ইসলামে কথা বলার নীতি : একটি তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ
-ড. মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ*
কথা ভাব বিনিময়ের এক শক্তিশালী মাধ্যম। কথা ছাড়া কোন কাজ হয় না। মানুষের জীবনে চলার জন্য, প্রয়োজনীয় কাজ সুচারুরূপে করার জন্য কথা এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। জগতের সৃষ্টিশীল সবকিছুর নির্মাণ ও জীবন-যাপনের সকল সৌন্দর্য কথার উপর নির্ভর করে। কথা বলার জন্য শব্দ প্রয়োগের তারতম্য ও এর যথাযথ ব্যবহার প্রত্যাশিত সফলতা নিশ্চিত করে। কখনো কখনো শব্দ প্রয়োগের অযতœায়ন ব্যক্তির ব্যর্থতাকে অনিবার্য করে তোলে। এই জন্যই বলা হয়ে থাকে সুন্দর করে কথা বলা একটি আর্ট বা শিল্প। যে যতবেশি এ শিল্প রপ্ত করে ব্যবহারিক জীবনে প্রয়োগ করেছে সে ততবেশি উদ্দেশ্য সাধনে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। কথা বলার সময়ে শব্দ বা বাক্য এবং সুর ও ছন্দ একটু এদিক সেদিক হলে, এর জন্য কখনো কখনো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে চড়া মূল্য দিতে হয়। প্রত্যাশিত লক্ষ্য আর ঘরে তোলা যায় না। সময়, পরিবেশ ও যার সাথে কথা বলা হচ্ছে তার মনোজাগতিক অবস্থা ছাড়াও বিভিন্ন অঙ্গ-ভঙ্গী, এ্যাটিচিউড ও সাউন্ডের কম্বিনেশন এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সুন্দর ও ঠিকমতো কথার উপস্থাপনই লক্ষ্য হাসিলের সবচেয়ে কার্যকর উপাদান।
কারো কথার আঘাতে কষ্ট পেলে সে স্মৃতি মানুষ মনে রাখে, সে কখনো তা ভুলে না। বয়ে বেড়ায় আজীবন; সময়-সুযোগ পেলেই প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে তা বলে বেড়ায় বংশ পরম্পরায়। যুগের পর যুগ তা স্মৃতির অলিন্দে স্থায়ীভাবে স্থান করে নেয়। রাগে, ক্ষোভে, দুঃখে, ঘৃণায় ও অভিমানে রোমন্থন করে সেই স্মৃতি। এই জন্য আরবী প্রবাদ আছে, জারাহাতুস সিনানে লাহাল ইলতিয়াম; ওয়ালা ইয়ালতামু মা জারাহাল্লিসান ‘কথার ঘা শুকায় না; মাইরের ঘা শুকায়’ (শারহে কাফিয়া)। ব্যাথা-বেদনা ও দুর্ভোগমাখা ফেলে আশা জীবনের কষ্টের কথা মানুষ বেমালুম ভুলে যায়; তেমন একটা মনে রাখে না। কিন্তু কথার ব্যাথা এবং এর বহুমাত্রিক বিশ্লেষণ করতে থাকে অহর্নিশ, চলতে থাকে আজীবন।
আবার একটি কথা যদি মমতা মাখানো হয়, ¯েœহের পরশে রঙিন হয়, সুন্দর-মায়াবি শব্দ প্রয়োগে ও দয়া-আন্তরিকতার চাদরে আবৃত শব্দ প্রয়োগে হয়, মানুষ কখনো তা ভুলে না; মনে রাখে আজীবন, তা দাগ কাটে মনে, জীবনের দেয়ালে স্থান করে নেয় সে কথা। যাপিত জীবনে কখনো কোন দুর্ভোগে কোন আর্থিক সহযোগিতার চেয়ে ভালো কথা দিয়ে, সুন্দর আইডিয়া দিয়ে কাউকে সঠিক পথে পরামর্শ দিলে অনেক সময় তা কালজয়ী হয়ে উঠে।
