রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ১১:২৩ অপরাহ্ন

বিদ‘আত পরিচিতি

-ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান*


 (২৬তম কিস্তি) 

১৬- বিদ‘আত মানুষকে সুন্নাহ থেকে বঞ্চিত করে

ইসলামী শরী‘আতে সুন্নাহ সুস্পষ্ট, স্বচ্ছ ও দিপ্তীমান। কোনরূপ জড়তা, বক্রতা ও ত্রুটি-বিচ্যুতি নেই। এই সুন্নাহ পরিপালনের মধ্যেই রয়েছে মানবতার মুক্তি ও সফলতা। অথচ বিদ‘আত মানুষকে সুন্নাহর পরিচ্ছন্ন ও সহজ-সরল রাস্তা থেকে বঞ্চিত করে। বিখ্যাত ছাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) অত্যন্ত দুঃখ-ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলেছেন যে,

مَا أَتَى عَلَى النَّاسِ عَامٌ إِلَّا أَحْدَثُوْا فِيْهِ بِدْعَةً وَأَمَاتُوْا فِيْهِ سُنَّةً حَتَّى تَحْيَى الْبِدَعُ وَتَمُوْتَ السُّنَنُ.

‘প্রতি বছর মানুষ কিছু বিদ‘আত উদ্ভাবন করতে থাকবে এবং সুন্নাহ মিটিয়ে ফেলতে থাকবে। একপর্যায়ে শুধু বিদ‘আতই থাকবে, সুন্নাহ একদম বিলীন হয়ে যাবে’।[১] প্রখ্যাত তাবেঈ হাস্সান ইবনু আতিয়্যাহ (মৃ. ১২০ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

مَا ابْتَدَعَ قَوْمٌ بِدْعَةً فِىْ دِيْنِهِمْ إِلَّا نَزَعَ اللهُ مِنْ سُنَّتِهِمْ مِثْلَهَا ثُمَّ لَا يُعِيْدُهَا إِلَيْهِمْ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ.

‘যখনই কোন সম্প্রদায় দ্বীনের মধ্যে কোন বিদ‘আত সৃষ্টি করেছে, তখনই আল্লাহ তা‘আলা তাদের মধ্য হতে সে পরিমাণ সুন্নাহ উঠিয়ে নিয়েছেন। এরপর ক্বিয়ামত পর্যন্ত তাদেরকে তা আর ফিরিয়ে দেন না’।[২]

সুধী পাঠক! বিদ‘আতের কুপ্রভাবের ভয়াবহতা এতই মারাত্মক যে, একজন বিদ‘আতীর যদি কোন সুন্নাত ছুটে যায় তাহলে সে ততটা পেরেশানী হয় না। কিন্তু যদি কোন বিদ‘আত ছুটে যায়, তাহলে সে অস্থির হয়ে যায়। এ প্রসঙ্গে প্রখ্যাত ছাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) লোকদের উদ্দেশ্য করে বলেন,

كَيْفَ أَنْتُمْ إِذَا لَبِسَتْكُمْ فِتْنَةٌ يَهْرَمُ فِيْهَا الْكَبِيْرُ وَيَرْبُوْ فِيْهَا الصَّغِيْرُ وَيَتَّخِذُهَا النَّاسُ سُنَّةً فَإِذَا غُيِّرَتْ قَالُوْا غُيِّرَتِ السُّنَّةُ؟ قِيْلٌ مَتَى ذَلِكَ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ؟ قَالَ ্রإِذَا كَثُرَتْ قُرَّاؤُكُمْ وَقَلَّتْ فُقَهَاؤُكُمْ وَكَثُرَتْ أُمَرَاؤُكُمْ وَقَلَّتْ أُمَنَاؤُكُمْ وَالْتُمِسَتِ الدُّنْيَا بِعَمَلِ الْآخِرَةِগ্ধ.

