সালাফী জামা‘আত বনাম ভ্রান্তদল সমূহ
-মাহবুবুর রহমান মাদানী*
(শেষ কিস্তি)
ভ্রান্ত দলসমূহ
সালাফী মানহাজের বা মতাদর্শের বিরোধী প্রধান কয়েকটি ভ্রান্ত দলের পরিচয় এবং প্রত্যেক দলের সংক্ষিপ্ত আলোচনা নিচে করা হল:
খারিজী সম্প্রদায়
তাদেরকে হারূরীও বলা হয়। হারূরা নামক স্থানের দিকে সম্বন্ধ করে তাদেরকে হারূরী বলা হয়। হারূরা ইরাকের একটি গ্রামের নাম। আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর পক্ষ ত্যাগ করে তারা উক্ত গ্রামে একত্রিত হয়েছিল। তারা আলী, উছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) এবং তাঁদের সাথে যারা সম্পর্ক রাখে তাঁদেরকে কাফির বলেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করেছে ও তাঁদের জান-মাল হালাল করে নিয়েছে। তারা আব্দুল্লাহ ইবনু খব্বাবকে হত্যা করেছিল। তারা সাধারণ গুনাহকারী মুসলিমকে কাফির বলে। আর কাবীরা গুনাহকারী যদি তাওবাহ না করে মারা যায় তাহলে তারা তাকে চিরস্থায়ী জাহান্নামী বলে মত দিয়েছে। আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) তাদের সাথে লড়াই করেছেন।[১]
খারিজীদের সম্পর্কে আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) রাসূল (ﷺ) থেকে একটি হাদীছ বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি রাসূল (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, শেষ যুগে এমন সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটবে যারা হবে অল্পবয়স্ক যুবক, নির্বোধ। তারা সৃষ্টির সবচেয়ে শ্রেষ্ঠতম। তারা কথা (কুরআন) থেকে আবৃত্তি করবে অথচ ঈমান তাদের গলা অতিক্রম করবে না। তারা দ্বীন থেকে এমনভাবে বের হয়ে যাবে যেমন তীর শিকার ভেদ করে বের হয়ে যায়। তাদেরকে যেখানেই তোমরা পাবে হত্যা করবে। কেন না তাদেরকে হত্যা করলে হত্যাকারীর জন্য ক্বিয়ামতের দিনে প্রতিদান আছে। অন্য রেওয়াতে বলেন, তোমাদের কেউ তাদের ছালাতের তুলনায় নিজের ছালাত এবং ছিয়াম নগণ্য বলে মনে করবে। এরা কুরআন পাঠ করে, কিন্তু কুরআন তাদের কন্ঠনালীর নিচে প্রবেশ করে না। অন্য রেওয়াতে বলেন, তারা ইসলামের অনুসারীদেরকে হত্যা করবে আর মূর্তিপূজারীদেরকে হত্যা করা হতে বাদ দেবে। আমি যদি তাদেরকে পেতাম তাহলে তাদেরকে আদ জাতির মত অবশ্যই হত্যা করতাম।[২]
বর্তমান খারিজী: প্রত্যেক যে ব্যক্তি সত্য ইমাম যার প্রতি মুসলিম জামা‘আত একমত হয়েছেন তার থেকে বাহির হয়ে যাবে সেই খারিজী হিসাবে বিবেচিত হবে।
শী‘আ ও রাফিযী দল
এদের উৎপত্তি উছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর হত্যার পর। শী‘আ অর্থ দল, সম্প্রদায় ও ভক্তবৃন্দ। শী‘আরা নিজেরা দাবী করে যে, তারা আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর অনুসারীবৃন্দ। ‘রাফায’ আরবী শব্দ অর্থ হল বর্জন করা, পরিত্যাগ করা। শী‘আদেরকে রাফিযী বলা হয়। কারণ তারা তাদের অন্যতম ইমাম যায়িদ বিন আলী বিন হুসাইনকে বলল, আপনি আবূ বকর ও উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)-এর নাম উচ্চারণের পর ‘রযিআল্লাহু আনহু’ বলা পরিত্যাগ করুন। তখন আলী বিন হুসাইন বললেন, এরূপ করা থেকে আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই। এতে তারা তাকে বর্জন করল। সেখান থেকেই তাদেরকে রাফিযী বা পরিত্যাগকারী দল বলা হয়।