উত্তর : গর্ভপাত বা miscarriage-এর পরে নারী কখন নাপাক (নিফাস) গণ্য হবে, তা নির্ভর করে গর্ভের বয়স ও বের হওয়া বস্তুর প্রকৃতির উপর। মূল নিয়ম হল, চার মাস (১২০ দিন) পূর্ণ হওয়ার আগে গর্ভপাত হলে, শিশুর মধ্যে রূহ-আত্মা ফুঁক দেয়া হয় না। অর্থাৎ সেটা রক্ত/গোশতের টুকরো হিসাবে ধরা হয়। চার মাস পূর্ণ হওয়ার পর গর্ভপাত হলে, সেটা মানবশিশু হিসাবে গণ্য হয়। এরপর বাচ্চা জন্মের পরের রক্ত নিফাস হিসাবে বিবেচিত হয়। নবী (ﷺ) বলেছেন, ‘তোমাদের এক একজনকে মাতৃগর্ভে ৪০ দিন পর্যন্ত নুতফা (বীর্য/ডিম্বাণু) আকারে রাখা হয়, তারপর ৪০ দিন মুদগাহ (গোশতের টুকরো) আকারে, তারপর ৪০ দিন আলাক্ব (রক্তপিণ্ড) আকারে, তারপর ফেরেশতা এসে রূহ (আত্মা) ফুঁক দেয়’ (ছহীহ বুখারী, হা/৩২০৮; ছহীহ মুসলিম, হা/২৬৪৩)। শাইখ ইবনে বায (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যদি গর্ভপাত চার মাসের কম বয়সে হয় এবং তাতে মানব আকার স্পষ্ট না হয়, তবে তা নিফাস নয়; বরং সাধারণ রক্ত। সেই রক্তে নারী ইসতিহাযা (অসুস্থতার রক্ত) হিসাবে গণ্য হবে এবং ছালাত-ছিয়াম আদায় করতে হবে’ (মাজমূঊ ফাতওয়া লিইবনি বায, ১০/২১৮ পৃ.)।
যেহেতু মাত্র দুই মাস বা ৬০ দিন পূর্ণ হয়েছে, অর্থাৎ ১২০ দিন হওয়ার পূর্বেই গর্ভপাত হয়েছে, তাই এই রক্ত নিফাসের রক্ত নয়। বরং এটা সাধারণ রক্ত; শরীর থেকে ক্ষরণ হওয়া রক্ত হিসাবে ধরা হবে, যা ইসতিহাযা (অসুস্থতার রক্ত)। এমতাবস্থায় ছালাত ও ছিয়াম আদায় করতে হবে। শুধু সাধারণভাবে পাক-পবিত্রতা (ওযূ/গোসল) ঠিক রাখতে হবে। যদি রক্ত চলমান থাকে, তাহলে ইসতিহাযার নিয়মে প্রতি ওয়াক্ত ছালাতের জন্য ওযূ করতে হবে। কাপড় ও শরীর থেকে রক্ত পরিষ্কার রাখতে হবে।
প্রশ্নকারী : যয়নাব, কক্সবাজার।