‘ঐ সময় তোমাদের অবস্থা কী দাঁড়াবে যখন এমন দীর্ঘস্থায়ী ফেতনা বা বিপর্যয় তোমাদেরকে গ্রাস করবে; যে বিপর্যয়ের মধ্যে বয়স্ক লোক বয়োবৃদ্ধে পরিণত হবে, ছোটরা বয়স্কে পরিণত হবে। মানুষ (বিদ‘আতকে) সুন্নাহ হিসাবে গ্রহণ করবে। যখন কোন বিদ‘আত পরিবর্তন করা হবে বা বিদ‘আত ছুটে যাবে তখন সে বলবে, সুন্নাহর মধ্যে পরিবর্তন করা হয়েছে বা সুন্নাহ ছেড়ে দেয়া হয়েছে। উপস্থিত লোকেরা বলল, হে আবু আব্দুর রহমান! এমন ফেতনা কখন আসবে? তিনি বললেন, যখন তোমাদের মধ্যে ক্বারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে অথচ প্রাজ্ঞ ফক্বীহদের সংখ্যা হ্রাস পাবে। যখন তোমাদের সম্পদ বেড়ে যাবে অথচ আমানতদার লোকের সংখ্যা হ্রাস পাবে। যখন আখিরাতের আমল দিয়ে দুনিয়া তালাশ করা হবে’।[৩] অন্য বর্ণনায় এসেছে যে, وَكَثُرَتْ أَمْوَالُكُمْ وَقَلَّتْ أُمَنَاؤُكُمْ ‘তোমাদের আমীর ও নেতার সংখ্যা বেড়ে যাবে কিন্তু আমানতদার লোকের সংখ্যা হ্রাস পাবে’।[৪]

১৭- বিদ‘আতপন্থী উম্মতকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করে

বিদ‘আতপন্থী তার বিদ‘আতের কারণে মুসলিমদের মাঝে বিভক্তি সৃষ্টি করে, যা বিভিন্ন দল-উপদল সৃষ্টির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

اِنَّ الَّذِیۡنَ فَرَّقُوۡا دِیۡنَہُمۡ  وَ کَانُوۡا  شِیَعًا لَّسۡتَ مِنۡہُمۡ فِیۡ شَیۡءٍ ؕ اِنَّمَاۤ  اَمۡرُہُمۡ  اِلَی اللّٰہِ ثُمَّ یُنَبِّئُہُمۡ بِمَا کَانُوۡا یَفۡعَلُوۡنَ.

‘যারা নিজেদের দ্বীনকে খ-ে খ-ে বিভক্ত করে নিয়েছে আর দলে দলে ভাগ হয়ে গেছে তাদের কোন কাজের সাথে তোমার কোন সম্পর্ক নেই। তাদের ব্যাপারটি পুরোপুরি আল্লাহর ইখতিয়ারভুক্ত। তিনি তাদেরকে জানিয়ে দিবেন তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে’ (সূরা আল-আন‘আম : ১৫৯)। উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় আবূ হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, এ আয়াতটি এ উম্মত তথা উম্মতে মুহাম্মাদীকে উদ্দেশ্য করে নাযিল করা হয়েছে’।[৫] ইমাম ত্বাবারী (রাহিমাহুল্লাহ) আলো উল্লেখ করেছেন যে, এ আয়াত প্রসঙ্গে কেউ কেউ বলেন, ‘এ আয়াত দ্বারা এই উম্মতের বিদ‘আতীদেরকে বুঝানো হয়েছে, যারা কুরআনের হুকুম সম্বরিত আয়াত ব্যতীত শুধু মুতাশাবিহ তথা সাদৃশ্যপূর্ণ আয়াতের অনুসরণ করে থাকে’।[৬] প্রখ্যাত মুফাসসির আব্দুর রহমান ইবনু নাছির আস-সা‘দী (রাহিমাহুল্লাহ) ‘দলে দলে বিভক্ত করে নিয়েছে’ বলতে বিদ‘আতীদেরকে বুঝিয়েছেন।[৭] ইমাম কুরতুবী (রাহিমাহুল্লাহ) ও ইমাম শাওকানী (রাহিমাহুল্লাহ)ও বিদ‘আতীদেরকে বুঝিয়েছেন।[৮]

১৮- বিদ‘আতীর কোন ইবাদত কাজে আসে না। কেননা সে আল্লাহ থেকে অনেক দূরে অবস্থান করে

বিদ‘আত মিশ্রিত আমল সম্পাদনে কোন লাভ নেই, তার মূল্যও নেই। কষ্টার্জিত পরিশ্রম ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। কেননা তার মাঝে ও আল্লাহ তা‘আলার মাঝে কোন সম্পর্ক থাকে না। মূলত আল্লাহ তা‘আলার সাথে সম্পর্ক স্থাপনের মানদ- তো মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে আনুগত্য ও নিঃশর্ত অনুসরণ। কিন্তু বিদ‘আতীরা তো বিদ‘আতী আমল সম্পাদনের মাধ্যমে মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে অপমান করে থাকে এবং তাঁর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে। বিদ‘আতীদের যেমন মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর সাথে সম্পর্ক নেই, তেমনি আল্লাহ তা‘আলার সাথেও তাদের কোন কানেকশন নেই; বরং তারা আল্লাহ থেকে অনেক দূরে অবস্থান করে। প্রখ্যাত তাবেঈ হাসান আল-বাছরী (২১-১১০ হি./৬৪২-৭২৮ খ্রি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

صَاحِبُ الْبِدْعَةِ لَا يَزْدَادُ اِجْتِهَادًا صِيَامًا وَصَلَاةً إِلَّا ازْدَادَ مِنْ اللهِ بُعْدَا.

