তাওহীদ প্রতিষ্ঠার উপায়
-আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম*
(৫ম কিস্তি)
মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সর্বোত্তম আদর্শ হিসাবে গ্রহণ করা
তাওহীদ প্রতিষ্ঠার অন্যতম উপায় হল নবী-রাসূলগণকে অনুসরণীয় বা সর্বোত্তম আদর্শ হিসাবে গ্রহণ করা। কেননা নবী-রাসূলগণ তাওহীদকে পূর্ণাঙ্গরূপে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাওহীদকে পূর্ণাঙ্গ ও পূর্ণতা দানের ব্যাপারে তাঁরাই ছিলেন সর্বদা সচেষ্ট। তাঁরা নিজ জীবনে তাওহীদ প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি নিজ নিজ কওমকে সর্বপ্রথম একক ইলাহ আল্লাহর ইবাদতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আর নবীকুল শিরোমণি মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও এ কাজ করেছেন। তিনি দাওয়াতের সুমহান দায়িত্ব বিচক্ষণতার সাথে পালন করেছেন। আর মানুষকে স্বীয় রবের পথে হিকমত, উত্তম উপদেশ এবং সর্বোত্তম ভাষার মাধ্যমে আহ্বান করেছেন।
তিনি নির্যাতিত হওয়ার পরেও দ্বীনের দাওয়াতের ক্ষেত্রে কখনো নীরব থাকেননি, ক্লান্ত হয়ে পড়েননি, যতদিন পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা তাঁর মাধ্যমে দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত না করেছেন, সৃষ্টির সেরা মানুষকে তাঁর মাধ্যমে হেদায়াত না করেছেন এবং স্বীয় করুণা ও বরকতের মাধ্যমে তাঁর দ্বীনের দাওয়াতকে বিশ্বের পূর্ব-পশ্চিম দিগন্তে পৌঁছে না দিয়েছেন ততদিন পর্যন্ত দাওয়াতী কাজ থেকে তিনি ক্ষান্ত হননি। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজে দাওয়াত দিতেন এবং তাঁর প্রেরিত দূত, প্রতিনিধি ও অনুসারীগণকে নির্দেশ দিতেন, তারা যেন সর্বাগ্রে আল্লাহর দিকে, তাঁর এককত্বের দিকে সকল মানুষকে আহ্বান জানায়।[১]
এ কারণে আল্লাহ তা‘আলা নবী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সর্বোত্তম আদর্শ হিসাবে উল্লেখ করেছেন। পাশাপাশি অন্যান্য নবী-রাসূলগণকেও সর্বোত্তম আদর্শ হিসাবে ঘোষণা করেছেন। কারণ সকল অবস্থা ও প্রেক্ষাপটে তাঁদের অনুসরণ করার মধ্যেই মুক্তি, শান্তি ও নিরাপত্তা রয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, قَدۡ کَانَتۡ لَکُمۡ اُسۡوَۃٌ حَسَنَۃٌ فِیۡۤ اِبۡرٰہِیۡمَ وَ الَّذِیۡنَ مَعَہٗ ‘তোমাদের জন্য ইবরাহীম ও তাঁর অনুসারীদের মধ্যে রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ’ (সূরা আল-মুমতাহিনাহ : ৪)। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
لَقَدۡ کَانَ لَکُمۡ فِیۡ رَسُوۡلِ اللّٰہِ اُسۡوَۃٌ حَسَنَۃٌ لِّمَنۡ کَانَ یَرۡجُوا اللّٰہَ وَ الۡیَوۡمَ الۡاٰخِرَ وَ ذَکَرَ اللّٰہَ کَثِیۡرًا
‘তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ’ (সূরা আল-আহযাব : ২১)।
সর্বোত্তম আদর্শ (اُسۡوَۃٌ حَسَنَۃٌ )-এর পরিচয়
