উত্তর : পূর্ণাঙ্গ পর্দা করা প্রত্যেক নারীর জন্য অপরিহার্য। তাই এক্ষেত্রে মায়ের কথা মান্য করা যাবে না। কারণ ভালো কাজে পিতা-মাতার আনুগত্য করা অপরিহার্য। কিন্তু যদি তারা ফরয আদায়ে বাধা প্রদান করে কিংবা হারাম কাজে লিপ্ত হতে বাধ্য করে, সেক্ষেত্রে তাদের আনুগত্য করা অপরিহার্য নয় (মাজমুঊল ফাতাওয়া, ৫/৩৮১ পৃ.)। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, لَا طَاعَةَ فِيْ مَعْصِيَةٍ، إنَّمَا الطَّاعَةُ فِي الْمَعْرُوْفِ ‘আল্লাহবিরোধী কাজে কোনরূপ আনুগত্য নেই। আনুগত্য করতে হয় কেবল ন্যায়সঙ্গত কাজে’ (ছহীহ বুখারী, হা/৭২৫৭; ছহীহ মুসলিম, হা/১৮৪০)। অন্যত্র তিনি বলেন, لَا طَاعَةَ لِمَخْلُوْقٍ فِيْ مَعْصِيَةِ الخْاَلِقِ ‘স্রষ্টার অসন্তুষ্টির কাজে সৃষ্টির কোন আনুগত্য নেয়’ (ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল কাবীর, হা/৩৮১; মিশকাত, হা/৩৬২৪; সনদ ছহীহ, ছহীহুল জামি‘, হা/৭৫২০)।
সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া কমিটির আলেমগণ বলেন, ‘আপনার দায়িত্ব পিতা-মাতাকে অনবরত উপদেশ করতে থাকা। অতঃপর যখন আপনার সম্মুখে পরিস্ফুটিত হবে যে, উপদেশ তাদের কোন উপকারে আসছে না, তখন আপনি পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন’ (সূরা আছ-ছাফফাত: ৯৯)। ‘আর যে কেউ আল্লাহকে ভয় করবে, আল্লাহ তার নিষ্কৃতির পথ করে দেবেন’। অন্যত্র তিনি বলেন, ‘আল্লাহকে যে ভয় করবে, তিনি তার সমস্যার সমাধান সহজ করে দেবেন’ (সূরা আত-ত্বালাক্ব: ২,৪)। আপনি আপনার অবস্থা সম্পর্কে সর্বাধিক জ্ঞাত। তাই এমন পথ অন্বেষণ করুন যা আপনাকে আল্লাহ তা‘আলার নৈকট্য অর্জনে সহায়তা করবে’ (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ২৫/২৭৬-২৭৭, ২৬/৩১১-৩১৫ পৃ.)।
পিতা-মাতা যদি অত্যাচারীও হয়, তবুও তাদের পরিত্যাগ করা যাবে না। তাদের স্নেহ, মায়া-মমতা, অনুগ্রহ, প্রীতি ও ভালোবাসা ঘৃণা অপেক্ষা অনেক শক্তিশালী। সেই জন্য এ বিষয়ে কয়েকটি উপদেশ হল, (১) ধৈর্যধারণ করা, (২) তাদের সঙ্গে সদাচরণ করা এবং কোন প্রকারের অসদাচরণ না করা (৩) তারা রাগান্বিত হতে পারে এমন সমস্ত রকমের কথাবার্তা ও কার্যাদি থেকে বিরত থাকা (৪)- তাদের হিদায়াতের জন্য আগ্রহী হওয়া, সুশিক্ষা, ওয়ায-নাছীহাত ও ইসলামী বই-পুস্তকের ব্যবস্থা করা (৫) তাদের হিদায়াতের জন্য আল্লাহ তা‘আলার নিকট দু‘আ করা, ইত্যাদি (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১৭৪৮০০ ও ১২২১৭৮)।
প্রশ্নকারী : ফারজানা জামান স্নেহা, দিনাজপুর।