বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫০ অপরাহ্ন
উত্তর : পিতা কিংবা অন্য কোন অভিভাবক সাবালিকা মেয়ের সম্মতি ব্যতীত জোরপূর্বক বিয়ে দিতে পারবে না। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘বিধবাকে তার মতামত ব্যতীত বিয়ে দেয়া যাবে না এবং কুমারীকে তার অনুমতি ব্যতীত বিয়ে দেয়া যাবে না। লোকেরা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! তার অনুমতি কেমন করে নেয়া হবে। তিনি বললেন, তার চুপ থাকাটাই হচ্ছে তার অনুমতি’ (ছহীহ বুখারী, হা/৫১৩৬, ৬৯৬৮, ৬৯৭০; ছহীহ মুসলিম, হা/১৪১৯; আবূ দাঊদ, হা/২০৯২)। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেন, ‘পূর্ব বিবাহিতা তার নিজের (বিবাহের) ব্যাপারে তার অভিভাবকের তুলনায় অধিক কর্তৃত্বসম্পন্ন এবং কুমারী কন্যার নিজের ব্যাপারে পিতা তার সম্মতি নিবে। নীরবতাই তার সম্মতি। কখনও তিনি বলেছেন, তার নীরবতাই তার স্বীকৃতি’ (ছহীহ মুসলিম, হা/১৪২১; নাসাঈ, হা/৩২৬০-৩১৬১, ৩২৬৪)। বরং মেয়ের সঙ্গে পরামর্শ করা অপরিহার্য, অভিভাবক ও মেয়ের সম্মতিক্রমে বিবাহ সম্পন্ন করতে হবে। এক্ষেত্রে সম্মত বা অসম্মত হওয়ার ব্যাপারে মহিলার পূর্ণ স্বাধীনতা থাকবে। অনেকেই মেয়ের মতামতকে গুরুত্ব দেয় না। ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিবাহ দেয়ার ফলে পরবর্তীতে সংসারে চরম অশান্তি সৃষ্টি হয়। এজন্যই কারোর ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিবাহ দেয়া হারাম’ (ইবনু বায, ফাতাওয়া নূরুন ‘আলাদ দারব, ২০/২২১-২২৪, ২০/২২৪-২২৫, ২০/২২৬-২২৭, ২২/৯৩-৯৪)।

শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘পিতা-মাতার জন্য সমীচীন নয় যে, ছেলের বিবাহ এমন মেয়ের সাথে দিবে, যাকে সে চায় না। এমন বিবাহ যদি সে অমান্য করে তাহলে সে অবাধ্য হিসাবে বিবেচিত হবে না (ইবনু তাইমিয়্যাহ, মাজমূঊল ফাতাওয়া, ৩২তম খণ্ড, পৃ. ৩০)। শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘জোরপূর্বক বিবাহ দিলে, তার বিবাহ বিচ্ছেদের পূর্ণ স্বাধীনতা থাকবে’ (ফাতাওয়া নূরুন ‘আলাদ দারব, ২২তম খণ্ড, পৃ. ৯৩-৯৪)।

উক্ত অবস্থায় পিতার বদলে মেয়ের নিকটতম আত্মীয় অভিভাবক হবে। যেমন দাদা, ভাই, চাচা ইত্যাদি। আর তারাও যদি একই মতের হয় তাহলে আদালতের আশ্রয় নিবেন। আদালত ইসলামী বিধান অনুযায়ী বিচার করবে এবং শরী‘আত মোতাবেক বিবাহ সম্পন্ন করবে (ইবনু বায, মাজমূউ ফাতাওয়া, ৯/৪৫৯-৪৬০, ২১/৭৬-৭৭; আশ-শারহুল মুমতি‘, ১২/৮৯)। এছাড়া ন্যায়পরায়ণ কোন মুসলিম নেতাও দায়িত্ব নিয়ে বিবাহ দিতে পারবেন (আল-মুগনী, ৭ম খণ্ড, পৃ. ২৭, ১৮; তিরমিযী, হা/১১০২; আবূ দাঊদ, হা/২০৮৩)। খানসাআ বিনতু খিযাম আল-আনছারিয়্যাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহা)-এর সূত্রে বর্ণিত। তার পিতা তাকে বিয়ে দেন তখন তিনি বিবাহিতা (সাবালিকা)। তিনি এ বিয়ে অপসন্দ করলেন। অতঃপর তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে অভিযোগ করলে তিনি তার এ বিয়ে বাতিল করে দেন’ (ছহীহ বুখারী, হা/৬৯৪৫, ৫১৩৮; আবূ দাঊদ, হা/২১০১)।

