মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর দুনিয়াবিমুখতা
(১৩তম কিস্তি)
যুহদ-৯১ : দিনের শুরুতে চার রাকা‘আত ছালাত আদায়ের গুরুত্ব
১০৩). নু‘আইম ইবনু হাম্মাদ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
صَلِّ لِيْ ابْنَ آدَمَ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ فِيْ أَوَّلِ النَّهَارِ أَكْفِكَ آخِرَهُ
‘হে আদম সন্তান! আমার উদ্দেশ্যে দিনের শুরুতে চার রাকা‘আত ছালাত আদায় কর; দিবসের শেষ অবধি আমিই তোমার জন্য যথেষ্ট’।[১]
যুহদ-৯২ : ওযূ অবস্থায় ছালাতের স্থানে বসে থাকার মর্যাদা
১০৪). আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
اَلْمَلَائِكَةُ تُصَلِّى عَلَى أَحَدِكُمْ مَا دَامَ فِىْ مُصَلَّاهُ الَّذِىْ صَلَّى فِيْهِ مَا لَمْ يُحْدِثْ تَقُوْلُ اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لَهُ اَللّٰهُمَّ ارْحَمْهُ
‘তোমাদের কেউ মসজিদে ছালাতের পর হাদাসের (ওযূ ভঙ্গের) পূর্ব পর্যন্ত যেখানে সে ছালাত আদায় করেছে সেখানে যতক্ষণ বসে থাকে ততক্ষণ ফেরেশতাগণ তার জন্য দু‘আ করতে থাকেন। তাঁরা বলেন, ‘হে আল্লাহ! তাকে ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ! তার উপর রহম করুন’।[২]
যুহদ-৯৩ : পেট ভরে খাওয়ার জন্য তার নিকট ভাল মানের খেজুর থাকত না
১০৫). নু‘মান ইবনু বাশীর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন,
أَلَسْتُمْ فِيْ طَعَامٍ وَشَرَابٍ مَا شِئْتُمْ؟ لَقَدْ رَأَيْتُ نَبِيَّكُمْ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَا يَجِدُ مِنَ الدَّقَلِ مَا يَمْلَأُ بَطْنَهُ
‘তোমরা যা চাও তাই কি পানাহার করছ না? অথচ আমি তোমাদের নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এমন অবস্থায় দেখেছি যে, নিম্নমানের খেজুরও এই পরিমাণ তাঁর জুটেনি, যার দ্বারা তাঁর নিজ উদর পূরণ হতে পারে’।[৩]
যুহদ-৯৪ : জাহান্নামের আগুনের ব্যাপারে সতর্কীকরণ
১০৬). নু‘মান ইবনু বাশীর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
أُنْذِرُكُمُ النَّارَ أُنْذِرُكُمُ النَّارَ أُنْذِرُكُمُ النَّارَ حَتَّى لَوْ كَانَ فِيْ مَقَامِيْ هَذَا وَهُوَ بِالْكُوْفَةِ سَمِعَهُ أَهْلُ السُّوْقِ حَتَّى وَقَعَتْ خَمِيْصَةٌ كَانَتْ عَلَى عَاتِقِهِ عَلَى رِجْلَيْهِ
‘আমি তোমাদেরকে (জাহান্নামের) আগুনের ব্যাপারে সতর্ক করছি। আমি তোমাদেরকে (জাহান্নামের) আগুনের ব্যাপারে সতর্ক করছি। আমি তোমাদেরকে (জাহান্নামের) আগুনের ব্যাপারে সতর্ক করছি। একপর্যায়ে তার চাদরের একটি প্রান্ত কাঁধ থেকে পড়ে যায়; নু‘মান ইবনু বাশীর কুফার মিম্বরে দাড়িয়ে বলছিলেন, (নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এতো উচ্চ আওয়াজে কথাগুলো বলেছেন যে তার অনুকরণ করতে গেলে) আমি এখানে থেকে বাজারের লোকদেরকে (সেই আওয়াজ) শুনাতে পারব’।[৪]
যুহদ-৯৫ : জান্নাতের অল্প একটু জায়গা আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যস্থিত সবকিছু থেকে উত্তম
১০৭). আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
إِنَّ مَوْضِعَ سَوْطٍ فِى الْجَنَّةِ لَخَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيْهَا اقْرَءُوْا إِنْ شِئْتُمْ (فَمَنۡ زُحۡزِحَ عَنِ النَّارِ وَ اُدۡخِلَ الۡجَنَّۃَ فَقَدۡ فَازَ وَ مَا الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَاۤ اِلَّا مَتَاعُ الۡغُرُوۡرِ)
‘একটি চাবুক রাখার সমপরিমাণ জান্নাতের জায়গা সমগ্র পৃথিবী ও তার মধ্যকার সব কিছুর চেয়ে উত্তম। তোমরা চাইলে এ আয়াত পাঠ করতে পারো (আল্লাহ তা‘আলা বলেন) ‘ক্বিয়ামতের দিন যাকে আগুন হতে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে দাখিল করান হবে সেই সফলকাম। বস্তুত পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগ ব্যতীত কিছুই নয়’ (সূরা আলে ‘ইমরান : ১৮৫)।[৫]
(চলবে ইনশাআল্লাহ)
তথ্যসূত্র :
[১]. মুসনাদে আহমাদ, হা/২২৫২৪; তিরমিযী, হা/৪৭৫; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/২৫৩৩; দারেমী, হা/১৪১৫, সনদ ছহীহ; মিশকাত, হা/১৩১৩।
[২]. ছহীহ বুখারী, হা/৪৪৫, ৬৫৯; আবূ দাঊদ, হা/৪৬৯; নাসাঈ, হা/৭৩৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/৮১০৯; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/১৭৫৩; দারেমী, হা/১৪০৭, সনদ ছহীহ।
[৩]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৯৭৭; মিশকাত, হা/৪১৯৫।
[৪]. ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৬৪৪, ৬৬৭; সনদ হাসান।
[৫]. ছহীহ বুখারী, হা/৩২৫০; তিরমিযী, হা/৩০১৩, সনদ হাসান।