মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০২:১৩ পূর্বাহ্ন

ইমাম মাহদী, দাজ্জাল ও ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর আগমন  সংশয় নিরসন

-হাসিবুর রহমান বুখারী*


(২য় কিস্তি)

ইমাম মাহদী ও কালো পতাকাবাহী দল

খুরাসানের কালো পতাকাবাহী দল সম্পর্কে অনেক ঘটনাই আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সিংহভাগ বক্তাই এটা নিয়ে আলোচনা করে। বিশেষ করে ইমাম মাহদীর সঙ্গে তাদের যোগসূত্র নিয়ে আমরা খুবই আবেগপ্রবণ। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হল, এ সম্পর্কে বর্ণিত হাদীছগুলো ছহীহ নয়, যদিও এ ব্যাপারে কিছু মতপার্থক্য আছে। তবে এটিই সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য অভিমত। অনেকে তো চরমপন্থী সংগঠন আই.এস.আই (ওঝও)-কেই কালো পতাকাবাহী খুরাসানের দল হিসাবে আখ্যায়িত করেছিলেন। আল-হামদুলিল্লাহ এখন অনেক ভ্রান্ত দলও তাদেরকে সন্ত্রাসী সংগঠন মনে করে।

শায়খ ছালেহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, ‘আলেমগণ বলেছেন, কালো পতাকাবাহী দল সম্পর্কে কোনও তথ্য ছহীহ সূত্রে প্রমাণিত নয়। বরং এ সম্পর্কে যা কিছু বর্ণিত হয়েছে, তা সবই যঈফ’। অনুরূপ শায়খ হাতীম আশ-শারীফ বলেন, ‘কালো পতাকাবাহী দল সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে কোনও ছহীহ মারফূ‘ এবং ছাহাবীগণ থেকে কোনও ছহীহ মাওকূফ হাদীছ বর্ণিত হয়নি।[১] হাফিয ইবনু কাছীর (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘কালো পতাকাবাহী সম্পর্কে বর্ণিত কোন একটি হাদীছ মতপার্থক্য থেকে মুক্ত নয়’।[২]

কালো পতাকাবাহী দল সম্পর্কে বর্ণিত প্রসিদ্ধ কয়েকটি হাদীছের তাহক্বীক্ব ও তাখরীজ নিম্নে আলোচনা করা হল :

হাদীছ নং-১

আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‏تَخْرُجُ مِنْ خُرَاسَانَ رَايَاتٌ سُوْدٌ لَا يَرُدُّهَا شَيْءٌ حَتَّى تُنْصَبَ بِإِيلِيَاءَ ‘খুরাসানের দিক হতে কালো পতাকাবাহী দল আবির্ভূত হবে (মাহদীর সমর্থনে)। অবশেষে সেগুলো ইলিয়া (বাইতুল মাক্বদিস)-এ উপনীত হবে এবং কোন কিছুই তা ফিরাতে পারবে না’।[৩]

তাহক্বীক্ব : আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, হাদীছটি যঈফ।[৪] শু‘আইব আরনাঊত্ব (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, হাদীছটির সনদ খুবই দুর্বল।[৫] আহমাদ শাকির (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, হাদীছটি যঈফ।[৬] হাফিয ইবনু হাজার আল-‘আসক্বালানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, হাদীছটির সনদে রিশদীন ইবনু সা‘দ নামক একজন দুর্বল রাবী আছে।[৭] ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল, ইয়াহইয়া ইবনু মাঈন, ইমাম আবূ জুর‘আ, আবূ হাতিম, ইমাম নাসাঈ, ইমাম আবূ দাউদ, ইবনু আদী ও ইবনু হিব্বান (রাহিমাহুল্লাহ) ‘রিশদীন ইবনু সা‘দ’-কে দুর্বল ও মুনকার রাবী বলেছেন।[৮]

হাদীছ নং-২

ছাওবান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

إِذَا رَأَيْتُمْ الرَّايَاتِ السُّوْدَ قَدْ جَاءَتْ مِنْ خُرَاسَانَ فَأْتُوْهَا فَإِنَّ فِيْهَا خَلِيْفَةَ اللهِ الْمَهْدِيَّ

‘যখন তোমরা খুরাসানের দিক থেকে কালো পতাকাবাহীদের আসতে দেখবে, তখন তোমরা তাদের সঙ্গে শামিল হবে। কেননা তাদের মধ্যেই খলীফা ইমাম মাহদী থাকবেন’।[৯]

