রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ১০:২২ অপরাহ্ন

নৈতিক মূল্যবোধ বিকাশে ধর্মের ভূমিকা

-ড. মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ*


(শেষ কিস্তি) 

সামাজিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় ধর্ম

১. অধিকারে হস্তক্ষেপ

সব মানুষেরই কিছু না কিছু অধিকার আছে। এ সকল অধিকার সম্পর্কে আল-কুরআনে সবিস্তারে আলোচনা হয়েছে। উত্তরাধিকার সম্পত্তি বণ্টন, বিবাহ, ত্বালাক্ব ও অন্যান্য প্রতিটি বিষয়ে আল্লাহ তার সীমা নির্ধারণ করে দিয়ে সে গুলোতে হস্তক্ষেপ করার পথ বন্ধ করে দিয়েছেন। এ সমস্ত বিস্তারিত বিবরণ হাদীছে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, تِلۡکَ حُدُوۡدُ اللّٰہِ فَلَا تَعۡتَدُوۡہَا ۚ وَ مَنۡ یَّتَعَدَّ حُدُوۡدَ اللّٰہِ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الظّٰلِمُوۡنَ ‘এ হচ্ছে আল্লাহর নির্ধারিত সীমা, অতএব একে লংঘন করো না। যে ব্যক্তি আল্লাহর নির্ধারিত সীমালংঘন করে, সেই জালিম’ (সূরা আল-বাক্বারা: ২২৯)। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, الْمُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ ‘মুসলিম সেই ব্যক্তি, যার মুখ ও হাত থেকে অন্য মুসলিম নিরাপদ থাকে’।[১]

২. দেহ ও প্রাণের নিরাপত্তা

প্রত্যেক ধর্মেই অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যাকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। আল-কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘কেউ কোন মানুষকে হত্যা করলে সে যেন গোটা মানবজাতিকেই হত্যা করল’ (সূরা আল-মায়েদাহ : ৩২)। তিনি আরো বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোন বিশ্বাসীকে ইচ্ছাকৃত হত্যা করবে, তার পুরস্কার হচ্ছে জাহান্নাম। সেখানে সে চিরদিন থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি গযব ও লা‘নত বর্ষণ করেছেন এবং তার জন্য নির্দিষ্ট করেছেন কঠোরতর শাস্তি’ (সূরা আন-নিসা : ৯৩)। হাদীছে এসেছে, سِبَابُ الْمُسْلِمِ فُسُوْقٌ وَقِتَالُهُ كُفْرٌ ‘মুসলিমকে গালি দেয়া ফাসেকী আর তার সঙ্গে লড়াই করা হচ্ছে কুফুরী’।[২]

৩. কটু ভাষণ ও গালি-গালাজ করা

কোন ভাইকে সাক্ষাতে গালাগাল করা, তার সঙ্গে কটুভাষায় কথা বলা এবং তাকে ঠাট্টা-বিদ্রƒপ করা ধর্মে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অনুরূপভাবে বিকৃত নামে ডাকাও এর আওতায় আসে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই যালেম’ (সূরা আল-হুজুরাত : ১১)। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ الْجَوَّاظُ وَلَا الْجَعْظَرِىُّ ‘কোন কটুভাষী ও বদ-স্বভাব বিশিষ্ট ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না’।[৩] তিনি আরো বলেন, لَيْسَ الْمُؤْمِنُ بِالطَّعَّانِ وَلَا اللَّعَّانِ وَلَا الْفَاحِشِ وَلَا الْبَذِىءِ ‘ঈমানদারগণ বিদ্রƒপকারী হয় না, অভিসম্পাতকারী হয় না, অশ্লীলভাষী হয় না এবং বাচালও হয় না’।[৪] বেদে বলা হয়েছে, ‘কর্কশস্বরে কথা বলো না, তিক্ত কথা যেন মুখ ফসকে বেরিয়ে না যায়’।[৫] ‘ধম্মপদে’ বলা হয়েছে, ‘কাউকে কটু কথা বলবে না। কারণ সে-ও কটু প্রত্যুত্তর দিতে পারে। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় তোমার জন্যও কষ্ট দায়ক হবে। দ-ের প্রতিদ- তোমাকেও স্পর্শ করবে’।[৬]

৪. গীবত ও চোগলখুরী

সত্য হলেও কারো পেছনে তার নিন্দাবাদকে গীবত বলে। আল-কুরআন ‘গীবত’-কে আপন মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَ لَا یَغۡتَبۡ بَّعۡضُکُمۡ بَعۡضًا ؕ اَیُحِبُّ  اَحَدُکُمۡ  اَنۡ یَّاۡکُلَ  لَحۡمَ اَخِیۡہِ  مَیۡتًا فَکَرِہۡتُمُوۡہُ ؕ  وَ اتَّقُوا اللّٰہَ ؕ اِنَّ  اللّٰہَ  تَوَّابٌ  رَّحِیۡمٌ.