‘বিদ‘আতী তার ছালাত ও ছিয়ামের ক্ষেত্রে যত পরিশ্রম করে, ততবেশি সে আল্লাহ থেকে দূরে সরে যায়’।[৯] বিশিষ্ট তাবেঈ আইয়ূব সিখতিয়ানী (মৃ. ১৩১ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

مَا أزْدَادَ صَاحِبُ بِدْعَةٍ اِجْتِهَادًا إِلَّا أزْدَادَ مِنْ اللهِ بُعْدًا

‘বিদ‘আতী (ইবাদতের ক্ষেত্রে) যতবেশি পরিশ্রম করবে, ততবেশি সে আল্লাহ থেকে দূরে সরে যাবে’।[১০]

সুধী পাঠক! ইবাদতের ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিশ্রম ও সাধনার পরেও বিদ‘আতীরা আত্মতৃপ্তি অনুভব করে না। অশান্তি ও স্বাধহীনতার কারণে তারা সর্বদা হতাশায় ভোগে। একারণে তাদের চেহারায় ঈমানী ঔজ্জ্বল্য দৃশ্যমান হয় না। বরং গোমরাহির অন্ধকার চেহারাকে অন্ধকারচ্ছন্ন করে দেয়। মূলত সুন্নাহর নূর থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণেই এমনটি হয়ে থাকে। বিখ্যাত তাবেঈ বিদ্বান আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক (মৃ. ১৮১ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

صَاحِبُ الْبِدْعَةِ علَى وَجْهِهِ الظُّلْمَةِ وَإِنِ ادَّهَنَ كُلَّ يَوْمٍ ثَلَاثِيْنَ مَرَّةً

‘বিদ‘আতীর চেহারায় অন্ধকারের ছাপ থাকে। যদিও সে (তার চেহারাকে উজ্জ্বল করার জন্য) প্রতিদিন ত্রিশবার তেল ব্যবহার করে’।[১১]

১৯- বিদ‘আত দ্বীনি বিষয়ে মানুষকে সন্দেহে নিমজ্জিত করে

মুসলিম সমাজে বিদ‘আতের কুপ্রভাব এতটাই মারাত্মক যে, তা সম্পাদনকারীকে দ্বীনি বিষয়ে সন্দেহ ও গোমরাহিতে নিমজ্জিত করে থাকে। অথচ দ্বীনের কোন বিষয়কে সন্দেহ করা কিংবা অবজ্ঞা করা ঈমান ভঙ্গের কারণসমূহের অন্যতম।[১২] এটি বড় কুফরীরও অন্তর্ভুক্ত বিষয়। এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত তাবেঈ আবূ ক্বিলাবা (মৃ. ১০৪ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

لَا تُجَالِسُوْا أَهْلَ الْأَهْوَاءِ وَلَا تُجَادِلُوْهُمْ فَإِنِّىْ لَا آمَنُ أَنْ يَغْمِسُوْكُمْ فِىْ ضَلَالَتِهِمْ أَوْ يَلْبِسُوْا عَلَيْكُمْ مَا كُنْتُمْ تَعْرِفُوْنَ.

‘তোমরা প্রবৃত্তি পূজারীদের (বিদ‘আতীদের) সাথে উঠাবসা কর না এবং তাদের সাথে বিতর্কে জড়াবে না। কেননা আমি আশঙ্কামুক্ত নই যে, তারা তাদের গোমরাহির মধ্যে তোমাদেরকে নিমজ্জিত করবে অথবা (দ্বীনের সঠিক) যে বিষয়গুলো তোমরা জান, তার কিছু বিষয়ে তোমাদেরকে সন্দেহযুক্ত করে দেবে’।[১৩] এজন্য প্রখ্যাত তাত্ত্বিক বিশ্লেষক ও প-িত এবং তাবেঈ বিদ্বান ফুযাইল ইবনু ঈয়ায (মৃ. ১৮৭ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বিদ‘আতীদেরকে সর্বদা এড়িয়ে চলার কথা বলেছেন। কেননা বিদ‘আতীদের উপর আল্লাহ তা‘আলা রহমতের দৃষ্টিতে তাকান না। এছাড়া তাদের সাথে উঠাবসা করাকে তিনি নিফাক্বের নিদর্শন বলে আখ্যায়িত করেছেন। যেমন তিনি বলেছেন,

إِنَّ لِلهِ مَلَائِكَةً يَطْلُبُوْنَ حَلَقَ الذِّكْرِ فَانْظُرُوْا مَنْ يَّكُوْنُ مَجْلِسُكَ لَا يَكُوْنُ مَعَ صَاحِبِ بِدْعَةٍ فَإِنَّ اللهَ لَا يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ وَعَلَامَةُ النِّفَاقِ أَن يَّقُوْمَ الرَّجُلُ وَيَقْعُدَ مَعَ صَاحِبِ بِدْعَةٍ.