তাহক্বীক্ব : শু‘আইব আরনাঊত্ব (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, হাদীছটির সনদ যঈফ।[১০] আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, হাদীছটি মুনকার ও যঈফ। কেননা ‘আলী ইবনু যায়েদ ইবনু জুদ‘আন নামক রাবী দুর্বল।[১১] আব্দুর রহমান মুবারকপুরী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, হাদীছটি যঈফ। কেননা বর্ণনাকারী শারীক ইবনু আব্দুল্লাহ কাযীর স্মৃতি বিকৃত হয়ে গিয়েছিল।[১২]

হাদীছ নং-৩

ছাওবান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

يَقْتَتِلُ عِنْدَ كَنْزِكُمْ ثَلَاثَةٌ كُلُّهُمُ ابْنُ خَلِيْفَةٍ ثُمَّ لَا يَصِيْرُ إِلَى وَاحِدٍ مِنْهُمْ ثُمَّ تَطْلُعُ الرَّايَاتُ السُّوْدُ مِنْ قِبَلِ الْمَشْرِقِ فَيَقْتُلُوْنَكُمْ قَتْلًا لَمْ يُقْتَلْهُ قَوْمٌ ثُمَّ ذَكَرَ شَيْئًا لَا أَحْفَظُهُ فَقَالَ فَإِذَا رَأَيْتُمُوْهُ فَبَايِعُوْهُ وَلَوْ حَبْوًا عَلَى الثَّلْجِ فَإِنَّهُ خَلِيْفَةُ اللهِ الْمَهْدِىُّ

‘তোমাদের একটি গুপ্তধনের নিকট তিনজন লোক ঝগড়া করবে। তারা প্রত্যেকেই হবে খলীফার পুত্র। কিন্তু কেউ তা দখল করতে পারবে না। অতঃপর পূর্বের দিক থেকে কালো পতাকাধারী একদল সৈনিক আসবে। তারা ব্যাপক হত্যাকা- চালাবে। হাদীছের বর্ণনাকারী বলেন, ‘এরপর নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন কিছু বিষয়ের কথা বললেন, যা আমি স্মরণ রাখতে পারিনি। তোমরা যখন তাদেরকে দেখতে পাবে, তখন তাদের নেতার হাতে বায়‘আত করবে। যদিও বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়ে উপস্থিত হতে হয়। কেননা তিনিই হলেন আল্লাহর খলীফা মাহদী’।[১৩]

তাহক্বীক্ব : হাদীছটি যঈফ। আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, হাদীছটি যঈফ ও মুনকার।[১৪] ইমাম বায়হাক্বী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আব্দুর রাযযাক হাদীছটি এককভাবে বর্ণনা করেছেন।[১৫] ইমাম ইবনুল ক্বাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, এই হাদীছের মধ্যে ‘আলী ইবনু যায়েদ ইবনু জুদ‘আন দুর্বল রাবী।[১৬] ইমাম যাহাবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, হাদীছটি মুনকার।[১৭]

ইমাম মাহদী সম্পর্কে একটি যঈফ হাদীছের বিশ্লেষণ

আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণিত একটি হাদীছের শেষাংশে এসেছে যে, وَلَا الْمَهْدِيُّ إِلَّا عِيْسَى ابْنُ مَرْيَمَ ‘ঈসা ইবনু মারইয়াম ব্যতীত কোন মাহদী নেই’।[১৮]

তাহক্বীক্ব : হাদীছটি যঈফ। আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, হাদীছটি খুবই দুর্বল।[১৯] শু‘আইব আরনাঊত্ব (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, হাদীছটি যঈফ ও মুনকার।[২০] ইমাম কুরতুবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, হাদীছটি ছহীহ নয়।[২১] ইমাম যাহাবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, হাদীছটি মুনকার।[২২] ছালাহুদ্দীন ইলায়ী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, এই হাদীছে অনেক বড় সমস্যা আছে।[২৩]

সুধী পাঠক! উক্ত হাদীছ থেকে অনেকেই ইমাম মাহদীর আগমনের বিষয়টিতে বিভ্রান্ত হয়েছে। সে জন্য এখানে মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর শায়খ আব্দুল ‍মুহসিন আল-‘আব্বাদ আল-বাদর (হাফিযাহুল্লাহ)-এর একটি গবেষণা প্রবন্ধ থেকে উক্ত হাদীছের পর্যালোচনা তুলে ধরা হল। তাঁর এই লেখাটি বিশ্ববিদ্যালায়ের ম্যাগাজিনের ১৩৮৮ হিজরীতে প্রকাশিত হয়েছিল। সেখানে তিনি বলেন, ‘বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থকার ইমাম কুরতুবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, এই হাদীছের সনদ দুর্বল। পক্ষান্তরে মাহদীর আবির্ভাবের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে সুস্পষ্ট অনেক হাদীছ প্রমাণিত এবং উক্ত হাদীছ থেকে বিশুদ্ধ। সুতরাং উক্ত হাদীছ এই সকল ছহীহ হাদীছের বিপরীতে গ্রহণযোগ্য নয়। উক্ত হাদীছের সনদে মুহাম্মাদ ইবনু খালিদ আছেন, যিনি একক সূত্রে বর্ণনা করেছেন।[২৪]

