বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১৪ অপরাহ্ন
উত্তর : ১- হায়েয ও নিফাস হওয়া। এ অবস্থায় ছিয়াম ভঙ্গ করে পরবর্তীতে ক্বাযা আদায় করে নেবে (মাজমূঊল ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়্যাহ, ২৫/২২০, ২৫/২৬৭, ২৬/১৭৬; মুসলিম, ৪/২৬)। নবী (ﷺ) বলেছেন, أَلَيْسَ إِذَا حَاضَتْ لَمْ تُصَلِّ وَلَمْ تَصُمْ ‘আর হায়িয অবস্থায় তারা কি ছালাত ও ছিয়াম হতে বিরত থাকে না?’ (ছহীহ বুখারী, হা/৩০৪, ১৯৫১, ২৬৫৮; ছহীহ মুসলিম, হা/৭৯, ৮০)। সুতরাং একজন নারীর জন্য উত্তম হল তার স্বভাবজাত প্রকৃতির উপর অটল থাকা। আল্লাহ তার জন্য যা লিখে রেখেছেন তার উপর সন্তুষ্ট থাকা, রক্ত বন্ধ করে এমন কিছু গ্রহণ না করা। কেননা এর মধ্যে নানাবিধ ক্ষতি আছে। তাই হায়িযের সময় ছিয়াম ভঙ্গ করা ও পরে ক্বাযা আদায় করার যে বিধান আল্লাহ তার জন্য প্রদান করেছেন, তা গ্রহণ করা কর্তব্য। এমনই করতেন উম্মুল মুমিনীনগণ, পরবর্তী ছাহাবী ও তাবি‘ঈগণের স্ত্রীরা (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ১০/১৫১ পৃ.; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৩৮০২৩)।

২- কাপিং করা বা শিঙ্গার মাধ্যমে রক্ত বের করা : এ বিষয়ে মতপার্থক্য থাকলেও শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ), সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া কমিটির আলেমগণ, শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) ও শায়খ উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ছিয়াম থাকাবস্থায় হিজামাহ বা কাপিং করলে ছিয়াম ভঙ্গ হয়ে যায়। কেননা এর ফলে শরীর প্রচণ্ড দুর্বল হয়ে পড়ে (আল-ইনছাফ, ৩/২১৪; আশ-শারহুল কাবীর, ৩/৪০; মাজমূঊল ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়্যাহ, ২৫/২৫২; মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে বায, ১৫/২৭১; মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে উছাইমীন, ২০/১৪৫ পৃ.)। যেমন নবী (ﷺ) বলেছেন, أَفْطَرَ الْحَاجِمُ وَالْمَحْجُوْمُ ‘রক্তমোক্ষণকারী এবং যার রক্তমোক্ষণ করানো হয়েছে, তাদের উভয়ের ছিয়াম নষ্ট হয়েছে গিয়েছে’ (আবূ দাঊদ, হা/২৩৬৭-২৩৭০; ইবনু মাজাহ, হা/১৬৮০-১৬৮১, সনদ ছহীহ)।

৩- রক্ত পরীক্ষা ও স্বেচ্ছায় রক্তদান করা : ছিয়াম থাকাবস্থায় প্রয়োজনে রক্ত পরীক্ষা করলে ছিয়াম ভঙ্গ হয় না। কেননা এতে খুবই যৎসামান্য রক্ত নেয়া হয়ে থাকে, যার ফলে শরীরে কোন প্রভাব পড়ে না। আর এটি হিজামার অন্তর্ভুক্ত নয়। পক্ষান্তরে অধিক মাত্রায় রক্ত নেয়া হলে ছিয়াম ভঙ্গ হয়ে যাবে। যেমন কাউকে রক্তদান করার উদ্দেশ্যে, কেননা এটি হিজামাহ বা কাপিং-এর অন্তর্ভুক্ত। সেই জন্য ছিয়াম থাকা অবস্থায় স্বেচ্ছায় রক্তদান করা জায়েয নয়, কেননা এর ফলে ছিয়াম ভঙ্গ হয়ে যায়। তবে হ্যাঁ, যদি রোগীর অবস্থা খুবই বিপদজনক হয়, আর সে সূর্যাস্ত পর্যন্ত ধৈর্যধারণ করতে না পারে এবং ডাক্তারেরা সিদ্ধান্ত নেয় যে, ছিয়াম পালনকারী ব্যক্তির রক্ত পেলে রোগী উপকৃত হবে তার প্রয়োজন পূরণ হবে, সেক্ষেত্রে রক্তদান করা জায়েয। পরে অবশ্যই এই দিনের ক্বাযা আদায় করে নেবে (মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে বায, ১৫/২৭৪; ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম, পৃ. ৪৭৮; মাজালিসু শাহরি রামাযান, পৃ. ৭১; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৫০৪০৬)। তবে অনিচ্ছাকৃতভাবে কোন কারণে রক্তপাত হয়ে গেলে, তার ছিয়াম শুদ্ধ হবে। কেননা সে ইচ্ছাকৃতভাবে তা করেনি (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ১০/২৬৪ পৃ.)। অনুরূপ দাঁত তোলা বা ক্ষতস্থান ড্রেসিং করা বা রক্ত পরীক্ষা ইত্যাদির জন্য রক্ত বের হলে ছিয়াম ভঙ্গ হয় না। কারণ তা হিজামাহ বা শিঙ্গা লাগানোর অন্তর্ভুক্ত নয় এবং তা হিজামাহ বা শিঙ্গা লাগানোর ন্যায় শরীরের উপর প্রভাবও ফেলে না (মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে বায, ১৫/২৭৪; ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম, পৃ. ৪৭৮; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৫০৪০৬)।

