উত্তর : এমন পশু দিয়ে কুরবানী করা জায়েয। কারণ কুরবানীর পশুর যে ত্রুটিগুলোর কারণে কুরবানী করা যায় না সেগুলোর মধ্যে তারা গর্ভধারণকে উল্লেখ করেননি। শাইখ মুহাম্মদ ইবনু ইবরাহীম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যদি পশুটি কুরবানীর ক্ষেত্রে দোষণীয় দোষগুলো থেকে মুক্ত হয়, সেক্ষেত্রে গর্ভবতী ছাগল দিয়ে কুরবানী করা সঠিক, যেমনিভাবে অগর্ভবতী ছাগল দিয়েও সঠিক’ (ফাতাওয়া ওয়া রাসায়িলিশ শাইখ মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম, ৬/১৪৬ পৃ.)।
দ্বিতীয়তঃ ইমাম ইবনে কুদামা (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যদি গর্ভস্থ বাচ্চাটি স্থিতিশীল জীবন নিয়ে জীবিত অবস্থায় বের হয় এবং যব্হ করার সুযোগ পায়, কিন্তু যব্হ না করে এক পর্যায়ে মারা যায়, তাহলে সে পশুটি যব্হকৃত হিসাবে গণ্য হবে না। ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যদি জীবিত অবস্থায় বের হয় তাহলে অবশ্যই যব্হ করতে হবে। কেননা সেটি অন্য একটি প্রাণ’ (আল-মুগনী, ৯/৩২১ পৃ.)। আর যদি মৃত অবস্থায় বের হয় তাহলে জামহূর আলিমের মতে, সেটিও খাওয়া যাবে। কেননা মাকে যব্হ করার ফলে সেটির উপরে যব্হ করার বিধান প্রযোজ্য হবে। আবূ সাঈদ খুদরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, ‘আমরা রাসূল (ﷺ)-এর নিকট গর্ভবতী পশুর পেটের বাচ্চা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলেন, তোমরা ইচ্ছা করলে তা খেতে পারো। কেননা তার মায়ের যব্হ-ই তার যব্হ-এর জন্য যথেষ্ট (আবূ দাঊদ, হা/২৮২৭, ২৮২৮; তিরমিযী, হা/১৪৭৬; ইবনু মাজাহ, হা/৩১৯৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/১১৩৬১; ছহীহুল জামি‘, হা/৩৪৩১)।
শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যা (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘গর্ভবতী পশু দিয়ে কুরবানী করা জায়েয। যদি কুরবানীর পশুর গর্ভস্থ সন্তান মৃত অবস্থায় বের হয় তাহলে ইমাম শাফিঈ, ইমাম আহমাদ ও অন্যন্য আলিমদের নিকট তার মায়ের যব্হ করাটাই তার যব্হ, চাই তার চুল গজিয়ে থাকুক কিংবা না গজিয়ে থাকুক। আর যদি জীবিত অবস্থায় বের হয় তাহলে যব্হ করতে হবে। ইমাম মালিকের মাযহাব হচ্ছে- চুল গজালে হালাল, অন্যথা নয়। ইমাম আবু হানিফার মতে, বের হওয়ার পর যবাই করা ছাড়া সেটা হালাল হবে না (মাজমূঊল ফাতাওয়া, ২৬/৩০৭ পৃ.)। ইমাম ইবনুল ক্বাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘ভ্রƒণের গোশতে রক্ত জমে থাকার কারণে তা উত্তম নয়, তবে তা হারামও নয়। কারণ নবী (ﷺ) বলেছেন, ‘ভ্রƒণের যব্হ তার মায়ের যব্হয়ের মাধ্যমেই হয়ে যায় (যাদুল মা‘আদ, ৪/৩৭৮ পৃ.)।
প্রশ্নকারী : জাহাঙ্গীর, নাটোর।