বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৩ অপরাহ্ন

ছালাতের সঠিক সময় ও বিভ্রান্তি নিরসন

-মাইনুল ইসলাম মঈন*


(৫ম কিস্তি)


আছরের ছালাত বিলম্ব করে আদায় করার পক্ষে পেশকৃত দলীলগুলোর জবাব

এক্ষেত্রে অনেক ছহীহ হাদীছের অপব্যাখ্যা করা হয়েছে। ব্যাপকভাবে বর্ণিত শাব্দিক ও ব্যবহারিক বর্ণনার মোকাবেলায় একক বা বিচ্ছিন্নভাবে বর্ণিত হাদীসের শাব্দিক বিশ্লেষণ দ্বারা সিদ্ধান্ত গ্রহণের অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। যেমন,

দলীল-১

عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ أَنَّهَا قَالَتْ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَشَدَّ تَعْجِيْلًا لِلظُّهْرِ مِنْكُمْ وَأَنْتُمْ أَشَدُّ تَعْجِيْلًا لِلْعَصْرِ مِنْهُ

উম্মু সালামাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যোহরের ছালাতকে তোমাদের চেয়ে বেশি আগে-ভাগে আদায় করতেন। আর তোমরা আছরের ছালাতকে তাঁর চেয়ে বেশি আগে আদায় কর।[১]

জবাব :
হাদীছটির ব্যাখ্যায় ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী (রাহিমাহুল্লাহ) লিখেছেন,

قال القاري الظاهر أن الخطاب لغير الأصحاب قال وفي الجملة يدل الحديث على استحباب تأخير العصر كما هو مذهبنا. قلت وكذا استدل به العيني في البناية شرح الهداية على أفضلية تأخير العصر. وقد أجاب عن هذا الاستدلال الشيخ عبد الحي اللكنوي فقال ولا يخفى على الماهر ما في الاستناد بهذا الحديث فإنه إنما يدل على كون التعجيل في الظهر أشد من التعجيل في العصر لا على استحباب التأخير. وقال شيخنا في شرح الترمذي بعد نقل كلام القاري ليس فيه دلالة على استحباب تأخير العصر نعم فيه أن الذين خاطبتهم أم سلمة كانوا أشد تعجيلاً للعصر منه صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وهذا لايدل على أنه صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كان يؤخر العصر حتى يستدل به على استحباب التأخير

‘মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, এখানে ছাহাবী ছাড়া অন্যদেরকে সম্বোধন করা হয়েছে। মোটকথা হাদীছটি আছরের ছালাত দেরিতে করে পড়া মুস্তাহাব হবার দলীল, যেমনটি আমাদের (হানাফী) মাযহাবে রয়েছে। আমি (ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী) বলছি, এ হাদীছ দ্বারা আইনী (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁর ‘আল-বিনায়াহ শারহুল হিদায়াহ’ গ্রন্থে আছর দেরি করে পড়া উত্তম হওয়ার পক্ষে দলীল নিয়েছেন। এভাবে দলীল গ্রহণের জবাবে শাইখ আব্দুল হাই লাক্ষ্ণৌভী হানাফী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, এই হাদীছ দ্বারা দলীল গ্রহণ কতটুকু ঠিক তা বিশেষজ্ঞদের নিকট গোপন নয়। কেননা এ হাদীছ দ্বারা দলীল নেয়া যায় যে, আছরের ছালাতকে শীঘ্রই পড়ার চেয়ে যোহরের ছালাতকে শীঘ্রই পড়াটা বেশি গুরুত্ববহ। কিন্তু দেরিতে (আছরের ছালাত) পড়া মুস্তাহাবের দলীল (হাদীছটিতে) নেই। আর আমাদের শায়েখ (শাইখ আব্দুর রহমান মুবারকপুরী) ‘শারহুত তিরমিযী’ (তুহফাতুল আহওয়াযী) গ্রন্থে মোল্লা আলী ক্বারী (রাহিমাহুল্লাহ)-এর উদ্ধৃতি দেয়ার পর লিখেছেন, আছরেব ছালাত দেরিতে আদায় মুস্তাহাবের ব্যাপারে আলোচ্য হাদীছে কোন দলীল নেই। তবে হ্যাঁ, উম্মু সালামাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহা) যাদেরকে সম্বোধন করেছিলেন, তারা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে (তুলনামূলক) শীঘ্রই আছরের ছালাত আদায় করে থাকবেন। এই হাদীছ প্রমাণ করে না যে, নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দেরিতে ছালাত আদায় করেছেন, যার ফলে দেরিতে ছালাত আদায় মুস্তাহাব হবে’।[২]

