উত্তর : বাবার জন্য ফরয হচ্ছে, হালাল পন্থায় তার স্ত্রী-পরিবারের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করা। তিনি তা না করলে তিনি গুনাগার হবেন এবং ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ্র কাঠগড়ায় তাকে জবাবদিহি করতে হবে; স্ত্রী বা সন্তানকে নয়। সুতরাং পিতা যদি সূদী ব্যাংকে চাকরি করে অর্থ উপার্জন করে অথবা ব্যাংক থেকে অবসর গ্রহণের পরে সেখান থেকে প্রাপ্ত পেনশনের অর্থ দ্বারা সংসার পরিচালনা করে, তাহলে এর দায়-দায়িত্ব তার উপরে বর্তাবে; স্ত্রী পরিবার ও সন্তান-সন্ততির উপরে নয়। কিন্তু তারা অন্তর থেকে হারামকে ঘৃণা করবে এবং সম্ভব হলে তাকে হারাম উপার্জন পরিত্যাগ করার অনুরোধ জানাবে। শাইখ মুহাম্মাদ ইবনু ছালিহ আল-উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ)-কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, ‘যদি কোন ব্যক্তি জানতে পারে যে, তার বাবার সম্পত্তির উৎস হারাম, তাহলে কি সে তার বাবার খাবার খাবে? আর যদি সে তার বাবার খাবার না খায়, তাহলে কি তা পিতার অবাধ্যতা হিসাবে গণ্য হবে? উত্তর তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি জানতে পারবে যে, তার বাবার সম্পত্তি হারাম, যদি সে মূল সম্পদটাই হারাম হয় অর্থাৎ যদি সে নিশ্চিতভাবে জানে যে তার বাবা কোনও ব্যক্তির কাছ থেকে চুরি করেছে, তাহলে সে তা খাবে না। যেমন: যদি তুমি জানতে পারো যে, তোমার বাবা কোনও ছাগল চুরি করেছে এবং তা যব্হ করেছে, তাহলে তুমি তা খাবে না এবং তার দাওয়াতেও যাবে না। কিন্তু যদি হারাম উপার্জন তার ব্যবসায়িক কাজ থেকে আসে, অর্থাৎ সে সূদ খায়, প্রতারণা করে বা অনুরূপ অন্য কোনও কাজ করে, তাহলে তুমি খেতে পারো। এক্ষেত্রে গুনাহ তার উপরই থাকবে। এর প্রমাণ হল, নবী (ﷺ) ইহুদীদের সম্পত্তি থেকে খেয়েছেন, যারা সূদ খাওয়া এবং হারাম উপার্জনের জন্য পরিচিত ছিল। এক ইহুদী নারী নবী (ﷺ)-কে বিষাক্ত খাবার দিয়েছিল কিন্তু আল্লাহ তাকে রক্ষা করেছিলেন। এক ইহুদী তাকে জবের রুটি এবং রুটির সাথে মাখিয়ে খাওয়ার জন্য দ্রবীভূত মাখন বা চর্বি খাওয়ার জন্য দাওয়াত করেছিল। তিনি তা গ্রহণ করেছিলেন। তিনি এক ইহুদী থেকে তার পরিবারের জন্য খাবার কিনেছিলেন এবং নিজেও খেয়েছিলেন। অতএব, তুমি খেতে পারো। গুনাহ তোমার বাবার উপরই থাকবে’ (লিক্বাউল বাব আল-মাফতূহ, ১৩/১৮৮ পৃ.)।
প্রশ্নকারী : সাইফুল, কুষ্টিয়া।