাআত হবে, কম-বেশি হবে না। যাতে করে একজন মুছল্লী দেশের যেখানেই থাকুন না কেন, তিনি সেখানে গিয়েই তারাবীহতে অংশগ্রহণ করলে কুরআন খতমের সাথে সম্পৃক্ত হতে পারলেন। অথচ আল্লাহ তা‘আলা কুরআনের যতটুকু তেলাওয়াত করা সহজ ততটুকু তেলাওয়াত করার কথা বলেছেন (সূরা আল-মুয্যাম্মিল : ২০)।

এর পাশাপাশি সময়ের বিষয়টিকেও বিশেষভাবে নির্দিষ্ট করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ পুরা ঢাকা শহরে একই সাথে ছালাত শুরু হবে। অথচ এটা ছালাতের সাথে যেমন বেআদবী; তেমনি পবিত্র কুরআনের সাথেও কিছু সীমাবদ্ধতা বেঁধে দেয়া, যা অন্যায় এবং সুন্নাতের স্পষ্ট লংঘন।

তারাবীহর ছালাতের জন্য নির্দিষ্ট কোন দু‘আ নেই। অথচ প্রতি চার রাক‘আত পর পর ‘সুবহানা যিল মুলকি ওয়াল মালাকূতি….ইয়া মুজীরু, ইয়া মুজীরু’ মর্মে যে দু‘আ আবিষ্কার করেছে, নিঃসন্দেহে তা স্পষ্ট বিদ‘আত। সুতরাং এই দু‘আ পড়া যাবে না। বরং অন্যান্য ছালাতের পর যে পাঠ করা হয় সেগুলোই পড়বে।[২৪] আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন মুহাম্মাদ ইবনুল হাজ্জ আল-মালেকী (মৃত ৭৩৭ হি.) বলেন, ‘তারাবীহতে ইমাম ও মুক্তাদি মিলে তৈরিকৃত যে পন্থা রয়েছে, তা ত্যাগ করা আবশ্যক। আর তা হল- প্রত্যেক ২ সালামের পর অর্থাৎ ৪ রাক‘আত পর পর সবাই এক সাথে উঁচু আওয়াযে যে বিশেষ দু‘আ পাঠ করা হয়, তা স্পষ্ট বিদ‘আত’।[২৫]

নির্দিষ্ট দিন ঠিক করে দ্বীনী কাজ করা ইসলাম সমর্থিত নয়। শুধু দুই ঈদ ব্যতীত। তাছাড়া তারাবীহর ছালাতে কুরআন খতম করার পক্ষে কোন দলীল পাওয়া যায় না। তবে তারাবীহ বা তাহাজ্জুদ ছালাতে রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও ছাহাবায়ে কেরাম অনেক বেশী তেলাওয়াত করতেন মর্মে অনেক দলীল রয়েছে।[২৬] সমাজে ‘খতম তারাবীহ’ নামে নতুন প্রথা সৃষ্টি হয়েছে। এতে ইমাম যেমন তারতীলসহ তেলাওয়াত করতে পারেন না, তেমনি মুক্তাদীরা কিছু বুঝতে পারেন না। তাই ছালাতে খতম করার বিষয়টি কেউ যদি শরী‘আত মনে করে পালন করে, তাহলে অবশ্যই বিদ‘আত হবে। এছাড়া এইদিন তারাবীহর ছালাত শেষে বিশেষ মুনাজাত ধরা হয়। এ ব্যাপারে শায়খ উছায়মীন (রাহিমাহুল্লাহ)-কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘তারাবীহর ছালাতে কুরআন খতমের ব্যাপারে রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অথবা ছাহাবীগণের পক্ষ থেকে কোন সুন্নাতের বিষয়ে আমার জানা নেই’।[২৭] শায়খ বকর বিন আব্দুল্লাহ আবু যায়েদ বলেন, ‘তারাবীহর ছালাতের শেষে ‘কুরআন খতমের দু‘আ’ নামে যে দু‘আ করা হয়, তা রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বা ছাহাবীগণ (রাযিয়াল্লাহু আনহুম)-এর শরী‘আতে কোন ভিত্তি নেই। বস্তুত এর কোন বর্ণনাও আসেনি। যদি কেউ দাবী করে যে, দলীল আছে, তাহলে সে যেন তা দেখায়’।[২৮]