একটি ভাল কথা শুধু সুন্দর পরিবেশ তৈরিতে অনবদ্য ভূমিকাই রাখে না বরং এর দ্বারা কার্যসিদ্ধ হয় সহজভাবে। এ জন্যই ইসলামে কথা বলার আদব বা শিষ্টাচার বর্ণিত হয়েছে মহান আল্লাহ পাকের বাণী অহির বিধান মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে ও মহানবী (ﷺ)-এর বর্ণিত বিভিন্ন হাদীছে। তার প্রথমটি হল কথা বলার পূর্বে সম্ভাষণ করা। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যা মনোযোগ আকর্ষণে ও বক্তা-¯্রােতার মাঝে ইতিবাচক পরিবেশ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এ জন্য মহান আল্লাহ কথা বলার পূর্বে প্রথমে সালাম দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
فَاِذَا دَخَلۡتُمۡ بُیُوۡتًا فَسَلِّمُوۡا عَلٰۤی اَنۡفُسِکُمۡ تَحِیَّۃً مِّنۡ عِنۡدِ اللّٰہِ مُبٰرَکَۃً طَیِّبَۃً ؕ کَذٰلِکَ یُبَیِّنُ اللّٰہُ لَکُمُ الۡاٰیٰتِ لَعَلَّکُمۡ تَعۡقِلُوۡنَ.
‘যখন তোমরা গৃহে প্রবেশ কর, তখন তোমাদের স্বজনদের প্রতি সালাম করবে অভিবাদন স্বরূপ যা আল্লাহর নিকট হতে কল্যাণময় ও পবিত্র; এইভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর নির্দেশ বিশদভাবে বর্ণনা করেন যাতে তোমরা বুঝতে পার’ (সূরা আন-নূর : ৬১)।
সালাম মানে অন্যের কল্যাণকামিতার ঘোষণা প্রদান করা। এই ঘোষণা বক্তা-¯্রােতার মাঝে আন্তরিক সহমর্মিভাব তৈরি করে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সাদর সম্ভাষণ বা সালাম বিনিময়ের ব্যাপারে বিভিন্ন হাদীছে অনেক গুরুত্বারোপ করেছেন। এক মুসলিমের জন্য অপর মুসলিমের ছয়টি হক্ব বা অধিকারের প্রথমটি হল দেখা হলে সালাম দেয়া, তারপর কথা শুরু করা।[১]
কথা শুরু করা বা বক্তব্য প্রদানে সতর্কতা অবলম্বনের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। সচেতনতা ও সতর্কতার সাথে কথা বললে মানুষ বিভিন্ন অপ্রত্যাশিত বিষয়ের থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারে। তাছাড়া প্রত্যেকটি কথা আল্লাহ তা‘আলার নিয়োগপ্রাপ্ত ফেরেশতাগণ লিপিবদ্ধ করে রাখেন। তা রেকর্ডভুক্ত হয়ে দলীল হিসাবে সংরক্ষিত হয় (সূরা ক্বা’ফ : ১৮)। শব্দ প্রয়োগ ও সুন্দরভাবে বক্তব্য উপস্থাপনের প্রতি খেয়াল করা বা কথা বলার আদব বর্ণনা সংক্রান্ত নির্দেশনা মহান আল্লাহ আল-কুরআনে দিয়েছেন। এই জন্যই সুন্দরভাবে ও উত্তমরূপে কথা বলতে, ভাব বিনিময় করতে বলা হয়েছে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ قُوۡلُوۡا لِلنَّاسِ حُسۡنًا ‘মানুষের সঙ্গে সদালাপ করবে’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ৮৩)।[২]
ব্যক্তিগত জীবনে সদালাপি লোকদের সকলে ভালোবাসে ও পসন্দ করে। কথা বলার সময়ে ইচ্ছায় হোক অনিচ্ছায় হোক অনেকে আমরা অপ্রয়োজনীয় বা ইরিভিলেন্ট কথা, অনর্থক ও বাজে কথা মুখ ফসকে বলে ফেলি। তর্কের খাতিরে বা নিজের মতকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে অনেক কথায়ই বলা হয়। কথা বলার সময়ে হয়ত কথার ধারাবাহিকতায় মনে থাকে না বা সচেতন থাকি না। পরে মনে হয়, এ কথাটা না বললে ভাল ছিল। এজন্য ইসলামে অপ্রয়োজনীয় কথা বলা পরিহার করতে বলা হয়েছে। সূরা আল-মুমিনূনে সফলকাম ব্যক্তিদের দীর্ঘ একটি তালিকা দয়াময় প্রভু উপস্থাপন করেছেন।[৩] তৃতীয় নম্বরটি হল-
وَ الَّذِیۡنَ ہُمۡ عَنِ اللَّغۡوِ مُعۡرِضُوۡنَ.