الأسوة অর্থ (القدوة) যার অনুসরণ করা হয়। الأسوة হল যার মাধ্যমে সান্ত¦না লাভ করা যায়, সান্ত¦না পাওয়া যায় বা নিজেকে সান্ত¦না দেয়া হয়। অর্থাৎ নবী-রাগূলগণের ধৈর্য, সহনশীলতা, বীরত্ব, কাঠিন্যের সময়ও আল্লাহর সাহায্যের আশা, কাজে দৃঢ়তা এবং যালিম কর্তৃক নির্যাতনের সময় আল্লাহর প্রতি যে ভরসা তারা সর্বদা করতেন, সেগুলোর মাধ্যমে সান্ত¦না নেয়া এবং নিজেকে সান্ত¦না দেয়া। বিশেষ করে নবী মুহাম্মাম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সকল কর্মের অনুসরণ করা এবং তাঁর সকল অবস্থা থেকে সান্ত¦না লাভ করার নাম اُسۡوَۃٌ حَسَنَۃٌ বা সর্বোত্তম আদর্শ।[২]
মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সর্বোত্তম আদর্শ হিসাবে গ্রহণ করার নির্দেশনা ও আয়াতটি অবতীর্ণের পেক্ষাপট
সূরা আহযাবের ২১ নং আয়াতটি আহযাবের যুদ্ধের সময় ভয় ও উদ্বেগ প্রকাশকারী ছাহাবীদের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়। পঞ্চম হিজরীর শাওয়াল মাসে আহযাবের (খন্দক) যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। মুশরিকরা মুসলিমদেরকে দুনিয়া হতে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার উদ্দেশ্যে পূর্ণ শক্তিসহ বিরাট বাহিনী নিয়ে তাদের উপর আক্রমণ করেছিল। মদীনার বানু নাযীর গোত্র এবং তাদের ইহুদী নেতৃবর্গ, মক্কার গাতাফান গোত্রের লোকজন, কুরাইশরা বিভিন্ন গোত্র থেকে লোক সংগ্রহ করে এক বিরাট বাহিনী প্রস্তুত করল। তাদের নেতা নির্বাচিত হলেন আবূ সুফিয়ান সাখর ইবনু হারব এবং গাতাফান গোত্রের নেতা উয়াইনাহ ইবনু হিসন ইবনু বদর। এভাবে তারা দশ হাজার যোদ্ধা একত্রিত করল এবং মদীনার দিকে অগ্রসর হল। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এ সংবাদ পেয়ে সালমান ফারসী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর পরামর্শক্রমে মদীনার পূর্ব দিকে মুসলিমদের খন্দক খনন করতে বললেন। সমস্ত মুহাজির ও আনছার এ খনন কাজে অংশগ্রহণ করলেন। এটা ছিল অত্যন্ত কঠিন কাজ।
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজেও এ কাজে অংশ নিলেন। স্বয়ং তিনি মাটি বহন করতে লাগলেন এবং খনন কাজও করলেন। মুশরিকদের সেনাবাহিনী বিনা বাধায় মদীনা পর্যন্ত পৌঁছে গেল এবং মদীনার উত্তরে নিজেদের শিবির স্থাপন করল। তাদের এক বিরাট সৈন্য দল মদীনার উঁচু অংশে শিবির স্থাপন করল, যেখান থেকে সব কিছু পর্যবেক্ষণ করা যায়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,اِذۡ جَآءُوۡکُمۡ مِّنۡ فَوۡقِکُمۡ وَ مِنۡ اَسۡفَلَ مِنۡکُمۡ ‘যখন তারা তোমাদের বিরুদ্ধে সমাগত হয়েছিল উচ্চ অঞ্চল ও নিম্ন অঞ্চল হতে’ (সূরা আল-আহযাব : ১০)। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নেতৃত্বে মুসলিমদের সৈন্যসংখ্যা তিন হাজারেরও কম ছিল। তিনি এই অল্প সংখ্যক সৈন্য নিয়ে বিরাট বাহিনীর মুকাবিলার জন্য এলেন। তিনি সাল পাহাড়কে পিছনের দিকে রেখে শত্রুদের দিকে মুখ করে সৈন্য সমাবেশ করলেন। তাদের উভয়ের মাঝে ছিল খন্দক যা তিনি খনন করেছিলেন। ফলে কোন পদাতিক কিংবা অশ্বারোহী বাহিনী তাদের কাছে পৌঁছতে পারেনি। তাতে পানি ছিল না। তা ছিল শুধু একটি গর্ত।