তবে যদি এমন হয় যে, পিতা-মাতা একজন দ্বীনদার ছেলে বা মেয়েকে বিবাহের জন্য ঠিক করেছেন, কিন্তু বৈষয়িক কারণে ছেলে বা মেয়ের সেটি পসন্দ নয়। এমতাবস্থায় পিতা-মাতার আনুগত্য করা আবশ্যক। বিবাহ না করলে সে অবাধ্য সন্তান হিসাবে গণ্য হবে।

রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘তোমরা যে লোকের দ্বীনদারী ও নৈতিক চরিত্র দ্বারা সন্তুষ্ট আছ, তোমাদের নিকট যদি সেই ব্যক্তি বিবাহের প্রস্তাব দেয়, তবে তার সাথে (তোমাদের পাত্রীর) বিবাহ দিয়ে দাও। অন্যথা পৃথিবীতে ফিতনা-ফাসাদ, বিশৃঙ্খলা ও বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়বে। ছাহাবীগণ বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! তার মাঝে কিছু থাকলেও কি? (অর্থাৎ সে যদি অভাবগ্রস্ত ও দরিদ্র হয়?) তিনি বললেন, ‘তোমরা যে লোকের দ্বীনদারী ও নৈতিক চরিত্র দ্বারা সন্তুষ্ট আছ, তোমাদের নিকট যদি সেই ব্যক্তি বিবাহের প্রস্তাব দেয়, তবে তার সাথে (তোমাদের পাত্রীর) বিবাহ দিয়ে দাও। রাবী বলেন, ‘এ কথা তিনি তিনবার বললেন’ (তিরমিযী, হা/১০৮৪-১০৮৫; ইবনু মাজাহ, হা/১৯৬৭; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/১০২২; ইরওয়াউল গালীল, ৬ষ্ঠ খ-, পৃ. ২৬৭)।


প্রশ্নকারী : আতীকুল হক, নাটোর।





প্রশ্ন (৩৪) : পিতার উপার্জন হারাম। বুঝানোর চেষ্টা করলেও শুনেন না। তাই ছেলে যদি স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আলাদাভাবে চলতে চায়, তাহলে ছেলে গুনাহগার হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩৩) : আহলে বাইত বলতে কাদেরকে বুঝানো হয়? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৪) : আমাদের এলাকায় মূল জামা‘আত হয়ে গেলে পরে ইক্বামত না দিয়েই ছালাত আদায় করে থাকে। শরী‘আতের দৃষ্টিতে এমনটি কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩১) : দুই সিজদার মাঝখানে যে দু‘আ পড়া হয় সেটি ওয়াজিব, না-কি সুন্নাত? এই দু‘আ পড়েছি নাকি পড়িনি এমন সন্দেহ হলে সাহু সিজদা দিতে হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৪) : জনৈক অবিবাহিত যুবক আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ত্বালাক্বপ্রাপ্তা অসহায় মেয়েকে বিয়ে করতে চাচ্ছে। কিন্তু সম্মানবোধ উল্লেখ করে পরিবার তা মেনে নিচ্ছে না। তাদের মতের বাইরে এসে ঐ মেয়েকে বিয়ে করলে আমি কি তাদের অবাধ্য সন্তান হিসাবে পরিগণিত হব? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৭) : হারাম বা অবৈধ অর্থ দান করলে পাপ হবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২২) : জনৈক ব্যক্তি বলেন, বিদ‘আতীদের বক্তব্য শুনা যাবে না এবং তাদের থেকে ইলম গ্রহণ করা যাবে না। কারণ এটা ক্বিয়ামতের আলামত। উক্ত দাবী কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩০) : আল-কুরআনের মুহকাম ও মুতাশাবিহ আয়াত বলতে কী বুঝায়? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৪৮) : কোর্টের মাধ্যমে বিবাহ করলে বৈধ হবে কি? বিবাহ হয়ে থাকলে আবার বিয়ে পড়াতে হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৮) : রাসূল (ﷺ) তাঁর মায়ের কবরের পার্শ্বে গিয়ে আল্লাহর কাছে দু‘আ করলে আল্লাহ তাকে জীবিত করে দেন। অতঃপর রাসূল (ﷺ)-এর উপরে ঈমান আনেন মর্মে আয়েশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত হাদীছ কি ছহীহ? অনুরূপভাবে নবীজীর ‘পিতা-মাতা’ উভয়ের ঈমান আনার যে বর্ণনা প্রচলিত আছে, সেগুলো ছহীহ কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৪৪) : ঈদুল ফিতরের ছালাত আদায়ের পর পরিবারের সবাই মিলে কবর যিয়ারত করা কি যায়েয? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৯) : ছালাত আদায় করার সময় শুধু রুকূ‘ পেলেই কি পুরো রাকা‘আত পাওয়া হবে, না-কি পরবর্তীতে ঐ রাক‘আত আবার পড়তে হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