‘তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত ভক্ষণ করা পসন্দ করবে? বস্তুত তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু’ (সূরা আল-হুজুরাত : ১২)। গীবতের একটি বিশেষ গুণ হচ্ছে চোগলখুরী। আল-কুরআন এর নিন্দা করতে গিয়ে বলেন, ‘যে পশ্চাতে নিন্দা করে, একের কথা অপরের নিকট লাগিয়ে ফিরে’ (সূরা আল-ক্বালাম : ১১)। ছাহাবী হুজায়ফা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَتَّاتٌ ‘আমি রাসূল (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি যে, চোগলখোর জান্নাতে প্রবেশ করবে না’।[৭]

৫. মিথ্যা দোষারোপ করা

আপন ভাই ও বন্ধুকে তার সাক্ষাতে বা অন্য কোন লোকের সামনে তার দোষ-ত্রুটির জন্য লজ্জা দেয়া এবং এভাবে তার অবমাননা করা অপরাধ মূলক কর্মকা-। এটি দুষ্কৃতিরই একটি গুরুতর বিপর্যয় সৃষ্টিকারী রূপ। আল-কুরআনে বলা হয়েছে, وَ لَا تَلۡمِزُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ ‘তোমরা নিজেদের এক অপরের মাঝে দোষারোপ কর না’ (সূরা আল-হুজুরাত : ১১)।

৬. মিথ্যা

মানুষের মৌলিক বর্জনীয় গুণাবলীর অন্যতম হল মিথ্যা কথা বলা। যা সকলের কাছেই অপসন্দনীয়।। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ اجۡتَنِبُوۡا  قَوۡلَ  الزُّوۡرِ ‘আর তোমরা মিথ্যা থেকে দূরে থাক’ (সূরা আল-হজ্জ : ৩০)। ‘ধম্মপদে’ বলা হয়েছে, ‘মিথ্যাবাদী, ধর্মলঙ্ঘনকারী ও পরলোকে অবিশ্বাসী ব্যক্তি যে কোন পাপকাজ করতে পারে’।[৮] হাদীছে এসেছে, ‘মিথ্যা সকল পাপের জননী’।[৯]

৭. ছিদ্রান্বেষণ করা

কারো দোষ খুঁজে বেড়ানো। আল-কুরআনে বলা হয়েছে, ‘আর কারো দোষ খুঁজে বেড়িয়ো না’ (সূরা আল-হুজুরাত : ১২)। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘তাদের দোষ খুঁজে বেড়িয়ো না। কারণ যে ব্যক্তি তার কোন মুসলিম ভাইয়ের গোপন দোষ ও গুনাহ খুঁজতে থাকে, আল্লাহ তার গোপন দোষ ফাঁস করতে লেগে যান। আল আল্লাহ যার দোষ প্রকাশ করতে লেগে যান, তাকে তিনি অপমান করেই ছাড়েন, সে তার ঘরের মধ্যে লুকিয়ে থাকুক না কেন’।[১০]

৮. উপহাস করা

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘মুমিনগণ, কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে’ (সূরা আল-হুজুরাত : ১১)। রাসূল (ﷺ) বলেন. مَا أُحِبُّ أَنِّىْ حَكَيْتُ أَحَدًا وَأَنَّ لِى كَذَا وَكَذَا ‘আমি কারো ব্যঙ্গ করাকে পসন্দ করি না। তার বিনিময়ে আমাকে অমুক অমুক জিনিস দেয়া হোক না কেন (অর্থাৎ যে কোন বৈষয়িক নে‘মত)’।[১১]

৯. তুচ্ছজ্ঞান করা

অন্যকে তুচ্ছজ্ঞান করা বা উপহাস করা থেকে বিরত রাখার ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা এই মর্মে ইঙ্গিত প্রদান করেছেন যে, মানুষ যদি চিন্তা করে দেখে যে তার ভাই তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ হতে পারে, তবে সে কখনো তাকে বিদ্রƒপ করবে না। তিনি বলেন, عَسٰۤی اَنۡ یَّکُوۡنُوۡا خَیۡرًا لَكُمْ ‘হতে পারে সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম’ (সূরা আল-হুজুরাত : ১১)। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, بِحَسْبِ امْرِئٍ مِنَ الشَّرِّ أَنْ يَحْقِرَ أَخَاهُ الْمُسْلِمَ ‘এক ব্যক্তির গোনাগার হওয়ার জন্য এতটুকু যথেষ্ট যে, সে তার মুসলিম ভাইকে নীচ জ্ঞান করে’।[১২] অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘একটি ধ্বংসকারী জিনিস হচ্ছে নিজেকে নিজে বুজুর্গ ও শ্রেষ্ঠতম মনে করা আর এটা হচ্ছে নিকৃষ্টতম অভ্যাস’।[১৩]

