উত্তর : যদি কেউ কাউকে গুনাহের কাজে সহযোগিতা করে, উৎসাহিত করে, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও বাধা প্রদান না করে, তবে অবশ্যই সে তার গুনাহে অংশীদার হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘তোমরা সৎকর্ম ও তাক্বওয়ায় পরস্পর সহযোগিতা কর। মন্দকর্ম ও সীমালঙ্ঘনে একে অন্যের সহযোগিতা করো না। আর আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তি প্রদানে অত্যধিক কঠোর’ (সূরা আল-মায়িদাহ : ২)। উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যাতে ইমাম ইবনু কাছীর (রাহিমাহুল্লাহ) ও ইমাম কুরতুবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এখানে আল্লাহ তা‘আলা মুমিন ব্যক্তিদেরকে ভালো কাজে সহযোগিতা করতে আদেশ করেছেন এবং অন্যায়, অসৎ ও হারাম কাজে সাহায্য, সহযোগিতা করতে নিষেধ করেছেন’ (তাফসীর ইবনু কাছীর, ২/১২; তাফসীরে কুরতুবী, ৬/৪৬-৪৭)। নিঃসন্দেহে ফেসবুক বা গুগলে ভালো-মন্দ দু’টিই রয়েছে। একদিকে সোস্যাল মিডিয়া যেমন পাপের সমুদ্র অন্যদিকে বর্তমান সময়ে দাওয়াত ও তাবলীগের বিশেষ মাধ্যম। যেহেতু পাপের কাজে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কোনভাবেই সাহায্য করা যাবে না। তাই নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কাউকে একাউন্ট খুলে দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে এবং খুলে দেয়ার সময় অবশ্যই নছীহত করতে হবে। এরপরেও যদি সে হারাম কাজে ব্যবহার করে তবে যে সহযোগিতা করেছে সে দোষী সাব্যস্ত হবে না। কারণ কেউ অন্য কারো পাপের বোঝা বহন করবে না। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ لَا تَکۡسِبُ کُلُّ نَفۡسٍ اِلَّا عَلَیۡہَا ۚ وَ لَا تَزِرُ وَازِرَۃٌ وِّزۡرَ اُخۡرٰی ‘প্রত্যেকেই স্বীয় কৃতকর্মের জন্য দায়ী হবে এবং কেউ অন্য কারো ভার বহন করবে না’ (সূরা আল-আন‘আম : ১৬৪)। অন্যত্র তিনি বলেন, کُلُّ نَفۡسٍۭ بِمَا کَسَبَتۡ رَہِیۡنَۃٌ ‘প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কৃতকর্মের দায়ে আবদ্ধ’ (সূরা আত-তূর : ২১; সূরা আল-মুদ্দাছছির : ৩৮; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৩১৮৬৯৮)। তিনি আরো বলেন, ‘তোমরা সৎকর্ম করলে সৎকর্ম নিজেদের জন্যই করবে, আর মন্দকর্ম করলে তাও নিজেদের জন্য’ (সূরা বানী ইসরাঈল : ৭)। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন, ‘যে সৎকাজ করে সে তার নিজের কল্যাণের জন্যই করে এবং কেউ মন্দ কাজ করলে তার প্রতিফল সে-ই ভোগ করবে। আর আপনার রব তাঁর বান্দাদের প্রতি মোটেই যুলুমকারী নন’ (সূরা আল-ফুছছিলাত : ৪৬)।
প্রশ্নকারী : আলভী আহমাদ, নারায়ানগঞ্জ।