আবুল হুসাইন মুহাম্মাদ ইবনু হুসাইন আবুরী (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁর গ্রন্থ ‘মানাক্বিবুশ শাফিঈ’তে বলেন, ‘এই মুহাম্মাদ ইবনু খালিদ বিশেষজ্ঞ মুহাদ্দিছগণের নিকটে অজ্ঞাত। অথচ রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে মুতাওয়াতির সূত্রে একাধিক হাদীছে মাহদীর কথা বর্ণিত হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, তিনি আহলে বাইতের অন্তর্ভুক্ত হবেন এবং সাতবছর রাজত্ব করবেন। তিনি ইনসাফ ও ন্যায়পরায়ণতা দ্বারা ভূপৃষ্ঠ পরিপূর্ণ করে দিবেন। যখন ঈসা (আলাইহিস সালাম) আসবেন, তখন দাজ্জালকে হত্যা করতে তিনি তাঁকে সাহায্য করবেন। তিনি এই উম্মতের ইমামতি করবেন এবং ঈসা (আলাইহিস সালাম) তাঁর পিছনে ছালাত আদায় করবেন।

ইমাম বায়হাক্বী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, ‘উক্ত বর্ণনাটি মুহাম্মাদ ইবনু খালিদ এককভাবে বর্ণনা করেছেন’। হাকিম আবূ আব্দুল্লাহ বলেছেন, ‘তিনি অজ্ঞাত। তিনি বর্ণনা করেন আবান ইবনু আবী আইয়াশ থেকে, ইনি মাতরূক বা প্রত্যাখ্যাত। তিনি বর্ণনা করেন হুসাইন থেকে এবং তিনি নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে। এটি ‘মুনক্বাতি’ তথা বিচ্ছিন্ন। আর ইমাম মাহদীর আবির্ভাবের ব্যাপারে হাদীছগুলো সনদের দিক থেকে বিশুদ্ধতম’।[২৫]

ইমাম মাহদী ও মিথ্যা দাবিদার

যুগে যুগে পৃথিবীর বুকে অনেক মানুষই নিজেকে ইমাম মাহদী বলে মিথ্যা দাবি করেছে। পাশাপাশি অনেক মানুষ অজ্ঞতাবশত তাদের অনুসরণ করে বিভ্রান্ত হয়েছে। তারা সাধারণত ইলহামের নামে নিজেদের প্রবৃত্তির ধোঁকা, শয়তানের কুমন্ত্রণা এবং মিথ্যা স্বপ্নকে ভিত্তি করে বিভ্রান্ত হয়েছে এবং অন্যদেরকে বিভ্রান্ত করেছে। বস্তুত সত্য প্রমাণে শরী‘আতে এগুলোর কোন স্থান নেই। তারা যদি বিশুদ্ধসূত্রে বর্ণিত হাদীছগুলোর আলোকে বিচার করত, বুঝতে পারত, তাদের প্রতিশ্রুত ইমাম মাহদী হওয়া সম্ভব নয়। কেননা ইমাম মাহদীর আবির্ভাবের পরপরই দাজ্জাল এবং ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর আবির্ভাব হবে। তারা যদি সত্যিই মাহদী হত, তাহলে দাজ্জাল এবং ঈসা (আলাইহিস সালাম)ও চলে আসতেন।

সাম্প্রতিক করোনা মহামারীর প্রাক্কালে বাংলাদেশের টঙ্গীর মুস্তাক মোহাম্মাদ আরমান নিজেকে ইমাম মাহদী দাবী করেছিল। এছাড়া ভোলার প্রফেসর আব্দুল মাজীদও নিজেকে মিথ্যা মাহদী দাবী করেছে এবং মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।

আবূ ক্বাতাদা আহমাদ ইবনু হাসান আল-মু‘আল্লিম বলেন, ‘আমি আব্দুল আলীম ইবন আব্দুল ‘আযীম রচিত গ্রন্থ থেকে কিছু নাম তুলে ধরছি, যারা নিজেদেরকে মাহদী দাবি করেছিল। যেমন-

(১) আল-হারিস বিন সুরাইজ (১১৬ হি.), (২) মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ বিন তূমারত (৪৭১ থেকে ৪৯১ হিজরীর মধ্যে জন্ম), (৩) আল-মাহদি আস-সুদানি মুহাম্মাদ বিন আহমাদ বিন আব্দুল্লাহ (১২৬০ হি.), (৪) মুহাম্মাদ আল খানফুরি (জন্ম. ৮৪৮ হি.)।