[৩] তারা আলী বিন আবি তালিব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) এবং আহলে বাইতের ফাযীলাতের ব্যাপারে অত্যধিক বাড়াবাড়ি করেছে এবং তাদেরকে অন্যান্য ছাহাবীদের উপর প্রাধান্য দিয়ে থাকে। এমনকি বাকী সব ছাহাবীদের সাথে শত্রুতা পোষণ করে। তারা তিন খলীফা আবূ বকর, উমার, উছমান (রাযিয়াল্লাহু আনহুম)-এর খিলাফত ও ইমামতকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং তাদেরকে শত্রু মনে করে ও গালি দেয়। তারা পাঁচজন ছাহাবী যেমন আলী, মিক্বদাদ, আবূ যার, সালমান ফারসী ও ‘আম্মার ইবনু ইয়াসির (রাযিয়াল্লাহু আনহুম) বাদে সবাইকে কাফির মনে করে। এমনকি অধিকাংশ উম্মাতি মুহাম্মাদকে কাফির বলে। শী‘আরা কুরআনের প্রতি বিশ্বাস করে না। তারা হাদীছের কিতাবকে প্রত্যাখ্যান করে। তাদের ধারণা মতে এর রাবীগণ কাফির।[৪]
মু‘তাযিলা দল
ওয়াছিল বিন ‘আতার অনুসারীদেরকে ‘মুতাযিলা বলা হয়। মুসলিমদের কেউ কাবীরা গুনাহ করলে তার বিধান কী হবে, উক্ত বিষয়ে তার মাঝে এবং তাবেঈ হাসান বাছরী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর মধ্যে মতভেদ হওয়ার কারণে ওয়াছিল বিন ‘আতা হাসান বাছরীর মাজলিস ত্যাগ করেছিল। অতঃপর ওয়াছিলের অনুসারীরাও হাসান বাছরীর দারস ত্যাগ করে তার সাথে যোগ দেয়। এতে হাসান বাছরী বলেছিলেন, ওয়াছিল আমাদেরকে পরিত্যাগ করেছে। এ থেকে তাদেরকে ‘মু‘তাযিলা’ বলা হয়। ‘ইতিযাল থেকে ‘মুতাযিলা অর্থ হল পরিত্যাগ করা।
মু‘তাযিলাদের উছুল বা মূলনীতি
মু‘তাযিলাদের উছূল বা মূলনীতি হল ৫টি। যথা: তাওহীদ, আদল, আল-মানযিলাতু বাইনাল মানযিলাতাইন, ইনফাযুল ওয়াঈদ ও আল-আমর বিল মা‘রূফ ওয়ান নাহী ‘আনিল মুনকার’। তাদের নিকট এ মূলনীতিগুলো প্রত্যেকটির ব্যাখ্যা রয়েছে। যেমন-
১. তাদের নিকট তাওহীদের অর্থ হল: আল্লাহর সকল ছিফাত বা গুণকে অস্বীকার করা অন্তর্ভুক্ত করে।
২. আদ্ল বা ন্যায়, ইনছাফ অর্থাৎ তাক্বদীরকে অস্বীকার করা অন্তর্ভুক্ত করে আর তাহল বান্দারা নিজেরাই তাদের কর্মের স্রষ্টা।
৩. আল-মানযিলাতু বাইনাল মানযিলাতাইন বা দু’য়ের মাঝের অবস্থান অর্থাৎ ফাসিক ব্যক্তি না মুমিন না কাফির।
৪. ইনফাযুল ওয়াঈদ বা শাস্তির অঙ্গীকার কার্যকর করা অর্থাৎ উম্মতের ফাসিক ব্যক্তিগণ চিরস্থায়ী জাহান্নামী তারা কার শাফা‘আতের মাধ্যমে সেখান থেকে বাহির হতে পারবে না।
৫. আল-আমর বিল মা‘রূফ ওয়ান নাহী ‘আনিল মুনকার বা সৎকাজের আদেশ ও অন্যায় কাজ থেকে বাধা প্রদানের অর্থ হল: দেশের ইমাম বা রাষ্ট্রপ্রধানদের আনুগত্য থেকে বাহির হওয়া ও তাদের বিরুদ্ধে তলোওয়ার দ্বারা লড়াই করা জায়েয হওয়া অন্তর্ভুক্ত করে’।[৫]
তারা কাবীরা গুনাহকারী ব্যক্তি সম্পর্কে বলে যে, সে উক্ত গুনাহ করার কারণে ঈমান থেকে বাহির হয়ে গেছে এবং কুফরীতে প্রবেশ করেনি বরং সে দু’য়ের মাঝে অবস্থান করছে। তবে তারা তাকে ‘ফাসিক’ বলে থাকে। তাদের নিকট ফাসিকের ব্যাখ্যা হল, দু’য়ের মাঝের অবস্থান। তারা আল্লাহর জন্য তার নামকে অর্থ ছাড়া সাব্যস্ত করে আর সকল ছিফাত বা গুণকে অস্বীকার করে।[৬] মুমিনদের ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহকে দেখতে পাওয়াকে তারা অস্বীকার করে।[৭] তারা কুরআনকে আল্লাহর বাণী বলে বিশ্বাস করে না বরং তারা কুরআনকে আল্লাহর সৃষ্টি বলে। কবরের আযাব যেহেতু দেখা ও শোনা যায় না তাই তারা কবরের আযাবকে অস্বীকার করে।