মদীনার পূর্বে বানু কুরাইযা নামক ইহুদীদের একটি গোত্র বসবাস করত। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে তাদের দৃঢ় সন্ধিচুক্তি ছিল। তাদেরও একটি বিরাট দল ছিল। প্রায় আটশ’ বীর যোদ্ধা তাদের মধ্যে বিদ্যমান ছিল। মুশরিক ও ইহুদীরা তাদের নিকট হুয়াই ইবনু আখতাব নাযারীকে পাঠিয়ে দিল। সে তাদেরকে নানা প্রকারের লোভ-লালসা দেখিয়ে নিজেদের পক্ষে করে নিল। তারা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করল এবং সন্ধি-চুক্তি ভেঙ্গে দিল। খন্দকের অপর দিকে দশ হাজার শত্রু এবং মদীনার পূর্ব দিকে বানু কুরাইযা ইয়াহুদীদের বিশ্বাসঘাতকতা তাদের যুদ্ধাবস্থা খারাপ থেকে খারাপতর হয়ে উঠল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
اِذۡ جَآءُوۡکُمۡ مِّنۡ فَوۡقِکُمۡ وَ مِنۡ اَسۡفَلَ مِنۡکُمۡ وَ اِذۡ زَاغَتِ الۡاَبۡصَارُ وَ بَلَغَتِ الۡقُلُوۡبُ الۡحَنَاجِرَ وَ تَظُنُّوۡنَ بِاللّٰہِ الظُّنُوۡنَا- ہُنَالِکَ ابۡتُلِیَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ وَ زُلۡزِلُوۡا زِلۡزَالًا شَدِیۡدًا
‘যখন তারা (তোমাদের বিরুদ্ধে) সমাগত হয়েছিল উচ্চ অঞ্চল ও নিম্ন অঞ্চল হতে, চক্ষুসমূহ দৃষ্টিভ্রম হয়েছিল, প্রাণসমূহ হয়ে পড়েছিল কণ্ঠাগত এবং তোমরা আল্লাহ সম্বন্ধে নানাবিধ বিরূপ ধারণা পোষণ করছিলে। তখন মুমিনরা পরীক্ষিত হয়েছিল এবং তারা ভীষণভাবে প্রকম্পিত হয়েছিল’ (সূরা আল-আহযাব : ১০-১১)। অর্থাৎ প্রচণ্ড ভয় ও ত্রাসের কারণে মুমিনদের এরূপ হয়েছিল।[৩]
দুর্বল শ্রেণীর মুসলিম এবং মুনাফিক্বরা আল্লাহ সম্পর্কে নানারকম বিরূপ ধারণা করেছিল। যেমন- ইবনু জারীর (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে যারা ছিলেন তাদের কারও কারও মনে এই সংশয় দেখা দিয়েছিল যে, আহযাবের যুদ্ধের ফলাফল মুসলিমদের বিরুদ্ধে চলে যাবে এবং যে কোন সময় আল্লাহ তা ঘটাবেন।[৪] মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাক (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, ‘মুসলিমরা সংশয় সন্দেহ পোষণ করছিল এবং মুনাফিক্বরা এতখানি সন্দিহান হল যে, বানূ আমর ইবনু আউফ গোত্রের মু‘আত্তিব ইবনু কুশাইর বলেই ফেলল, মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে মিথ্যা আশ্বাস দিচ্ছেন যে, আমরা এক সময় সিজার এবং কিসরার ধন-সম্পদ হস্তগত করব, অথচ এখন আমরা নিজেদেরকেই রক্ষা করতে সক্ষম হচ্ছি না। হাসান (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, ‘তখন বিভিন্নজনের মনে বিভিন্ন চিন্তার উদ্রেগ হয়েছিল। মুনাফিক্বরা মনে করেছিল যে, মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁর সঙ্গী-সাথীরা এবার নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।[৫]