এছাড়াও এরূপ কয়েক হাজার প্রসিদ্ধ ‘ইমাম মাহদী’-এর পরিচয় পাওয়া যায়। এখানে অল্প কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হল। (১) মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুল্লাহ ইবনুল হাসান হাসানী (৯৩-১৪৫ হি.)।[২৬] (২) তৃতীয় আব্বাসী খালীফা মাহদী (জ. ১২৭ হি.)।[২৭] (৩) হুসাইন ইবনু যাকরাওয়াইহি ইবন মাহরাওয়াইহি (২৯১ হি.)।[২৮] (৪) ওবাইদুল্লাহ ইবনু মাইমূন কাদ্দাহ (২৫৯-৩২২ হি.)।[২৯] (৫) হুসাইন ইবনু মানছূর হাল্লাজ (৩০৯ হি.)।[৩০] (৬) আল-মুয়িয্যি ইবনুল মানছূর, মা‘আদ ইবনু ইসমাঈল ইবনু উবাইদুল্লাহ ফাতিমী (৩৬৫ হি.)।[৩১] (৭) বালিয়া (৪৮৪ হি.)।[৩২] (৮) মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুল্লাহ ইবনু তাওমারত (৪৮৫-৫২৪ হি.)।[৩৩]

এ প্রসঙ্গে শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যা (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘আমি আমাদের যুগের একাধিক ব্যক্তি সম্পর্কে জানি, যারা ধার্মিক ও পরকালমুখী। কিন্তু তারা প্রত্যেকেই নিজেকে মাহদী মনে করেন। অনেক সময় তাদের কাউকে এই নামে সম্বোধনও করা হয়। আর সে নামে সম্বোধনকারী হল শয়তান। কিন্তু সম্বোধিত ব্যক্তি মনে করে, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে সম্বোধন। তাদের একজনের নাম আহমাদ বিন ইবরাহীম। বলা হত, ‘আহমাদ আর মুহাম্মাদ তো একই, আর ইবরাহীম খলীল হচ্ছেন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরদাদা। তোমার বাবার নামও ইবরাহীম। অতএব তার নাম রাসূলের নামের সাথে মিলে গেল এবং তার বাবার নামও তাঁর বাবার নামের সাথে মিলে গেল’।[৩৪]

শায়খ সুলাইমান ইবনু নাছির আল-আলওয়ান বলেন, ‘এর অর্থ এই নয় যে, যে কেউ মাহদী হওয়ার দাবি করে বলবে, ‘আমিই সেই মর্যাদার অধিকারী’ আর তারই অনুসরণ করা যাবে। কারণ মিথ্যাবাদী দাজ্জালের সংখ্যাও অনেক। যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে, তারাই এদের এই অনিষ্ট ও আত্মম্ভরিতাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। নিত্যদিনই শুনি, বুদ্ধি প্রতিবন্ধীরা মাহদী হওয়ার দাবি করছে। বলছে আমিই প্রতিশ্রুত মাহদী। মূলত শয়তান এ বিষয়ে তাদের নিকট অহী প্রেরণ করে তাদেরকে ধোঁকাগ্রস্ত করে এবং ধ্বংস করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ  اِنَّ الشَّیٰطِیۡنَ لَیُوۡحُوۡنَ اِلٰۤی اَوۡلِیٰٓئِہِمۡ ‘নিশ্চয় শয়তান তার বন্ধুদের নিকট অহী প্রেরণ করে’ (সূরা আল-আন‘আম : ১২১)। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَ مَنۡ یَّعۡشُ عَنۡ ذِکۡرِ الرَّحۡمٰنِ نُقَیِّضۡ لَہٗ  شَیۡطٰنًا  فَہُوَ  لَہٗ  قَرِیۡنٌ- وَ اِنَّہُمۡ  لَیَصُدُّوۡنَہُمۡ عَنِ السَّبِیۡلِ وَ یَحۡسَبُوۡنَ  اَنَّہُمۡ  مُّہۡتَدُوۡنَ- حَتّٰۤی  اِذَا جَآءَنَا قَالَ یٰلَیۡتَ بَیۡنِیۡ وَ بَیۡنَکَ بُعۡدَ الۡمَشۡرِقَیۡنِ فَبِئۡسَ الۡقَرِیۡنُ

‘যে ব্যক্তি পরম দয়াময় আল্লাহর স্মরণে উদাসীন হয়, তিনি তার জন্য এক শয়তানকে নিয়োজিত করেন, অতঃপর সে হয় তার সহচর। শয়তানরাই মানুষকে সৎপথ হতে বিরত রাখে। আর মানুষ মনে করে, তারা সৎপথপ্রাপ্ত। অবশেষে যখন সে আমার নিকট উপস্থিত হবে, তখন সে শয়তানকে বলবে, হায়! আমার ও তোমার মাঝে যদি পূর্ব ও পশ্চিমের ব্যবধান থাকত। সুতরাং কত নিকৃষ্ট সহচর সে!’ (সূরা আয-যুখরুফ  : ৩৬-৩৮)।

এ জন্য ওরা শয়তানী চক্রান্তের শিকার হয় এবং সমাজ ও যুগের হাসির পাত্রে পরিণত হয়। তাদের অনেকে তাতে জড়িত হয় কিছু দুঃস্বপ্নের কারণে, যেগুলোকে সে জাগ্রত অবস্থার ঘটনা মনে করে এবং এমন অলীক কল্পনার কারণে, যাকে সে বাস্তবতা মনে করে। তারা এই কুকর্ম ও দুষ্কর্ম এবং এই মিথ্যা দাবীর মাধ্যমে উম্মতের উপর বহু ফিতনা টেনে এনেছে এবং তারা শরী‘আতের পরিবর্তে নিজের বিকৃত বুদ্ধি ও বিকারগ্রস্ত চিন্তাকে মাপকাঠি হিসাবে গ্রহণ করেছে’।[৩৫]

ইমাম মাহদীকে শনাক্ত করার উপায়

এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কেননা যুগে যুগে অনেক ভ-, মিথ্যুক ও প্রতারক ব্যক্তি নিজেকে মাহদী বলে দাবী করেছে। সেক্ষেত্রে আসল-নকল, সত্য-অসত্য ও প্রকৃত-অপ্রকৃতের পার্থক্যকরণ কিভাবে সম্ভবপর হবে? ছহীহসূত্রে বর্ণিত উপরিউক্ত হাদীছগুলো থেকে ইমাম মাহদীর পরিচয় ও নিদর্শন সম্পর্কে যে তথ্যগুলো পাওয়া যায় সে লক্ষণগুলোই তাঁকে চেনার উপায়। নি¤েœ তা উল্লেখ করা হল :

(১) ইমাম মাহদী হবেন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বংশধর। তাঁর নাম হবে মুহাম্মাদ বা আহমাদ। তাঁর পিতার নাম হবে আব্দুল্লাহ।[৩৬]

(২) তিনি হবেন প্রশস্ত ললাট ও উন্নত নাকবিশিষ্ট।[৩৭]

(৩) স্বল্প সময়ের মধ্যেই সামগ্রিকভাবে তাঁর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে। তাঁকে প্রচার করতে হবে না যে, তিনিই মাহদী। বরং মুসলিম উম্মাহ তাঁকে অলৌকিকভাবে স্বীকার করে নিবেন। তখন প্রত্যেক মুমিনের দায়িত্ব হবে রাষ্ট্রপ্রধান হিসাবে তাঁর হাতে বায়‘আত করা। যেমন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

‏الْمَهْدِيُّ مِنَّا أَهْلَ الْبَيْتِ يُصْلِحُهُ اللهُ فِيْ لَيْلَةٍ.

‘মাহদী আমাদের আহলে বাইত থেকে আবির্ভূত হবে। আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে এক রাতে খিলাফতের যোগ্য করবেন’।[৩৮]

(৪) তিনি দায়িত্ব থেকে বাঁচতে চাইবেন এবং ক্ষমতার লোভ-লালসা থেকে মুক্ত হবেন। তিনি কাউকে তাঁর হাতে বায়‘আত করার জন্য আহ্বান করবেন না, অথচ লোকেরা স্বেচ্ছায় তাঁর হাতে জোরপূর্বক বায়‘আত করবেন। ‘ইসলাম ওয়েব’-এর একটি ফৎওয়ায় বলা হয়েছে, ‘ইমাম মাহদী ও তাঁর বায়‘আত সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি অনেক আবেগপ্রবণ মানুষকেই পদস্খলিত ও পথভ্রষ্ট করেছে। কারণ অতীতে ও বর্তমানে অনেকেই নিজেকে মাহদী দাবি করেছে। সুফিয়ান ছাওরী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, ‘ইমাম মাহদী যদি তোমার দরজার সামনে দিয়েও অতিক্রম করে, তবুও তুমি এ বিষয়ে কিছুই করবে না, যতক্ষণ না সবাই তাঁর ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ হয়’।[৩৯] এরপর তাঁরা সুফিয়ান ছাওরী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর উপরিউক্ত প্রসিদ্ধ বাণী সম্পর্কে বলেন, ‘এটিই এই মাসয়ালায় সঠিক মানহাজ এবং সঠিক বুঝ। কারণ ইমাম মাহদীর বৃহত্তম একটি নিদর্শন হল, তাঁর বায়‘আতের উপর মানুষের ঐক্যবদ্ধ হওয়া’।[৪০] একটি হাদীছে এসেছে, আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