জাহ্মিয়্যাহ দল
তাদের ইমাম জাহাম বিন ছফওয়ান আত্-তিরমিযীর দিকে নিসবত করে জাহমিয়্যাহ সম্প্রদায়ের নামকরণ করা হয়েছে। তাদের নিকট ইমান হল, শুধু অন্তরে বিশ্বাসের নাম যদিও মুখে উচ্চারণ নাও করে। ফলে ইবলীস শয়তান ও ফির‘আউন মুমিনদের অন্তর্ভুক্ত। যেহেতু তাদের অন্তরে আল্লাহর বিশ্বাস ছিল।[৮]
‘ঈমান’-এর সংজ্ঞায় এই ধরনের কথার সর্বপ্রথম প্রবর্তক হল জা‘দ বিন দিরহাম, যাকে কুরবানীর দিন খলিদ বিন আব্দুল্লাহ কুসুরী কুরবানী দিয়েছেন। তার থেকে উক্ত আক্বীদা গ্রহণ করে জাহাম বিন ছফওয়ান। তাকে উমাইয়্যা খলীফার শেষ যুগে খুরাসানের আমীর সালামা বা সালাম বিন আহওয়ায হত্যা করেন।[৯] তারা আল্লাহর নাম ও তার গুণাগুণকে পবিত্র করতে গিয়ে বাড়াবাড়ি ও কঠোরতা করেছে। তারা বলে, আল্লাহর নাম ও তার গুণাগুণকে সাব্যস্ত করা হলে সৃষ্টির সাথে আল্লাহর সাদৃশ্য হয়ে যায়। তাই তারা আল্লাহর সমস্ত নাম ও গুণাগুণকে বাতিল ও অস্বীকার করেছে।[১০] এ কারণে তাদেরকে মু‘আত্তিলা বা আল্লাহর নাম ও ছিফাতকে বাতিলকারী দলও বলা হয়। তারা বলে, পরকালে আল্লাহ তা‘আলাকে দেখা যাবে না এবং তিনি বান্দার সাথে কথাও বলবেন না। অন্য দিকে মুশাব্বিহা সম্প্রদায় আল্লাহর গুণাগুণকে সাব্যস্ত করতে গিয়ে অধিক বাড়াবাড়ি ও শৈথিল্য প্রদর্শন করেছে। তারা আল্লাহর গুণাগুণকে মানুষের গুণের সাথে তুলনা করেছে। এই জন্য তাদেরকে মুশাব্বিহা বা সাদৃশ্য প্রদানকারী দল বলা হয়।
জাবরিয়্যাহ দল
‘জাবর’ শব্দের দিকে সম্বন্ধ করে তাদের জাবরিয়্যাহ নাম রাখা হয়েছে। তারা বলে, বান্দা তার কর্মের উপর একান্ত বাধ্য। তার কোন স্বাধীনতা নেই। তাদের ধারণায় আল্লাহ তা‘আলাই একমাত্র কর্তা এবং বান্দার কর্মও আল্লাহই করেন। (না‘উযুবিরøাহ) তারা বলে, বান্দার কর্মগুলো বান্দার দিকে রূপক অর্থেই সম্বন্ধ করা হয়। তারা আল্লাহর সমস্ত নাম ও গুণাগুণকে অস্বীকার করেছে।[১১]
ক্বাদারিয়্যা দল
ক্বাদারিয়্যা সম্প্রদায়ের সৃষ্টি ছাহাবীদের শেষ যামানায়। ‘ক্বদর’ শব্দের দিকে সম্বন্ধ করে তাদেরকে ক্বাদারিয়্যাহ বলা হয়। তারা তাক্বদীরকে অস্বীকার করে। তারা জাবরিয়্যাহ সম্প্রদায়ের বিপরীত। তারা বলে, বান্দাই তার নিজের কর্মের স্রষ্টা। তাদের ধারণায় বান্দাদের কর্মসমূহ আল্লাাহর ইচ্ছাধীন নয়। বরং বান্দারা নিজেদের ইচ্ছামতই তাদের কর্মসমূহ সম্পাদন করে। তারা আল্লাহর ইল্ম বা জ্ঞানকে অস্বীকার করে। তারা বলে, আল্লাহ তার বান্দার কর্ম সংঘটিত হওয়ার পূর্বে তা জানেন না বরং উক্ত কর্ম সম্পাদনের পর জানেন। (নাউযুবিল্লাহ)।[১২]
ইমাম আবূ দাঊদ (রাহিমাহুল্লাহ) ইবনু উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণনা করেন যে, ক্বাদারিয়্যারা এ উম্মাতের অগ্নিপূজক। অগ্নিপূজকরা দু’স্রষ্টায় বিশ্বাসী। তাদের মতে কল্যাণের স্রষ্টা একজন এবং অকল্যাণের স্রষ্টা অন্যজন। এই উম্মতের ক্বাদারিয়্যারা যেহেতু বান্দাকে তার কর্মের স্রষ্টা মনে করে, তাই তাদেরকে অগ্নিপূজকের সাথে তুলনা করা হয়েছে।[১৩]
