রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:১১ অপরাহ্ন
উত্তর : যদি স্ত্রীর মত স্বামীও কাফির হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে তাদের বৈবাহিক সম্পর্কে কোন প্রভাব পড়বে না। যেহেতু তারা দু’জনেই কাফির। তাই অন্যান্য কাফির ও মুশরিক দম্পতির মত তারাও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ থাকতে পারবে। যেমনঃ দু’জন ইয়াহুদী অথবা দু’জন খ্রিস্টান অথবা দু’জন অগ্নিপূজক পতি-পত্নী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ আছে। কিন্তু যদি তাদের একজন কাফির আর অপরজন মুসলিম হয়, এমতাবস্থায় তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক অক্ষুণ্ন রাখা সঠিক হবে না। বরং তার স্ত্রীকে এক ত্বালাক্ব দিয়ে বৈবাহিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করা অপরিহার্য। অথবা কোন ইসলামিক বিচারকের মাধ্যমে বিবাহ বিচ্ছেদ করিয়ে নেবে। কেননা ছালাত কাফির স্ত্রী কোন মুসলিম স্বামীর জন্য বৈধ নয়। কিন্তু যদি স্ত্রী তাওবাহ করে এবং ছালাত আদায় করতে আরম্ভ করে, সেক্ষেত্রে স্বামী তাকে নতুন বিবাহের মাধ্যমে ফিরিয়ে নিতে পারে। তবে তাওবাহ ছাড়া বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাবে (ফাতাওয়া নূরুন আলাদ র্দাব ইবনে বায, ২০/৩২৮-৩৩১, ২০/৩৪১; মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে বায, ২৮/১০৯ পৃ.)।

যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘আর তোমরা মুশরিক নারীকে ঈমান না আনা পর্যন্ত বিবাহ করো না। মুশরিক নারী তোমাদেরকে মুগ্ধ করলেও, অবশ্যই মুমিন কৃতদাসী তার থেকেও উত্তম। ঈমান না আনা পর্যন্ত মুশরিক পুরুষদের সাথে তোমরা বিবাহ দিয়ো না। মুশরিক পুরুষ তোমাদেরকে মুগ্ধ করলেও অবশ্যই মুমিন ক্রীতদাস তার থেকেও উত্তম। কারণ, ওরা তোমাদের আগুনের দিকে আহ্বান করে এবং আল্লাহ তোমাদেরকে স্বীয় ইচ্ছায় জান্নাত ও ক্ষমার দিকে আহ্বান করেন। তিনি মানুষের জন্য স্বীয় নিদর্শনসমূহ সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেন, যাতে তারা তা থেকে উপদেশ গ্রহণ করতে পারে’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২২১)। অন্যত্র তিনি বলেন, لَا ہُنَّ حِلٌّ  لَّہُمۡ  وَ لَا ہُمۡ  یَحِلُّوۡنَ  لَہُنَّ ‘মুমিন নারীগণ কাফিরদের জন্য বৈধ নয় এবং কাফিরগণ মুমিন নারীদের জন্য বৈধ নয়’ (সূরা আল-মুমতাহিনাহ : ১০)। শায়খ আল-উছাইমীন (রহঃ) বলেন, স্ত্রী ছালাত ত্যাগকারী হলে বিবাহ বন্ধন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।

যদি সে ইদ্দত অতিবাহিত হওয়ার পূর্বেই তাওবাহ করে এবং ছালাত আদায় করতে আরম্ভ করে তাহলে স্বামী তাকে সঙ্গে সঙ্গে ফিরিয়ে নিতে পারবে। আর যদি ইদ্দতের সময়কাল অতিক্রান্ত হওয়ার পর তাওবাহ্ করে সেক্ষেত্রে কিছু আলেম বলেছেন নতুন বিবাহের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনতে হবে। আবার কিছু আলেম বলেছেন নতুন বিবাহের প্রয়োজন নেই। তবে তাওবাহ অপরিহার্য’ (মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে উছাইমীন, ১২/৯৩-৯৪ পৃ.)। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘কাফিরদেরকে তুমি বল, ‘যদি তারা (কুফরী ও অবিশ্বাস থেকে) বিরত হয়, তাহলে অতীতে তাদের যা (পাপ) হয়েছে আল্লাহ তা ক্ষমা করবেন। কিন্তু তারা যদি অন্যায়ের পুনরাবৃত্তি করে, তাহলে পূর্ববর্তীদের (সাথে আমার আচরিত) রীতি তো রয়েছেই’ (সূরা আল-আনফাল : ৩৮)। রাসূল (ﷺ) বলেন, ‏أَمَا عَلِمْتَ أَنَّ الإِسْلَامَ يَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلَهُ ‘তুমি কি জান না যে, ইসলাম পূর্ববর্তী সকল অন্যায় মিটিয়ে দেয়’ (ছহীহ মুসলিম, হা/১২১, ২২০)। মোটকথা উপরিউক্ত আলোচনা থেকে আমরা জানতে পারলাম যে, স্বামী-স্ত্রী উভয়ের মধ্যে কোন একজন কাফির হয়ে গেলে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়।


প্রশ্নকারী : মাহদী হাসান, সাভার, ঢাকা।





প্রশ্ন (৪২) : মানুষ মারা যাওয়ার পর ঢেকে দেয়া হয় কেন? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৬) : ‘যারা এই দুনিয়ায় অন্ধ তারা আখেরাতেও অন্ধ থাকবে’ দ্বারা কী বুঝানো হয়েছে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৭) : ইসলামী শরী‘আতে শাফা‘আত কত প্রকার ও কী কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৫) : অনেক মানুষদের দেখা যায় যে, লোকে কী বলবে এই চিন্তা করে হালাল কাজ থেকে দূরে থাকে। লোকে কী বলবে তাই চাচাতো ভাইয়ের মেয়েকে বিয়ে করতে সম্মত হয় না ইত্যাদি। এরূপ ভাবা কি শরী‘আত সম্মত? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২) : ইসলামে কুরআন অবমাননাকারীদের শাস্তি কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১) : ব্যবসার উদ্দেশ্যে বিড়াল কেনা-বেচা করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৫) : আল্লাহর নাম ও গুণাবলী তথা আসমা ওয়াছা ছিফাত জানার গুরুত্ব এবং ফজিলত কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৩) : শুধু বেজোড় রাত্রিগুলোতে ই‘তিকাফ করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৮) : বাইরে গেলে ওযূ করার সময় মহিলারা হিজাবের উপর মাথা মাসাহ করতে পারবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৫) : মহিলারা দেবর ও ভাশুরের সামনে বেপর্দায় যেতে পারবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৬) : আযানের সময় কোন ওয়ায বা কথা বলা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৪) : বার্ধক্যের কারণে মাঝে মধ্যে ফোঁটা ফোঁটা পেশাব পড়ে। এমতাবস্থায় ছালাত হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