‘আল্লাহ তা‘আলার একদল ফেরেশতা আছেন, যারা যিকিরের মজলিশ তালাশ করে থাকেন। সুতরাং তুমি লক্ষ্য রাখ যে, তোমার মজলিসে কারা বসে। (তোমার মজলিস যেন) কোন বিদ‘আতীর সাথে না হয়। কেননা আল্লাহ তা‘আলা তাদের দিকে (রহমতের দৃষ্টিতে) তাকান না। (মনে রেখ) বিদ‘আতীর সাথে উঠাবসা নিফাক্বের নিদর্শন’।[১৪]

২০- বিদ‘আত সত্য গ্রহণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে

মানুষ যখন বিদ‘আতী আমলে অভ্যস্ত হয়ে যায় আর তার নিকট সত্য প্রকাশিত হয়, তখন এই বিদ‘আতই তাকে সত্য গ্রহণে নিরুৎসাহিত করে, সৃষ্টি করে প্রতিবন্ধকতা। এভাবে বিদ‘আত তাকে সত্য গ্রহণে দূরে সরিয়ে রাখে। ফলে সত্য গ্রহণ থেকে সে মাহরূম তথা বঞ্চিত হয়। এ মর্মে ফুযাইল ইবনু ঈয়ায (মৃ. ১৮৭ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

مَنْ أَتَاهُ رَجُلً فَشَاوَرَهُ فَدَلَّهُ عَلَى مَبْتَدَعٍ فَقَدْ غَشَّ الْإِسْلَامَ وَاحْذَرُوْا الدُّخُوْلَ عَلَى صَاحِبِ الْبِدَعِ فَإِنَّهُمْ يَصُدُّوْنَ عَنِ الْحَقِّ.

‘কেউ কারো কাছে পরামর্শ চাইতে এলে তাকে যদি কেউ কোন বিদ‘আতীর কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেয়, তাহলে সে ইসলামের সাথে প্রতারণা করল। কাজেই তোমরা কোন বিদ‘আতীর কাছে যাওয়ার ব্যাপারে সাবধান থাক। কারণ তারা মানুষকে সত্য থেকে দূরে সরিয়ে রাখে’।[১৫] শুধু তাই নয় বিদ‘আত বিদ‘আতীর অন্তর থেকে ইসলামের নূর বা জ্যোতি বের করে দেয়। ফুযাইল ইবনু ঈয়ায (মৃ. ১৮৭ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) আরো বলেন,

لَا تَجْلِسُ مَعَ صَاحِبِ بِدْعَةٍ أَحْبَطَ اللهُ عَمَلَهُ وَأَخْرَجَ نُوْرَ الْإِسْلَامِ مِنْ قَلْبِهِ

‘তুমি কোন বিদ‘আতীর কাছে বসবে না। কারণ আল্লাহ তা‘আলা তার আমল নিস্ফল করে দিয়েছেন এবং তার অন্তর থেকে ইসলামের নূর বের করে দিয়েছেন’।[১৬] এমনকি বিদ‘আতীদের নিকট থেকে দ্বীন ইসলাম নিরাপদ নয়। কেননা দ্বীনের ক্ষেত্রে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে অন্ধ করে দিয়ে থাকেন। অন্যত্র ফুযাইল ইবনু ঈয়ায (মৃ. ১৮৭ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

صَاحِبُ الْبِدْعَةِ لَا تَأمَنْهُ عَلَى دِيْنِكَ وَلَا تُشَاوِرْهُ فِيْ أَمْرِكَ وَلَا تَجْلِسُ إِلَيْهِ فَمَنْ جَلَسَ إِلَى صَاحِبِ بِدْعَةٍ وَرَّثَهُ اللهِ الْعَمَى.