ভীত-বিহ্বলতা ও উদ্বেগপূর্ণ অবস্থায় মুনাফিক্বরা প্রকাশ্যভাবে পৃথক হয়েছিল এবং তারা বিভিন্ন ধরনের কথা বলছিল।[৬] আসলে মিথ্যা ও কাপুরুষতা এ দুটো দোষই তাদের মধ্যে বিদ্যমান। তাদের নিকট থেকে কল্যাণের কোন আশা করা যায় না। শান্তির সময় প্রতারণা, দুশ্চরিত্রতা এবং রূঢ়তা, আর যুদ্ধের সময় ভীরুতা ও নারীত্বপনা।[৭] আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘এবং মুনাফিক্বরাও যাদের অন্তরে ব্যাধি ছিল, তারা বলছিল, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল আমাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা প্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়’ (সূরা আল-আহযাব : ১২)।
বিপরীত দিকে মুসলিমরা যে ভীত-বিহ্বলতা ও উদ্বেগপূর্ণ অবস্থার সম্মুখীন হয়েছিল আহযাব যুদ্ধ সংশ্লিষ্ট আয়াত ও হাদীছ থেকে তা উপলব্ধি করা যায়। যেমন- হাদীছে এসেছে, ইবরাহীম আত-তায়মী (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন যে, আমরা হুযায়ফা (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর নিকট ছিলাম। তখন এক ব্যক্তি বলে উঠল, হায়! আমি যদি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে পেতাম, তবে তাঁর সাথে মিলে একত্রে যুদ্ধ করতাম এবং তাতে কোনরূপ পিছপা হতাম না। হুযায়ফা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, হয়তো তা তুমি করতে, কিন্তু আমি তো আহযাবের রাতে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। (সে রাতে) প্রচণ্ড বায়ু ও তীব্র শীত আমাদের কাবু করে ফেলেছিল। এমনি সময় রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘোষণা করলেন, ওহে! এমন কেউ আছে কি, যে আমাকে শত্রুপক্ষের খবর এনে দিবে, আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে ক্বিয়ামতের দিন আমার সঙ্গে (মর্যাদার আসনে) রাখবেন? আমরা চুপ থাকলাম এবং আমাদের মধ্যে কেউ তাঁর সে আহ্বানে সাড়া দেয়নি।
তিনি আবার বললেন, ওহে! এমন কোন ব্যক্তি আছে কি, যে আমাকে শত্রুপক্ষের খবর এনে দিবে, আল্লাহ তা‘আলা তাকে ক্বিয়ামতের দিন আমার সাথে রাখবেন? এবারও আমরা চুপ থাকলাম আর আমাদের মধ্যে কেউ তাঁর আহ্বানে সাড়া দেয়নি। তিনি আবার ঘোষণা করলেন, ওহে! এমন কেউ আছে কি, যে আমাকে শত্রুপক্ষের খবর এনে দিবে, আল্লাহ তা‘আলা ক্বিয়ামতের দিন তাকে আমার সাথে রাখবেন? এবারও আমরা চুপ থাকলাম এবং আমাদের কেউ তাঁর আহ্বানে সাড়া দেয়নি। তিনি এবার বললেন, হে হুযায়ফা! ওঠো এবং তুমি শত্রুদের খবরাদি আমাদেরকে এনে দাও। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন এবার আমার নাম ধরেই ডাক দিলেন, তাই উঠা ছাড়া আমার আর কোন উপায় ছিল না। এবার তিনি বললেন, শত্রুপক্ষের খবর আমাকে এনে দাও, কিন্তু সাবধান! তাদেরকে আমার বিরুদ্ধে উত্তেজিত কর না।
তারপর আমি যখন তাঁর নিকট থেকে প্রস্থান করলাম, তখন মনে হচ্ছিল আমি যেন উষ্ণ আবহাওয়ার মধ্য দিয়ে চলেছি। এভাবে আমি তাদের (শত্রুপক্ষের) নিকট পৌঁছে গেলাম। তখন আমি লক্ষ্য করলাম, আবূ সুফইয়ান আগুনের দ্বারা তাঁর পিছে ছেঁক দিচ্ছে। আমি তখন একটি তীর তুলে ধনুকে সংযোজন করলাম এবং তা নিক্ষেপ করতে মনস্থ করলাম। এমন সময় আমার মনে পড়ে গেল যে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলে দিয়েছেন, ‘তাদেরকে আমার বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুল না’। আমি যদি তখন তীর নিক্ষেপ করতাম তবে তীর নির্ঘাত লক্ষ্যভেদ করত, অগত্যা আমি ফিরে আসলাম এবং ফিরে আসার সময়ও উষ্ণতার মধ্যে দিয়ে অতিক্রমের মত উষ্ণতা অনুভব করলাম। তারপর যখন ফিরে এলাম, তখন প্রতিপক্ষের খবর তাঁকে প্রদান করলাম। আমার দায়িত্ব পালন করে অবসর হতেই আবার আমি শীতের তীব্রতা অনুভব করলাম।[৮]
