শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২৭ পূর্বাহ্ন
উত্তর : সিজার আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি। যখন স্বাভাবিক নিয়মে বাচ্চা হয় না অথবা মা বা শিশুর জীবন ও স্বাস্থ্যের ক্ষতির আশঙ্কা করা হয়, তখনই সিজার করা হয়। এক্ষেত্রে আলিমগণের বক্তব্য হল, ‘বিশেষ প্রয়োজনে চিকিৎসা স্বরূপ সিজার করে সন্তান প্রসাব করানো বৈধ। বাধ্যগত কারণে সিজার করাতে কোন সমস্যা নেই। তবে স্বাভাবিকভাবে বাচ্চা হওয়ার পর্যায় থাকলে সিজার করা জায়েয নয়। নিছক প্রসব বেদনা থেকে বাঁচতে স্বেচ্ছায় সিজার করাতে চাইলে তা জায়েয হবে না। কোন চিকিৎসক বা প্রতিষ্ঠান নিজেদের স্বার্থে সিজার করাতে বাধ্য করলে তা গর্হিত অন্যায়ের শামিল হবে। এটা ধ্বংসাত্মক ক্ষতি ও মারাত্মক অপরাধ’ (ইসলাম সাওয়াল ওয়া জাওয়াব, ফৎওয়া নং-৯২৮৩১; ইসলাম ওয়েব, ফৎওয়া নং-১০৫২৫১)।

ইসলামী শরী‘আতের স্থিরীকৃত নীতিমালাসমূহের মধ্যে অন্যতম হল- الضرورات تبيح المحظورات ‘বিশেষ প্রয়োজন অবৈধ জিনিসকে বৈধতার অনুমতি প্রদান করে’। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

فَمَنِ اضۡطُرَّ غَیۡرَ بَاغٍ وَّ لَا عَادٍ فَلَاۤ اِثۡمَ عَلَیۡہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ  غَفُوۡرٌ  رَّحِیۡمٌ

‘কিন্তু যে নিরুপায় হয়ে অন্যায়কারী এবং সীমালঙ্ঘনকারী না হয়ে তা গ্রহণে বাধ্য হয়েছে তার কোন পাপ হবে না। নিশ্চয় আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৭৩; আল-আন‘আম : ১৪৫; আন-নাহল : ১১৫)।

ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে সিজারের মধ্যে বেশ কিছু নিষিদ্ধ দিক রয়েছে। যেমন, (১) বিবিধ রোগের কারণ : সিজারের দ্বারা নিজ শরীরে নানাবিধ ক্ষতি সাধিত হয়। যেমন, কটিদেশে আজীবন ব্যথা অনুভূত হয়। সারা জীবন এর কষ্ট ভোগ করতে হয়। অথচ আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘আর তোমরা নিজেদেরকে হত্যা করো না, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু’ (সূরা আন-নিসা : ২৯)। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, لَا ضَرَرَ وَلَا ضِرَارَ ‘নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া যাবে না এবং অন্যেরও ক্ষতি করা যাবে না’ (ইবনু মাজাহ, হা/২৩৪০, ২৩৪১; সনদ ছহীহ, ছহীহুল জামে‘, হা/৭৫১৭; সিলসিলা ছহীহাহ, হা/২৫০)। (২) Silent killing বা গোপন হত্যার পথ তৈরি করে : অধিক সন্তান গ্রহণের বড় অন্তরায় এই সিজার। এর কারণে দু’টি অথবা তিনটির বেশি সন্তান নেয়া যায় না। অথচ আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, وَ لَا تَقۡتُلُوۡۤا اَوۡلَادَکُمۡ مِّنۡ اِمۡلَاقٍ ؕ نَحۡنُ نَرۡزُقُکُمۡ وَ اِیَّاہُمۡ ‘দারিদ্র্যের ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানদের হত্যা করবে না, আমরাই তোমাদেরকে ও তাদেরকে জীবিকা দিয়ে থাকি’ (সূরা আল-আন‘আম : ১৫১)। জাহেলী যুগের এই জঘন্য অপকর্ম বর্তমানে জন্ম-নিয়ন্ত্রণের নামে চলছে। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘তোমরা এমন নারীকে বিবাহ কর, যে প্রেমময়ী এবং অধিক সন্তান প্রসবকারিণী। কেননা আমি অন্যান্য উম্মতের কাছে তোমাদের সংখ্যাধিক্যের কারণে গর্ব করব’ (আবূ দাঊদ, হা/২০৫০; নাসাঈ, হা/৩২২৭, সনদ হাসান)। (৩) বিনা প্রয়োজনে কোন পরপুরুষকে নারী দেহ প্রদর্শন করা হারাম (সূরা আন-নূর : ৩১)। অথচ বর্তমানে সিংহভাগ মহিলা নিজেকে অত্যাধুনিক প্রমাণ করতে কোন কারণ ছাড়াই সিজার করাচ্ছে। এটা এখন ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। (৪) সর্বোপরি সিজারিয়ানের মাধ্যমে মুসলিম দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে কাফিরদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা হচ্ছে।


প্রশ্নকারী : মানিক, ময়মনসিংহ।





প্রশ্ন (১) : ইসলামে হালাল ও হারাম কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৬) : রামাযান মাসে মৃত ব্যক্তির নামে কুরআন খতম করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৩) : ‘যে তার চক্ষুদ্বয়কে ভালোবাসে সে যেন আছরের পরে না লেখে’ প্রচলিত ধারণা কি হাদীছসম্মত? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৩) : রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় দশ বছর অবস্থান করেছেন এবং প্রত্যেক বছরই কুরবানী করেছেন। উক্ত দাবী কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৬) : কোন মুসলিম নামের সাথে prince ব্যবহার করতে পারবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৩) : এ্যানিমেশন কার্টুন দেখা কি জায়েয? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩২) : ছুটে যাওয়া বিতর ছালাত সূর্য উঠার পর বা দিনের বেলায় পড়লে কিভাবে পড়তে হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৩২) : প্রতিমাসে প্রাপ্য বেতনের যাকাত কীভাবে প্রদান করতে হবে? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (১৬) : মৃত বা জীবিত ব্যক্তির পক্ষ থেকে বদলী ওমরাহ করা যাবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৬) : মহিলারা কৃত্রিম নখ, চোখের পাপড়ি ও কালারড লেন্স ব্যবহার করতে পারবে কি? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (৫) : বিতর ছালাতে কুনূত পড়তে ভুলে গেলে এবং সিজাদায় গিয়ে মনে পড়লে করণীয় কী? দু‘আ কুনূত ছাড়াই বিতর ছালাত পড়ার পদ্ধতি কী? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ
প্রশ্ন (২৫) : অনেক স্থানে ছালাতে সূরা আল-ফাতিহা শেষ করে তিনবার আমীন বলার প্রচলন দেখা যায়। উক্ত প্রথা কি সঠিক? - ফাতাওয়া বোর্ড, মাসিক আল-ইখলাছ

ফেসবুক পেজ