‘কোন বিদ‘আতীকে দ্বীনের ক্ষেত্রে নিরাপদ মনে করো না। তোমার কোন বিষয়ে তার সাথে পরামর্শ কর না এবং তার সাথে উঠাবসা করবে না। যে ব্যক্তি কোন বিদ‘আতীর কাছে বসল, আল্লাহ তা‘আলা তাকে (দ্বীনের ক্ষেত্রে) অন্ধ করে দিবেন’।[১৭]

সুধী পাঠক! উক্ত বক্তব্যগুলো থেকে এটা স্পষ্ট হল যে, বিদ‘আতের কুপ্রভাব অত্যন্ত ভয়াবহ। কেননা এই বিদ‘আত সাধারণ মানুষকে সত্য গ্রহণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে, মানুষের অন্তর থেকে ইসলামের নূর বা জ্যোতিকে বের করে দেয়, কষ্টার্জিত আমলকে বিনষ্ট করে দেয়। এছাড়া কোন বিদ‘আতীর কাছে ইসলাম তো নিরাপদ নয়ই বরং তাদের কাছে বসলে আল্লাহ তাকে অন্ধ করে দেন। এজন্য বিদ‘আতীর নিকট থেকে আল্লাহ তা‘আলা দ্বীনের হেফাযত তথা দ্বীনের সুরক্ষা উঠিয়ে নেন। অর্থাৎ প্রকৃতপক্ষে সম্পূর্ণরূপে দ্বীন সম্পাদন তার পক্ষে সম্ভব হয় না। যেমন মুহাম্মাদ ইবনু নদর আল-হারিসী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

من اصغى سمعه إلى صاحب بدعة وهو يعلم أنه صاحب بدعة نزعت منه العصمة ووكل إلى نفسه

‘যে ব্যক্তি কোন বিদ‘আতীর কথা মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করল। অথচ সে জানে যে, উক্ত ব্যক্তি বিদ‘আতী, তাহলে তার নিকট থেকে দ্বীনি সুরক্ষা উঠিয়ে নেয়া হয় এবং তাকে তার নিজের দায়িত্বে ছেড়ে দেয়া হয়’।[১৮] সুবহানাল্লাহ!

২১- বিদ‘আতের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সমালোচনা করতে হবে

প্রকাশ্য ফাসেকের তথা পাপাচারীর চেয়ে প্রকাশ্য বিদ‘আতী অধিক ভয়ানক। উম্মতে মুসলিমাকে বিদ‘আত হতে বাঁচানোর লক্ষ্যে প্রকাশ্য বিদ‘আতপন্থীর সমালোচনা করা বৈধ। যদিও আল-কুরআন ও ছহীহ হাদীছের বর্ণনা অনুযায়ী সমালোচনা বা গীবত হারাম। কিন্তু ছয় কারণে শরী‘আতে গীবতকে বৈধ করা হয়েছে।[১৯] ৬টি স্থান নি¤œরূপ:

১.   মাযলূম কর্তৃক যালিমের গীবত করা। যেমন মাযলূমের জন্য বৈধ যে, সুলতান বা ক্বাযীর নিকট কিংবা তার যারা অভিভাবক, তাদের নিকট ন্যায়বিচার প্রার্থনা করার জন্য যালিমের বিরুদ্ধে গীবত করা এবং এ কথা বলা যে, অমুক ব্যক্তি আমার উপর যুলম করেছে।

২.  মন্দ কাজ প্রতিহত করার জন্য গীবত করা। অর্থাৎ পাপকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য কিংবা কারো যদি মন্দ দূরীভূত করার শক্তি ও সাহস থাকে, তাহলে গীবত করা।

৩.  ফাতাওয়া চাওয়া কিংবা জনমত জরিপের জন্য গীবত করা। যেমন কেউ মুফতীকে বলে যে, আমার পিতা, ভাই, স্বামী ইত্যাদি আমার উপর যুল্ম করেছে। প্রয়োজনে এরূপ স্থানে গীবত করা জায়েয।

৪.  অকল্যাণকর কাজ থেকে মুসলিমদের বিরত রাখা ও তাদের নছীহত প্রদানের ক্ষেত্রে গীবত করা।

৫.  প্রকাশ্যে ফাসেকী, বিদ‘আতী ও হারাম কাজ সংঘটিত হলে সেখান থেকে নিষেধ করার ক্ষেত্রে গীবত করা। যেমন প্রকাশ্যে মদ পান করা ইত্যাদি।

৬.  পরিচিতির জন্য গীবত করা। অর্থাৎ যখন কোন মানুষ কোন উপাধিতে পরিচিত হয়ে যায়, তখন তার পরিচিতির জন্য ঐ উপাধি উল্লেখ করা। যেমন, اَلْأَعْمَشُ বা দুর্বল দৃষ্টিসম্পন্ন, اَلْأَعْرَجُ বা খোঁড়া বা ল্যাংড়া, اَلْأَصَمُّّ বা কালা ও বধির, اَلْأَعْمَى বা অন্ধ ইত্যাদি।[২০]