১০. নিকৃষ্ট অনুমান করা

আল-কুরআনে বলা হয়েছে, یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ  اٰمَنُوا اجۡتَنِبُوۡا کَثِیۡرًا مِّنَ الظَّنِّ ۫ اِنَّ  بَعۡضَ الظَّنِّ   اِثۡمٌ ‘হে বিশ্বাসীরা! বহু অনুমান থেকে তোমরা বেঁচে থাক, নিঃসন্দেহে কোন কোন অনুমান হচ্ছে গুনাহ’ (সূরা আল-হুজুরাত : ১২)। রাসূল (ﷺ) তাঁর সঙ্গীদের নিম্মোক্ত ভাষায় বলেছেন, إِيَّاكُمْ وَالظَّنَّ فَإِنَّ الظَّنَّ أَكْذَبُ الْحَدِيثِ ‘তোমরা অনুমান পরিহার করো, কেননা অনুমান হচ্ছে নিকৃষ্টতম মিথ্যা কথা’।[১৪]

১১. অপবাদ দেয়া

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ مَنۡ یَّکۡسِبۡ خَطِیۡٓىـَٔۃً اَوۡ اِثۡمًا ثُمَّ یَرۡمِ بِہٖ بَرِیۡٓــًٔا فَقَدِ احۡتَمَلَ بُہۡتَانًا وَّ اِثۡمًا مُّبِیۡنًا ‘যে ব্যক্তি ভুল কিংবা গোনাহ করে, অতঃপর কোন নিরপরাধের উপর অপবাদ আরোপ করে সে নিজের মাথায় বহন করে জঘন্য মিথ্যা ও প্রকাশ্য গোনাহ’ (সূরা আন-নিসা : ১১২)।

১২. মনোকষ্ট

কোন মুসলিমের দ্বারা তার ভাইয়ের মন যাতে কষ্ট না পায় অথবা তার অনুভূতিতে আঘাত না লাগে সেদিকে সর্বদা খেয়াল রাখতে হবে। রাসূল (ﷺ) বলেছেন,

إِذَا كُنْتُمْ ثَلَاثَةً فَلَا يَتَنَاجَى اثْنَانِ دُوْنَ الْآخَرِ حَتَّى تَخْتَلِطُوْا بِالنَّاسِ مِنْ أَجْلِ أَنْ يُحْزِنَهُ.

‘যখন তিন ব্যক্তি একত্রিত হবে, তখন দু’জনে কোন কানালাপ করবে না। অবশ্য অনেক লোক যদি জমায়েত হয়, তবে এমন করা যেতে পারে। এর কারণ হল, এই ভয়ে সে দুশ্চিন্তায় পড়ে যাবে’।[১৫] তিনি আরো বলেন, لَا يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يُرَوِّعَ مُسْلِمًا ‘কোন মুসলিমকে হাসি-তামাশার মাধ্যমে উত্যক্ত করা মুসলিমের পক্ষে হালাল নয়’।[১৬]

১৩. ধোঁকা দেয়া

ধোঁকা দেয়া মারাত্মক অপরাধ। এর মাধ্যমে বন্ধুত্ব, ভালোবাসা ও পারস্পরিক আস্থা-বিশ্বাস নষ্ট হয়ে যায়। বৈষয়িক জীবনে আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত হতে হয়। এজন্য ধোঁকা প্রদানকারীকে ইসলামের গ-ি বহির্ভূত গণ্য করা হয়েছে। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, مَنْ غَشَّ فَلَيْسَ مِنِّى ‘যে ব্যক্তি ধোঁকা দেয় বা প্রতারণা করে সে আমার (উম্মতে মুহাম্মাদীর) অন্তর্ভুক্ত নয়’।[১৭]