যুদ্ধাবস্থা কতটা ভীতিপ্রদ ও ভয়ংকর ছিল, যার কারণে ছাহাবীগণ ত্রস্ত ও ভয়ার্ত হয়েছিল। আসলে বাহির থেকে আগত শত্রুরা পূর্ণ শক্তি ও বিপুল সংখ্যক সৈন্য নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল, আর ভিতরে শহরের মধ্যে বিদ্রোহের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছিল। ইহুদীরা হঠাৎ করে সন্ধিচুক্তি ভঙ্গ করে অস্বস্তিকর অবস্থা সৃষ্টি করেছিল। মুসলিমরা খাদ্য ও পানীর অভাবে পতিত হয়েছিল। মুনাফিক্বরা পৃথক হয়ে পড়েছিল। এমতাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলা শুধু রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কেই অনুসরণ করার নির্দেশ প্রদান করে নিম্নোক্ত আয়াত নাযিল করেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্য রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মধ্যে রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ’ (সূরা আল-আহযাব : ২১)।
এ আয়াত ঐ বিষয়ের উপর বড় দলীল যে, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সমস্ত কথা, কাজ ও অবস্থা আনুগত্য ও অনুসরণের যোগ্য। তাঁর আনুগত্য ও অনুসরণের মাধ্যমেই তাওহীদ প্রতিষ্ঠিত হবে এবং ঈমান বৃদ্ধি পাবে। আহযাবের যুদ্ধে তিনি যে ধৈর্য, সহনশীলতা ও বীরত্বের অতুলনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন, যেমন আল্লাহর পথের প্রস্তুতি, জিহাদের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ এবং কষ্টের সময়ও আসমানী সাহায্যের আশা যে তিনি করেছিলেন, এগুলো নিঃসন্দেহে এ যোগ্যতা রাখে যে, মুসলিমরা এগুলোকে জীবনের বিরাট অংশ বানিয়ে নেয়। আর যেন আল্লাহর প্রিয় রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নিজেদের জন্য উত্তম নমুনা বানিয়ে নেয় এবং তাঁর গুণাবলী যেন নিজেদের মধ্যে আনয়ন করে।
এ কারণেই ভয় ও উদ্বেক প্রকাশকারী লোকদের জন্য আল্লাহ তা‘আলা ঘোষণা দেন, ‘তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মধ্যে রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ’ (সূরা আল-আহযাব : ২১)।[৯] এই আয়াতের মাধ্যমে ভয় ও উদ্বেগ প্রকাশকারী ছাহাবীদের লক্ষ্য করে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, তোমরা আমার নবীর অনুসরণ করছ না কেন? আমার রাসূলতো তোমাদের মধ্যেই বিদ্যমান রয়েছেন। তাঁর নমুনা তোমাদের সামনে বিদ্যমান ছিল। তোমাদেরকে তিনি ধৈর্য ও সহনশীলতা অবলম্বনের কথা শুধু শিক্ষাই দিচ্ছেন না, বরং কাজে দৃঢ়তা তিনি নিজের জীবনেও ফুটিয়ে তুলেছেন।[১০]
