সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ০২:২২ অপরাহ্ন
উত্তর : এটা চরম মূর্খতা এবং মিথ্যাচার। এটি হাদীছ অস্বীকারকারীদের ঘৃণিত চক্রান্ত ও অপপ্রচার। কুরআন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে যেমন শ্রুতি এবং স্মৃতিই প্রধান নিয়ামক হিসাবে এবং লিপিবদ্ধকরণের সহায়ক হিসাবে কাজ করেছে, হাদীছের ক্ষেত্রেও তাই। আল্লাহ তা‘আলা কুরআনকে যে সকল মানুষের শ্রুতি, স্মৃতি এবং বিশ্বস্ততার দ্বারা সংরক্ষণ করেছেন, হাদীছের ক্ষেত্রেও সেই একই মানুষের শ্রুতি, স্মৃতি এবং বিশ্বস্ততার দ্বারা হাদীছ সংরক্ষণ করা হয়েছে। একথা সত্য যে, কুরআন অবতরণের প্রথম দিকে কুরআন এবং হাদীছ মিশ্রিত হয়ে যাবার আশঙ্কায় এবং লিপিবদ্ধকরণের মাধ্যমের অপ্রতুলতা থাকায় হাদীছ লিপিবদ্ধকরণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। যেমন আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেন,

‏لَا تَكْتُبُوْا عَنِّيْ وَمَنْ كَتَبَ عَنِّي غَيْرَ الْقُرْآنِ فَلْيَمْحُهُ وَحَدِّثُوْا عَنِّيْ وَلَا حَرَجَ وَمَنْ كَذَبَ عَلَىَّ قَالَ هَمَّامٌ أَحْسِبُهُ قَالَ مُتَعَمِّدًا فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ

‘তোমরা আমার মুখ নিঃসৃত বাণী (অর্থাৎ হাদীছ) লিপিবদ্ধ করো না। কুরআন ব্যতীত কেউ যদি আমার থেকে কিছু লিপিবদ্ধ করে থাকে, তবে সে যেন সেটা মিটিয়ে ফেলে। আমার থেকে হাদীছ বর্ণনা করো, এতে কোন অসুবিধা নেই। যে লোক আমার উপর মিথ্যারোপ করে- হাম্মাম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমার ধারণা হয় তিনি বলেছেন, ইচ্ছাকৃতভাবে; তবে সে যেন জাহান্নামে তার বাসস্থান নির্ধারণ করে নেয়’ (ছহীহ মুসলিম, হা/৩০০৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/১১১৫৮, ১১৫৩৬)।

লক্ষ্য করুন, এখানে যেমন কুরআন ব্যতীত অন্য কোন কিছু লিপিবদ্ধকরণকে নিষেধ করা হচ্ছে। ঠিক তেমনি হাদীছ বর্ণনা করার নির্দেশও প্রদান করা হচ্ছে। অর্থাৎ লিপিবদ্ধকরণের নিষেধাজ্ঞা কখনোই হাদীছের প্রচার-প্রসারকে রূদ্ধ করার জন্য ছিল না। অতঃপর যেক্ষেত্রে এবং যে সময়ে ঐ আশঙ্কা বিদ্যমান ছিল না, সেক্ষেত্রে এবং সে সময়ে হাদীছ লিপিবদ্ধকরণের এই নিষেধাজ্ঞাও বহাল ছিল না, বরং হাদীছ লিপিবদ্ধকরণ শুরু হয় স্বয়ং নবী (ﷺ)-এর জীবদ্দশাতেই। যেমন আবূ হুরায়রা (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

مَا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ ﷺ أَحَدٌ أَكْثَرَ حَدِيْثًا عَنْهُ مِنِّيْ إِلَّا مَا كَانَ مِنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو فَإِنَّهُ كَانَ يَكْتُبُ وَلَا أَكْتُبُ‏

নবী করীম (ﷺ)-এর ছাহাবীগণের মধ্যে ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) ব্যতীত আর কারো নিকট আমার চেয়ে অধিক হাদীছ নেই। কারণ তিনি লিখতেন, আর আমি লিখতাম না’ (ছহীহ বুখারী, হা/১১৩; তিরমিযী, হা/২৬৬৮, ৩৮৪১; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৩৮৯; দারিমী, হা/৫০০)। আবূ ক্বাবিল বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা)-কে বলতে শুনেছি, আমরা রাসূল (ﷺ)-এর পাশে বসে লিখতাম। একদা রাসূল (ﷺ)-কে প্রশ্ন করা হল যে, দুই শহরের মধ্যে কোন্ শহরটি সর্বপ্রথম বিজিত হবে, কনস্টানটিনোপল, না-কি রোম? তখন নবী (ﷺ) বললেন, বরং হিরাক্লিয়াসের শহর (অর্থাৎ কনস্টানটিনোপল) সর্বপ্রথম বিজিত হবে’ (দারিমী, হা/৫০৩, সনদ ছহীহ)।

আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেন, আমি রাসূল (ﷺ)-এর নিকট যা কিছু শুনতাম লিখে রাখতাম। মনে রাখার জন্যই আমি এরূপ করতাম। কুরাইশরা আমাকে সবকিছু লিখতে বারণ করলেন এবং বললেন, তুমি কি রাসূল (ﷺ)-এর নিকট থেকে শোনা সব কিছুকেই লিখে রাখো? তিনি তো একজন মানুষ, রাগ ও শান্ত উভয় অবস্থায় কথা বলে থাকেন। সুতরাং আমি লেখা স্থগিত রাখলাম। আমি এটা রাসূল (ﷺ)-এর নিকট উল্লেখ করলাম। তিনি আঙ্গুল দিয়ে তাঁর মুখের দিকে ইশারা করে বললেন, তুমি লিখে রাখো, সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, এ মুখ থেকে সর্বাবস্থায় সত্য ব্যতীত অন্য কিছু বের হয় না’ (আবূ দাঊদ, হা/৩৬৪৬; আহমাদ, হা/৬৫১০, ৬৮০২; দারিমী, হা/৫০১)। এখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) গোপনে বা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে হাদীছ লিপিবদ্ধ করতেন না, বরং রাসূল (ﷺ)-এর অনুমতিসাপেক্ষে তাঁরই অনুপ্রেরণা ও নির্দেশে তিনি হাদীছ লিপিবদ্ধ করতেন। কিন্তু হাদীছ অস্বীকারকারীরা এতটাই কৌশলী মাতাল যে, তারা প্রথম হাদীছটিকে স্বীকার করলেও পরের হাদীছগুলোকে অস্বীকার করে থাকে।


প্রশ্নকারী : মিনহাজ পারভেজ, রাজশাহী।





প্রশ্ন (১) : পরিকল্পিতভাবে, ষড়যন্ত্রপূর্বক বা হিংসা করে জমি-জায়গা বা অন্য কোন বস্তুর মূল্য বাড়িয়ে দেয়া কি জায়েয? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৬) : ছালাতে মহিলাদেরকে ইক্বামত দিতে হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৪) : একাকী ফরজ ছালাত আদায় করলে ইক্বামত দিতে হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২২) : ইসলামী জালসা ও মাহফিলের শেষে আখেরী মুনাজাত করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৮) : দৈনিক যুগান্তর (২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯) পত্রিকায় বলা হয়েছে যে, নাসা খালি চোখে সূর্যগ্রহণ দেখতে নিষেধ করেছে। যাতে করে মানুষ দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারে। সুতরাং ফিল্টার দিয়েই এটা দেখা উচিত। প্রশ্ন হল- সূর্যগ্রহণের সময় সূর্যের দিকে তাকানো যাবে না মর্মে কথাটি কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২২) : ঈমানের শাখা কয়টি ও কী কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৯) :  মসজিদের ইমাম তাবীয-কবয দিয়ে ব্যবসা করেন। এছাড়া আরো নোংরা কাজে জড়িত। তার আক্বীদা হচ্ছে আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান, নিরাকার। প্রশ্ন হল, এমন ব্যক্তির পিছনে ছালাত আদায় করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২০) : ‘আল্লাহর ইচ্ছায় গাছের পাতা পড়ে না বা কোন কাজ সংঘটিত হয় না’, না-কি ‘আল্লাহর হুকুমে গাছের পাতা ঝরে পড়ে না বা কোন কাজ হয় না’। কোন্ কথাটি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১০) : হাদীছে এসেছে, ‘আমি জান্নাতের দিকে লক্ষ্য করে দেখলাম যে, এর বেশির ভাগ অধিবাসী হচ্ছে গরীব এবং জাহান্নামের দিকে লক্ষ্য করে দেখলাম যে, এর বেশিরভাগ অধিবাসী হচ্ছে নারী’। অনুরূপভাবে কবরের শাস্তির কথা বর্ণিত হয়েছে। অথচ এখনো ক্বিয়ামত সংঘটিত হয়নি। এর সঠিক ব্যাখ্যা কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৯) : বেনামাজি কি (হিন্দুদের মত) বড় কাফের? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৬) : ইলিয়াসী তাবলীগের এক ব্যক্তি বলেন, নাফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করা হল, বড় জিহাদ। আর যুদ্ধের মাঠে কাফেরদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা ছোট জিহাদ। উক্ত দাবী কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১১) : পৃথিবীতে যা কিছু আছে আল্লাহর কাছে মাছির ডানা সমতুল্য নয়, তাহলে আল্লাহর  শাস্তি এত কঠোর কেন? মাথায় এমন প্রশ্ন আসলে কি ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