উত্তর : শেষ বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু, আল্লাহুম্মা ছাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদ ও দু‘আ মাছুরাহ পাঠ করার পর নিজের জন্য, পিতা-মাতার জন্য অথবা অন্য কারোর জন্য অতিরিক্ত দু‘আ করা জায়েয। শর্ত একটাই, যেন দু‘আর মধ্যে অবৈধ চাওয়া না থাকে। কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহতে বর্ণিত ইহকাল ও পরকাল বিষয়ক যে কোন পসন্দনীয় দু‘আ পাঠ করাটাই সর্বাধিক উত্তম (ইবনু বায, মাজমূঊল ফাতাওয়া, ১১/১৭১-১৭৪ পৃ.; ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-২৬২২৫৪, ৭৫০৫৮; আল-ফিক্বহুল মুওয়াস্সার, ১/২৯৫-৬ পৃ.)। আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ثُمَّ يَتَخَيَّرُ مِنْ الدُّعَاءِ أَعْجَبَهُ إِلَيْهِ فَيَدْعُوْ ‘অতঃপর (সালাম ফিরানোর পূর্বে) যে দু‘আ তার পসন্দ হয় সে তা চয়ন করবে এবং পাঠ করবে’ (ছহীহ বুখারী, হা/৮৩৫)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, ثُمَّ لْيَتَخَيَّرْ بَعْدُ مِنَ الْمَسْأَلَةِ مَا شَاءَ أَوْ مَا أَحَبَّ ‘অতঃপর ছালাত আদায়কারী (সালাম ফিরানোর পূর্বে) তার ইচ্ছানুযায়ী অথবা নিজের পসন্দমত যে কোন দু’আ পাঠ করতে পারে’ (ছহীহ মুসলিম, হা/৪০২)।
দ্বিতীয়তঃ উক্ত পসন্দনীয় দু‘আ আরবী ভাষা ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় করা যাবে কি-না সে ব্যাপারে মতপার্থক্য রয়েছে। কেউ এটাকে হারাম বলেছেন, কেউ অপসন্দ করেছেন, আবার কেউ অপারগ ও অসমর্থদের জন্য জায়েয বলেছেন (আল-মাউসূ‘আতুল ফিক্বহিয়্যাহ, ১১/১৭২ পৃ.)। ছালাতের বাইরে ইংরেজি ভাষা অথবা অন্য যে কোন ভাষায় দু‘আ করা জায়েয। কিন্তু ছালাতের মধ্যে জমহূর আলিমের মতানুযায়ী আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় দু‘আ করা জায়েয নয়। বিশেষ করে যারা আরবী দু‘আ জানে তাদের জন্য আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় দু‘আ করা জায়েয নয়। কিন্তু যাদের আরবী ভাষায় দু‘আ মুখস্থ নেই, তাদের জন্য আরবী ভাষায় দু‘আ না শিখা পর্যন্ত মাতৃভাষায় দু‘আ করা দোষনীয় নয়’ (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-১১৫৮৮, ২৬২২৫৪, ২০৯৫৩)।
তৃতীয়তঃ শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘মানুষের উচিত কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহতে বর্ণিত দু‘বার মাধ্যমে দু‘আ করা। কেননা এর গুরুত্ব, মাহাত্ম্য ও সৌন্দর্যের ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই এবং এটিই সরল পথ। ইসলামের আলিমগণ এবং দ্বীনের ইমামগণ শরী‘আত সম্মত দু‘আর কথা উল্লেখ করেছেন এবং তাঁরা নতুন উদ্ভাবিত বিদ‘আতী দু‘আ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। সুতরাং এরই অনুসরণ করা উচিত (মাজমূঊল ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়্যাহ, ১/৩৪৬ ও ৩৪৮ পৃ.)।
প্রশ্নকারী : ইনামুল হক, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ।