উত্তর : এ ধরনের মানুষের পিছনে ছালাত আদায় করা যাবে না। আলেমগণের সর্বসম্মতিক্রমে তাবীয-কবয করা ও লটকানো বা পরিধান করা শিরকের অন্তর্ভুক্ত। এগুলো পূর্ববর্তী মুশরিকদের আমলের ন্যায়’ (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ১/২১২; মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে বায, ২৮/২৯২ পৃ.; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১০৪১১১)। উক্ববাহ ইবনু আমীর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, مَن تَعَلَّقَ تَمِيْمَةً فَلَا أَتَمَّ اللهُ لَهُ وَمَنْ تَعَلَّقَ وَدَعْةً فَلَا وَدَّعَ اللهُ لَهُ ‘যে ব্যক্তি তাবীয ঝুলায় (পরিধান করে) আল্লাহ যেন তার আশা পূরণ না করেন। যে ব্যক্তি কড়ি, শঙ্খ বা শামুক ঝুলায় তাকে যেন আল্লাহ রক্ষা না করেন’ (মুসনাদে আহমাদ, হা/১৭৪০৪, সনদ ছহীহ)। উক্ববাহ ইবনু আমীর আল-জুহানী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, ‘একদল মানুষ রাসূল (ﷺ)-এর নিকট আগমন করেন। তিনি তাদের ৯ জনের বায়‘আত গ্রহণ করেন এবং একজনের বায়‘আত গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকেন। তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আপনি ৯ জনের বায়‘আত গ্রহণ করলেন কিন্তু একে পরিত্যাগ করলেন? তিনি বলেন, এর দেহে একটি তাবীয আছে। তখন তিনি তার হাত ঢুকিয়ে তাবীযটি ছিড়ে ফেলেন। অতঃপর তিনি তার বায়‘আত গ্রহণ করেন এবং বলেন, مَنْ عَلَّقَ تَمِيْمَةً فَقَدْ أَشْرَكَ ‘যে তাবীয ঝুলালো সে শিরক করল’ (মুসনাদে আহমাদ, হা/১৭৪২২; ছহীহুল মুসনাদ, হা/৯৪২; সনদ ছহীহ, সিলসিলা ছহীহাহ, ১/৮৮৯ পৃ.; ছহীহুল জামি‘, হা/৬৩৯৪)।
তাবীয-কবয করা শিরকের অন্তর্ভুক্ত। তাই ঐ ইমামের পিছনে ছালাত আদায় করা জায়েয নয় (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১০৪১১১)। সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া কমিটির আলেমগণ বলেন,
فلا يصلى خلف الذي يكتبها ويجب أن يبين له أن هذا شرك والذي يجب عليه البيان هو الذي يعلمها
‘যে তাবীয লেখালেখি করে তার পিছনে ছালাত আদায় করা যাবে না। তাকে বোঝানো অপরিহার্য যে, এটি শিরক। যে জানে তাকে জানানোটা তার উপরেই অপরিহার্য’ (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমা, ৩/৬৫ পৃ.)। শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, তার পিছনে ছালাত আদায় করা যাবে না এবং তার ইমামতি বৈধ নয়’ (মাজমূঊ ফাতাওয়া ইবনে বায, ৯/২৭৮, ৯/৩৭৩-৩৭৪ ও ১২/১০৮-১০৯ পৃ.)। আবূ সাহলাহ আস-সাইব ইবনু খাল্লাদ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, ইমাম আহমাদ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, নবী (ﷺ)-এর এক ছাহাবী বলেন, ‘এক ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের ইমামতিকালে ক্বিবলার দিকে থু থু ফেললে রাসূল (ﷺ) তা লক্ষ্য করলেন। লোকটি ছালাত শেষ করলে রাসূল (ﷺ) (উপস্থিত লোকদেরকে উদ্দেশ্য করে) বললেন, এই ব্যক্তিকে দিয়ে তোমাদের ছালাত আদায় করাবে না (অর্থাৎ আর ইমামতি করবে না)। পরবর্তীতে লোকটি তাদের ইমামতি করতে চাইলে তাঁরা তাকে নিষেধ করেন এবং তার সম্পর্কে রাসূল (ﷺ)-এর উক্তিও অবহিত করেন। অতঃপর লোকটি রাসূল (ﷺ)-কে এ বিষয় অবহিত করলে তিনি বললেন, হ্যাঁ। বর্ণনাকারী বলেন, আমার ধারণা, রাসূল (ﷺ) একথাও বলেছেন, তুমি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে কষ্ট দিয়েছ’ (আবূ দাঊদ, হা/৪৮১, সনদ হাসান)।
প্রশ্নকারী : ডা. মুহাম্মাদ আব্দুর রহমান, কক্সবাজার।