১৪. হিংসা

হিংসা ও ঈমান একসাথে থাকতে পারে না। মানব সমাজে এটি একটি মারাত্মক ব্যাধি। বিদ্বেষ ও শত্রুতা, ব্যক্তিগত অহমিকা ও অপরের সম্পর্কে হীনমন্যতাবোধ, অন্যকে অনুগত বানানোর প্রেরণা, কোন সম্মিলিত কাজে নিজের ব্যর্থতা ও অপরের সাফল্য লাভ, আবার কখনো শুধু মান-ইজ্জত লাভের আকাক্সক্ষাই হিংসার মূল কারণ। ইমাম কুরতুবী ঢ় বলেন, وَالْحَسَدُ مَذْمُوْمٌ وَصَاحِبُهُ مَغْمُوْمٌ وَهُوَ يَأْكُلُ الْحَسَنَاتِ كَمَا تَأْكُلُ النَّارُ الْحَطَبَ ‘হিংসা নিন্দনীয় এবং হিংসুক ব্যক্তি সর্বদা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। হিংসা সকল নেকী খেয়ে ফেলে যেমন আগুন কাঠকে খেয়ে ফেলে’।[১৮] রাসূল (ﷺ) বলেন, ‘কারো দোষ খুঁজে বেড়িয়ো না, কারো ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি করো না, পরস্পরে হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করো না, পরস্পর শত্রুতা রেখো না, পরস্পর সম্পর্কহীন থেকো না, পরস্পরে লোভ-লালসা করো না বরং আল্লাহর বান্দা ও ভাই-ভাই হয়ে থাকো’।[১৯] ‘ধম্মপদে’ বলা হয়েছে, ‘রাগের ন্যায় আগুন নেই, হিংসার ন্যায় গ্রাসকারক নেই, মোহের ন্যায় জাল নেই, আসক্তির ন্যায় খর¯্রােতা নেই’।[২০]

সম্পর্ককে দৃঢ়তর করার বৈশিষ্ট্যাবলী

১.    মান-ইজ্জতের নিরাপত্তা

মান-সম্মান ও ইজ্জতের নিরাপত্তা মুসলিমদের মৌলিক অধিকারে অন্তর্ভুক্ত। এটা ইসলাম স্বীকৃত একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিপদে মানুষকে সহযোগিতা করা তার ইজ্জত রক্ষার অন্যতম দিক। রাসূল (ﷺ) বলেন,

مَنْ نَفَّسَ عَنْ مُؤْمِنٍ كُرْبَةً مِّنْ كُرَبِ الدُّنْيَا نَفَّسَ اللهُ عَنْهُ كُرْبَةً مِّنْ كُرَبِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَمَنْ يَّسَّرَ عَلَىْ مُعْسِرٍ يَسَّرَ اللهُ عَلَيْهِ فِىْ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَمَنْ سَتَرَ مُسْلِمًا سَتَرَهُ اللهُ فِىْ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَاللهُ فِىْ عَوْنِ الْعَبْدِ مَا كَانَ الْعَبْدُ فِىْ عَوْنِ أَخِيْهِ.

‘যে ব্যক্তি মুমিনের দুনিয়ার কষ্টসমূহ হতে কোন কষ্ট দূর করে দিবে, আল্লাহ তা‘আলা তার ক্বিয়ামতের কষ্টসমূহের মধ্য হতে কোন কষ্ট দূর করে দিবেন। যে ব্যক্তি কোন অভাবগ্রস্ত লোকের অভাব সহজ করে দিবে, আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়া ও আখেরাতে তাঁর অভাব সহজ করে দিবেন। যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখবে, আল্লাহ তা‘আলা দুুনিয়া ও আখেরাতে তাঁর দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখবেন। আল্লাহ তা‘আলা ততক্ষণ তাঁর বান্দার সাহায্যে থাকেন, যতক্ষণ সে তাঁর ভাইয়ের সাহায্যে থাকে’।[২১] অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে যে,

الْمُسْلِمُ أَخُو الْمُسْلِمِ لَا يَظْلِمُهُ وَلَا يُسْلِمُهُ وَمَنْ كَانَ فِيْ حَاجَةِ أَخِيْهِ كَانَ اللهُ فِيْ حَاجَتِهِ.

‘এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই, সে তার প্রতি অত্যাচার করবে না এবং তাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিবে না। যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের প্রয়োজনে সাহায্য করবে, আল্লাহ তার প্রয়োজনে সাহায্য করবেন’।[২২]

