উত্তর : ফরয ছালাতের পর সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা স্পষ্ট বিদ‘আত। যেমন
(১) ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘ছালাতের পরে ইমাম ও মুক্তাদী একত্রে দু‘আ করার বিষয়টি নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে কেউই বর্ণনা করেননি’ (মাজমূঊল ফাতাওয়া, ২২ খণ্ড, পৃ. ৫১৬)।
(২) ইবনুল ক্বাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছালাতের পরে মুক্তাদীদের দিকে মুখ করে দু‘আ করেননি এবং মুক্তাদীরা তার দু‘আয় ফজর ও আছর কিংবা সমস্ত ছালাতের পরে সর্বদা ‘আমীন’ ‘আমীন’ বলেননি।…. ফলে এটা করা নিষেধ। যা রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে ছোট, বড়, পুরুষ ও মহিলা একজনও বর্ণনা করেনি’ (ই‘লামুল মুওয়াক্কেঈন ২/৫৮৯-৫৯০ পৃ.)।
(৩) সউদী আরবের স্থায়ী গবেষণা ও ফাতাওয়া বোর্ডের সিদ্ধান্ত হল- ‘আমরা যা জানি তাতে ফরয ছালাতের সালামের পরে হাত তুলে দু‘আ করা নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে সাব্যস্ত হয়নি। তাই ফরয ছালাতের সালামের পরে দু’হাত তুলে দু‘আ করা সুন্নাত বিরোধী কাজ’ (ফাতাওয়া লাজনা আদ-দায়েমাহ, ৭/১০৪ পৃ., ফাতাওয়া নং ৫৫৬৫)।
(৪) সঊদী আরবের সর্বোচ্চ উলামা পরিষদের ফাতাওয়া হল- ‘পাঁচ ওয়াক্ত ফরয ছালাত ও নফল ছালাত সমূহের পর সজোরে দু‘আ পাঠ করা অথবা দলবদ্ধভাবে গদবাধা দু‘আ করা নিকৃষ্ট বিদ‘আত। কারণ এরূপ দু‘আ রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁর ছাহাবীদের যুগে ছিল না। যে ব্যক্তি ফরয ছালাতের পর অথবা নফল ছালাতের পর দলবদ্ধভাবে দু‘আ করে, সে যেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের বিরোধিতা করে’ (হাইয়াতু কিবারিল ওলামা ,১/২৪৪ পৃ.)।
(৫) শায়খ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ)-কে উক্ত বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা যা জানি তা হল নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং ছাহাবায়ে কেরাম থেকে প্রমাণিত হয়নি যে, তারা ফরয ছালাতের পরে হাত তুলে দু‘আ করেছেন। এজন্য পরিষ্কার বুঝা যায় এটা বিদ‘আত’ (মাজমূউ ফাতাওয়া ওয়া মাক্বালাতুন মুতানাওয়াহ, ১১/১৬৭ পৃ.)।
(৬) শায়খ নাছিরুদ্দীন আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘উল্লিখিত স্থানে হাত তুলার ব্যাপারে শরী‘আতে কোন কিছু বর্ণিত হয়নি। … এমনকি এ ব্যাপারে নির্ভরযোগ্য একটি হাদীছও নেই’ (সিলসিলা যঈফাহ, ৩/৩১ পৃ.)।
(৭) শায়খ উছায়মীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘ফরয ছালাত সমূহের পরে দু‘আ করা ও দু’হাত তুলা যদি সম্মিলিতভাবে হয় যেমন- ইমাম দু‘আ করে আর মুক্তাদীগণ আমীন আমীন বলে, তাহলে তা নিঃসন্দেহে বিদ‘আত হবে’ (মাজমূউ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল, ১৩/২৫৮ পৃ.)।
প্রশ্নকারী : তাহমীদ, বাগমারা, রাজশাহী।