উপরিউক্ত আলোচনায় সুস্পষ্টরূপে প্রতিভাত হয়েছে যে, মুসলিম সমাজে বিদ‘আতের কুপ্রভাব কতই না মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে। যা দুঃখজনক ছাড়া কিছুই নয়! মূলত অধিক পরিমাণ বিদ‘আত প্রসার লাভ করার কারণে মুসলিমরা আজ ঈমান হারাতে বসেছে। বিদ‘আতের বিষবাষ্পে ‘কালেমায়ে শাহাদত’-এর দ্বিতীয়াংশ ‘আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (ﷺ) আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল’-এর সাক্ষ্য দেয়াটা আজ হুমকির সম্মুখীন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সকলেই যেন জেনে-শুনে মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর প্রকাশ্যে বিরোধিতায় লিপ্ত হয়েছে, তাঁকে অপমানিত করছে, লাঞ্ছিত করছে। মানুষ আজ ভুলে গেছে যে, বিদ‘আতের মাধ্যমে বিরোধিতা করে, অপমানিত করে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে অনুসরণ করা হয় না বরং তাঁর বিরোধিত করা হয়। বরং সম্মান-মর্যাদা ও ভালোবাসা লুকিয়ে আছে তাঁর যথাযথ অনুসরণ ও অনুকরণের মধ্যেই। বলুন তো! কোন প্রকৃত ঈমানদারের পক্ষে কি সম্ভব যে, মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে অনুসরণ করা? অথচ বিদ‘আতের মাধ্যমে সেটাই হয়ে থাকে। তাই তো ছালাত, ছিয়াম, হজ্জ, যাকাত, দান-ছাদাক্বাহ, দু‘আ ও যিকির, কুরআন তেলাওয়াত ইত্যাদিতে মানুষ নিয়মিত অভ্যস্ত হওয়া সত্ত্বেও মুসলিমদেরকে শিরক, বিদ‘আত, কুফর, নিফাক্ব, ত্বাগূত, হিংসা-বিদ্বেষ, অহংকার, সূদ-ঘুষ, হারাম ভক্ষণ, নেশাদার দ্রব্য পান, দাইয়ূস, বেলাল্লাপনা, অশ্লীলতা-বেহায়াপনা, যেনা-ব্যভিচার, পরকীয়া, অবৈধ সম্পর্ক সহ বিভিন্ন পাপাচার থেকে বিরত রাখতে পারছে না। মুছল্লীর সংখ্যা যত বাড়ছে, দেশে পাপাচার তত যেন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইছালে ছাওয়াব, জসনে জুলূস, চিল্লা, মীলাদ-ক্বিয়াম, মাযার ও দরগায় মানুষের সংখ্যা যত বাড়ছে; সমাজে তো তত হানাহানি, ধর্ষণ, গুম-খুন, রাজাহানী, লম্পট, চুরি-ডাকাতি-চাঁদাবাজী-ছিনতাই, দুর্নীতি, চোগলখোরী ইত্যাদি বেড়েই চলেছে। অথচ ইবাদতের সার্থকতা হল, মানুষকে পাপাচার থেকে দূরে রাখা এবং শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়ে তোলা। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হল, ইবাদতের কাক্সিক্ষত সেই সফলতা বাস্তবে পরিলক্ষিত হচ্ছে না। কারণ হল, আক্বীদা যদি শিরক মিশ্রিত হয় আর আমল যদি হয় বিদ‘আত মিশ্রিত, তাহলে গোটা যিন্দেগী আমলে ব্যস্ত থাকলেও তা প-শ্রম ছাড়া কিছুই হবে না। চারিত্রিক সংশোধন যেমন হবে না, তেমনি আধ্যাত্মিক উন্নয়ন সাধনেও প্রভাব ফেলবে না। দুনিয়াতে ঐ ইবাদত তাকে যেমন প্রভাবিত করছে না, তেমনি ক্বিয়ামতের বিভীষিকা ময়দানেও তাকে জাহান্নামের জ্বলন্ত উত্তপ্ত আগুন থেকে রক্ষা করবে না। মূলত বর্তমান ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি সহ সামগ্রিক এই অসুস্থ ও অস্থির প্রেক্ষাপটের জন্য শিরকী আক্বীদা বিশ্বাস ও বিদ‘আতী আমলই দায়ী। আর ইবাদত কবুলের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য শর্ত হল, ইখলাছপূর্ণ ছহীহ আক্বীদা ও রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর পরিপূর্ণ আনুগত্য। আরেকটি বাহ্যিক শর্ত হল- হালাল উপার্জন করা। দুঃখজনক বিষয় হল- আজ অধিকাংশ মানুষের মাঝে উক্ত ত্রিবিধ শর্তই অনুপস্থিত। অথচ ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তির একমাত্র মানদ- হল, মানুষ তার সামগ্রিক জীবনে খুলূছিয়্যাত বা একনিষ্ঠতার সাথে লা শারিক এক আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করবে তথা তাওহীদকে প্রতিষ্ঠা করবে এবং বিশ্বনবী মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে ও তাঁর বিশুদ্ধ সুন্নাতকে নিঃশর্তভাবে, মহব্বতের সাথে পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে অনুসরণ, অনুকরণ ও আদর্শ হিসাবে গ্রহণ করবে। কেননা এখানেই রয়েছে মুক্তির দরজা ও সামগ্রিক সফলতার চূড়ান্ত ঠিকানা। আল্লাহ তা‘আলা মুসলিম সমাজ থেকে শিরক-বিদ‘আতের বিষবাষ্পকে উচ্ছেদ করুন এবং মুসলিম উম্মাহকে হেফাযত করুন-আমীন!