২. পরমতসহিঞ্চুতা ও মানুষ হিসাবে বিবেচনা

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গীনীকে সৃষ্টি করেছেন; আর বিস্তার করেছেন তাদের দু’জন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী। আর আল্লাহকে ভয় কর, যার নামে তোমরা একে অপরের নিকট যাচ্ঞা করে থাক এবং আত্মীয়জ্ঞাতিদের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন কর। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের ব্যাপারে সচেতন রয়েছেন’ (সূরা আন-নিসা : ১)। তিনি আরো বলেছেন, ‘অন্যের দেবতাকে গালি দিও না’ (সূরা আন-নিসা : ১৭১)। ‘ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করিও না’ (সূরা আল-আন‘আম : ১০৮)। ‘ধর্মে কোন জবরদস্তি নেই’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৫৬)। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘ওহে তোমাদের প্রভু এক, আরবের উপর অনারবের, সাদার উপর কালোর কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই, সকল মানুষ সমান’।[২৩] ‘বেদে’ রয়েছে, ‘সত্যজ্ঞানী তিনিই, যিনি জানেন প্রভু এক এবং অদ্বিতীয়। তিনি সর্বশক্তিমান এবং সর্ব বিষয়ে একক ক্ষমতার অধিকারী। প্রাণ এবং নিষ্প্রাণের সব কিছুই তার নখদর্পণে। সকল ক্ষমতার কেন্দ্র তিনি একক অনন্য’।[২৪] আরো বলা হয়েছে, ‘মহা প্রভুর দৃষ্টিতে কেউই বড় নয়, কেউই ছোট নয়, সবাই সমান। প্রভুর আশির্বাদ সবারই জন্য’।[২৫]

৩. দানের ব্যাপারে নির্দেশ

ইসলামে দানের ব্যাপারে প্রচুর নির্দেশনা এসেছে। রাতে দান করো, দিনে দান করো, প্রকাশ্যে দান করো, গোপনে দান করো (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৭৬), স্বচ্ছল অবস্থায় দান করো এবং অসচ্ছল অবস্থায় দান কর’ (সূরা আলে ইমরান : ১৩৪)। দান করার ব্যাপারে আল-কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকি দান করে কষ্ট ও খোঁটা দিতে নিষেধ করে দেয়া হয়েছে (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৬৫)। ‘বেদে’ বলা হয়েছে, ‘নিঃশর্ত দানের জন্য রয়েছে চমৎকার পুরস্কার। তারা লাভ করে আশির্বাদধন্য দীর্ঘ জীবন ও অমরত্ব’।[২৬] আরো বলা হয়েছে, ‘এসো প্রভুর সেবক হই। গরীব ও অভীদের দান করি’।[২৭]

৪. পেশাগত দায়িত্ব পালন

অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের জন্য ধর্মীয় নির্দেশনা রয়েছে। রাসূল (ﷺ) বলেন, كُلُّكُمْ رَاعٍ ، وَكُلُّكُمْ مَسْئُوْلٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ ‘প্রত্যেকে দায়িত্বশীল, আর ক্বিয়ামতের দিন প্রত্যেকের দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে’।[২৮] কোন প্রকৃত ধার্মীক কাজে ফাঁকি দিতে পারে না।  হাদীছে এসেছে, مَنْ غَشَّ فَلَيْسَ مِنِّىْ ‘যে ব্যক্তি ধোঁকা দেয় বা প্রতারণা করে সে আমার (উম্মতে মুহাম্মাদীর) অন্তর্ভুক্ত নয়’।[২৯]

৫. দুঃখ-কষ্টে অংশগ্রহণ ও সাহায্য

আল্লাহ বলেন, ‘সৎকর্ম ও আল্লাহভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা কঠোর শাস্তিদাতা’ (সূরা আল-মায়িদাহ : ২)। রাসূল (ﷺ) বলেন, ‘এক মুসলিম অপর মুসলিমের জন্য ইমারতের মত হওয়া উচিত এবং তাদের একে অপরের জন্য এমনি দৃঢ়তা ও শক্তির উৎস হওয়া উচিত, যেমন ইমারতের একখানা ইট অপর ইটের জন্য হয়ে থাকে’। এরপর রাসূল (ﷺ) এক হাতের আঙ্গুল অন্য হাতের আঙ্গুলের মধ্যে স্থাপন করলেন।[৩০] ‘বেদে’ বলা হয়েছে, ‘যারা সৎ পথে কঠোর পরিশ্রম করে এবং পরস্পরকে সহযোগিতা করে তাদেরকেই প্রভু সাহায্য করেন’।[৩১]

৬. গঠনমূলক সমালোচনা

রাসূল (ﷺ) বলেন, তিনি বলেন, اَلْمُؤْمِنُ مِرْآةُ الْمُؤْمِنِ، وَالْمُؤْمِنُ أَخُو الْمُؤْمِنِ ‘এক মুমিন অপর মুমিনের দর্পণ ও ভাই’।[৩২]

