উত্তর : রামাযানের ক্বাযা ছিয়াম যত দ্রুত সম্ভব আদায় করে নেয়া উচিত। কারণ আল্লাহ তা‘আলা মুমিনদের বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, اُولٰٓئِکَ یُسٰرِعُوۡنَ فِی الۡخَیۡرٰتِ وَ ہُمۡ لَہَا سٰبِقُوۡنَ ‘তারাই কল্যাণকর কাজ দ্রুত সম্পাদন করে এবং তারাই তার প্রতি অগ্রগামী হয়’ (সূরা আল-মুমিনূন : ৬১)। মাযহাব চতুষ্টয়ের সম্মতিক্রমে রামাযান মাসের ছিয়ামের ক্বাযা আগামী রামাযান আসার আগেই পূরণ করতে হবে (ফাৎহুল ক্বাদীর, ২/৩৫৫; মাওয়াহিবুল জালীল, ৩/৩৮৪; আল-মাজমূঊ, ৬/৩৬৫; আল-ইনছাফ, ৩/৩৩৪ পৃ.)। ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) ছিয়াম অধ্যায়ে, بَاب مَتَى يُقْضَى قَضَاءُ رَمَضَانَ ‘রমাযানের ক্বাযা কখন আদায় করতে হবে?’ নামে একটি অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন (৩০/৪০)। অতঃপর তিনি নিম্নোক্ত হাদীছটি বর্ণনা করেন।
আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, আমার উপর রামাযানের যে ক্বাযা ছিয়াম থাকত তা পরবর্তী শা‘বান মাস ব্যতীত আমি আদায় করার সুযোগ পেতাম না। ইয়াহ্ইয়া (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, নবী করীম (ﷺ)-এর ব্যস্ততার কারণে অথবা নবী করীম (ﷺ)-এর সঙ্গে ব্যস্ত থাকার কারণে। অন্য বর্ণনায় এসেছে, তিনি বলেন, ‘আমাদের কেউ (ঋতুস্রাব, প্রসবোত্তর স্রাব ইত্যাদি কারণে) রামাযান মাসের ছিয়াম পালন করতে পারত না, অতঃপর তার ঐ ক্বাযা আদায় করার সুযোগ পাওয়ার পূর্বেই শা‘বান মাস এসে যেত (ছহীহ বুখারী, হা/১৯৫০; ছহীহ মুসলিম, হা/১১৪৬)। ইমাম নাছিরুদ্দীন আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এখানে আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর বাহ্যিক উক্তি থেকে এ কথাই পরিস্ফুটিত হয় যে, তাঁর ব্যস্ততা না থাকলে ছুটে যাওয়া ছিয়াম সত্বরই ক্বাযা করতেন। এ থেকে বুঝা যায় যে, যার কোন সমস্যা-অসুবিধা নেই, তার জন্য দেরী না করে সত্বর ক্বাযা আদায় করে নেয়াই অধিক উত্তম’ (তামামুল মিন্নাহ, পৃ. ৪২২)।
শায়খ উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘অর্থাৎ সে অন্য যে কোন দিনে ছিয়াম আদায় করে নিবে। এখানে আল্লাহ তা‘আলা ধারাবাহিকভাবে বা সাথে সাথে রাখার শর্ত আরোপ করেননি। সে শর্তের কথা উল্লেখ থাকলে অবশ্যই তা সত্বর পালনীয় হত। অতএব বুঝা গেল যে, এ ব্যাপারে প্রশস্ততা আছে’ (আশ-শারহুল মুমতি‘, ৬/৪৪৯ পৃ.)। তবে ঈদের পরে সমস্যা দূর হয়ে গেলে সুযোগ হওয়ার সাথে সাথে সত্বর ক্বাযা আদায় করে নেয়াই উচিত। কারণ তাতে সত্বর দায়িত্ব পালন হয়ে যায় এবং পূর্বসতর্কতামূলক কর্ম সম্পাদন করা হয় (আশ-শারহুল মুমতি‘, ৬/৪৪৬ পৃ.)।
প্রশ্নকারী : আশিক, গোপালগঞ্জ।