শাব্দিকভাবে হাদীছটি থেকে এ কথাই প্রমাণিত হয় যে, আছরের ছালাতের চেয়ে যোহরের ছালাত তুলনামূলক দ্রুত আদায় করতে হবে, যেভাবে আব্দুল হাই লাক্ষ্ণৌভী হানাফী বলেছেন। অথচ আমরা পূর্বে নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশ ও ব্যবহারিক আমল থেকে প্রমাণ করেছি যে, তিনি সূর্যের তাপ বেশি হলে যোহরের ছালাতকে কিছুটা পিছিয়ে দিতেন কাক্সিক্ষতভাবে তাপ কমা বা ঠাণ্ডা হওয়া পর্যন্ত। কিন্তু আছরের ছালাতের ক্ষেত্রে এমনটি বর্ণিত হয়নি। বরং ছাহাবীদের বর্ণনানুযায়ী নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও ছাহাবীগণ (রাযিয়াল্লাহু আনহুম) আছরের ছালাতকে শীঘ্রই শীঘ্রই আদায় করতেন। এমনকি সফর- যেখানে ছালাত আদায়ে ওয়াক্তের হেফাযত কষ্টসাধ্য হয়ে যায়, সেখানে বিকল্প সমাধান হিসাবে, ছালাত এবং এর ওয়াক্ত হেফাযতের স্বার্থে যোহরের ওয়াক্তে আছরের ছালাত আদায় করেছেন। আবার যোহরকে সম্পূর্ণ আছরের ওয়াক্তে আদায় করে পরক্ষণেই আছরকেও তার প্রথম ওয়াক্তেই আদায় করেছেন। যা থেকে বুঝা যায়, কুরআনে উল্লিখিত ‘ছালাতসমূহের হেফাযত কর ও মধ্যবর্তী ছালাতেরও’-এর দাবি নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও ছাহাবীদের (রাযিয়াল্লাহু আনহুম) থেকে শাব্দিক এবং ব্যবহারিকভাবে প্রমাণিত। এ পর্যায়ে ব্যক্তি-বিশেষ ছাহাবীর শাব্দিক উপস্থাপনা দ্বারা আপেক্ষিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের মোকাবেলায় অধিকাংশ ছাহাবীর শাব্দিক ও ব্যবহারিক বর্ণনাই দলীল হিসাবে গণ্য হবে। আল্লাহ তা‘আলা সত্য বুঝার তাওফীক্ব দিন।

মুহাম্মাদ ইবনু আলী নিমভী (রাহিমাহুল্লাহ) হাদীছটি উল্লেখের পর লিখেছেন,

استدل الحنفية بهذه الأحاديث على أن وقت الظهر لا ينقضي بعد المثل بل يبقى بعده و وقته ازيد من وقت العصر و في الاستدلال بها ابحاث و اني لم اجد حديثا صريحا صحيحاً او ضعيفا يدل على ان وقت الظهر الى ان يصير الظل مثليه وعن الإمام أبي حنيفة (رح) فيه قولان

‘এই হাদীছগুলো থেকে হানাফীগণ দলীল নিয়েছেন যে, যোহরের ওয়াক্ত ছায়া একগুণ হওয়ার পর শেষ হয় না, বরং এর পরেও বাকি থাকে। আর যোহরের ওয়াক্ত আছরের ওয়াক্ত থেকে দীর্ঘ হয়ে থাকে। এই হাদীছগুলো দ্বারা দলীলগ্রহণ আলোচনাসাপেক্ষ। আমি কোন সুস্পষ্ট ছহীহ বা যঈফ হাদীছ পাইনি, যা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, যোহরের ওয়াক্ত ছায়া দুইগুণ হওয়া পর্যন্ত। বরং ইমাম আবূ হানীফা (রাহিমাহুল্লাহ) থেকে এক্ষেত্রে দু’টি মত আছে (ছায়া একগুণ ও দ্বিগুণ হওয়া-উভয় উক্তি)’।[৩]

জ্ঞাতব্য : বাস্তবে উক্ত হাদীছে তাদের কোন দলীল নেই। তারা এই হাদীছের উপর আমল করেনা। কারণ তারা যোহরও দেরীতে পড়ে, আছরও দেরীতে পড়ে। মাযহাবী ভালবাসার কারণে প্রকাশ্য হাদীছগুলো চোখে দেখে না।

দলীল-২

عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللهِ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّهُ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ إِنَّمَا بَقَاؤُكُمْ فِيْمَا سَلَفَ قَبْلَكُمْ مِنَ الْأُمَمِ كَمَا بَيْنَ صَلَاةِ العَصْرِ إِلَى غُرُوْبِ الشَّمْسِ أُوْتِيَ أَهْلُ التَّوْرَاةِ التَّوْرَاةَ فَعَمِلُوْا حَتَّى إِذَا انْتَصَفَ النَّهَارُ عَجَزُوْا فَأُعْطُوْا قِيْرَاطًا قِيْرَاطًا ثُمَّ أُوْتِيَ أَهْلُ الْإِنْجِيْلِ الإِنْجِيْلَ فَعَمِلُوْا إِلَى صَلَاةِ العَصْرِ ثُمَّ عَجَزُوْا فَأُعْطُوْا قِيْرَاطًا قِيْرَاطًا ثُمَّ أُوْتِيْنَا القُرْآنَ فَعَمِلْنَا إِلَى غُرُوْبِ الشَّمْسِ فَأُعْطِيْنَا قِيْرَاطَيْنِ قِيْرَاطَيْنِ فَقَالَ أَهْلُ الكِتَابَيْنِ أَيْ رَبَّنَا أَعْطَيْتَ هَؤُلَاءِ قِيْرَاطَيْنِ قِيْرَاطَيْنِ وَأَعْطَيْتَنَا قِيْرَاطًا قِيْرَاطًا وَنَحْنُ كُنَّا أَكْثَرَ عَمَلًا؟ قَالَ قَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ:هَلْ ظَلَمْتُكُمْ مِنْ أَجْرِكُمْ مِنْ شَيْءٍ؟ قَالُوْا لَا قَالَ فَهُوَ فَضْلِيْ أُوتِيْهِ مَنْ أَشَاءُ

সালিম ইবনু আব্দুল্লাহ (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন, আগেকার উম্মতের স্থায়িত্বের তুলনায় তোমাদের স্থায়িত্ব হল আছর হতে নিয়ে সূর্যাস্ত যাওয়ার মধ্যবর্তী সময়ের ন্যায়। তাওরাত অনুসারীদেরকে তাওরাত দেয়া হয়েছিল। তারা তদনুযায়ী কাজ করতে লাগল। যখন দুপুর হল, তখন তারা অপারগ হয়ে পড়ল। তাদের এক এক কীরাত করে পারিশ্রমিক প্রদান করা হয়। আর ইনজীল অনুসারীদেরকে ইনজীল দেয়া হল। তারা আছরের ছালাত পর্যন্ত কাজ করে অপরাগ হয়ে পড়ল। তাদেরকে এক এক কীরাত করে পারিশ্রমিক দেয়া হল। অতঃপর আমাদেরকে কুরআন দেয়া হল। আমরা সূর্যাস্ত পর্যন্ত কাজ করলাম। আমাদের দু’ দু’ কীরাত করে দেয়া হল। এতে উভয় কিতাবী সম্প্রদায় বলল, হে আমাদের প্রতিপালক! তাদের দু’ দু’ কীরাত করে দান করেছেন, আর আমাদের দিয়েছেন এক এক কীরাত করে; অথচ আমলের দিক দিয়ে আমরাই বেশি। আল্লাহ তা‘আলা বললেন, তোমাদের পারিশ্রমিকের ব্যাপারে আমি কি তোমাদের প্রতি কোনরূপ যুলুম করেছি? তারা বলল, না। তখন আল্লাহ তা‘আলা বললেন, এ হল- আমার অনুগ্রহ, যাকে ইচ্ছা তাকে দেই।[৪]

জবাব :
আলাউদ্দীন আবূ বকর ইবনু মাস‘উদ আল-কাসানী আল-হানাফী (রাহিমাহুল্লাহ) তার ফিকহ গ্রন্থ ‘বাদায়িস সানাঈ’-এ লিখেছেন,

فدل الحديث على أن مدة العصر أقصر من مدة الظهر وإنما يكون أقصر أن لو كان الأمر على ما قاله أبو حنيفة

‘হাদীছটি প্রমাণ করে যে, আছরের সময়কাল যোহরের সময়ের চেয়ে অনেক কম। আর এটা তখনই কম হবে, যখন ইমাম আবূ হানীফার উক্তি মোতাবেক বিধানটি মূল্যায়ন করা হবে’।[৫] অর্থাৎ দুই ছায়া পর আছরের ওয়াক্ত শুরু করলে যোহর থেকে আছরের সময় কম হওয়াটা প্রমাণিত হবে।

প্রথমতঃ হাদীছটিতে ছালাতের ওয়াক্ত কখন শুরু হচ্ছে এ সম্পর্কে আলোচনা নেই।

দ্বিতীয়তঃ ইমাম মালেক, ইমাম শাফেঈ ও ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বাল (রাহিমাহুমুল্লাহ) এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আছরের ওয়াক্ত এক ছায়া থেকে শুরু হয়। সুতরাং ছালাতের পুঞ্জিকাগুলো খেয়াল করলে দেখা যায় যে, এই তিন ইমামের মতামতের ভিত্তিতে (এক ছায়াতে আছর ছালাত আদায় করলেও) সারা বছরই যোহর থেকে আছর সময় কম থাকে। শুধু ১লা জুন ও ১লা জুলাই আছরের ওয়াক্তের সময়সীমা যোহরের ওয়াক্তের সময়সীমা থেকে যথাক্রমে তিন মিনিট ও নয় মিনিট বেশি। পক্ষান্তরে বাকি দশটি মাস যোহরের ওয়াক্তের সময়সীমা থেকে আছরের ওয়াক্তের সময়সীমার ব্যবধান অনেক অনেক কম। তাছাড়া যদি জিবরীল (আলাইহিস সালাম) কর্তৃক দেখানো প্রথম ওয়াক্ত তথা এক ছায়া থেকে আছরের শেষ ওয়াক্ত তথা দুই ছায়া পর্যন্ত হিসাবে করি, তবে অবশ্যই আছরের ছালাতের সময় যোহরের থেকে সবসময় কমই হয়। অনুরূপভাবে যদি জিবরীল (আলাইহিস সালাম)-এর হাদীছ অনুযায়ী এক ছায়া ও দুই ছায়ার মাঝামাঝি সময়কে আছরের জামা‘আত হিসাবে নির্ধারণ করি, তাহলে সবসময়ের জন্য সারা বছর যোহরের তুলনায় আছরের ওয়াক্ত কম থাকে। কেননা আছরের ওয়াক্ত এক ছায়া পরিমাণ হওয়ার সাথে সাথে পড়া হয় না। বরং ওযূ, আযান ও জামা‘আতের জন্য কিছু সময় অতিবাহিত হয়েই থাকে। এ কারণে হানাফীদের জবাবে হাফেয ইবনু হাজার আসক্বালানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন,

وَذَلِكَ مَعْرُوْفٌ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ بِهَذَا الْفَنِّ وَهُوَ أَنَّ الْمُدَّةَ الَّتِيْ بَيْنَ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ أَطْوَلُ مِنَ الْمُدَّةِ الَّتِيْ بَيْنَ الْعَصْرِ وَالْمَغْرِبِ وَأَمَّا مَا نَقَلَهُ بَعْضُ الْحَنَابِلَةِ مِنَ الْإِجْمَاعِ عَلَى أَنَّ وَقْتَ الْعَصْرِ رُبْعُ النَّهَار فَمَحْمُوْل على التَّقْرِيْب إِذا فرعنا عَلَى أَنَّ أَوَّلَ وَقْتِ الْعَصْرِ مَصِيْرُ الظِّلِّ مِثْلَهُ كَمَا قَالَ الْجُمْهُوْرُ وَأَمَّا عَلَى قَوْلِ الْحَنَفِيَّةِ فَالَّذِيْ مِنَ الظُّهْرِ إِلَى الْعَصْرِ أَطْوَلُ قَطْعًا

‘এই বিষয়টি বিশেষজ্ঞ আলেমদের কাছে প্রসিদ্ধ যে, যোহর ও আছরের মধ্যকার সময়টুকু আছর ও মাগরিবের মধ্যের সময়টুকুর চেয়ে বেশি। আর কিছু হাম্বলী যে ইজমার কথা উল্লেখ করেছেন যে, আছর দিনের এক চতুর্থাংশ। এটা কাছাকাছি অনুমান। আর সেটা তখনই হয়, যখন আছরের প্রথম ওয়াক্ত ছায়া সমপরিমাণ থেকে হিসাব করা হয়, যেভাবে অধিকাংশের বক্তব্য রয়েছে। আর হানাফীদের মতানুযায়ী যোহর থেকে আছরের সময়টুকু অনেক লম্বা হয়’।[৬]

হাফেয ইবনুল ক্বাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, ‘ইয়া আল্লাহ! খুব আশ্চর্যের বিষয়! হাদীছটিতে এই দলীল কোথায় আছে যে, ততক্ষণ পর্যন্ত আছরের ওয়াক্ত শুরু হয় না, যতক্ষণ ছায়া দ্বিগুণ না হয়? দলীলটি থেকে কীভাবে এটা প্রমাণিত হয়? এখানে সর্বোচ্চ এ দলীল রয়েছে যে, আছরের ছালাতের শুরুর ওয়াক্ত থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়টুকু যোহর ও আছরের মধ্যকার সময়টুকুর চেয়ে কম। এক্ষেত্রে কোন সংশয় নেই’।[৭]

দলীল-৩

‘আছরের ওয়াক্ত সূর্য হলুদ হওয়া পর্যন্ত’ মর্মে বর্ণিত হাদীছের অপব্যাখ্যা। কেননা উক্ত বাক্যটি আছরের শেষ সময়কে চিত্রিত করা হয়েছে। এরপরেও হানাফীগণ হাদীছের বাক্যের সংক্ষিপ্ত অর্থ গ্রহণ করে জিবরীল (আলাইহিস সালাম)-এর মুতাওয়াতির হাদীস মানসুখ বিবেচনা করেন।

আব্দুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল ‘আছ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ছালাতের সময় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। তিনি বললেন, সূর্যের উপর দিকের প্রান্তভাগ দেখা না যাওয়া পর্যন্ত ফজর ছালাতের সময় থাকে। যোহরের ছলাতের সময় থাকে আকাশের মধ্যভাগ থেকে সূর্য গড়িয়ে আছরের সময় না হওয়া পর্যন্ত। আছরের ছালাতের সময় থাকে সূর্য বিবর্ণ হয়ে হলুদ বর্ণ ধারণ করার পর উপরের প্রান্তভাগ অদৃশ্য না হওয়া পর্যন্ত …।[৮]

জবাব :
অথচ অপর হাদীছে ‘সূর্য হলুদ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে ছালাত আদায় করাটা মুনাফিকদের লক্ষণ বলা হয়েছে’। তাছাড়া আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত হাদীসে বলা হয়েছে, ‘আছরের শেষ ওয়াক্ত সূর্য হলুদ হওয়া পর্যন্ত’।[৯] এটাতো ওয়াক্ত শেষ হওয়ার সতর্কীকরণ। কেননা ছায়া দ্বিগুণ হওয়ার পর থেকে সূর্য ঘোলাটে হওয়া শুরু করে। তা হলে কীভাবে জিবরীল (আলাইহিস সালাম)-এর হাদীছ মানসূখ হলো? অথচ কাযী ছানাউল্লাহ পানীপথী হানাফী (রাহিমাহুল্লাহ) লিখেছেন, ‘জিবরীল (আলাইহিস সালাম)-এর ইমামতির হাদীছে আছরের ছালাতের শেষ ওয়াক্ত প্রত্যেক জিনিসের ছায়া তার দ্বিগুণ হওয়া পর্যন্ত বর্ণনা করা হয়েছে, তা নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর এই উক্তি দ্বারা রহিত হয়েছে যে, ‘আছরের ওয়াক্ত সূর্য হলুদ বর্ণ ধারণ না করা পর্যন্ত’। পক্ষান্তরে এর পূর্বেই তিনি লিখেছেন, নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে প্রমাণিত- সূর্য হলুদ বর্ণ ধারণ করা পর্যন্ত আছরের ছালাত বিলম্ব করা অতিশয় মাকরূহ। কেননা ঐ সময় ছালাত আদায় করার উপর নিষেধাজ্ঞা আরাপে করা হয়েছে এবং তাকে শয়তানের সাথেও সম্পর্ক যুক্ত করা হয়েছে’।[১০]

ফাতাওয়া আলমগীরীর ফৎওয়া

হানাফী ফাতাওয়া গ্রন্থে ‘ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী’ নামক কিতাবে আছরের ছালাতের ওয়াক্ত সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, ‘সবসময় আছরের ছালাত বিলম্বে আদায় করা মুস্তাহাব, যতক্ষণ না সূর্যের রং বিবর্ণ হয়। সূর্যের গোলকের পরিবর্তন মূলত ধর্তব্য। আলো বিবর্ণ হওয়া ধর্তব্য নয়। যখন সূর্যের গোলক এমন হয়ে যায় যে, এর প্রতি নজর করলে চোখ ধাঁধিয়ে না যায়, তখন মনে করতে হবে যে, সূর্যের মধ্যে পরিবর্তন হয়েছে। এমন না হলে মনে করতে হবে যে, সূর্যের মধ্যে পরিবর্তন হয়নি’।[১১] অনুরূপ হানাফী ফিকহ ‘আল- হিদায়া’ গ্রন্থেও বলা হয়েছে।[১২] লক্ষণীয় বিষয় হল- হানাফী মাযহাবে আছরের সময় সেটা যে পর্যন্ত ইচ্ছাকৃত বিলম্ব করাটা মাকরুহ।

অনুরূপ অপর একটি বর্ণনা হল, ইকরামা (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘একবার আমরা এক জানাযায় আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি আছরের ছালাত আদায় করলেন না এবং চুপ ছিলেন। অবশেষে আমরা বারবার তার নিকট ছালাত আদায়ের জন্য অনুরোধ জানালাম। কিন্তু তিনি আছরের ছালাত আদায় করলেন না, যতক্ষণ না আমরা মদীনার সর্বাপেক্ষা উঁচু পাহাড়ের চূড়ায় সূর্য (আলো) দেখতে পাই’।[১৩]

সুধী পাঠক! এই হাদীছে কেবল এতটুকু বুঝা যায় যে, এটি আবূ হুরায়রার (রাযিয়াল্লাহু আনহু) -এর ব্যক্তিগত বা ব্যতিক্রম কারণবিশিষ্ট আমল। কেননা আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) নিজেই নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে সঠিক ওয়াক্তে আছরের ছালাত আদায়ের অন্যতম বর্ণনাকারী। এছাড়া এ ঘটনাটি জানাযার ছালাতের সাথে সংশ্লিষ্ট। অথচ হানাফীগণ এই ব্যতিক্রম বিষয় উল্লেখকৃত হাদীছ দ্বারা স্থায়ীভাবে আছরের ছালাতের দলীল নিয়ে থাকেন। তাছাড়া এ হাদীছে স্পষ্টভাবে সময়ের কথা উল্লেখ নেই। পক্ষান্তরে এক ছায়ার হাদীছ স্পষ্ট। আর উছূলে ফিকৃহের নীতি হচ্ছে, অস্পষ্ট হাদীছকে স্পষ্ট হাদীছের বিপরীতে দাঁড় করানো যাবে না। তাছাড়া সনদে হাকাম ইবনু আবান আছেন, যার সম্পর্কে হাফেয ইবনু হাজার (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, الحكم ابن أبان العدني أبو عيسى صدوق عابد وله أوهام ‘হাকাম ইবনু আবান আল-আদনান আবূ ঈসা হল- ছুদূকুন ‘আবিদ, তবে তার ভুল হত’।[১৪]

অন্যত্র তিনি বলেন, ‘ইবনু হিব্বান (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁর সিকাতে উল্লেখ করেছেন ও বলেছেন যে, ربما أخطأ ‘তিনি কখনো কখনো খুব ভুল করতেন’। ইমাম ইবনুল ‘আদী (রাহিমাহুল্লাহ) হুসাইন বিন ঈসার আলোচনাতে বলেছেন, ‘হাকাম ইবনু আবানের মধ্যে দুর্বলতা আছে’। ইবনুল খালফ (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁকে ইবনু নুমাইর, ইবনুল মাদীনী ও আহমাদ (রাহিমাহুল্লাহ) থেকে ছিক্বাহ হিসাবে উল্লেখ করেছেন। আর ইবনু খুযায়মাহ (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁর ‘ছহীহ’-তে (হা/৮৪০) বলেছেন, تكلم أهل المعرفة بالحديث في الاحتجاج بخبره ‘হাদীছ বিশেষজ্ঞগণ তার হাদীছকে দলীল হিসাবে পেশ করার ব্যাপারে সমালোচনা করেছেন’।[১৫]

উপরিউক্ত আলোচনায় বুঝা যাচ্ছে যে, হাকাম ইবনু আবান ছিক্বাহ হলেও ভুলকারী। সুতরাং এ পর্যায়ে অন্য হাদীছের সাক্ষ্য ছাড়া তাঁর একক বর্ণনা যঈফ হিসাবে গণ্য হবে। বিশেষ করে আবু হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণিত আছরের ওয়াক্ত সম্পর্কিত ছহীহ হাদীছের খেলাফ হওয়ায় বর্ণনাটি দলীল হিসাবে প্রয়োগযোগ্য নয়।

আছরের ছালাতের ওয়াক্ত সম্পর্কে কয়েকজন হানাফী বিশেষজ্ঞ আলেমের সিদ্ধান্ত

(এক) ইমাম আবূ হানীফা (রাহিমাহুল্লাহ)-এর ছাত্র ইমাম মুহাম্মাদ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন,

تقول إذا زاد الظل على المثل فصار مثل الشيء وزيادة من حين زالت الشمس فقد دخل وقت العصر وأما أبو حنيفة فإنه قال لا يدخل وقت العصر حتى يصير الظل مثليه

‘আমরা বলি, সূর্য ঢলে যাওয়ার পর যখন ছায়া সমপরিমাণ ও কিছুটা বেশি হয়, তখন আছরের ওয়াক্ত শুরু হয়। কিন্তু আবূ হানীফা (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, আছরের ওয়াক্ত শুরু হবে না ছায়া দ্বিগুণ না হওয়া পর্যন্ত’।[১৬]

(দুই) হানাফী ফিকহ ‘আল-কুদুরী’ নামক গ্রন্থে বলা হয়েছে,قال ابويوسف ومحمد اذا صار ظل كل شي مثله ‘ইমাম আবূ ইউসুফ (রাহিমাহুল্লাহ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, যখন প্রত্যেক ছায়া সমপরিমাণ হয় (তখন যোহরের ওয়াক্ত শেষ হয়)’।[১৭]

(তিন) কাযী ছানাউল্লাহ পানীপথী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, وقت ظهر بعد زوال ست تا سايه هر هر چیز کے برابر سايه تك باقی رہتا ہے

‘যোহরের ওয়াক্ত সূর্য ঢলার সময় থেকে প্রত্যেক বস্তুর ছায়া বরাবর হওয়া পর্যন্ত বাকি থাকে’।[১৮]

(চার) রশীদ আহমাদ দেওবন্দী হানাফী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন,

ہاں وقت مثل بندہ کے نزدیک زیادہ قوی ہے۔ روایت حدیث سے ثبوت مثل کا ہوتا ہے۔ دو مثل کا ثبوت حدیث سے نہیں، بناء علیہ ایک مثل پر عصر ہوجاتی ہے۔ گو احتیاط دوسری روایت میں ہے

‘তবে হ্যাঁ একগুণ ছায়া, এই বান্দার নিকট বেশি শক্তিশালী। হাদীছের বর্ণনা দ্বারা একগুণ ছায়া প্রমাণিত। দ্বিগুণ ছায়া পরিমাণের বিষয়টি হাদীছ থেকে প্রমাণিত নয়। ফলে ছায়া একগুণ হলে আছরের ওয়াক্ত হয়ে যায়। যদিও সাবধানতা রয়েছে দ্বিতীয় মতে’।[১৯] অন্যত্র তিনি বলেছেন,

ایک مثل کا مذہب قوی ہے لہذا اگر ایک مثل پر عصر پڑھے تو ادا ہوجاتی ہے اعادہ نہ کرے۔ اللہ تعالی علم

‘একগুণ ছায়ার মাযহাব শক্তিশালী। সুতরাং যদি একগুণ ছায়াতে আছর পড়া হয়, তবে ছালাত আদায় হয়ে যাবে, পুনরায় আদায় করবে না। আল্লাহই সর্বজ্ঞ’।[২০]

(পাঁচ) আব্দুল হাই লাক্ষ্ণৌভী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, والانصاف في هذا المقام ان احاديث المثل صريحة صحيحة واخبار المثلين ليست صريحة في أنه لا يدخل وقت العصر الى الممثلين ‘এ ক্ষেত্রে ইনছাফের দাবি হল, এক ছায়া পরিমাণের হাদীছ সুস্পষ্ট ও ছহীহ। পক্ষান্তরে দ্বিগুণ ছায়ার সুস্পষ্টতা এ মর্মে নেই যে, ছায়া দ্বিগুণ না হওয়া পর্যন্ত আছর শুরু হয় না’।[২১] তিনি আরও বলেছেন,

وقال أبو حنيفة اول وقت العصر من حين يصير الظل مثلين وهذا خلاف الآثار وخلاف الجمهور وهو قول عند الفقهاء من أصحابه وغيرهم مهجور