মূলত আহযাবের যুদ্ধে মুমিনদের পরীক্ষা করা হয়েছিল এবং তাদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশিত হয়েছিল। উক্ত আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর তারা দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করেছিল যে, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওয়াদা সত্য এবং অবশ্যই আল্লাহ তা‘আলা তাঁর দ্বীনকে সমুন্নত করবেন, যদিও কাফিররা তা অপসন্দ করে।[১১]
ছাহাবীগণ কর্তৃক ‘সর্বোত্তম আদর্শ’-এর নমুনা পেশ
ছাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সর্বক্ষেত্রে ‘সর্বোত্তম আদর্শ’ হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন। যেমন- রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফরকালে ফরয ছালাতের আগে ও পরে নফল ছালাত আদায় করতেন না। হাদীছে এসেছে, হাফস ইবনু ‘আসিম (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) একবার সফর করেন এবং বলেন,
(صَحِبْتُ النَّبِىَّ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ أَرَهُ يُسَبِّحُ فِى السَّفَرِ وَقَالَ اللهُ جَلَّ ذِكْرُهُ (لَقَدۡ کَانَ لَکُمۡ فِیۡ رَسُوۡلِ اللّٰہِ اُسۡوَۃٌ حَسَنَۃٌ
‘আমি নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে থেকেছি, সফরে তাঁকে নফল ছালাত আদায় করতে দেখিনি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘নিশ্চয় তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ’ (সূরা আল-আহযাব : ২১)।[১২]
ছাহাবীগণও তাই করতেন। তারা সফরকালে ফরয ছালাতের আগে ও পরে নফল ছালাত আদায় করতেন না। আবূ বকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু), ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু), ওছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর রীতিও তাই ছিল।[১৩] হাদীছে এসেছে,
ঈসা তার পিতা হাফসের সূত্রে বর্ণনা করেন, আমি মক্কার কোন একটি পথে ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)-এর সাথে চলছিলাম। এ সময় তিনি আমাদের সাথে করে যোহরের ছালাত আদায় করলেন এবং মাত্র দু’রাক‘আত আদায় করলেন। তারপর তিনি তার কাফেলার মধ্যে ফিরে আসলেন। আমরাও তাঁর সাথে ফিরে আসলাম। তিনি সেখানে বসে পড়লে আমরাও তাঁর সাথে বসে পড়লাম। এ সময় যে স্থানে তিনি ছালাত আদায় করেছিলেন সে স্থানে তার দৃষ্টি পড়লে কিছু সংখ্যক লোককে সেখানে দাঁড়ানো দেখতে পেয়ে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এরা ওখানে কি করছে? আমি বললাম, তারা সুন্নাত পড়ছে।
তিনি এ কথা শুনে বললেন, ‘ভাতিজা, আমাদেরকে যদি সুন্নাত আদায় করতে হত তাহলে আমি ফরয ছালাও পূর্ণ আদায় করতাম। আমি সফরে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে থেকে দেখেছি, আমৃত্যু তিনি দু‘রাক‘আতের অধিক আদায় করেননি। আমি সফরে আবু বকর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর সাথে থেকে দেখেছি. আমৃত্যু তিনি দু‘রাক‘আতের অধিক আদায় করেননি। আমি সফরে ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর সাথে দেখেছি, আমৃত্যু তিনি দু‘রাক‘আতের অধিক আদায় করেননি। আমি ওছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর সাথে থেকে দেখেছি, আমৃত্যু তিনি দু‘রাক‘আতের অধিক আদায় করেননি। অথচ মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘নিশ্চয় তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ’ (সূরা আল-আহযাব : ২১)’।[১৪]