‘যারা অপ্রয়োজনীয় কথা বা অসার ক্রিয়াকলাপ হতে নিজেদের বিরত রাখে’ (সূরা আল-মুমিনূন : ৩)।[৪]
কথা বলার সময়ে শব্দ প্রয়োগের পাশাপাশি কণ্ঠস্বরের উঠানামাও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভাল কথা কর্কশভাবে বললেও ¯্রােতা সহজভাবে সেটা নেয় না। প্রয়োজনীয় কাজে উদ্দেশ্য সফল হয় না। তাই কণ্ঠস্বরের ম্যাকানিজম কথা বলার প্রয়োজনকে সফলতার প্রান্তসীমায় নিয়ে যায়। আল-কুরআনে এই জন্যই কথা বলার সময়ে কণ্ঠস্বর নিচু করে কথা বলতে নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَ اقۡصِدۡ فِیۡ مَشۡیِکَ وَ اغۡضُضۡ مِنۡ صَوۡتِکَ ؕ اِنَّ اَنۡکَرَ الۡاَصۡوَاتِ لَصَوۡتُ الۡحَمِیۡرِ .
‘পদচারণায় মধ্যবর্তিতা অবলম্বন কর এবং কন্ঠস্বর নিচু কর। নিঃসন্দেহে গাধার স্বরই সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর’ (সূরা লোকমান : ১৯)। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَرۡفَعُوۡۤا اَصۡوَاتَکُمۡ فَوۡقَ صَوۡتِ النَّبِیِّ وَ لَا تَجۡہَرُوۡا لَہٗ بِالۡقَوۡلِ کَجَہۡرِ بَعۡضِکُمۡ لِبَعۡضٍ اَنۡ تَحۡبَطَ اَعۡمَالُکُمۡ وَ اَنۡتُمۡ لَا تَشۡعُرُوۡنَ . اِنَّ الَّذِیۡنَ یَغُضُّوۡنَ اَصۡوَاتَہُمۡ عِنۡدَ رَسُوۡلِ اللّٰہِ اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ امۡتَحَنَ اللّٰہُ قُلُوۡبَہُمۡ لِلتَّقۡوٰی ؕ لَہُمۡ مَّغۡفِرَۃٌ وَّ اَجۡرٌ عَظِیۡمٌ.