মুরজিয়াহ দল
তাদের অধিকাংশই কূফাবাসী। ‘ইরজা’ শব্দের দিকে সম্বন্ধ করে তাদেরকে মুরজিয়াহ বলা হয়। ‘ইরজা’ আরবী শব্দ অর্থ হল পিছিয়ে দেয়া বা বের করে দেয়া। তাদের নিকট অন্তরে শুধু বিশ্বাস করার নাম হল ঈমান। তারা আমলকে ঈমান থেকে বের দিয়েছে এবং আমলকে ঈমানের অন্তর্ভুক্ত মনে করে না। তাই তাদেরকে মুরজিয়াহ বলা হয়। তাদের মধ্যে বড় ব্যক্তিগণ যেমন তালক্ব ইবনু হাবীব ও ইবরাহীম আত-তাইমী।[১৪] তারা মনে করে কাবীরা বা বড় গুনাহের কাজে লিপ্ত ব্যক্তি ফাসিক নয়। কাফির অবস্থায় সৎকাজ করলে তা যেমন কোন উপকারে আসে না অনুরূপ ঈমান ঠিক থাকলে গুনাহের কাজে পতিত হলে তা ঈমানের কোন ক্ষতি করে না। ফলে তাদের নিকট কাবীরা কর্মে লিপ্ত ব্যক্তি পূর্ণ ঈমানদার। এমনকি সে শাস্তিরও সম্মুখীন হবে না। তাদের মতে আনুগত্যের মাধ্যমে ঈমান বড়ে না এবং পাপচারের মাধ্যমে কমে না।
উল্লিখিত সম্প্রদায়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিকর হল, খারিজী-রাফিযী ও জাহমিয়্যা। তবে মুরজিয়া দল তাদের তুলনায় কম ক্ষতিকর। আশ‘আরিয়া ও মাতুরীদিয়্যারা মুরজিয়া সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। কারণ তারা ঈমানের সংজ্ঞা থেকে যবানের দ্বারা স্বীকারোক্তি, অন্তরের আমল ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আমলকে বাহির করে দিয়েছে। শুধু অন্তরে স্বীকৃতি দেয়াকে ঈমান বলে।[১৫]
কাররামিয়্যা
তারা মুহাম্মাদ ইবনু কাররামের অনুসারী। তাদের নিকট ঈমান হল- শুধু মুখে বলা, অন্তরে বিশ্বাস না থাকলেও সমস্যা নেই। ফলে মুনাফিকরা তাদের নিকট মুমিন।[১৬]
কারামিতা, বাতিনিয়্যা ও ফালাসাফাহ
উক্ত সম্প্রদায় আল্লাহ তা‘আলা নিজের এবং পরকাল সম্পর্কে যে সংবাদ দিয়েছেন তাতে তারা বিশ্বাস করে না। তারা শরী‘আতের বিষয়গুলোকে যেমন জান্নাত, জাহান্নাম, ছালাত, যাকাত, ছিয়াম ও হাজ্জের প্রকৃত অবস্থাকে অপব্যাখ্যা করেছে। তারা বলে এগুলো শুধু কাল্পনিক এর বাস্তবতা নেই। ছালাত বিষয়ে তারা বলে, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল, তাদের রহস্য জানা। ছিয়াম দ্বারা উদ্দেশ্য, তাদের রহস্য গোপন করা। হাজ্জে যাওয়ার উদ্দেশ্য, তাদের শায়খদের নিকট গমন করা। তারা দ্বীন সম্পর্কে এই ধরণের আরও অনেক কথা বলে যা স্পষ্ট কুফরী।[১৭] কারামাতা-বাতিনিয়্যারা আল্লাহর সত্তার ব্যাপারে বলে, তুমি বল না যে আল্লাহ বিদ্যমান এবং এও বল না যে, তিনি বিদ্যমান নয়।[১৮] তারা আল্লাহর সমস্ত নাম ও গুণাগুণকে বাতিল ও অস্বীকার করেছে।[১৯] কারামিতাদের অবস্থান মিশর, বাহরাইন ও মরক্কো।
কারামিতা
তাদের নেতা হল আবূ তাহির আল-কারামিতী। মূলত তারা শী‘আ রাফিযী। কারামিতারা ৩১৭ হিজরী সনে হজ্জের তারবিয়ার দিন পবিত্র মাক্কায় কা‘বা শরীফে প্রবেশ করে অসংখ্য হাজীদের হত্যা করে। লাশগুলো যমযম কূপে নিক্ষেপ করে কূপ বন্ধ করে দেয়। এরপর কা‘বার গেলাফ খুলে টুকরা টুকরা করে ফেলে দেয়। আর কালো পাথর উঠিয়ে নিজেদের দেশে নিয়ে যায়। অতঃপর ৩৩৯ হিজরী সনে ফিরে দেয়।[২০]
মু‘আত্তিলা দল