৭. ক্ষুধার্তকে সাহায্য ও রুগ্ন ভাইয়ের পরিচর্যা

ক্ষুধার্ত ও নিরন্ন মানুষকে দানের ব্যাপারে আল-কুরআন ও হাদীছে প্রচুর বক্তব্য এসেছে। সূরা মাউনে সামান্য সাংসারিক বস্তু যারা দেয় না তাদের তিরস্কার করা হয়েছে। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, مَنْ عَادَ مَرِيْضًا لَمْ يَزَلْ فِىْ خُرْفَةِ الْجَنَّةِ ‘কোন মুসলিম তার কোন অসুস্থ মুসলিম ভাইকে দেখতে গেলে সে যতক্ষণ সেখানে থাকে ততক্ষণ যেন জান্নাতের ফল আহরণ করতে থাকে’।[৩৩] ‘বেদে’ বলা হয়েছে, ‘সমাজকে ভালবাসো। ক্ষুধার্তকে অন্ন দাও। দুর্গতকে সাহয্য করো। সত্য-ন্যায়ের সংগ্রামে সাহসী ভূমিকা রাখার শক্তি অর্জন করো’।[৩৪]

৮. সালাম

অপরের কল্যাণ কামনাই সালাম। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আর তোমাদেরকে যদি কেউ দু‘আ করে, তাহলে তোমরাও তার জন্য দু‘আ কর; তারচেয়ে উত্তম দু‘আ অথবা তারই মত ফিরিয়ে দোয়া বল। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ব বিষয়ে হিসাব-নিকাশ গ্রহণকারী’ (সূরা আন-নিসা : ৮৬)। হাদীছে বিভিন্ন স্থানে এভাবে বর্ণিত হয়েছে যে, ‘নিজেদের মধ্যে সালামকে প্রসারিত কর’, ‘তার সঙ্গে যখনই মিলিত হবে, তাকে সালাম করবে’, ‘সালামের সূত্রপাতকারী হচ্ছে আল্লাহর রহমত থেকে অধিকতর নিকটবর্তী লোকদের অন্যতম’।

৯. উপঢৌকন

রাসূল (ﷺ) বলেছেন, تَهَادُوْا تَحَابُّوْا ‘একে অপরকে হাদিয়া পাঠাও’।[৩৫] এর দ্বারা পারস্পরিক ভালোবাসা বৃদ্ধি পাবে এবং পারস্পরিক দূরত্ব ও শত্রুতা বিলীন হয়ে যাবে।

১০. আপোষ রফা

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘মুমিনরা তো পরস্পর ভাই-ভাই। অতএব তোমরা তোমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে মীমাংসা করবে এবং আল্লাহকে ভয় করবে, যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও’ (সূরা আল-হুজুরাত : ১০)। রাসূল (ﷺ) বলেছেন,

لَا يَحِلُّ لِرَجُلٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلَاثِ لَيَالٍ يَلْتَقِيَانِ فَيُعْرِضُ هَذَا وَيُعْرِضُ هَذَا وَخَيْرُهُمَا الَّذِى يَبْدَأُ بِالسَّلَامِ  

‘আপন ভাইকে অসন্তুষ্টিবশত তিনদিনের বেশি ত্যাগ করা এবং উভয়ের সাক্ষাৎ হলে পরস্পর বিপরীত দিকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া কোন মুসলিমের পক্ষে জায়েয নেই। এই দুই জনের মধ্যে যে ব্যক্তি সালামের সূচনা করবে, সেই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ’।[৩৬] ‘ধম্মপদে’ বলা হয়েছে, ‘শত্রুতা দ্বারা কখনো শত্রুতা বিনাশ করা যায় না। মিত্রতা দ্বারাই শত্রুতার নিরসন হয়’।[৩৭]

বর্তমান সমাজে নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অবস্থান

বাংলায় একটি প্রবাদ আছে ‘যায় দিন ভালো, আসে দিন খারাপ’। এই প্রবাদটিকে সত্যি প্রমাণ করার জন্যই যেন বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা থেকে সব ‘ভালো’ এক প্রকার উঠে যাচ্ছে। আগে মানুষ বিশ্বাস করতো দানের চেয়ে মান বড়। অথচ এখন এই ধারণা পাল্টে গেছে। প্রত্যেকেই এখন অবিরাম ছুটে চলেছে অর্থ-সম্পদ উপার্জনের পেছনে। একজনকে পেছনে ফেলে আর একজনের সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতা প্রত্যেককে করে ফেলেছে অন্ধ। প্রত্যেকে অবলীলায় বিসর্জন দিচ্ছে নিজস্ব নৈতিকতা আর মূল্যবোধকে। তাই এখন পুরো সমাজদেহ অনেকটা ডুবে গেছে দুর্নীতি, অপকর্ম আর অনৈতিক কর্মকা-ে। নৈতিকতা ও মূল্যবোধকে মানুষ এমন করে নির্বাসিত করেছে যে, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রীয় প্রধানরাও হর-হমেশাই জেলে যাচ্ছেন দুর্নীতির দায়ে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই আজ নীতিহীনতায় জর্জরিত। মূল্যবোধ চর্চাকে এখন বোকাদের কাজ বলে বিদ্রƒপ করা হয়। একটা সময় ছিল যখন একজন দরিদ্র অথচ নীতিবান মানুষকে সকলেই সম্মান করত। গ্রামের দরিদ্র প্রাইমারী স্কুলের নীতিবান শিক্ষক ছিলেন মডেল। আর এখন টাকা যার সম্মান তার। তাই আমরা ঘুষখোর, দুর্নীতিপরায়ণ আর সূদ-কারবারী মহাজনদের সম্মান করি, সংবর্ধনা দেই।