‘ইমাম আবু হানীফা (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, আছরের প্রথম ওয়াক্ত তখন হয় যখন ছায়া দ্বিগুণ হয়। কিন্তু উক্তিটি হাদীছের খেলাফ। তাছাড়া অধিকাংশ আলেমেরও খেলাফ। আর এই উক্তি তাঁর শিষ্য ও অন্য ফক্বীহদের নিকট মাহজূর বা পরিত্যক্ত’।[২২]

(চলবে ইনশাআল্লাহ)

* এম.ফিল গবেষক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়; শিক্ষক, মহব্বতপুর দারুল উলূম আলিম মাদরাসা, মোহনপুর, রাজশাহী।

তথ্যসূত্র :
[১]. তিরমিযী, হা/১৬১; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৬৫২১; মিশকাত, হা/৬১৯।
[২]. মির‘আতুল মাফাতিহ শারহু মিশকাতুল মাছাবীহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৩২৬।
[৩]. আছারুস সুনান, হা/১৯৯- এর পরবর্তী আলোচনা।
[৪]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৫৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/৬১৩৩।
[৫]. আল-কাসানী আল-হানাফী, বাদা‘ইস সানা‘ঈ ফী তারবীবিশ শারা‘ই, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩১৫।
[৬]. ইবনু হাজার ‘আসক্বালানী, ফাৎহুল বারী শারহু ছহীহিল বুখারী, ২য় খণ্ড, পৃ. ৪০।
[৭]. ইবনুল ক্বাইয়িম আল-জাওযিয়্যাহ, ই‘লামুল মুয়াক্কিঈন, ২য় খণ্ড, পৃ. ৪০৪।
[৮]. ছহীহ মুসলিম, হা/৬১২।
[৯]. তিরমিযী, হা/১৫১; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/১৬৯৬; আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) ‘ছহীহ’ বলেছেন এবং যুবাইর আলী যাঈ (রাহিমাহুল্লাহ) ‘হাসান’ বলেছেন।
[১০]. তাফসীরে মাযহারী (ইফাবা), পৃ. ৩৩৫২, সূরা আন-নিসার ১০৩ নং আয়াতের তাফসীর।
[১১]. ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী (ইফাবা), ১ম খণ্ড, পৃ. ১৪৪-১৪৫।
[১২]. আল- হিদায়াহ (ইফাবা), ১ম খণ্ড, পৃ. ৬১; আশরাফুল হিদায়াহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৭৪।
[১৩]. তাহাবী শরীফ (ইফাবা), হা/১০৬২; হাসান বিন আবান স্মৃতিশক্তির দিক থেকে যঈফ।
[১৪]. তাক্বরীবুত তাহযীব, পৃ. ১৭৪, রাবী নং-১৮৩৮।
[১৫]. তাহযীবুত তাহযীব, ২য় খণ্ড, পৃ. ৪২৩।
[১৬]. মুওয়াত্তা মুহাম্মাদ (ঢাকা : আহসান পাবলিকেশন্স, তাবি), হা/৮৭, পৃ. ৪৫।
[১৭]. আল-কুদুরী, পৃ. ১৯।
[১৮]. মা লা বুদ্দা মিনহু, পৃ. ২৯।
[১৯]. মাকাতিব রশিদিয়্যাহ, পৃ. ২২।
[২০]. ফাতাওয়া রশিদিয়্যাহ, পৃ. ৯৮।
[২১]. আত-তা’লিকুল মুমাজ্জাদ, পৃ. ৪৫।
[২২]. প্রাগুক্ত, পৃ. ৪৩।




আল্লাহর ভালোবাসা - ড. মুস্তফা মনজুর
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ (২৩তম কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎকারী - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
মাতুরীদী মতবাদ ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাসমূহ (২০তম কিস্তি) - আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহীম
এমফিল ও পিএইচডি : গবেষণার প্রকৃতি ও পদ্ধতি - ড. মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ
রামাযানে ছিয়াম রাখার বিধান ও না রাখার পরিণাম - আল-ইখলাছ ডেস্ক
অহংকার করা ও তার পরিণাম - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় যুবসমাজ (৬ষ্ঠ কিস্তি) - ড. মেসবাহুল ইসলাম
ইবাদতের দাবী - হাসিবুর রহমান বুখারী
কালো কলপ ব্যবহারের শারঈ বিধান - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
কুরআন মাজীদের উপর বিদ‘আতের আবরণ - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
পরবর্তীদের তুলনায় সালাফদের ইলমী শ্রেষ্ঠত্ব (৩য় কিস্তি) - অনুবাদ : আযহার বিন আব্দুল মান্নান

ফেসবুক পেজ