প্রশ্নকারী : সামিঊল ইসলাম, রাজশাহী।





প্রশ্ন (২৪) : যে ব্যক্তি ক্বিয়ামতের মাঠে স্থাপিত মীযানকে বিশ্বাস করে না তার হুকুম কী হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৯) : মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রুকইয়া করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৩) : ছালাতে অবহেলাকারীদের বিধান কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৯) : গীবত করা যেনার চেয়ে বড় পাপ। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৬) : দাড়ি একমুষ্টি রেখে বাকি অংশ কাটা যাবে কি? যেখানে ছহীহ বুখারীর ৫৮৯২ নম্বর হাদীছে এসেছে, ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহ আনহুমা) সূত্রে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, তোমরা মুশরিকদের উল্টো করবে- দাড়ি লম্বা রাখবে, গোঁফ ছোট করবে। ইবনু ওমর (রাযিয়াল্লাহ আনহুমা) যখন হজ্জ বা ওমরাহ করতেন, তখন তিনি তাঁর দাড়ি মুষ্টি করে ধরতেন এবং মুষ্টির বাইরে যতটুকু বেশি থাকত, তা কেটে ফেলতেন। এছাড়া আরো হাদীছ এসেছে। এই বিষয়ে সঠিক সমাধান কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৪) : শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রদের নিকট থেকে পরীক্ষার ফী বাবদ যে অর্থ গ্রহণ করা হয়ে থাকে, সেই অর্থ কি শিক্ষকদের মধ্যে বণ্টন করা যাবে? উল্লেখ্য, শিক্ষকগণ নির্ধারিত হারে বেতন পেয়ে থাকেন। - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১২) : ছিয়াম অবস্থায় শ্বাসকষ্টের কারণে ইনহেইলার গ্রহণ করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৭) : রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যখন আল্লাহ তা‘আলা যমীন সৃষ্টি করলেন তখন তা দুলতে লাগল। অতঃপর পাহাড়গুলো সৃষ্টি করে সেগুলো পৃথিবীর উপর স্থীর করেন। অতঃপর পৃথিবী স্থীর হয়ে গেল। ফেরেশতাগণ পাহাড়ের এ শক্তি দেখে আশ্চর্যান্বিত হলেন এবং বললেন, হে আল্লাহ! আপনার সৃষ্টির মধ্যে পাহাড় অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী আর কোন সৃষ্টি আছে কি? আল্লাহ বললেন, হ্যাঁ; আর সেটা লোহা। অতঃপর তারা জিজ্ঞেস করল, হে প্রভু! আপনার সৃষ্টির মধ্যে লোহা অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী আর কোন সৃষ্টি আছে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আগুন। অতঃপর তারা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ! আপনার সৃষ্টির মধ্যে আগুন অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী আর কোন সৃষ্টি আছে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ; পানি। অতঃপর তারা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ! আপনার সৃষ্টির মধ্যে পানি অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী আর কোন সৃষ্টি আছে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ; বাতাস। অতঃপর তারা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ! আপনার সৃষ্টির মধ্যে বাতাস অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী আর কোন সৃষ্টি আছে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ; আদম সন্তান। যে তার ডান হাতে দান করে আর দানকে বাম হাত হতে গোপন রাখে। এ ঘটনাটি কি ছহীহ? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৯) : জনৈক আলেম বলেন, ঈদের ছালাত আদায় করে বাড়ীতে এসে দুই রাক‘আত ছালাত আদায় করা যায়। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৭) : মসজিদে সুতরা দেয়া যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৩) : বগলের পশম ও নাভীর নিচের পশম কত দিন পর কাটতে হয়? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৮) : কোন্ অবস্থায় ছাদাক্বাহ করলে নেকী বেশী পাওয়া যায়? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