আমাদের দেশের যুবসমাজের দিকে তাকালে এই নৈতিক অবক্ষয়ের এক করুণ চিত্র আমরা দেখতে পাই। লক্ষ লক্ষ তরুণ-তরুণী, কিশোর-কিশোরী এই অবক্ষয়ের কারণে নিজেদেরকে ঠেলে দিচ্ছে অন্ধকারের পথে, আসক্ত হচ্ছে মাদকে। ছিনতাই, অপহরণ, গুম, খুন, হানাহানি, নষ্ট রাজনীতি আর সন্ত্রাসে প্রতিনিয়ত জড়িয়ে যাচ্ছে। উজ্জ্বল ভবিষ্যতকে গলা টিপে হত্যা করছে। মূল্যবোধ আর নৈতিকতাকে বিসর্জন দিয়ে অধিকাংশ বয়সী মানুষ আজ চলেছে ধ্বংসের পথে। যে ছেলেটির হওয়ার কথা শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী বা প্রশাসক সে আজ হয়ে যাচ্ছে চোরাচালানকারী, মাদক ব্যবসায়ী কিংবা সন্ত্রাসী। যার দেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল সে আজ অন্যায় করে ব্যাহ্যত করছে দেশের অগ্রযাত্রাকে। ইসলাম ও অন্যান্য ধর্মের মৌলিক শিক্ষা ও নৈতিক মূল্যবোধের অভাবে জিহাদের নামে বা ধর্ম প্রচারের কথা বলে বোমা হামলা করছে। মরছে মানুষ, ত্রাহি ত্রাহি করছে মানবতা; এ নিয়ে খেলছে সা¤্রাজ্যবাদী গোষ্ঠী। মূলত এসব কিছুর জন্য আসলে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ই দায়ী।

উপসংহার

একটি জাতির নীতি-নৈতিকতা ও মূল্যবোধ সেই জাতির সামাজিক-সাংস্কৃতিক গতি-প্রকৃতি ও অবস্থানকে তুলে ধরে। যে জাতি যতবেশি নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত এবং নিজস্ব মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সে জাতি ততবেশি মজবুত ও সুসংহত। নৈতিক মূল্যবোধ মানুষকে ন্যায়ের পথে কল্যাণের পথে পরিচালিত করে। অন্যায়-অবিচার করা থেকে মানুষকে দূরে রাখে। সেই হিসাবে নৈতিক মূল্যবোধ বিকাশে ধর্মের তীব্র প্রভাব রয়েছে। যে ব্যক্তি প্রকৃতভাবে ধর্মীয় অনুশাসনে যতবেশি অভ্যস্ত এবং নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত, সে নিজের মূল্যবোধকে সম্মান করে, অন্য সংষ্কৃতি ও ধর্মকে অবজ্ঞা করে না। সে সর্বদাই নিষ্কলুষ থাকার চেষ্টা করে।  

 

 



* সহকারী অধ্যাপক (বিসিএস সাধারণ শিক্ষা), সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া, ঢাকা।

[১]. ছহীহ বুখারী, হা/১০; ছহীহ মুসলিম, হা/৪০; মিশকাত, হা/৬।

[২]. ছহীহ বুখারী, হা/৪৮; ছহীহ মুসলিম, হা/৬৪; মিশকাত, হা/৪৮১৪।

[৩]. আবূ দাঊদ, হা/৪৮০১; মিশকাত, হা/৫০৮০, সনদ ছহীহ।

[৪]. তিরমিযী, হা/১৯৭৭; মিশকাত, হা/৩৬, সনদ ছহীহ।

[৫]. যজুর্বেদ:১০.৯৮.৩।

[৬]. দ-বগএগা: ১৩৩।

[৭]. ছহীহ বুখারী, হা/৬০৫৬; ছহীহ মুসলিম, হা/১০৫; মিশকাত, হা/৪৮২৩।

[৮]. লোকবগএগা: ১৯৭, তদেব।

[৯]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৬০৭।

[১০]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/৯৬৬০; সনদ ছহীহ, ছহীহুল জামে‘, হা/৭৯৮৪।