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আদর্শ অনুসরণ করার ক্ষেত্রে ছাহাবীগণ ছিলেন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। হাদীছে এসেছে, নাফি‘ (রাহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত, আব্দুল্লাহ ইবনু আব্দুল্লাহ (রাহিমাহুল্লাহ) ও সালিম ইবনু আব্দুল্লাহ (রাহিমাহুল্লাহ) উভয়ে আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)-এর সাথে কথা বললেন, যে বছর হাজ্জাজ ইবনু ইউসুফ আব্দুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসেছিল। তারা উভয়ে বললেন, এ বছর হজ্জ না করলে আপনার কী ক্ষতি আছে? কারণ আমাদের আশংকা হচ্ছে, গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং আপনি বায়তুল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবেন না। আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বললেন, যদি তা আমার ও বায়তুল্লাহ-এর মাঝে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায় তবে (অনুরূপ পরিস্থিতিতে) রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা করেছেন, আমিও তদ্রূপ করব।
কুরাইশ কাফিররা যখন তাঁর ও বায়তুল্লাহর মাঝে প্রতিবন্ধক হয়েছিল, এ সময় আমি তাঁর সঙ্গে ছিলাম। আমি তোমাদের সাক্ষী রেখে বলছি, আমি ওমরার নিয়ত করলাম। অতঃপর তিনি রওয়ানা হয়ে যুল হুলায়ফাহ নামক স্থানে পৌঁছে ওমরার জন্য তালবিয়াহ পাঠ করলেন। অতঃপর বললেন, যদি আমার পথ উন্মুক্ত থাকে, তবে আমি ওমরাহ পূর্ণ করব। আর যদি আমার ও বায়তুল্লাহর মাঝে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়, তবে (অনুরূপ পরিস্থিতিতে) রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা করেছেন আমিও তাই করব। সে সময় আমি তাঁর সঙ্গে ছিলাম। অতঃপর তিনি তেলাওয়াত করলেন, ‘তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ’।[১৫]
অন্য বর্ণনায় এসেছে, ইবনু ওমর ল তাঁর ছেলে আব্দুল্লাহ ইবনু আব্দুল্লাহকে বলেছিলেন, ‘আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা রওয়ানা হয়েছিলেন, কুরাইশ কাফিররা তাঁকে বাইতুল্লাহ যেতে বাধা দিয়েছিল। আমাকেও যদি বাইতুল্লাহয় বাধা দেয়া হয়, তবে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা করেছিলেন, আমিও তাই করব। ‘কেননা নিশ্চয় তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ’।[১৬]
