উত্তর : অবশ্যই মুসলিম বলা যাবে। তবে ঘৃণা ও প্রতিবাদ না করার জন্য তাকে গুনাহগার হতে হবে। নিঃসন্দেহে সৎ কাজের নির্দেশদান এবং অসৎ কাজে বাধাদান করা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ। রাসূল (ﷺ) অন্যায় কাজের প্রতিবাদের তিনটি স্তর বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন,
مَنْ رَأَى مِنْكُمْ مُنْكَرًا فَاسْتَطَاعَ أَنْ يُغَيِّرَهُ بِيَدِهِ فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهِ وَذَلِكَ أَضْعَفُ الإِيمَانِ
‘তোমাদের মধ্যে কেউ অন্যায় কাজ হতে দেখলে এবং তার দৈহিক শক্তি দিয়ে প্রতিহত করার সামর্থ্য থাকলে সে যেন তা সেভাবেই প্রতিহত করে। তার সেই সামর্থ্য না থাকলে সে যেন মুখের কথা দ্বারা তা প্রতিহত করে। আর তার সেই সামর্থ্যও না থাকলে সে যেন মনে মনে তাকে ঘৃণা করে। তা হল সবচেয়ে দুর্বল ঈমান’ (ছহীহ মুসলিম, হা/৪৯)। এ দায়িত্ব প্রত্যেক মুসলিমের উপর নিজ নিজ সামর্থ্য ও অবস্থান অনুযায়ী অপরিহার্য। ঈমানের দাবী হল- শক্তি থাকলে হাত দিয়ে অন্যায়কে প্রতিহত করবে। তা না হলে মুখ দ্বারা প্রতিবাদ করবে। তাও না হলে অন্ততপক্ষে অন্তর থেকে ঘৃণা। সুতরাং কেউ যদি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও প্রতিবাদ না করে কিংবা অপারগ অবস্থায় অন্তর থেকে ঘৃণাও না করে, তাহলে সে অবশ্যই গুনাহগার হবে, কিন্তু ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাবে না (তাফসীরে কুরতুবী, ৬/২৫৩; ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমা, ৪/৭৩-৭৫; মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে বায, ৩/২১২-২১৩ ও ৪/৫০)।
ইমাম নববী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করা ফারযে কিফায়াহ। কিছু মানুষ করলে সকলেই মুক্ত হয়ে যাবে, আর সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কেউ না করলে সকলেই গুনাহগার হবে। তবে জান ও মালের ক্ষতির ভয় থাকলে হাত ও মুখ দিয়ে প্রতিবাদ করার হুকুম রহিত হয়ে যায়, তখন অন্তর থেকে ঘৃণা করা অপরিহার্য হয়ে যায় (শারহু ছহীহ মুসলিম, ২/২৩ ও ১২/২৩০ পৃ.)।
প্রশ্নকারী : পারভেজ, রাজশাহী।