[১১]. তিরমিযী, হা/২৫০৩; মিশকাত, হা/৪৮৫৭, সনদ ছহীহ।

[১২]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৬৪; আবূ দাঊদ, হা/৪৮৮২; মিশকাত, হা/৪৯৫৯।

[১৩]. বায়হাকী, শু‘আবুল ঈমান, হা/৭৪৫, সনদ ছহীহ।

[১৪]. ছহীহ বুখারী, হা/৫১৪৩; ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৬৩; মিশকাত, হা/৫০২৮।

[১৫]. ছহীহ মুসলিম, হা/২২৮৪; মিশকাত, হা/৪৯৬৫।

[১৬]. আবূ দাঊদ, হা/৫০০৪; মিশকাত, হা/৩৫৪৫, সনদ ছহীহ।

[১৭]. ছহীহ মুসলিম, হা/১০২; আবূ দাঊদ, হা/৩৪৫২; মিশকাত, হা/২৮৬০।

[১৮]. আল-জামি‘ঊ লি আহকামিল কুরআন, ৫ম খ-, পৃ. ২৫১।

[১৯]. ছহীহ বুখারী, হা/৬০৬৬; মিশকাত, হা/৫০২৮।

[২০]. মলবগ্গো: ২৫১, তদেব।

[২১]. ছহীহ মুসলিম হা/২৬৯৯; মিশকাত, হা/২০৪।

[২২]. ছহীহ বুখারী, হা/২৪৪২; ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৮০; মিশকাত, হা/৪৯৫৮৫।

[২৩]. মুসনাদে আহমাদ, হা/২৩৫৩৬, সনদ ছহীহ।

[২৪]. অর্থবেদ: ১৩.৫.১৪-২১।

[২৫]. ঋগবেদ: ৫.৬০.৫।

[২৬]. ঋগবেদ: ১.১২৫.৬।

[২৭]. ঋগবেদ: ১.১৫.৮।

[২৮]. ছহীহ বুখারী, হা/৮৯৩।

[২৯]. ছহীহ মুসলিম, হা/১০২; আবূ দাঊদ, হা/৩৪৫২; মিশকাত, হা/২৮৬০।

[৩০]. ছহীহ বুখারী, হা/৪৮১, ২৪৪৬, ৬০২৬; ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৮৫।

[৩১]. ঋগবেদ: ৪.২৩.৭।

[৩২]. আবূ দাঊদ, হা/৪৯১৮; মিশকাত, হা/৪৯১৮, সনদ হাসান।

[৩৩]. ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৬৮; তিরমিযী, হা/৯৬৭; মিশকাত, হা/১৫২৭।

[৩৪]. ঋগবেদ:৬.৭৫.৯।

[৩৫]. ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল কাবীর, হা/৭২৪০; আল-আদাবুল মুফরাদ, হা/৫৯৪, সনদ হাসান।

[৩৬]. ছহীহ বুখারী, হা/৬০৭৭; ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৬০।

[৩৭]. যমকবগএগা: ৫।




প্রসঙ্গসমূহ »: নীতি-নৈতিকতা
ওমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ১১ রাক‘আতের নির্দেশ দিয়েছিলেন - ব্রাদার রাহুল হোসেন (রুহুল আমিন)
মুসলিম বিভক্তির কারণ ও প্রতিকার (২য় কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
ইসলামী শিষ্টাচার (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - মুকাররম বিন মুহসিন মাদানী
ইসলামী জামা‘আতের মূল স্তম্ভ (১৪তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ মুছলেহুদ্দীন
ইসলামী জামা‘আতের মূল স্তম্ভ (১৩তম কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ মুছলেহুদ্দীন
ইসলামী পুনর্জাগরণের প্রতিবন্ধকতা ও তার সমাধান (৫ম কিস্তি) - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
ইসলামী উত্তরাধিকার আইনের ধারণা: গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য - ড. মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ
মীলাদুন্নবী ও আমাদের অবস্থান - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
ইসলামী তাবলীগ বনাম ইলিয়াসী তাবলীগ - ড. মুযাফফর বিন মুহসিন
ইমাম মাহদী, দাজ্জাল ও ঈসা (আলাইহিস সালাম)-এর আগমন সংশয় নিরসন (২য় কিস্তি) - হাসিবুর রহমান বুখারী
পরনিন্দা চর্চা ও তার পরিণাম - ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
আধুনিক যুগে দাওয়াতী কাজের পদ্ধতি (৩য় কিস্তি) - মুকাররম বিন মুহসিন মাদানী

ফেসবুক পেজ