মুহাম্মাদ (ﷺ) -এর দুনিয়াবিমুখতা
-আল-ইখলাছ ডেস্ক
(১২তম কিস্তি)
যুহদ-৮৬ : দানশীলের সম্পদ বৃদ্ধি ও কৃপণের সম্পদ ধ্বংসের জন্য দু’জন ফেরেশতার প্রতিদিন আল্লাহর নিকট দু‘আ করা
৯৯. আবুদ্দারদা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
مَا طَلَعَتْ شَمْسٌ قَطُّ إِلَّا بِجَنَبَتَيْهَا مَلَكَانِ يُنَادِيَانِ يُسْمِعَانِ أَهْلَ الأَرْضِ إِلَّا الثَّقَلَيْنِ يَا أَيُّهَا النَّاسُ هَلُمُّوْا إِلَىْ رَبِّكُمْ فَإِنَّ مَا قَلَّ وَكَفَى خَيْرٌ مِمَّا كَثُرَ وَأَلْهَى وَلَا آبَتْ شَمْسٌ قَطُّ إِلَّا بُعِثَ بِجَنَبَتَيْهَا مَلَكَانِ يُنَادِيَانِ يُسْمِعَانِ أَهْلَ الأَرْضِ إِلَّا الثَّقَلَيْنِ اَللَّهُمَّ أَعْطِ مُنْفِقًا خَلَفًا وَأَعْطِ مُمْسِكًا تَلَفًا.
‘সূর্যোদয়ের সময় দু’জন ফেরেশতা সূর্যের দু’পাশ থেকে দুনিয়াবাসীকে শুনিয়ে ডাকতে থাকে, তোমাদের রবের দিকে এসো। যে আমলের পরিমাণ কম, কিন্তু পূর্ণ নিষ্ঠার সাথে করা হয় তা ঐ আমলের তুলানায় উত্তম যার পরিমাণ বেশি, কিন্তু খামখেয়ালিভাবে করা হয়। কেবল মানুষ ও জিন এ আওয়াজ শুনতে পায় না। আবার সুর্যাস্তের সময় দু’জন ফেরেশতাকে সূর্যের দু’পাশে পাঠানো হয় যারা দুনিয়াবাসীকে শুনিয়ে ডাকতে থাকে, হে আল্লাহ! দাতাকে তার দানের উত্তম প্রতিদান দিন। আর অপরজন বলেন, হে আল্লাহ! কৃপণকে ধ্বংস করে দিন। কেবল মানুষ ও জিন এ আওয়াজ শুনতে পায় না।[১]
যুহদ-৮৭ : ঈমান হল আল্লাহর উপর ভরসা করা
১০০. সাঈদ ইবনু জুবাইর (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
التَّوَكُّلُ عَلَى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ جِمَاعُ الْإِيْمَانِ
‘ঈমানের সারকথা হল আল্লাহ তা‘আলার উপর ভরসা (তাওয়াক্কুল) করা’।[২]
যুহদ-৮৮ : গুরুত্ব লাভের অধিকারী কয়েকটি বিষয়
১০১. আব্দুল্লাহ ইবনু আবিল হুযাইল (রাহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার এক সাথী রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন,
تَبًّا لِلذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ قَالَ عُمَرُ يَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَوْلُكَ تَبًّا لِلذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ فَمَا تَأْمُرُنَا أَوْ مَا نَصْنَعُ قَالَ لِسَانًا ذَاكِرًا وَقَلْبًا شَاكِرًا وَزَوْجَةً تُعِيْنُ عَلَى الْآخِرَةِ
‘স্বর্ণ-রূপা ধ্বংস হোক!’ ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি তো স্বর্ণ-রূপার ধ্বংস কামনা করছেন; তাহলে আমাদেরকে কিসের আদেশ করছেন অথবা আমরা কী করব? রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আল্লাহর যিকিরকারী জিহ্বা, কৃতজ্ঞ মন ও পরকালের (নাজাত লাভে) সহায়তাকারী স্ত্রী (এগুলোকে গুরুত্ব দাও)’।[৩]
যুহদ-৮৯ : আল্লাহর রাস্তায় সকাল বা বিকাল ব্যয় করার মর্যাদা
১০২. সাহল ইবনু সাদ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
لَغَدْوَةٌ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ أَوْ رَوْحَةٌ خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيْهَا وَلَمَوْضِعُ سَوْطِ أَحَدِكُمْ مِنَ الْجَنَّةِ خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيْهَا
‘আল্লাহর রাস্তায় একটি সকাল বা একটি বিকাল ব্যয় করা সমগ্র পৃথিবী ও তদস্থিত সকল বস্তুর চেয়ে অধিক উত্তম; আর তোমাদের কারো চাবুক/লাঠি রাখতে যেটুকু জায়গা দরকার, জান্নাতের সেটুকু জায়গা সমগ্র পৃথিবী ও তদস্থিত সকল বস্তুর চেয়ে অধিক উত্তম’।[৪]
যুহদ-৯০ : অসুস্থকে দেখতে যাওয়া ও জানাযাকে অনুসরণ করার নির্দেশ
১০৩. বারা ইবনু আযিব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
أَمَرَنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعِيَادَةِ الْمَرِيْضِ وَاتِّبَاعِ الْجَنَائِزِ
‘রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়া ও জানাযার অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন’।[৫]
(চলবে ইনশাআল্লাহ)
তথ্যসূত্র :
[১]. ছহীহ বুখারী, হা/১৪৪২; ছহীহ মুসলিম, হা/১০১০; মুসনাদে আহমাদ, হা/২১৭৬৯; ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/৩৩২৯, সনদ ছহীহ।
[২]. শু‘আবুল ঈমান, হা/১২৬২; মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ, হা/৩০২০৫।
[৩]. মুসনাদে আহমাদ, হা/২৩১৫০, সনদ হাসান লি গায়রিহি। তবে রাবী ছিক্বাহ এবং ছহীহ।
[৪]. ছহীহ বুখারী, হা/২৭৯২; ছহীহ মুসলিম, হা/১৮৮০; তিরমিযী, হা/১৬৫১; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৫৬০১।
[৫]. ছহীহ বুখারী, হা/৫৮৬৩; আদাবুল মুফরাদ, হা/৯২৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮৬৬৭।
প্রসঙ্গসমূহ »:
জীবন কথা