يُبَايَعُ لِرَجُلٍ مَا بَيْنَ الرُّكْنِ وَالْمَقَامِ وَلَنْ يَسْتَحِلَّ الْبَيْتَ إِلَّا أَهْلُهُ فَإِذَا اسْتَحَلُّوْهُ فَلَا يُسْأَلُ عَنْ هَلَكَةِ الْعَرَبِ ثُمَّ تَأْتِى الْحَبَشَةُ فَيُخَرِّبُوْنَهُ خَرَابًا لَا يَعْمُرُ بَعْدَهُ أَبَدًا وَهُمُ الَّذِيْنَ يَسْتَخْرِجُوْنَ كَنْزَهُ.

‘মাক্বামে ইবরাহীম ও রুকন অর্থাৎ হাজারে আসওয়াদের মধ্যবর্তী স্থানে একজন ব্যক্তির হাতে বায়‘আত করা হবে। ঐ সময় মক্কার অধিবাসীরা বায়তুল্লাকে (যুদ্ধের জন্য) হালাল করে নেবে। সুতরাং যখন তারা বায়তুল্লাকে হালাল করে নেবে, তখন আরবের ধ্বংস অনিবার্য হয়ে পড়বে। অতঃপর একদল সেনাবাহিনী এসে বায়তুল্লাকে এমনভাবে ধ্বংস করবে যে, পরবর্তীতে আর কখনো কা‘বাকে আবাদ করা হবে না। এরাই কা‘বার নিচের ধনভা-ার বের করবে’।[৪১]

(৫) তাঁর রাজত্বকালেই ঈসা (আলাইহিস সালাম) অবতরণ করবেন।[৪২]

(৬) তাঁর ইমামত, খিলাফত বা শাসন আরবদেশ কেন্দ্রিক হবে।[৪৩]

(৭) তিনি উম্মতে মুহাম্মাদীর ইমামতির দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন এবং ঈসা (আলাইহিস সালাম) তাঁর ইমামতিত্বে ছালাত আদায় করবেন।[৪৪]

(৮) মাহদীর আত্মপ্রকাশের পর তাঁকে আক্রমণ করার জন্য একটি সৈন্যবাহিনী অগ্রসর হবে, যাদেরকে ‘বাইদা’ নামক স্থানে ধসিয়ে দেয়া হবে। আর ‘বাইদা’ হল মদীনার নিকটবর্তী একটি স্থান।[৪৫]

(৯) ‘ইমাম মাহদী’ বলতে একজন হেদায়াতপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপ্রধানকে বুঝানো হয়েছে। যিনি রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থেকে পৃথিবীতে প্রাচুর্য, শান্তি, ইনছাফ ও ইসলাম প্রতিষ্ঠা করবেন।[৪৬]

(১০) তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বংশধর এবং ৫ বা ৭ বা ৯ বছর রাজত্ব করবেন।[৪৭]

এ ছাড়াও ইমাম মাহদীর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ আলামত হল- নিজের ঈমান সংরক্ষণের জন্য এবং বিভ্রান্তি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ইমাম মাহদীর উপরিউক্ত নিদর্শনাবলীর পাশাপাশি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও সর্বসম্মত যে আলামতটি আমাদের মনে রাখতে হবে তা হল, তিনি হবেন শরী‘আতের মাপকাঠিতে উত্তীর্ণ এবং পরিপূর্ণ কুরআন-সুন্নাহর অনুসারী একজন আল্লাহভীরু ব্যক্তি। যার ব্যাপারে বলা হবে ইনিই মাহদী। তাঁর ব্যক্তিজীবন থেকে শুরু করে শাসনকার্য পর্যন্ত ‘আক্বীদা, আমল, সব কিছুই কুরআন-সুন্নাহর আলোকে পরিচালিত হবে। পক্ষান্তরে তিনি যদি পরিপূর্ণ কুরআন-সুন্নাহর অনুসারী না হন, নিজের প্রবৃত্তি, স্বপ্ন, ইলহাম ইত্যাদিকে কুরআন-সুন্নাহর উপর অগ্রাধিকার দেন, শরী‘আতের ইলম উপেক্ষা করে কুরআন-সুন্নাহর অপব্যাখ্যা করেন, কুরআন-সুন্নাহ বাদ দিয়ে মানব রচিত আইনে শাসন ও বিচারকার্য সম্পাদন করেন, তাহলে তিনি মাহদী নন। এমনিভাবে কোন মুসলিম যদি তার চলমান জীবনে সাধ্যানুযায়ী শরী‘আতের উপর পরিপূর্ণভাবে অবিচল থাকে এবং সমাজ, পরিবার, ‘আক্বীদা ও আমলের ক্ষেত্রে সকল বিধিবিধান ও দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকে, তাহলে তার যাপিত জীবন, ইমাম মাহদীর প্রতিটি কার্যক্রমের সঙ্গে মিলে যাবে। মাহদীকে খুঁজে পেতে তার কোন সমস্যা হবে না ইনশাআল্লাহ।