(ইনশাআল্লাহ চলবে)



* শিক্ষক, আল-জামি‘আহ আল-ইসলামিয়্যাহ, খড়খড়ি, রাজশাহী।

[১]. ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল কাবীর, হা/১০৬১০; ইবনু আবীয যামিনীন, উছূলুস সুন্নাহ, পৃ. ১৫, আছার নং-১৩।

[২]. দারেমী, হা/৯৯; লালকাঈ, শারহু উছূলি ই‘তিকাদি আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আহ, ১ম খ-, পৃ. ৯৩, আছার নং-১২৯; মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী, আত-তাওয়াসসুলু আনওয়াউহু ওয়া আহকামুহ (বৈরূত : আল-মাকতাবুল ইসলামী, ৫ম সংস্করণ, ১৪০৬ হি./১৯৮৬ খ্রি.), পৃ. ৩০।

[৩]. দারেমী, হা/১৮৫, সনদ ছহীহ।

[৪]. মুসতাদরাক আলাছ ছহীহাইন, হা/৮৫৭০, সনদ ছহীহ।

[৫]. মুহাম্মাদ ইবনু জারীর আবূ জা‘ফর আত-তাবারী, জামিঊল বায়ান ফী তা’বীলিল কুরআন (বৈরূত: মুওয়াসসাসাতুর রিসালাহ, ১ম সংস্করণ, ১৪২০ হি./২০০০ খ্রি.), ১২শ খ-, পৃ. ২৭০।

[৬]. জামিঊল বায়ান ফী তা’বীলিল কুরআন, ১২শ খ-, পৃ. ২৭০।

[৭]. আব্দুর রহমান ইবনু নাছির আস-সা‘দী, তাইসীরুল কারীমির রহমান ফী তাফসীরি কালামিল মান্নান (বৈরূত: মুওয়াসসাসাতুর রিসালাহ, ১ম সংস্করণ, ১৪২০ হি./২০০০ খ্রি.), পৃ. ২৪২।

[৮]. আবূ আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ শামসুদ্দীন আল-কুরতুবী, আল-জামিঊ লি আহকামিল কুরআন (রিয়াদ: দারু ‘আলিমিল কুতুব, ১৪২৩ হি./২০০৩ খ্রি.), ৭ম খ-, পৃ. ১৪১৯; মুহাম্মাদ ইবনু আলী ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুল্লাহ আশ-শাওকানী, ফাৎহুল ক্বাদীর (দামেস্ক: দারু ইবনি কাছীর, ১ম সংস্করণ, ১৪১৪ হি.), ২য় খ-, পৃ. ২০৮।

[৯]. মুহাম্মাদ ইবনু ওয়াযাহ আল-কুরতুবী, আল-বিদাঊ ওয়ান নাহয়ু ‘আনহা (কায়রো : দারুছ ছাফা, ১ম সংস্করণ, ১৪১১ হি./১৯৯০ খ্রি.), পৃ. ৩৪; মুহাম্মাদ ইবনু খালীফাহ ইবনু আলী আত-তামীমী, হুকূকুন নবী (ﷺ) আলা উম্মাতিহি ফী যাউইল কিতাবি ওয়াস সুন্নাহ (রিয়াদ : আযওয়াউস সালাফ, ১ম সংস্করণ, ১৪১৮ হি./১৯৯৭ খ্রি.), ১ম খ-, পৃ. ২৩৩।

[১০]. আল-বিদাঊ ওয়ান নাহয়ু ‘আনহা, পৃ. ৩৪; হুকূকুন নবী (ﷺ) আলা উম্মাতিহি ফী যাউইল কিতাবি ওয়াস সুন্নাহ, ১ম খ-, পৃ. ২৩৪।

