উত্তর : ছালাত পরিত্যাগকারী ও অস্বীকারকারী কাফের মুরতাদ, যা অন্যান্য বিধর্মী থেকেও খারাপ (আহাদীছুল মুখতারাহ হা/৩৫১, সনদ ছহীহ; ফাতাওয়া উছায়মীন ১২/২)। কারণ কালেমার সাক্ষ্য দেয়ার পর ছালাতই ইসলামের অধিকতর গুরুত্ব ও তাকীদপূর্ণ রুকন বা স্তম্ভ। এ জন্যই আল্লাহ তা‘আলা ছালাতকে ‘ঈমান’ নামে অভিহিত করেছেন। যেমন তাঁর বাণী: وَ مَا کَانَ اللّٰہُ لِیُضِیۡعَ اِیۡمَانَکُمۡ ‘আল্লাহ এরূপ নন যে, তোমাদের ঈমান (ছালাত)-কে নষ্ট করে দিবেন’ (সূরা আল-বাকারাহ: ১৪৩)।
ছালাত ইসলাম এবং কুফুরীর মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়কারী। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, إِنَّ بَيْنَ الرَّجُلِ وَبَيْنَ الشِّرْكِ وَالْكُفْرِ تَرْكَ الصَّلَاةِ ‘মানুষ এবং শিরক-কুফুরীর মধ্যে পার্থক্য ছালাত ছেড়ে দেয়া’ (ছহীহ মুসলিম, হা/৮২)। তিনি আরো বলেন, اَلْعَهْدُ الَّذِىْ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمُ الصَّلاَةُ فَمَنْ تَرَكَهَا فَقَدْ كَفَرَ ‘আমাদের ও তাদের (কাফিরদের) মধ্যে যে পার্থক্য তা হলো ছালাত। অতএব যে ছালাত ছেড়ে দিল সে কুফুরী করল’ (তিরমিযী, হা/২৬২১; ইবনু মাজাহ, হা/১০৭৯, সনদ ছহীহ)। প্রখ্যাত তাবেঈ শাক্বীক্ব ইবনু আব্দুল্লাহ আল-উক্বাইলী বলেন, كَانَ أَصْحَابُ مُحَمَّدٍ ﷺ لَا يَرَوْنَ شَيْئًا مِنَ الْأَعْمَالِ تَرْكُهُ كُفْرٌ غَيْرَ الصَّلَاةِ ‘মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর ছাহাবীগণ ছালাত ব্যতীত অন্য কোন আমাল ছেড়ে দেয়াকে কুফরী মনে করতেন না (অর্থাৎ ছালাত ত্যাগ করাকে কুফরী মনে করতেন)’ (তিরমিযী, হা/২৬২২, সনদ ছহীহ)। উমার (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ছালাত ছেড়ে দিল ইসলামে তার কোন অংশ নেই’।
উল্লিখিত ও অন্যান্য দলীলসমূহ ছালাত পরিত্যাগকারী বড় কুফুরীর অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সুস্পষ্ট প্রমাণ; যদিও সে পরিত্যাগকারী ব্যক্তি ছালাত ফরয হওয়াকে অস্বীকার না করে। আর এ মত পোষণ করেন ইমাম আহমাদ (রাহিমাহুল্লাহ) এবং তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিম্নোক্ত হাদীছ থেকে দলীল গ্রহণ করেন,
أَوَّلُ مَا تَفْقِدُوْنَ مِنْ دِيْنِكُمُ الْخُشُوْعُ، وَآخِرُ مَا تَفْقِدُوْنَ مِنْ دِيْنِكُمُ الصَّلَاةُ
‘সর্বপ্রথম তোমরা তোমাদের দ্বীনের যা হারাবে তাহল আমানত এবং সর্বশেষ দ্বীনের যা হারাবে তাহল ছালাত’ (আল-মুসতাদরাক আলাছ ছহীহাইন, হা/৮৪৪৮, সনদ ছহীহ)। ইমাম আহমাদ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘সুতরাং ইসলাম থেকে চলে যাওয়া সর্বশেষ বস্তু যখন ছালাত, তখন যে বস্তুর শেষ চলে যায় সে বস্তু সম্পূর্ণ নিঃশেষ হয়ে যায়। এ জন্য আপনাদের দ্বীনের সর্বশেষ অংশ (ছালাত)-কে যথাযথভাবে আঁকড়ে ধরুন, আল্লাহ আপনাদের ওপর রহমত বর্ষণ করুন’ (ইমাম আহমদের কিতাবুছ ছালাত)। বর্তমান যুগে আমাদের বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরাম ছালাত পরিত্যাগকারীর ব্যাপারে কুফুরীর ফাতওয়া দিয়েছেন, আর তাদের শীর্ষে রয়েছেন, মাননীয় (সাবেক) মুফতী শাইখ আব্দুল আযীয ইবন আব্দুল্লাহ ইবন বায (রাহিমাহুল্লাহ) ও আল্লামা মুহাম্মাদ ইবছু উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ)।
প্রশ্নকারী : আবূ রিদা, পশ্চিমবঙ্গ, ঢাকা।