(চলবে ইনশাআল্লাহ)

* মুর্শিদাবাদ, ভারত।

তথ্যসূত্র :
[১]. ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১৭১১৩১; ‘আল-ইসলামুল ইয়াওম’ ওয়েবসাইটে অতঃপর ‘মুলতাক্বা আহলেহাদীছ’ ওয়েবসাইট দ্র.।
[২]. আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ২৪৮।
[৩]. তিরমিযী, হা/২২৬৯।
[৪]. যঈফ তিরমিযী, হা/২২৬৯; সিলসিলা যঈফাহ, হা/৪৮২৫।
[৫]. তাখরীজুল মুসনাদে আহমাদ, হা/৮৭৭৫।
[৬]. মুসনাদে আহমাদ, ১৬তম খণ্ড, পৃ. ৩১৬।
[৭]. আল-ক্বাওলুল মুসাদ্দাদ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৫৩।
[৮]. তাহযীবুত তাহযীব, ৩য় খণ্ড, পৃ. ২৭৮।
[৯]. মুসনাদে আহমাদ, হা/২২৪৪১।
[১০]. তাখরীজুল মুসনাদে আহমাদ, হা/২২৪৪১, ৫ম খণ্ড, পৃ. ২৭৭।
[১১]. তাখরীজ মিশকাতুল মাছাবীহ, হা/৫৩৮৯; যঈফুল জামে‘, হা/৫০৬; দালাইলুন নুবুওয়্যাহ, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৫১৬; সিলসিলা যঈফাহ, হা/৮৫।
[১২]. তুহফাতুল আহওয়াযী, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ১৪০।
[১৩]. ইবনু মাজাহ, হা/৪০৮৪।
[১৪]. যঈফুল জামে‘, হা/৬৪৩৪; যঈফ ইবনু মাজাহ, হা/৮১৮; সিলসিলা যঈফাহ, হা/৮৫।
[১৫]. দালাইলুল নবুওয়াহ, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৫১৫।
[১৬]. আল-মানারুল মুনীফ, পৃ. ১১৫।
[১৭]. মীযানুল ই‘তিদাল, ৩য় খণ্ড, পৃ. ১২৮।
[১৮]. ইবনু মাজাহ, হা/৪০৩৯।
[১৯]. যঈফ ইবনু মাজাহ, হা/৮০৫।
[২০]. তাখরীজু মুসনাদ, ১৯তম খণ্ড, পৃ. ২০৫; তাখরীজু সিয়ারি আ‘লামিন নুবালা, ১০ম খণ্ড, পৃ. ৬৭।
[২১]. আত-তাযকীরা, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৬।
[২২]. সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ১০ম খণ্ড, পৃ. ৬৭।
[২৩]. ইছারাতুল ফাওয়ায়িদ, ১ম খণ্ড, পৃ. ১১৯।
[২৪]. আত-তাযকীরাহ ফী উমূরিল আখিরাহ, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৬।
[২৫]. আক্বীদাতু আহলিস সুন্নাতি ওয়াল আছার ফিল মাহদিয়্যিল মুনতাযার, পৃ. ১৪২।
[২৬]. সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৩১৯; আল-আ‘লাম, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ২২০।
[২৭]. মিনহাজুস সুন্নাহ, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৪৫; আল-মানারুল মুনীফ, পৃ. ১৪১-১৪৮।
[২৮]. বুগইয়াতুত তালাব ফী তারীখি হালাব, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩০০।
[২৯]. মিনহাজুস সুন্নাহ, ৪র্থ খ-, পৃ. ৪৫-৪৬; আল-মানারুল মুনীফ, পৃ. ১৪১-১৪৮; আল-আ‘লাম, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ১৯৭।
[৩০]. সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ১৪তম খণ্ড, পৃ. ৩১৩-৩১৪; আল-আ‘লাম, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৬০।
[৩১]. আল-আরাফুল ওয়ারদী, পৃ. ২৩।
[৩২]. আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ১২তম খণ্ড, পৃ. ১৬৮।
[৩৩]. মিনহাজুস সুন্নাহ, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৪৫; আল-আ‘লাম, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ২২৮।
[৩৪]. মিনহাজুস সুন্নাহ, ৮ম খণ্ড, পৃ. ২৫৯।
[৩৫]. আন-নাযাআত ফিল মাহদি, পৃ. ১২।
[৩৬]. আবূ দাঊদ, হা/৪২৮২; তিরমিযী, হা/২২৩০-২২৩১; মুসনাদে আহমাদ, হা/৩৫৭১-৩৫৭৩, ৪০৯৮, ৪২৭৯, সনদ হাসান ছহীহ।
[৩৭]. আবূ দাঊদ, হা/৪২৮৫; ছহীহুল জামে‘, হা/৬৭৩৬; মিশকাত, হা/৫৩৮২; মুস্তাদরাকে হাকিম, হা/৮৬৭০, সনদ হাসান।
[৩৮]. ইবনু মাজাহ, হা/৪০৮৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/৬৪৬; সনদ হাসান, সিলসিলা ছহীহাহ, হা/২৩৭১।
[৩৯]. হিলয়াতুল আউলিয়া,৭ম খণ্ড, পৃ. ৩১।
[৪০]. ইসলাম ওয়েব, ফৎওয়া নং-১৫১৯৪৯।
[৪১]. মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৮৯৭; আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন, সিলসিলা ছহীহাহ, হা/৫৭৯, ২৭৪৩; শু‘আইব আরনাঊত্ব (রাহিমাহুল্লাহ) হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন, তাখরীজুল মুসনাদ, হা/৭৯১০, ৮১১৪, ৮৩৫১, ৮৫১৯; তাখরীজু ছহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৬৮২৭; ছহীহুল মুসনাদ, হা/১৩৪৬; ঊমদাতুল ক্বারী, ৯ম খণ্ড, পৃ. ৩৩৩।
[৪২]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৫৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৫১২৭।
[৪৩]. আবূ দাঊদ, হা/৪২৮২; তিরমিযী, হা/২২৩০-২২৩১; মুসনাদে আহমাদ, হা/৩৫৭১-৩৫৭৩, ৪০৯৮, ৪২৭৯, সনদ হাসান ছহীহ।
[৪৪]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৪৪৯।
[৪৫]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৮৮২; আবূ দাঊদ, হা/৪২৮৯; তিরমিযী, হা/২১৭১; ইবনু মাজাহ, হা/৪০৬৫।
[৪৬]. আবূ দাঊদ, হা/৪২৮২; তিরমিযী, হা/২২৩০-২২৩১; মুসনাদে আহমাদ, হা/৩৫৭১-৩৫৭৩, ৪০৯৮, ৪২৭৯, সনদ হাসান ছহীহ।
[৪৭]. তিরমিযী, হা/২২৩২; মুস্তাদরাকুল হাকিম, হা/৮৬৭৩; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/৭১১; তাখরীজু সুনান আবী দাউদ, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৩৪৩; তাখরীজুল মুসনাদ, ১৭তম খণ্ড, পৃ. ২৫৫।