‘জুম‘আতুল বিদা’ নামে শরী‘আতে কোন জুম‘আর ভিত্তি নেই। একটি জাল হাদীছের মিথ্যা ফযীলতের কারণে এই নামটি প্রসিদ্ধি লাভ করেছে।[২৯] বিদ‘আতপন্থীরা রামাযানের শেষ বা বিদায়ী জুম‘আকে ‘জুম‘আতুল বিদা’ বলে থাকে। সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া বোর্ড ‘লাজনাহ দায়েমাহ’-কে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তারা বলেন, ছালাত একটি ইবাদত। আর এর ভিত্তিও আছে- সেটা তাওক্বীফী… কিন্তু ‘জুম‘আতুল বিদা’ রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে তো নয়ই; বরং ছাহাবী, তাবেঈ, ইমাম-মুজতাহিদগণ এর পক্ষ থেকেও এমন কোন কথা বা আমল বর্ণিত হয়নি। যদি তাদের মাঝে আমল থাকতই, তাহলে কেউ না কেউ আমাদের পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দিতেন। কিন্তু না, কথা ও কর্মে কেউই কোন হাদীছের মাধ্যমে বর্ণনা করেননি। আর এটা একটি স্পষ্ট বিদ‘আত।[৩০] শায়খ ছালেহ আল-উছায়মীন (রহঃ)ও অনুরূপ জবাব দিয়েছেন।[৩১]

রামাযান মাস আসলে কবর যিয়ারতের হিড়িক পড়ে যায়। পুরা বছর বাপ-মা, আত্মীয়-স্বজনের জন্য ১ মিনিট দু‘আও হয়ত করে না। কিন্তু রামাযান মাস আসলে হুজুরকে সাথে নিয়ে কবর পাড়ে গিয়ে দলবদ্ধ মুনাজাতের জন্য খুব এগিয়ে থাকেন। এ বিষয়ে ছহীহ কোন দলীল পাওয়া যায় না। বিধায় তা স্পষ্ট বিদ‘আত। বরং যেকোন সময়, যেকোন দিনে কবর যিয়ারত করবে।[৩২]

মৃত ব্যক্তির নামে ইফতার মাহফিল করা বিদ‘আত। এটি জীবিত ব্যক্তি তার নিজের জন্য করবে।[৩৩]

অতএব কষ্টার্জিত ইবাদত আল্লাহর নিকট কবুলযোগ্য করার জন্য বিদ‘আতমুক্ত ইবাদত করা যরূরী। অন্যথা শুধু পরিশ্রম অন্তঃসারশূন্য হবে। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে বিদ‘আতমুক্ত ছিয়াম পালন করার তাওফীক দান করুন-আমীন!!