তারা আল্লাহর নাম ও ছিফাতসমূহকে সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছে। এই কারণে তারা কুরআন ও সুন্নাহর সুসাব্যস্ত দলীলগুলোকে পরিবর্তন করেছে।[২১]
মুমাছছিলাহ
তারা আল্লাহর ছিফাতকে স্বীকার করে তবে ছিফাতকে সৃষ্টির ছিফাতের সাথে সাদৃশ্য করে। সর্বপ্রথম এই ধরণের কথা বলেছে হিশাম বিন হাকাম রাফিযী।[২২] তারা বলে আল্লাহর জন্য মুখমণ্ডল, দুই হাত, দুই চোখ রয়েছে আমাদের মুখমণ্ডল, হাত ও চোখের মত।[২৩]
আশাঈরাহ দল
আবুল হাসান আল-আশ‘আরীর দিকে সম্বন্ধ করে তাদেরকে ‘আশাঈরা’ বলা হয়। তারা আল্লাহর সমস্ত নাম ও কিছু গুণাগুণকে সাব্যস্ত করেছে যে গুলো তাদের জ্ঞানে ধরেছে। তারা আল্লাহর জন্য সাতটি ছিফাতকে যেমন- হায়াত-জীবন, ইল্ম-জ্ঞান, কুদরত-শক্তি, ইরাদাহ-ইচ্ছা, কালাম-কথা বলা, সামঊ-শোনা ও বাছর-দেখার গুণকে স্থীর করেছে। বাকী যেগুলো গুণকে তারা অস্বীকার করেছে, সে ক্ষেত্রে তাদের কথা হল, এগুলো সাব্যস্ত করলে সাদৃশ্য আবশ্যিক হয়ে যাবে যা আল্লাহর জন্য ঠিক না।[২৪]
আবুল হাসান আল-আশ‘আরী প্রথম দিকে তিনি মু‘তাযিলা ছিলেন। কারণ তিনি আবূ আলী আল-জাবায়ীর ও তার পুত্রের শীষ্য হয়েছিলেন। আর তারা দুই জনই ছিল মু‘তাযিলা সম্প্রদায়ের। আশ‘আরী তার জীবনের শেষ দিকে আহলে সুন্নাত ও আহলেহাদীছদের কিতাব পড়ে তার পূর্ব আক্বীদা থেকে ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু তার অনুসারীরা ফিরে আসেনি।[২৫]
মাতুরীদিয়্যা
তারা আবূ মানছূর মাতুরীদী আল-হানাফীর অনুসারী। চতুর্থ শতাব্দীর শুরুতে তাদের উত্থান হয়। তাদের অধিকাংশই হানাফী মাযহাবের লোক। তারা আল্লাহর নামসমূহ ও কিছু ছিফাত বা গুণকে সাব্যস্ত করে। তাদের নিকট ঈমান হল, শুধু অন্তরের বিশ্বাস। কথা ও আমল ঈমানের অন্তর্ভুক্ত নয়।[২৬]
ছূফীবাদ
তারা গোপন ইবাদতকারী। তারা অন্তরের ইবাদতের ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করেছে। ফলে তারা বিদ‘আতে পতিত হয়েছে। যেমন- তারা মুসলিম ও ইবাদত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আলাদা অবস্থান করে। বিভিন্ন দেশে এদের অবস্থান রয়েছে। তৃতীয় শতাব্দীতে তারা ইলম ও ইবাদতের ওপর ছিল, তবে তারা সংসারত্যাগী ছিল। কিন্তু বর্তমান তারা বিভিন্ন প্রকার খারাপ আক্বীদা ও বিদ‘আত কর্মে লিপ্ত।[২৭] যারা মা‘রেফতী বর্তমান তারাই ছূফীবাদী, কারণ তাদের আক্বীদা হল বিকৃত ও ভ্রান্ত।
ছূফীবাদের ৪টি তরীকা: শরী‘আত, তরীকত, মা‘রিফাত ও হাক্বীক্বাত। তারা এগুলোকে নিজেদের খেয়াল-খুশী মত বানোয়াট পদ্ধতি চালু করেছে, যা ইসলামে এর কোন অস্তিত্ব নেই।
তাদের কতিপয় আক্বীদা
১. তারা বলে, ‘তোমার দুই চোখ দ্বারা যা কিছু দেখ তাহাই আল্লাহ। নাউযুবিল্লাহ![২৮]
২. হুলূল: এর অর্থ হল আল্লাহ তাঁর কতিপয় সৃষ্টির মধ্যে অবতরণ করেন এবং তাদের সাথে একাকার হয়ে যান। যেমন খ্রিস্টানদের আক্বীদাহ স্বয়ং আল্লাহ ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর মাধ্যমে অবতরণ করেছিলেন।