প্রসঙ্গসমূহ »: মুসলিম জাহান
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
আধুনিক যুগে দাওয়াতী কাজের পদ্ধতি (২য় কিস্তি) - মুকাররম বিন মুহসিন মাদানী
কুরবানীর মাসায়েল - আল-ইখলাছ ডেস্ক
কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে আলো ও অন্ধকার (২য় কিস্তি) - অনুবাদ : হাফীযুর রহমান বিন দিলজার হোসাইন
ফাযায়েলে কুরআন (৫ম কিস্তি) - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ (১৯তম কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
তারুণ্যের উপর সন্ত্রাসবাদের হিংস্র ছোবল : প্রতিকারের উপায় (৩য় কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
মাযহাবী গোঁড়ামি ও তার কুপ্রভাব (শেষ কিস্তি) - অনুবাদ : রিদওয়ান ওবাইদ
প্রচলিত তাবলীগ জামা‘আত সম্পর্কে শীর্ষ ওলামায়ে কেরামের অবস্থান (৭ম কিস্তি) - অনুবাদ : আব্দুর রাযযাক বিন আব্দুল ক্বাদির
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ (১১তম কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
সুন্নাতের আলো বিদ‘আতের অন্ধকার (৩য় কিস্তি) - অনুবাদ : হাফীযুর রহমান বিন দিলজার হোসাইন
সালাফী মানহাজের মূলনীতিসমূহ (শেষ কিস্তি) - আব্দুল গাফফার মাদানী

ফেসবুক পেজ