[১]. আল-ইবদা‘ ফী রামাযানিল ইবতিদা‘, পৃ. ৩০৩।

[২]. তাছহীহুদ দু‘আ, পৃ. ৫০৯।

[৩]. তিরমিযী, হা/৩৪৫১; মিশকাত, হা/২৩২৮, সনদ ছহীহ।

[৪]. তিরমিযী, হা/৬৮৬, সনদ ছহীহ।

[৫]. মাজমু‘ঊল ফাতাওয়া, ২৫তম খণ্ড, পৃ. ২৯২।

[৬]. ছহীহ বুখারী হা/৬৭০৪।

[৭]. তিরমিযী হা/২৯১০; মিশকাত হা/২১৩৭; সিলসিলা ছহীহাহ হা/৩৩২৭, সনদ ছহীহ।

[৮]. ছহীহ বুখারী, হা/৪৯৩৭।

[৯]. আবূ দাঊদ, হা/১২৯৭-১২৯৯; ইবনু মাজাহ, হা/১৩৮৬-১৩৮৭; মিশকাত, হা/১৩২৮।

[১০]. ফাতাওয়া লাজনা আদ-দায়েমাহ, ৮ম খণ্ড, পৃ. ১৬৪।

[১১]. ইবনু খুযায়মাহ, হা/১৮৮৭; মিশকাত, হা/১৯৬৫; যঈফ সিরিজ, হা/৮৭১।

[১২]. ইবনু খুযায়মাহ, হা/১৮৮৭; মিশকাত, হা/১৯৬৫; সিলসিলা যঈফাহ, হা/১৫৬৯।

[১৩]. বায়হাক্বী-শু‘আবুল ঈমান, হা/৩৩৩৬; মিশকাত, হা/১৯৬৫।

[১৪]. ছহীহ বুখারী, হা/১৮৯৯, হা/৩২৭৭; ছহীহ মুসলিম, হা/১০৭৯; মিশকাত, হা/১৯৫৬।

[১৫]. ছহীহ মুসলিম, হা/১০৯২; মিশকাত, হা/৬৮০।

[১৬]. ইবনু হাজার, ফাৎহুল বারী, হা/৬২১-এর ব্যাখ্যা, ২/৪৩৬ পৃঃ, ‘আযান’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১৩।

[১৭]. ছহীহ বুখারী, হা/১৯১৮; নাসাঈ, হা/ ৬৪১, সনদ ছহীহ।

[১৮]. আবূ দাঊদ, হা/২৪৫৪, সনদ ছহীহ; মিশকাত, হা/১৯৮৭।

[১৯]. দেখুন (www.binbaz.org.sa/noor/1201)।

[২০]. ছহীহ বুখারী, হা/১৯৫৭; তিরমিযী, হা/৬৯৯; ইবনু মাজাহ, হা/১৬৯৮; মিশকাত, হা/১৯৮৪।

[২১]. ছহীহ বুখারী, হা/১৯৫৪; মিশকাত, হা/১৯৮৫।

[২২]. আবূ দাঊদ, হা/২৩৫৩; মিশকাত, হা/১৯৯৫, সনদ ছহীহ।

[২৩]. ইবনু হাজার, ফাৎহুল বারী, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ১৯৯।

[২৪]. হিলইয়াতুল আওলিয়া, ৩য় খণ্ড, পৃ. ২২১; সনদ ছহীহ, সিলসিলা ছহীহাহ, হা/৯৭২-এর আলোচনা দ্র.।

[২৫]. আল-মাদখাল, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৯৩-২৯৪।

[২৬]. মুওয়াত্ত্বা মালিক, ১ম খণ্ড, পৃ. ১১৫; মিশকাত, হা/১৩০২; ছহীহ ইবনু খুযায়মাহ, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ১৮৬।

[২৭]. উছায়মীন, মাজমূ‘ঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল, ১৪তম খণ্ড, পৃ. ২১২।

[২৮]. তাছহীহুদ দু‘আ, পৃ. ৪২৩-৪২৪।

[২৯]. আব্দুল হাই লাক্ষে্নৗবী হানাফী, আল-আছারুল মারফূ‘আহ ফিল আখবারিল মাওযূ‘আহ, পৃ. ৮৫।

[৩০]. ফাতাওয়া লাজনাহ আদয়-দায়েমাহ, ৮ম খণ্ড, পৃ. ১৬৭-১৬৮।

[৩১]. শায়খ উছায়মীন, মাজমূ‘ঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল, ১৪তম খণ্ড, পৃ. ৩৩১।

[৩২]. ছহীহ মুসলিম, হা/৯৭৪-৯৭৫; মিশকাত, হা/১৭৬৭।

[৩৩]. ইবনু মাজাহ, হা/১৭৪৬, সনদ ছহীহ।