৩. ওয়াহদাতুল উজূদ: এর অর্থ হল সৃষ্টি ও স্রষ্টা একই জিনিস। উভয়ের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। ইবনু আরাবী এ মতেরই একজন। তার মতে পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই মা‘বূদ। এতে কুকুর, শুকুর, বানর ও অন্যান্য অপবিত্র সৃষ্টিও মাবুদ হতে বাঁধা নেই। ফলে তার মতে যারা মূর্তি পূজা করে তারা আল্লাহরই ইবাদত করে। (নাউযুবিল্লাহ)
৪. তারা দ্বীনকে যাহিরী ও বাতিনী দু’টি ভাগে ভাগ করেছে। অথচ শরী‘আতে এর কোন অস্তিতই নেই। বরং কুরআন ও হাদীছের মধ্যে যা আছে সেটাই দ্বীন।
৫. তারা আল্লাহর আরশের ওপরে থাকাকে অস্বীকার করে এবং বলে যে আল্লাহ নিজ সত্তায় সর্বত্রই বিরাজমান সৃষ্টির সাথে মিলিত হয়ে।[২৯]
অতএব যারা আল্লাহর নাম ও গুণসমূহকে অস্বীকার করে। তারা আল্লাহর নাম ও গুণের শব্দসমূহে প্রকাশ্য বা প্রকৃত অর্থ থেকে অপব্যাখ্যা করে অন্য অর্থ গ্রহণ করে। যেমন- আল্লাহর চেহারাকে তাঁর সত্তা দ্বারা অপব্যাখ্যা করে। তাঁর হাত দ্বারা নে‘মত ব্যাখ্যা করে। অথবা তারা আল্লাহর নাম ও গুণের শব্দসমূহের অর্থকে না বুঝার চেষ্টা করে আল্লাহর দিকে ন্যাস্ত করে বলে, আল্লাহই এর অর্থ বা মর্ম বেশী জানেন। এই আক্বীদাহ বিশ্বাস রেখে যে, এইগুলো শব্দের মূলত প্রকাশ্য কোন অর্থ নেই।
তাবলীগ জামা‘আত
তাবলীগ জামা‘আত, যা হিন্দুস্থানে ১৪ শতাব্দীর মধ্যভাগে সূচনা হয়। তার প্রতিষ্ঠাতা হলেন, মুহাম্মাদ ইলিয়াস বিন মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈল আল-কান্ধালোভী আল-দেওবন্দী। (তার জম্ম ও মৃত্যু: ১৩০৩-১৩৬৩ হিজরী, ১৮৮৫-১৯৪৪ খ্রি.) মুহাম্মাদ ইলিয়াস মাযহাবে তিনি হানাফী, আক্বীদায় ‘আশ‘আরী-মাতুরীদী ও তরীকায় ছূফী মতবাদের ছিলেন। তিনি রশীদ আহমাদ গাংগোহী (১৮২৬-১৯০৫ খ্রি.)-এর হাতে ছূফী তরীকার বায়‘আত নিয়েছিলেন। শায়খ রশীদের মৃত্যুর পর আহমাদ সাহরানপুরীর হাতে তিনি বায়‘আত নবায়ন করেন। মুহাম্মাদ ইলিয়াস ছাহেব শায়খ নূর মুহাম্মাদ বাদায়ুনীর কবরের কাছে নির্জন স্থানে বসতেন এবং কুদ্দুস আল-গাংগোহীর কবরের নিকট চিশতিয়া মুরাকাবায় বসতেন। যে কুদ্দুসের উপর ওয়াহদাতুল উজূদ এর চিন্তাধারা বিস্তার লাভ করেছিল।[৩০]
তাবলীগ জামা‘আত দাওয়াত ও ত্যাগে প্রসিদ্ধ লাভ করেছে। কিন্তু আফসোস হল, তাদের দাওয়াত ও প্রচেষ্টা রাসূল (ﷺ) ও তাঁর ছাহাবীগণের দাওয়াত পদ্ধতির বিপরীত। তারা দ্বিতীয় প্রকার তাওহীদে উলূহিয়্যাহ তথা ইবাদত একমাত্র আল্লাহর জন্য এ বিষয়ে দাওয়াত দেয়ার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ বা পরোয়া করে না। অথচ উক্ত তাওহীদ প্রতিষ্ঠার জন্য সমস্ত রাসূলকে প্রেরণ করা হয়েছে (সূরা আন-নাহল: ৩৬)। অনুরূপভাবে তারা সৎকাজের আদেশের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেন কিন্ত অসৎকাজে বাধাপ্রদানের ক্ষেত্রে একেবারেই উদাসীন। তারা নবী (ﷺ) ও অলীগণ কবরের জীবনে নয়, বরং দুনিয়াবী জীবনেই বেঁচে আছেন বলে স্বীকার করেন। তারা সত্য-মিথ্যা ও ভাল-মন্দকে একত্র করেছে।[৩১]
সুধী পাঠক! উল্লিখিত প্রত্যেক সম্প্রদায়ের মধ্যে রয়েছে কমবেশি ভ্রষ্টতা, বিদ‘আত ও গোমরাহী। তাদের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট হল জাহমিয়্যা ও রাফিযী সম্প্রদায়। আর ভয়ংকর হল খারিজী সম্প্রদায়। আর সবচেয়ে কম বিদ‘আত রয়েছে মুরজিয়াদের মধ্যে।[৩২] আল্লাহই সর্বাধিক জ্ঞাত!
