উত্তর : দিনে ও রাত্রে পাঁচটি সময়ে ছালাত আদায় করা নিষিদ্ধ। যথা:
১- আছরের ছালাতের পর সূর্য না ডোবা পর্যন্ত। এ সময় আর কোন ছালাত নেই।
২- ফজরের ছালাতের পর সূর্য না ওঠা পর্যন্ত।
৩- ঠিক সূর্য উদয় হওয়ার পর থেকে একটু উঁচু না হওয়া পর্যন্ত।
৪- সূর্য ঠিক মাথার উপর আসার পর থেকে একটু ঢলে না যাওয়া পর্যন্ত।
৫- সূর্য ডোবার কাছাকাছি হওয়া থেকে ডুবে না যাওয়া পর্যন্ত। যেমনটি হাদীছে এসেছে, ইবনু ‘আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন,
شَهِدَ عِنْدِيْ رِجَالٌ مَرْضِيُّوْنَ وَأَرْضَاهُمْ عِنْدِيْ عُمَرُ أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ نَهَى عَنِ الصَّلَاةِ بَعْدَ الصُّبْحِ حَتَّى تَشْرُقَ الشَّمْسُ، وَبَعْدَ الْعَصْرِ حَتَّى تَغْرُبَ.
‘কয়েকজন আস্থাভাজন ব্যক্তি- যাঁদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলেন উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহু) আমাকে বলেছেন যে, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) ফজরের পর সূর্য উজ্জ্বল হয়ে না উঠা পর্যন্ত এবং আছরের পর সূর্য অস্তমিত না হওয়া পর্যন্ত ছালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন’ (বুখারী, হা/৫৫৪; মুসলিম, হা/৮২৬)। ইবনু উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুম) বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন,
إِذَا طَلَعَ حَاجِبُ الشَّمْسِ فَأَخِّرُوا الصَّلَاةَ حَتَّى تَرْتَفِعَ، وَإِذَا غَابَ حَاجِبُ الشَّمْسِ فَأَخِّرُوا الصَّلَاةَ حَتَّى تَغِيْبَ.
‘যখন সূর্যের উপরিভাগ উদিত হয়, তখন পূর্ণ আলোকিত না হওয়া পর্যন্ত ছালাত আদায় করবে না এবং যখন সূর্যের এক পার্শ্ব অস্তমিত হয়, তখন পূর্ণ অস্ত না হওয়া পর্যন্ত ছালাত আদায় করা থেকে বিরত থাকবে’ (ছহীহ বুখারী, হা/৫৮৩; ছহীহ মুসলিম, হা/৮২৯)।
উল্লেখ্য, কারণ সাপেক্ষ যাবতীয় ছালাত যথার্থ কারণ উপস্থিত হওয়া মাত্র যে কোন সময়েই পড়া যায়। যেমন: (ক) কা‘বা ঘর ত্বাওয়াফের পর দু’রাক‘আত ছালাত। ত্বাওয়াফ শেষ হওয়ার পরেই যে কোন সময়ে ঐ ছালাত পড়া যায়। মহানবী (ﷺ) বলেন, ‘হে আব্দে মানাফের বংশধর! দিবারাত্রের যে কোন সময়ে কেউএ গৃহের ত্বাওয়াফ করে ছালাত পড়লে তাকে তোমরা বাধা দিও না’ (তিরমিযী, হা/৮৬৮; ইবনু মাজাহ, হা/১২৫৪; নাসাঈ, হা/৫৮৫; সনদ ছহীহ, মিশকাত, হা/১০৪৫)। (খ) তাহিয়্যাতুল মাসজিদ দু’ রাক‘আত ছালাত। যে কোনও সময়ে মসজিদ প্রবেশ করে বসার ইচ্ছা করলে বসার পূর্বে এই ছালাত পড়তে হয়। মহানবী (ﷺ) বলেন, ‘তোমাদের কেউ মসজিদ প্রবেশ করলে সে যেন দু’ রাক‘আত ছালাত পড়ার পূর্বে না বসে’ (ছহীহ বুখারী, হা/৪৪৪; মুসলিম, হা/৭১৪)। (গ) সূর্য বা চন্দ্র গ্রহণের ছালাত। মহানবী (ﷺ) বলেন, ‘সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্যতম। কারো জন্ম বা মৃত্যুর কারণে তাতে গ্রহণ লাগে না। সুতরাং গ্রহণ লাগা দেখলে তোমরা আল্লাহর নিকট দু‘আ কর, তকবীর পড়, ছালাত পড় এবং ছাদাক্বাহ কর’ (ছহীহ বুখারী, হা/১০৪০)। (ঘ) জানাযার ছালাত। আছর ও ফজর ছালাতের পরও জানাযার ছালাত পড়া যাবে। অবশ্য শেষোক্ত তিন সময়ে এই ছালাত বৈধ নয়। যেমন পূর্বোক্ত হাদীছে এ কথা বর্ণিত হয়েছে (ছহীহুল জামে‘, পৃ. ১৩০-১৩১)। সুতরাং সাধারণ নফল ছালাত উক্ত সময়গুলোতে নিষিদ্ধ। তবে আছরের পর সূর্য হলুদবর্ণ না হওয়া পর্যন্ত নিষিদ্ধ নয় (সিলসিলা ছহীহাহ, হা/২৫৪৯)।
প্রশ্নকারী : মুহাম্মাদ যুলফিকর, কেশবপুর, যশোর।