পোশাক-পরিচ্ছেদ
কেউ নতুন কাপড় পরিধান করলে তার জন্য দু‘আ
দু‘আ-১ : আবূ নাদরাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ছাহাবীদের কেউ নতুন কাপড় পরলে তাকে বলা হত,
تُبْلِىْ وَيُخْلِفُ اللّٰهُ تَعَالَىْ
উচ্চারণ : ‘তুবলী ওয়া ইউখলিফুল্ল-হু তা‘আলা’।
অর্থ : ‘এ কাপড় যেন তোমার দ্বারা পুরাতন হয় এবং মহান আল্লাহ যেন এর পরে তোমায় আরো কাপড় পরিধান করান’ (আবু দাঊদ, হা/৪০২০, সনদ ছহীহ)।
দু‘আ-২ : ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওমর এর পরনে একটি সাদা জামা দেখতে পেয়ে বলেন, তোমার এ কাপড় ধোয়া না নতুন? তিনি বলেন, না, বরং ধৌত করা। তিনি বলেন,
اِلْبَسْ جَدِيْدًا وَعِشْ حَمِيْدًا وَمُتْ شَهِيْدًا
উচ্চারণ : ‘ইলবাস জাদীদান ওয়া ‘ইস হামীদান ওয়া মুত শাহীদান’।
অর্থ : ‘নতুন কাপড় পরিধান কর, উত্তম জীবন যাপন কর এবং শহীদী মৃত্যুবরণ কর’ (ইবনু মাজাহ, হা/৩৫৫৮, সনদ ছহীহ)।
দু‘আ-৩ : সাঈদ ইবনুল ‘আছ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উম্মু খালিদকে কালো রঙ্গের ডোরাদার ছোট একটি পশমী চাঁদর পরিয়ে দিয়ে বললেন,
سَنَاهْ سَنَاهْ
উচ্চারণ : ‘সানাহ্ সানাহ্’।
অর্থ : ‘খুব সুন্দর! খুব সুন্দর! (ছহীহ বুখারী, হা/৩০৭১, ৩৮৭৪; আবূ দাঊদ, হা/৪০২৪)।
কাপড় খুলে রাখার সময় দু‘আ
দু‘আ-১ : কাপড় খুলে রাখার সময় বলবে,
بِسْمِ اللّٰهِ
উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহ’।
অর্থ : ‘আল্লাহর নামে শুরু করছি’।
ফযীলত : ‘শয়তান ও জিনের চক্ষু এবং মানুষের লজ্জাস্থানের মধ্যে পর্দা হচ্ছে যখন তোমাদের কেউ জামা-কাপড় খুলে, তখন بِسْمِ اللّٰهِ ‘বিসমিল্লাহ’ বলা (হাদীছটি আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত; মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা, হা/৩০৩৫৪; মাওসূ‘আতু আত্বরাফিল হাদীছ, হা/২০৭২৯০; মুল্লা ‘আলী ক্বারী, মিরক্বাতুল মাফাতীহ, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৮৪; ছহীহুল জামে‘, হা/৫৯২৩, সনদ ছহীহ )।
খাদ্য ও পানীয়
দু‘আ-১ : খাদ্য খাওয়া ও পানীয় পান করার পূর্বে বলবে,
بِسْمِ اللّٰهِ
উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহ’।
অর্থ : ‘আল্লাহর নামে শুরু করছি’ (ছহীহ বুখারী, হা/৫৩৭৬; ছহীহ মুসলিম, হা/২০২২; মিশকাত, হা/৪১৫৯)। তবে কেউ যদি শুরুতে বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে যায়, তখন সে যেন বলে,
بِسْمِ اللّٰهِ أوَّلَهُ وَآخِرَهُ
উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহি আওয়্যালাহু ওয়া আ’খিরাহু’।
অর্থ : ‘খাওয়ার শুরু ও শেষ আল্লাহর নামে’ (আবূ দাঊদ, হা/৩৭৬৭; তিরমিযী, হা/১৮৫৮; মিশকাত, হা/৪২০২)।
ফযীলত : ১. হুযায়ফা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘সেই খাদ্যকে শয়তান নিজের জন্য হালাল করে নেয়, যে খাদ্যে ‘বিসমিল্লাহ’ বলা হয় না’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২০১৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৩২৯৭; মিশকাত, হা/৪১৬০)। ২. জাবের (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যখন কোন ব্যক্তি তার ঘরে প্রবেশ করে এবং প্রবেশকালে ও খাওয়ার সময় আল্লাহকে স্মরণ করে, তখন শয়তান বলে, এই ঘরে তোমাদের জন্য রাত্রি যাপনের সুযোগ নেই এবং খাদ্যও পাওয়া যাবে না। আর যখন কেউ ঘরে প্রবেশ করে এবং প্রবেশের সময় আল্লাহর নাম না নেয়, তখন শয়তান বলে, তোমরা রাত্রি যাপনের স্থান পেয়েছ। আর যখন সে খাওয়ার সময়ও আল্লাহর নাম না নেয়, তখন সে বলে, তোমরা রাত্রি যাপন ও খাওয়া উভয়টির সুযোগ লাভ করেছ’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২০১৮; আল-আদাবুল মুফরাদ, হা/১০৯৬; ইবনু মাজাহ, হা/৩৮৮৭; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৮১৯; মিশকাত, হা/৪১৬১)।