আল্লাহর নাম ও গুণাবলী অস্বীকারকারীদের বিধান
এটা দু’ধরনের হতে পারে। যথা: প্রথমতঃ আল্লাহর কোন নাম বা গুণকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করার মাধ্যমে অস্বীকার করা। যেমন কেউ বলল, আল্লাহর হাত নেই। এটা নিঃসন্দেহে কুফরী, সে ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবে। যেমন জাহমিয়্যহ সম্প্রদায়। আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, জাহমিয়্যারা উম্মাতে মুহাম্মাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। দ্বিতীয়তঃ আল্লাহর কোন নাম বা গুণকে অপব্যাখ্যার মাধ্যমে অস্বীকার করা। যেমন কেউ বলল, আল্লাহর হাত দ্বারা নে‘মত বা শক্তি বুঝানো হয়েছে। যেমন ওপরে উল্লিখিত বিদ‘আতীরা করে থাকে।[৩৩]
বিদ‘আতী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে আহলুস সালাফের অবস্থান
আহলুস সালাফের অবস্থান হচ্ছে মধ্যম পন্থা।
১. তারা আল্লাহর নাম ও গুণকে সাব্যস্ত করেন এবং সৃষ্টির সাথে তুলনা করেন না।
২. আল্লাহর আরশের ওপর অবস্থানকে স্বীকার করেন।
৩. তারা কোন মুসলিমকে তার কোন কাবীরা গুনাহের কারণে তাকে কাফির বলে না বরং তারা বলেন যে, সে অপরাধী ও শাস্তির হকদার। তওবা না করে মারা গেলে পরকালে সে আল্লাহর ইচ্ছাধীনে থাকবে।
৪. তাদের নিকট ঈমান হল অন্তরে বিশ্বাস, মৌখিক স্বীকৃতি ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মাধ্যমে আমল এবং আনুগত্যের মাধ্যমে ঈমান বাড়ে ও খারাপ কর্মের দ্বারা ঈমান কমে।[৩৪]
৫. তারা সকল ছাহাবীকে ভালোবাসেন এবং মনে করেন যে, ছাহাবীরা এই উম্মতের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ। তারা কুরআনকে আল্লাহর বাণী বলে বিশ্বাস করেন।
৬. তারা কুরআন ও সুন্নাহকে তিন সোনালী যুগের লোকের বুঝ অনুযায়ী বুঝেন।
৭. তারা দলাদলি ও মতভেদের সময় কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরেন। এই জন্য তাদেরকে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত বলা হয়।
দ্বীনের মধ্যে মতভেদ ও অনৈক্য সৃষ্টি করার কোনই অনুমতি নেই
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, اَنۡ اَقِیۡمُوا الدِّیۡنَ وَ لَا تَتَفَرَّقُوۡا فِیۡہِ ‘দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত কর এবং তাতে অনৈক্য সৃষ্টি কর না’ (সূরা আশ-শূরা: ১৩)। আর ঐক্যের মূল ভিত্তি হল ‘ছিরাতুল মুস্তাকীম’ সরল পথ। আর তা হল একটিই পথ। একদা রাসূল (ﷺ) তাঁর হাত দিয়ে একটি লম্বা রেখা টানলেন এবং বললেন, এটা হল আল্লাহর সরল পথ। আরও কিছু রেখা তাঁর ডান ও বাম পাশে টানলেন এবং বললেন, এগুলো হল অন্য কিছু পথ যার উপর শয়তান বসে আছে এবং সে এ পথগুলোর দিকে মানুষকে আহ্বান করে। তারপর রাসূল (ﷺ) এ আয়াত পাঠ করলেন: وَ اَنَّ ہٰذَا صِرَاطِیۡ مُسۡتَقِیۡمًا فَاتَّبِعُوۡہُ ۚ وَ لَا تَتَّبِعُوا السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِکُمۡ عَنۡ سَبِیۡلِہٖ ‘আর এই পথই আমার সরল পথ। কাজেই তোমরা এর অনুসরণ কর এবং বিভিন্ন পথ অনুসরণ করবে না’।[৩৫]
উক্ত পথ পাওয়ার জন্য আল্লাহর নিকট আমরা দৈনিক ছালাতের প্রত্যেক রাক‘আতে সূরা ফাতিহায় প্রার্থনা করি: اِہۡدِ نَا الصِّرَاطَ الۡمُسۡتَقِیۡمَ ‘আমাদের সরল পথ প্রদর্শন কর’। আর এই পথই হল নবী, ছিদ্দীক, শহীদ ও ছালিহীনের পথ। আর সেটাই হল কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহর পথ। আর এটিই হল মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের মূল ভিত্তি। যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে চলবে তারা উক্ত চার শ্রেণীর ব্যক্তিদের সাথে পরকালে থাকবেন (সূরা আন-নিসা: ৬৯)।