[১১]. লালকাঈ, শারহু উছূলি ই‘তিকাদি আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আহ, ১ম খ-, পৃ. ১৪১, আছার নং-২৮৪; আব্দুর রাযযাক ইবনু আব্দুল মুহসিন আল-বাদর, তাযকিরাতুল মু’তুসী শারহু আক্বীদাতিল হাফিয আব্দুল গানী আল-মাক্বদিসী (গাররাস লিন নাশর, ১ম সংস্করণ, ১৪২৪ হি./২০০৩ খ্রি.), পৃ. ১৭২।

[১২]. মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুল ওয়াহহাব আন-নাজদী, মাজমূ‘আতু রাসাইলি ফিত তাওহীদ ওয়াল ঈমান (রিয়াদ : জামি‘আতুল ইমাম মুহাম্মাদ ইবনু সাঊদ, তাবি), পৃ. ৩৮৬।

[১৩]. দারেমী, হা/৩৯১, সনদ ছহীহ; ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল, আস-সুন্নাহ (দাম্মাম : দারু ইবনিল ক্বাইয়িম, ১ম সংস্করণম, ১৪০৬ হি./১৯৮৬ খ্রি.), ১ম খ-, পৃ. ১৩৩, আছার নং-৯৯।

[১৪]. লালকাঈ, শারহু উছূলি ই‘তিকাদি আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আহ, ১ম খ-, পৃ. ১৩৮, আছার নং-২৬৫; আবূ সাহল মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুর রহমান আল-মাগরাবী, মাওসূ‘আতু মাওক্বিফুস সালাফি ফিল আক্বীদাতি ওয়াল মাজহাজি ওয়াত তারবিয়াতি (কায়রো : আল-মাকতাবাতুল ইসলামী, ১ম সংস্করণ, তাবি), ৩য় খ-, পৃ. ৯৭।

[১৫]. লালকাঈ, শারহু উছূলি ই‘তিকাদি আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আহ, ১ম খ-, পৃ. ১৩৭, আছার নং-২৬১।

[১৬]. লালকাঈ, শারহু উছূলি ই‘তিকাদি আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আহ, ১ম খ-, পৃ. ১৩৮, আছার নং-২৬৩।

[১৭]. লালকাঈ, শারহু উছূলি ই‘তিকাদি আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আহ, ১ম খ-, পৃ. ১৩৮, আছার নং-২৬৪।

[১৮]. লালকাঈ, শারহু উছূলি ই‘তিকাদি আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আহ, ১ম খ-, পৃ. ১৩৬, আছার নং-২৫২।

[১৯]. ইবনু হাজার আসক্বালানী, ফাৎহুল বারী শারহু ছহীহিল বুখারী, ১০ম খ-, পৃ. ৪৭১-৪৭২, ৭ম খ-, পৃ. ৮৬; ইমাম নববী, শারহু ছহীহ মুসলিম, ১৬শ খ-, পৃ. ১৪২।

[২০]. মুহাম্মাদ ইবনু ছালিহ আল-উছায়মীন, শারহু রিয়াযিছ ছালিহীন (রিয়াদ : দারুল ওয়াত্বান লিন নাশর, ১৪২৬ হি.), ৬ষ্ঠ খ-, পৃ. ১৩৪-১৩৬।




মসজিদ: ইসলামী সমাজের প্রাণকেন্দ্র (৩য় কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় যুবসমাজ - ড. মেসবাহুল ইসলাম
ইসলামী জামা‘আতের মূল স্তম্ভ (১৩তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ মুছলেহুদ্দীন
ইসলামে রোগ ও আরোগ্য - মুকাররম বিন মুহসিন মাদানী
দুর্নীতি হ্রাসে শিক্ষার ভূমিকা - মোঃ শফিকুল ইসলাম
সূদ-ঘুষ ও অবৈধ ব্যবসা (৩য় কিস্তি) - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
হজ্জ ও ওমরাহ সম্পর্কে প্রচলিত বিদ‘আতসমূহ - মুকাররম বিন মুহসিন মাদানী
ইসলামে কথা বলার নীতি : একটি তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ - ড. মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ
ইখলাছই পরকালের জীবনতরী (৬ষ্ঠ কিস্তি) - আব্দুল গাফফার মাদানী
ইসলামে পর্দার বিধান - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
ইখলাছই পরকালের জীবনতরী (৩য় কিস্তি) - আব্দুল গাফফার মাদানী
বিদ‘আত পরিচিতি (৫ম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ বযলুর রহমান

ফেসবুক পেজ