‘হে মুমিনগণ! তোমরা নবীর কন্ঠস্বরের উপর তোমাদের কন্ঠস্বর উঁচু করো না এবং তোমরা একে অপরের সাথে যেরূপ উঁচুস্বরে কথা বল, তাঁর সাথে সেরূপ উঁচুস্বরে কথা বলো না। এতে তোমাদের কর্ম নিষ্ফল হয়ে যাবে এবং তোমরা টেরও পাবে না। যারা আল্লাহর রাসূল (ﷺ)-এর সামনে নিজেদের কন্ঠস্বর নিচু করে, আল্লাহ তাদের অন্তরকে শিষ্টাচারের জন্য শোধিত করেছেন। তাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার’ (সূরা আল-হুজুরাত : ২-৩)।
অন্যদিকে বুদ্ধি খাটিয়ে বিচক্ষণতার সাথে কথা বলা হল কার্যকর পদ্ধতি। তা অন্যের মনোযোগ আকর্ষণের পাশাপাশি অর্থবহ আইডিয়া শেয়ারিংকে নিশ্চিত করে। সূরা নাহলে এই মর্মে নির্দেশনা রয়েছে (সূরা আন-নাহল :১২৫)। কথা বলার সময়ে সঠিক কথা বলা শুধু ব্যক্তিত্ববোধ তৈরিতেই অনবদ্য ভূমিকা পালন করে না; বরং দীর্ঘস্থায়ী পারস্পরিক সম্পর্কের মেলবন্ধনে নিয়ামক শক্তি হিসাবে কাজ করে। আর তাইতো আল্লাহ তা‘আলা বলেন,یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰہَ وَ قُوۡلُوۡا قَوۡلًا سَدِیۡدًا ‘হে বিশ্বাসীগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং সঠিক কথা বল’ (সূরা আল-আহযাব : ৭০)। সঠিক কথা বলতেও আন্তরিকতার প্রলেপ এবং মোলায়েম ভাষা প্রয়োগ করা প্রয়োজন। কেননা, কর্কশ ভাষায় সঠিক কথাও অনেক সময়ে ¯্রােতা বা যার সাথে কথা বলা হচ্ছে তিনি ইতিবাচকভাবে নিতে চান না। এজন্যই কথা বলার সময়ে কর্কশভাষা পরিহারের ইসলামে নির্দেশা রয়েছে।[৫] আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ اقۡصِدۡ فِیۡ مَشۡیِکَ وَ اغۡضُضۡ مِنۡ صَوۡتِکَ ؕ اِنَّ اَنۡکَرَ الۡاَصۡوَاتِ لَصَوۡتُ الۡحَمِیۡرِ ‘পদচারণায় মধ্যবর্তিতা অবলম্বন কর এবং কন্ঠস্বর নিচু কর। নিঃসন্দেহে গাধার স্বরই সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর’ (সূরা লোকমান : ১৯)।
নিজের উদ্দেশ্য সাধনের জন্য কথা বলার সময়ে কখনো ভাল-মন্দ মিশ্রণ করা ঠিক নয়। বরং কঠিন হলেও পরিস্থিতি নিজের প্রতিকূলে গেলেও সত্যাশ্রয়ী এবং উত্তমের সাথে লিন হয়ে সর্বোত্তম কথা বলা উচিত। এতে দীর্ঘস্থায়ী কল্যাণ নিহিত থাকে। এই জন্যই আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَ لَا تَسۡتَوِی الۡحَسَنَۃُ وَ لَا السَّیِّئَۃُ ؕ اِدۡفَعۡ بِالَّتِیۡ ہِیَ اَحۡسَنُ فَاِذَا الَّذِیۡ بَیۡنَکَ وَ بَیۡنَہٗ عَدَاوَۃٌ کَاَنَّہٗ وَلِیٌّ حَمِیۡمٌ.