এই পথ থেকে দূরে সরে পড়ার কারণে এই উম্মত বিভিন্ন দলে বিভক্ত হযে গেছে। কুরআনুল কারীম ও রাসূল (ﷺ)-কে প্রেরণের উদ্দেশ্য ছিল, মানুষ নিজ নিজ ধ্যান-ধারণা, ইচ্ছা, পসন্দ এবং জীবনকে কুরআন-সুন্নাহর ছাঁচে ঢেলে নিবে। কিন্তু মানুষ কুরআন-সুন্নাহকে নিজের মনগড়া ব্যাখ্যা করে স্বীয় প্রবৃত্তির পক্ষে নিয়ে গেছে। এখান থেকেই বিভিন্ন দল, মত, বিদ‘আত ও পথভ্রষ্টতার জন্ম।
* শিক্ষক, আল-জামি‘আহ আস-সালাফিয়্যাহ, ডাঙ্গীপাড়া, রাজশাহী।
[১]. মা‘আলিমুল ইনতিলাকতিল কুবরা, পৃ. ১৩৫।
[২]. ছহীহ বুখারী, হা/৬৯৩০, ৩৬১০, ৩৩৪৪।
[৩]. মা‘আলিমুল ইনতিলাকতিল কুবরা, পৃ. ১৩৮।
[৪]. মিনহাজু আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আহ ফিল আক্বীদাহ ওয়াল আমাল, পৃ. ৪১; মা‘আলিমুল ইনতিলাকতিল কুবরা, পৃ. ১৩৮-১৩৯।
[৫]. মা‘আলিমুল ইনতিলাকতিল কুবরা, পৃ. ১৪৯।
[৬]. শাইখ ইবনু উছাইমীন, তাক্বরীবুত তাদমুরিয়্যা, পৃ. ২৮।
[৭]. মিনহাজু আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আহ ফিল আক্বীদাহ ওয়াল আমাল, পৃ. ১৪৯।
[৮]. শারহুল আক্বীদাতিল ত্বাহাবিয়্যা ইবনু জিবরীন, ২য় খণ্ড, পৃ. ৪২।
[৯]. মা‘আলিমুল ইনতিলাকতিল কুবরা, পৃ. ১৪৮।
[১০]. তাক্বরীবুল তাদমুরিয়্যা, পৃ. ৩১।
[১১]. তাক্বরীবুল তাদমুরিয়্যা, পৃ. ১৩৬; মা‘আলিমুল ইনতিলাকতিল কুবরা, পৃ. ১৪৪।
[১২]. তাক্বরীবুল তাদমুরিয়্যা, পৃ. ১৩৬; মা‘আলিমুল ইনতিলাকতিল কুবরা, পৃ. ১৪৩, ১৪৪।
[১৩]. ইবনু আবিল ইয্য, শারহুল আক্বীদা ত্বাহাবিয়্যা এর ৫৫ নং আলোচনা।
[১৪]. মা‘আলিমুল ইনতিলাকতিল কুবরা, পৃ. ১৪১।
[১৫]. শারহুল আক্বীদাতিল ওয়াসীতিয়্যা শায়খ ছালিহ ফাওযান, মা‘আলিমুল ইনতলাকতিল কুবরা, পৃ. ১৫১।
[১৬]. শারহুল আক্বীদাতিল ত্বাহাবিয়্যা ইবনু জিবরীন, ২য় খণ্ড, পৃ. ৪২।
[১৭]. তাক্বরীবুত তাদমুরিয়্যা, পৃ. ৪২।
[১৮]. মিনহাজু আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আহ ফিল আক্বীদাহ ওয়াল আমাল, পৃ. ১০৬।
[১৯]. তাক্বরীবুত তাদমুরিয়্যা, পৃ. ৩১।
[২০]. মাউসূ‘আতুল ফিরাকিল মুনতাসিবাতু লিল ইসলাম, পৃ. ২২৪।
[২১]. তাক্বরীবুত তাদমুরিয়্যা, পৃ. ৪২।
[২২]. শারহুল ক্বওয়ায়িদিল মুছলা, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৫।
[২৩]. তাক্বরীবুত তাদমুরিয়্যা, পৃ. ৩২।
[২৪]. তাক্বরীবুত তাদমুরিয়্যা, পৃ. ৩৪।
[২৫]. শারহু ই‘তিক্বাদ আহলুস সুন্নাহ, ৫ম খণ্ড, পৃ. ২।
[২৬]. তাক্বরীবুত তাদমুরিয়্যা, পৃ. ৪২।
[২৭]. শারহুল আক্বীদাতিল ত্বাহাবিয়্যা ইবনু জিবরীন, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৮।
[২৮]. মিনহাজু আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আহ ফিল আক্বীদাহ ওয়াল আমল, পৃ. ১২৮।
[২৯]. মিনহাজু আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আহ ফিল আক্বীদাহ ওয়াল আমল, পৃ. ৭৬, ৭৮।
[৩০]. হাক্বীক্বাতুত দা‘ওয়াহ, পৃ. ৭৫।
[৩১]. আল-কওলুল বালীগ, পৃ. ১২-১৪।
[৩২]. মা‘আলিমুল ইনতিলাকতিল কুবরা, পৃ. ১৩৩।
[৩৩]. মা‘আলিমুল ইনতিলাকতিল কুবরা, পৃ. ১৩৪।
[৩৪]. শারহুল আক্বীদাতিল ত্বহাবিয়্যা ইবনু জিবরীন, ২য় খণ্ড, পৃ. ৪২।
[৩৫]. সূরা আল-আন‘আম: ১৫৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/৪১৪২, উক্ত হাদীছটি ইবনু মাসঊদ য থেকে বর্ণিত।