অনুরূপভাবে ছাহাবীগণ তাবেঈদেরকেও উপদেশ প্রদান করতেন এই বলে যে, ‘নিশ্চয় তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ’। হাদীছে এসেছে, ‘আমর (রাহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ওমরাহকারীর জন্য ছাফা ও মারওয়া সাঈ করার পূর্বে স্ত্রী সহবাস বৈধ হবে কি? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কায় উপনীত হয়ে সাত চক্করে বাইতুল্লাহর ত্বাওয়াফ সমাপ্ত করে মাক্বামে ইবরাহীমের পিছনে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করেন, অতঃপর ছাফা ও মারওয়া সাঈ করেন। এরপর ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) তেলাওয়াত করেন, ‘নিশ্চয় তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ’।[১৭]
আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, তাঁকে এক লোক সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল, যে লোক মানত করেছিল যে, সে ছিয়াম পালন থেকে কোন দিনই বিরত থাকবে না। আর তার মানতের মধ্যে কুরবানী বা ঈদুল ফিতরের দিন এসে গেল। তিনি বললেন, ‘নিশ্চয় তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ’। তিনি ঈদুল ফিতরের এবং কুরবানীর দিন ছিয়াম পালন করতেন না। আর তিনি ঐ দিনগুলোতে ছিয়াম পালন করা জায়েযও মনে করতেন না।[১৮]
(চলবে ইনশাআল্লাহ)
* পি-এইচ. ডি গবেষক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
[১]. ছহীহ বুখারী, হা/৭৩৭২।
[২]. আবূ আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ শামসুদ্দীন আল-কুরতুবী, আল-জামি‘ঊ লি আহকামিল কুরআন (কায়রো : দারুল কুতুবিল মিছরিয়্যা, ২য় সংস্করণ, ১৩৮৪ হি.), ১৪তম খণ্ড, পৃ. ১৫৫।
[৩]. আবুল ফিদা ইসমাঈল ইবন ‘আমর ইবন কাছীর আল-কুরাশী আদ-দিমাশকী, তাফসীরুল কুরআনিল ‘আযীম, তাহক্বীক্ব : সামী ইবন মুহাম্মাদ সালামাহ, ৬ষ্ঠ খণ্ড (রিয়াদ : দারু ত্বায়্যেবা, ২য় সংস্করণ, ১৪২০ হি.), পৃ. ৩৮৮।
[৪]. মুহাম্মাদ ইবনু জারীর আত-ত্বাবারী, জামি‘উল বায়ান ফী তাবীলিল কুরআন, তাহক্বীক্ব : আহমাদ মুহাম্মাদ শাকির, ২০তম খ- (মুওয়াস্সাসাতুর রিসালাহ, ১৪২০ হি.), পৃ. ২২১; তাফসীরুল কুরআনিল ‘আযীম, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৩৮৮।
[৫]. জামি‘উল বায়ান ফী তাবীলিল কুরআন, ২০তম খণ্ড, পৃ. ২২১।
[৬]. তাফসীরুল কুরআনিল ‘আযীম, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৩৮৮।
[৭]. তাফসীরুল কুরআনিল ‘আযীম, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৩৯০।
[৮]. ছহীহ মুসলিম, হা/১৭৮৮; তাফসীরুল কুরআনিল ‘আযীম, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৩৮৬।
[৯]. তাফসীরুল কুরআনিল ‘আযীম, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৩৯১।
[১০]. প্রাগুক্ত।
[১১]. জামি‘উল বায়ান ফী তাবীলিল কুরআন, ২০তম খণ্ড, পৃ. ২২১।
[১২]. ছহীহ বুখারী, হা/১১০১।
[১৩]. ছহীহ বুখারী, হা/১১০২।
[১৪]. ছহীহ মুসলিম, হা/৬৮৯, ‘মুসাফিরের ছালাত ও তার হুকুম’ অধ্যায়, ‘মুসাফিরের ছালাত ও তার কছর’ অনুচ্ছেদ।
[১৫]. ছহীহ মুসলিম, হা/১২৩০, ‘হজ্জ’ অধ্যায়, ‘বাধাপ্রাপ্ত হলে হালাল হওয়ার বৈধতা এবং হজ্জে ক্বিরান বৈধ হওয়ার বিবরণ’ অনুচ্ছেদ।
[১৬]. ছহীহ বুখারী, হা/১৬৩৯।
[১৭]. ছহীহ বুখারী, হা/১৬২৩।
[১৮]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৭০৫।