‘ভাল ও মন্দ সমান হতে পারে না। মন্দ প্রতিহত কর উৎকৃষ্ট দ্বারা; ফলে তোমার সাথে যার শত্রুতা আছে, সে হয়ে যাবে অন্তরঙ্গ বন্ধুর মত’ (সূরা হা-মীম-আস-সাজদাহ : ৩৪)।
কথা বলার সময়ে মনে রাখা দরকার, যে বিষয়ের কথা হচ্ছে সে বিষয়ে কাজটা কেমন হবে। কথা ও কাজে মিল রাখা বা মিল থাকবে কিনা। প্রতিশ্রুতি দিয়ে পালন করতে পারব কিনা; অথবা যা বলছি নিজে এর সাথে একমত কিনা; নিজে পালন করব কী না? সাময়িক কিছু পাওয়া বা লাভের আশায় লুকানো চেতনাকে আড়াল করে কথা বললে পরবর্তিতে লজ্জিত হতে হয়। সময়ের ব্যবধানে প্রকাশ পেয়ে যায় কথা ও কাজের যোজন যোজন পার্থক্য। ইসলামে এই বিষয়কে সাংঘাতিকভাবে সম্বোধন করা হয়েছে। মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে বলা হয়েছে, یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لِمَ تَقُوۡلُوۡنَ مَا لَا تَفۡعَلُوۡنَ ‘তোমরা এমন কথা কেন বল, যা তোমরা কর না? এটা কতই না নিন্দনীয় ব্যাপার যে তোমরা যা করছ না তা বলছ!’ (সূরা আছ-ছাফ্ফ : ২)। কথা বলার সময়ে সতর্ককথা খুবই প্রয়োজন, সেটা যে লেভেলের লোকের সাথেই কথা বলা হোক না কেন। কথা যেমন যাদুর মত কাজ করে, ঠিক কথায়ই কাল হয়ে যায়।
কথা যেমন কাজের অনিবার্যতা তৈরি করে; কর্মপরিবেশ ঠিক করে; ঠিক কথার কারণে সব কিছু অনিশ্চিত হয়ে যায়; সাজানো গুছানো অবস্থা নিমেষেই এলোমেলো হয়ে যায়। মুমিনের একটি কথা বা আইডিয়া প্রদান যেমন ছাদাক্বাহ ও বারাকাহ হয়, ঠিক কথাই পাপের বা হতাশার অনুরণন তৈরি করে। এই জন্য বাক্যালাপে সচেতন হওয়া বাঞ্চনীয়। কথা বলার সময়ে মূর্খ বা যারা যে বিষয়ের উপযুক্ত নয় তাদের সাথে ঐ বিষয়ে বাক্যালাপ না করে বরং এড়িয়ে যাওয়াই উত্তম (সূরা আল-ফুরক্বান : ৬৩)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ عِبَادُ الرَّحۡمٰنِ الَّذِیۡنَ یَمۡشُوۡنَ عَلَی الۡاَرۡضِ ہَوۡنًا وَّ اِذَا خَاطَبَہُمُ الۡجٰہِلُوۡنَ قَالُوۡا سَلٰمًا ‘রহমান-এর বান্দা তারাই, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাদের সাথে যখন মূর্খরা কথা বলতে থাকে, তখন তারা বলে, সালাম’ (সূরা আল-ফুরক্বান : ৬৩)।
কথা আমানত, কথা হাতিয়ার, কথা একটি অনিবার্য রূপান্তর ও আসন্ন বিপ্লব। সুতরাং কথা বলতে হবে চিন্তা করে, হিসাব কষে, বুদ্ধিমত্তার সাথে। প্রযুক্তির গগনচুম্বি উৎকর্ষ সাধনের এই যুগে কথা বলতে হবে আরো যতœায়নে। টেকনোলজি সব সংরক্ষণ করে রাখে। সময়ে অসময়ে ঘোর বিপদের কারণ হতে পারে আপনার মুখনিসৃত একটি দু’টি কথাই। মহান আল্লাহ আমাদেরকে আল-কুরআন ও ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী সঠিক ভাবে আমল বা ইসলাম চর্চা করার তাওফীক্ব দান করুন-আমীন!!
* সহকারী অধ্যাপক (বিসিএস সাধারণ শিক্ষা), সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া, ঢাকা।
[১]. ছহীহ মুসলিম, হা/২১৬২।
[২]. ছহীহ বুখারী, হা/১৪১৩।
[৩]. সূরা আল-মুমিনূন : ১-১১।
[৪]. ছহীহ বুখারী, হা/৩৫৫৯।
[৫]. তিরমিযী, হা/৪৮৫৯।
প্রসঙ্গসমূহ »:
শিষ্টাচার